নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রমিজের বয়স ত্রিশের কিছু বেশি । পেশায় সে রিক্সা চালক । রিক্সা চালাতে হলে বেশ ভাল রকমের পেশি শক্তির প্রয়োজন । শরীর স্বাস্থ্যে সে মধ্যম মানের । তাই যাত্রীর ওজন বেশি হলে সে একটু বিপদে পড়ে যায় । আগে এই রকম অনেক হয়েছে যে যাত্রী নিয়ে সে টানতে পারে নি । একটু গিয়েই যাত্রীকে নামিয়ে দিতে হয়েছে । তাই এখন সে দেখে শুনে যাত্রী নেয় । একটু কম ওজনের যাত্রী পেলে, ভাড়া একটু কম দিতে চাইলেও যেতে রাজি হয়ে যায় । যেমন তার পেছনের যাত্রীটা । বয়সে তার মতই হবে । ওজনও অটিরিক্ত নয় । ৭০ কেজির বেশি হবে না কোন ভাবেই । ৮০/৯০ কেজি পর্যন্ত যাত্রী টানতে রমিজের কোন অসুবিধা হয় না । কিন্তু এর বেশি হলে সে একটু বিপদেই পড়ে । আজকে সে চিন্তা নেই । যদিও আজকে তার মন একটু খারাপ ।
সকাল বেলা বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বউয়ের সাথে ঝগড়া করে বের হয়েছে । রমিজের এমনিতে কোন বাজে অভ্যাস নেই । বউ পেটানোর স্বভাবও নেই তার । তবে মাঝে মধ্যে সে বউকে ঝাড়ি দেয় বিনা করণেই । আজও তেমন হয়েছে । বউয়ের সকালের ভাত রান্না করতে একটু দেরি হয়েছে । সকালে বৃষ্টি হয়েছিলো একটু । রান্নাঘরে পানি জমে গিয়েছিলো । সেই পরিস্কার করে রান্না করতে করতে একটু দেরি হয়ে গেছে । এটাতে রমিজের মেজাজ খারাপ হয়েছে । সে রাগারাগি করে সকালের ভাত না খেয়েই বের হয়ে এসেছে বাসা থেকে । যদিও কিছু সময়ে পরে হোটেল থেকে পরোটা খেয়েছে পেট ভরে । তবে একটা কথা তার বারবার মনে হচ্ছে যে তার বউ হয়তো না খেয়ে রয়েছে । যদিও এমনটা মনে হওয়ার কোন কারণ নেই । তবে মনের ভেতর থেকে এই চিন্তাটা কোন ভাবই যাচ্ছে না ।
মন খারাপের আরেকটা কারণ রয়েছে । রিক্সা নিয়ে সে বইমেলার কাছে চলে এসেছিলো সকালের পরপরই । যেদিন মেজাজ খারাপ থাকে সেদিন সে অনেক দুরে দুরে চলে যায় । আজও তাই এদিকে চলে এসেছিলো । রিক্সা সরাতে গিয়ে হঠাৎ করে সামনের চাকাটা একটা নেতা গোছের মানুষের প্যান্টে লেগে যায় । ওমনি লোকটা রমিজের গালে একটা চড় বসিয়ে দেয় । সাথে কয়েকটা গালি । রমিজ এতোটাই হতভম্ভ হয়ে যায় যে কিছু বলতেই পারে না । তারপর সে বুঝতে পারে সে এটা তার শাস্তি ছিল । সে বিশ্বাস করে যে মানুষ তার কর্ম ফল ভোগ করে এই পৃথিবীতেই । সকালে বেলা তার বউয়ের সাথে বিনা করনে রাগ দেখিয়েছে । এই কারণে সে চড়টা খেয়েছে ।
-মামা আপনার বাসা কোথায় ?
