নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজকে ভাবছিলাম কী নিয়ে পোস্ট দেওয়া যায় । প্রথমে একটা পোস্ট লিখলাম তারপরই পোস্ট টা সরিয়ে নিলাম । নিজের কাছেই যেন পোস্ট টা পছন্দ হল না । তারপর মনে হল আজকে একটা টিভি সিরিজ দেখে শেষ করেছি । সেটা নিয়েই বরং লেখা যাক ।
লুসিফার টিভি সিরিজটা প্রথম প্রচারিত হয় ২০১৬ সালে । যদিও এটা দেখা শুরু করেছিলাম গত বছর লকডাউনের ভেতরে । মোট ৫ টা সিজন রয়েছে এটার । আজকে শেষ এপিসোডটা দেখে শেষ করলাম । লুসিফার আরবান ফ্যান্টাসী সুপার হিরো টিভি সিরিজ । সিরিজের প্লট টা আমার কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে । প্রথম কয়েকটা পর্ব দেখার পরেই এক টাকা দেখতে থাকি ।
লুসিফার নামটার সাথে আপনাদের পরিচয় থাকার কথা । আমাদের ধর্মে লুসিফার ইবলিস শয়তান হিসাবে পরিচিত । প্লট টা নিয়ে যডি বলি, লুসিফার হচ্ছে অলমাইটি গডের সন্তান । একজন এঞ্জেল । অনেক মিলেনিয়াম বছর আগে যখন সব এঞ্জেল হেভেনে থাকতো তখন লুসিফার তার বাবার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে । এবং তার বাবা তাকে হেভেন থেকে ভ্যানিশড করে দিয়ে হেলের দায়িত্ব দিয়ে পাঠায় । লুসিফার মর্নিংস্টারের দায়িত্ব হয় মৃত্যুর পরে হেলে যাওয়া আত্মাদের টর্চার করার । কিন্তু কোটি লক্ষ লক্ষ বছর ধরে একই কাজ করতে করতে সে বিরক্ত হয়ে যায় এবং হেল ত্যাগ করে দিয়ে পৃথিবীতে চলে আসে । লসএঞ্জেলসে এসে একটা নাইক ক্লাব খুলে বসে ।
সেখানেই তার দেখা হয় ডিকেক্টিভ ক্লোই ডেকারের সাথে । একটা কেসে দুইজন এক সাথে কাজ করে অপরাধী ধরতে । এবং পরে লুসিফার মর্নিং স্টার হয়ে ওঠে এল এ পি ডির একজন সিলিভ কন্সাল্টেন্ট । দুইজন মিলে একের পর এক কেস সমাধান করতে থাকে ।
এভাবে একের পর এক পর্ব এগিয়ে চলতে থাকে । প্রত্যেক সিজনেই নতুন নতুন ঝামেলা এসে হাজির হয় দুজনের মাঝে । এক সময় লুসিফার আবিস্কার করে যে সে ডিটেক্টিভকে ভালোবাসে । একজন সাধারন মানুষকে ।
সিরিজের আরেকটা চরিত্র হচ্ছে মাইটি এমেনেডিল । এমেনেডিল হচ্ছে এঞ্জেলদের ভেতরে সব থেকে শক্তিশালী । ফার্স্ট বর্ন। সে প্রায়ই সে এলএতে আসে । এবং তার ছোট ভাইকে মানে লুসিফারকে বারবার বলে যে তাকে হেলে ফেরৎ যেতে হবে । কিন্তু লুসিফার সেখানে যেতে অস্বীকৃতি জানায় । এমেনেডিল বারবার আসে । এক সময়ে সে এই পৃথিবীতেই থাকতে শুরু করে । তখন তার পরিচয় মনবিজ্ঞানী লিন্ডার সাথে । লিন্ডা তার ছোট ভাই লুসিফারের স্যাইক্রায়াটিস্ট হিসাবে কাজ করেছে । লুসিফার তার কাছে কাউন্সেলিং করেছে । নিজের সমস্যা খুলে বলেছে নিয়মিত । এক সময়ে এমেনেডিলের সাথে লিন্ডার হুক আপ হয় । এবং তাদের একটা সন্তানও হয় ।
অন্য দিকে আরেক চরিত্র হচ্ছে ড্যানিয়েল । সে হচ্ছে ডিটেক্টিভ ক্লইর এক্স হাজব্যান্ড । তাদের একটা মেয়ে আছে । ট্রিক্সি । সেই এল এ পিডিতে ক্লোইর সাথে কাজ করে ।
হেল টর্চারার ম্যাজেকিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র এই সিরিজের । সে হচ্ছে একজন ডিমন । একজন ডিমনও এই পৃথিবীতে এসে কিভাবে বদলে যায় সেটা সিরিজে দেখানো হয়েছে ।