পেছনের যাত্রীর মুখে কথাটা শুনে হঠাৎ পেছনে ফিরে তাকালো । মানুষটার হাতে অনেক গুলো বই । সে বইমেলা থেকে বই কিনে ফিরছে । যাবে মোহাম্মাদপুর ।
-আমার ?
রমিজ হাসলো । বলল, আমার এই খানে বাসা মামা যাত্রাবাড়ি !
-ওমা । সেতো অনেক দুর । আপনি তাহলে এদিকে কেন ?
-এমনিই মামা । মাঝে মইধ্যে ঢাকা শহর ঢু মাইরা বেড়াই !
-ভাল ভাল ! তা দুপুরে খাওয়া হয়েছে?
-না মামা । আপনারে নামাইয়া দিয়া তারপর খামু !
তারপর দুজেনর মাঝে আরও টুকটাক কথা হতে থাকে । এক সময়ে রিক্সা চলে আসে নির্দিষ্ট গন্তব্যে । রিক্সা থেকে নেমে যাত্রী তার ভাড়া মিটিয়ে দেয় । তারপর রমিজকে খানিকটা অবাক করে দিয়ে বলে, আসেন মামা দুপুরের খাবার খাওয়া যাক !
প্রথমে রমিজ ঠিক বুঝতে পারলো না সামনের মানুষটা ঠিক কী বলছে । তারা নেমেছে একটা হোটেলের সামনেই । সাধারন মানের ভাতের হোটেল । রমিজের মনে হল যে সে চলে যায় কিন্তু সামনের মানুষটার মুখের ভাব দেখে মনে হল যে সত্যই তাকে ভাত খাওয়াতে চাইছে । কেন চাইছে ? ঢাকা শহরের কে খেল না খেল এসব নিয়ে কেউ চিন্তা করে না । এই মানুষটা কেন করছে ?
একটু দ্বিধা নিয়ে সে হোটেলে ঢুকলো । ছোট একটা হোটেল। মোট তিন টেবিল পাতা । এক সাথে ১২ জন মানুষ খাওয়া দাওয়া করতে পারে । তবে এখন হোটেলে ভীড় কম । শেষের টেবিলে বসলো মানুষটা । হাত মুখ ধুয়ে রমিজ বসল তার মুখোমুখি । হোটেল বয়কে খাবার দিতে বলা হল । রমিজ বুঝতে পারলো যে সামনে বসা মানুষটা এখানে নিয়মিত খেতে আসে । হোটেলের সবাই তার পরিচিত । ভাত চলে এল ।
মানুষটা বলল, বলেন কী খাবেন ?
রমিজ যে কী বলবে সে নিজেই জানে না । একটু দ্বিধা কাজ করছে । কী খেতে ইচ্ছে করছে সেটা সে নিজেই ঠিক করতে পারছে না । কিছ বললে আবার লোকটা তার সম্পর্কে কী ভাববে !
রমিজ বলল, একটা কিছু দ্যান ।
-মুরগি খাবেন ? নাকি মাছ ? আজকে শিং মাছ রান্না করেছে । এদের শিং মাছটা বেশ ভাল । খাবেন?
-আইচ্ছা !
মানুষটা সামনে দাড়ানো হোটেল বয়কে বলল, এই রাকিব, দুইটা শিং মাছ দাও । আর ভাজি ডাও ।
রমিজ অনেক দিন পর শিং মাছ দিয়ে ভাত খেল । কবে সে শিং মাছ খেয়েছে সেটা তার মনেও নেই । শুক্রবার ছাড়া তো ভাল মন্দ রান্না করাই হয় না । খাওয়া দাওয়া করতে করতে কেন জানি আবারও তার নিজের বউয়ের কথা মনে পড়লো । বেচারি কী এখনও মন খারাপ করে বসে আছে ?
খাওয়া শেষ করে রমিজ খেয়াল করলো যে মানুষটা যে পরিমান বিল দিলো সেটা তার রিক্সা ভাড়া থেকেও বেশি । সে কোন কারণ ছাড়াই তার জন্য এতো গুলো টাকা খরচ করলো ।
-আচ্ছা যান তাহলে ।
মানুষটা হাসলো । রমিজ বলল, আপনের বাড়ি ?