এক সময়ে লুসিফারের জীবনে লুসিফারের মা এসে হাজির হয়, ইম্মর্টাল কেইন আসে (কেইন হচ্ছে পৃথিবীর প্রথম খুনী মানুষ যাকে অভিশাপ দেওয়া হয়েছিলো যে কোন দিন মরবে না), ইভ আসে, তাই জমজ ভাই মাইকেল আসে এবং সব শেষে এসে হাজির হয় স্বয়ং গড । আমি বলবো না আমার দেখা সেরা একটা সিরিজ হচ্ছে লুসিফার তবে এই ওয়াজ ফান । পুরো রিসিজটাই খানিকটা কমেডি ধাচে বানানো হয়েছে । ফ্রি সময়ে দেখতে ভাল লেগেছে বেশ ।
এমন একটা সিরিজ আমেরিকা বলেই বানানো সম্ভব হয়েছে । আমাদের দেশে কিংবা পাশের দেশে যদি এই সিরিজ বানানো হত তাহলে কী যে হয়ে যেত তা আমি ভাবতেই পারছি না । সিরিজটার প্লটের উৎস হচ্ছে বাইবেল । বাইবেলের অনেক চরিত্র এখানে রয়েছে । তবে বাইবেলে যেমন করে আছে তেমন করে নি । এখানে ফুটে উঠে উঠেছে লেখকের সৃজনশীলতা । যেমন লুসিফারকে পিওর ইভিল হিসাবেই ধরা হয় । আমাদের ধর্মেও তাই কিন্তু এই সিরিজে লুসিফারকে সেই ভাবে মোটেও উপস্থাপন করা হয় নি । এখানে দেখানো হয়েছে লুসিফার খারাপ নয়, সে অপরাধী/খারাপদের শাস্তি প্রদান করে । হেলে এটাই তার কাজ । কিন্তু সে মোটেও তেমন নয় ।
ইমাজিন করেন এই দেশে এমন কিছু বানানো হয়েছে আমাদের ধর্মকে কেন্দ্র করে তাহলে কী অবস্থা হবে ?
এই সিরিজটা পছন্দ করার আরেকটা কারণ হচ্ছে এখানে ভালোবাসাটা কে খুব তীব্র ভাবে দেখানো হয়েছে । ভালোবাসার ব্যাপারটা যে যে কোন কিছু কিংবা যে কাউকে বদলে দিতে পারে সেটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । সিজন চারের শেষে যখন লুসিফারকে সত্যি সত্যি পৃথিবী ছেড়ে আবার হেল এ ফিরে যেতে হয় তখন কী তীব্র একটা আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় । অন্য দিকে সিজন ফাইভের প্রথম ভাগের শেষে স্বয়ং গড এসে হাজির হয় পৃথিবীতে । তারপর মজাদার সব ঘটনা ঘটতে শুরু করে লুসিফারকে কেন্দ্র করে ।
এই সিরিজের একটা সাউন্ড ট্রাক আমার খুব পছন্দ । মাই লাভ উইল নেভার ডাই
প্রথম সিজনের ট্রাইলার দেখতে পারেন এখানে
সময় থাকলে দেখে ফেলতে পারেন । নেটফ্লিক্সেই পাবেন পুরো সিরিজটা ।
হ্যাপি ওয়াচিং ।
ছবিঃ লুসিফার টুইটার পেইজ
০৭ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:২৯
অপু তানভীর বলেছেন: তার থেকেও বড় কথা হচ্ছে পশ্চিমাদের ধর্মীয় সহনশীলতা অনেক বেশি যেটা আমাদের দেশে একদম নেই ।
২| ০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ৮:৩০
সোহানী বলেছেন: ইন্টারেস্টিং, দেখার আগ্রহ হচ্ছে। দেখি সময় ম্যানেজ করে দেখবো। আমাদের মতো কল্লা ফেলে না বলে এ ধরনের সিরিজ তৈরী হয়
০৭ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৩০
অপু তানভীর বলেছেন: সত্যিই । এমন টা আমাদের দেশে কোন ভাবেই তৈরি হওয়া সম্ভব হবে না । কেউ ভয়তেই বানাবে না !
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ১:২৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
পশ্চিমের মানুষ জানে যে, বাইবেল লিখেছে যীশুর শিষ্যরা; যীশুর শিষ্যরা যীশুর বাণী থেকে যতটুকু বুঝেছিলো, তাহাই তাদের ততকালীন ধারণা ও ভাবনা থেকে লিখেছে, আজকে সেটা ঠিক সেভাবে অনুসরণ করার দরকার নেই; মানুষ নিজেদের ভাবনাচিন্তার সমন্ময়ে বাইবেলকে অনুসরণ করছেন।