-এই তো । সামনেই আমার বাসা ।
হোটেলের সামনের বাসাটা দেখালো সে । তারপর সেই বাড়িতেই ঢুকে গেল ।
রমিজ আরও কিছু সময় দাড়িয়ে রইলো সেখানে । হঠাৎই তার মনে হল তার এখন বাড়িতে যাওয়া দরজার । সকালে বউয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিলো বলেই সে চড় টা খেয়েছিলো । এখন এই মানুষটা তার সাথে ভাল একটা ব্যবহার করেছে, তাকে যত্ন নিয়ে খাইয়েছে এখন তারও উচিৎ ভাল কিছু করা । সব থেকে ভাল কাজটা হবে বউকে খুশি করা । আজকে আর কোন ভাড়া মারবে না ঠিক করলো । বউয়ের জন্য পুরান ঢাকা থেকে হাজির বিরিয়ানি নিয়ে যাবে সে । বউ নিশ্চয়ই খুশি হবে !
আর কিছু ভাবলো না রমিজ । রিক্সাটা নিয়ে সোজা পুরান ঢাকার দিকে রওয়ানা দিল ।
দুই
রাত তখন বারোটা হবে । মুহিবের মাথাটা ভার হয়ে আছে অনেক বেশি । বিকেল থেকে হঠাৎ জ্বর তার । মাথা তুলতে পারছে না । রাত এগারোটার দিকে একটা ঘুম ভেঙ্গেছিলো ক্ষুধার কারণে কিন্তু অবস্থা এমন যে কোন ভাবেই নিচে নামতে পারে নি । এমন কী ফোনটা কোথায় রেখেছে সেটাও মনে করতে পারছিলো না । নয়তো ফোন করে খাবার আনানো যেত । আবার শুয়ে পড়েছিলো । এখন আর ক্ষুধায় টেকা যাচ্ছে না । কিন্তু কী করবে সে ! হোটেল তো বন্ধ হয়ে গেছে । ফুড পান্ডাও চলে না এতো রাতে ।
আজকে বাসায় কেউ নেই । ওরা চারজন কলিগ মিলে বাসাতে থাকে । বৃহস্পতিবার হলেও বাকি তিনজন নিজেদের বাড়িতে চলে যায় । ওদের বাড়ি ঢাকার আশে পাশেই । কিন্তু মুহিবের গ্রামের বাড়ি অনেক দুরে । তার যাওয়ার কোন উপায় নেই । তাকে থাকতে হয় !
এখন মুহিব কী করবে ? এই ক্ষুধা নিয়ে রাত কাটাবে কিভাবে?
বিস্কিট থাকার কথা ! সেটা খুজতে হবে !
বিছানা ছেড়ে উঠলো । মাথাটা আবারও ঘুরে উঠলো তার । বুঝতে পারলো জ্বর আছে ভালই । হঠাৎ কেন জ্বর এল কে জানে ! নিজের ঘর থেকে বের হতে যাবে তখনই কলিংবেল বেজে উঠলো ।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে একটু অবাকই হল । এতো রাতে আবার কে এল ?
সাড়ে এগারোটায় গেট বন্ধ হয়ে যায় । তাই বাইরের কেউ আসা এতো সহজ ব্যাপার না । সম্ভবত বিল্ডিংয়ের কেউ এসেছে । এক বাড়িওয়ালা ছাড়া তো আর কেউ আসবে না । কিন্তু এতো রাতে উনি কেন আসবেন ?
আবারও বেজে উঠলো কলিংবেল । মুহিব একটু কষ্ট করে গিয়ে দরজা খুলল । বেশ অবাক হল । দরজায় একটা অপরিচিত মেয়ে দাড়িয়ে । মেয়েটার হাতে একটা প্লেট । প্লেটটা ঢাকনা দিয়ে ঢাকা !
মেয়েটাকে প্রথমে অপরিচিত মনেও এখন আর মনে হল না । মেয়েটা সম্ভবত দুই তলা কিংবা তিন তলাতে থেকে । মুহিব মেয়েটার নাম জানে না তবে সিড়ি দিয়ে উঠতে নামতে দেখা হয়েছে কয়েকবার !
মেয়েটা খানিকটা ইতস্তর করে বলল, আপনার ক্ষুধা লেগেছে আমি জানি । আপনি আজকে খেতে নামেন নি নিচে । কোন ফুড ডেলিভারি বয়ও আসে নি ।
আপনি বলতে গিয়েও মুহিব মেয়েটাকে তুমি করে বলল, তুমি কীভাবে জানো?
-আমার ঘর থেকে সামনের রাস্তা দেখা যায় পরিস্কার । এই নিন খাবার নিন ।
মুহিব হাত দিয়ে প্লেট টা নিতে গিয়ে একটু যেন দুলে উঠলো । জ্বর টা দেখছি ভাল করেই ওকে কাবু করে ফেলেছে । মেয়েটও সেটা ভাল করে খেয়াল করলো । প্লেটটা না দিয়ে অন্য হাত দিয়ে মুহিবকে ধরলো সে । তারপর ধরেই নিয়ে এল ঘরের ভেতরে । মুহিবদের কোন ডাইনিং টেবিল নেই । তবে একটা ছোট টেবিল রয়েছে ডাইনিং স্পেসে । সেটার উপরে প্লেটটা রেখে মেয়েটা মুহিবকে টেয়ারে বসালো । তারপর বলল, আপনার শরীরে তো অনেক জ্বর ।
-হ্যা একটু জ্বর ।
-ঔষধ খেয়েছেন ?
-আরে না । প্রথম দিনেই ঔষধ খাওয়া ঠিক না ।
-বলেছে আপনাকে ! আপনার মাথায় পানি ঢালতে হবে ! কিন্তু আগে খেতে হবে । আগে খেয়ে নিন ।
মুহিবের মনে হল সে যেন একটা ঘোরের ভেতরে চলে গেছে । যা কিছু হচ্ছে কিছুই ঠিক বুঝতে পারছে না । মেয়েটি যত্ন করে মুহিবকে খাইয়ে দিল । মুহিব সেটা খেয়েও নিল । এরপর মেয়েটি মুহিবকে ধরে নিয়ে বিছানাতে শুইয়ে দিল । নিজেই খুজে একটা পলিথিন নিয়ে এল । সেটা মাথার নিচে দিয়ে ওয়াশরুম থেকে পানি ভর্তি বালতি নিয়ে এসে মুহিবের মাথায় পানি দিতে শুরু করলো । মুহিবের ঠিক কোন কিছুই হুস নেই । জ্বরের ঘোরে ওর মনে হল যেন ও স্বপ্নই দেখছে ।
সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই মুহিব অনুভব করলো শরীরটা বেশ ঝরঝরা লাগছে । রাতের কথা পরিস্কার তার কিছুই মনে পড়লো না । কিছু সময় কে কেবল ভাবতে লাগলো রাতে তার সাথে কী হয়েছে ! আদৌও যা ঘটেছে সেটা কী সত্য ঘটনা? কেবল মনে হল যে ও সে সব কিছু স্বপ্ন দেখেছে । হয়তো ওর শরীর চাইছিলো কেউ তার যত্ন নিক । তাই এমনটা কল্পনা করে নিয়েছে !
সকালের নাস্তা শেষ করে বাড়ির গেটের কাছে এসে দাড়াতেই ওর চোখ গেল দুইতলার দিকে । সেখানে একটা জানলা রয়েছে । জানলা দিয়ে মেয়েটার মুখ দেখতে পেল । মেয়েটা ওর দিকে তাকিয়ে রয়েছে হাসি মুখে । সাথে সাথেই মুহিব বুঝতে পারলো রাতে সে মোটেই স্বপ্ন দেখে নি । মুহিবের মনের ভেতরে একটা আনন্দ বয়ে গেল । এই আনন্দের কোন ব্যাখ্যা মুহিবের জানা নেই ।
গল্পটা নিজেস্ব ওয়েবসাইটে আগে প্রকাশিত হয়েছে । আর গল্পের দুইটা ঘটনার ভেতরে একটা খানিকটা সত্য ঘটনা । ছবিটা আমার কমদামী মোবাইল ক্যামেরায় তোলা ।
২০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১০
অপু তানভীর বলেছেন: কোন ঘটনা সত্য ঘটনা অনলম্বনে লেখা সেটা কইবো না !
তবে একটা ঘটনা সত্য সেই বিষয়টা শতভাগ সত্য !
২| ২১ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:৪০
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ভাল লাগল গল্প পাঠে ।
আমার মনে হয় দুটি গল্পতেই সত্যের আবেশ রয়েছে মাখা ।
প্রথমটি বেদনার, পরেরটিতে জ্বরের ঘোরে হলেও আনন্দ মাখা ।
প্রথম গল্পটিতে রিক্সাচালকের গায়ে নেতা জাতীয় কারো চপেটাগাত
বড়ই মর্মান্তিক । অথচ সারা শহড় জুড়ে রিক্সাচালকদের যে সংখ্যা
তাতে করে তাদেরই দাপট বেশী থাকার কথা ।
রিক্সা চালকদের মাঝে একতা নেই বলেই তারা মার খায় ।
ঢাকা শহড়ে এখন প্রায় ১৫ লাখের মতো রিক্সা, প্রতি রিক্সায়
চালক গড়ে দুইজন ধরলে প্রায় ৩০ লাখ রিক্সা চালক আর তাদের
ছেলে সন্তান বউজিদের হিসাবে ধরলে ঢাকার লোক সংখ্যার
প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ হবে রিক্সা চালক সম্প্রদায় ।
বাড়ীর মালিকদেরকে যেমন বলা হয় বাড়ীওয়ালা তেমনি রিক্সার মালিকদেরকে
আমি রিক্সাওয়ালা বলে অভিহিত করাকেই বেশী সঙ্গত মনে করি । তবে তারা
নিজেরা রিক্সাওয়ালা পরিচয়ের চাইতে রিক্সা মালিক পরিচয় দিতেই ভালবাসে ।
যাহোক একবার এক রিক্সাচালককে গল্পচ্ছলে বলেছিলাম ঢাকায় তোমাদের সে সংখ্যা
তাতে করে তোমরা যদি নীজেরা একতাবদ্ধ হতে পার তাহলে তোমাদের মধ্য
থেকেই ঢাকার মেয়র ও এমপি নির্বাচন হওয়া ঠেকাতে পারবেনা কেও । সে বলেছিল
এটা কভু হবার নয় , দেখেন চোখের সামনে এক রিক্সাচালক মার খেলেও স্বাজাতি
আরেক রিক্সাচালক এগিয়ে আসেনা এক পাও । অথচ রিক্সা মালিক সমিতি একতা
বদ্ধ, তারা পারে না করতে হেন কর্ম নেই , তবে রিক্সাচালক মার খেলেও তারা এগিয়ে
আসবেনা একটুও। অথচ কায়দা কানুন করে তারা রিস্কার নাম্বার বিতরণ করে
সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন কতৃপক্ষের নাকের ডগাতে বসেই ।
প্রসঙ্গ ক্রমে উল্লেখ করা যায় যে এই গল্পের রিক্সা চালক যে যাত্রাবাড়ী এলাকয় থাকে
সেখানে যাত্রাবাড়ী বাংলাদেশ রিকশা ভ্যান মালিক শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ নামে
একটি সংঠন আছে যারা প্রায় ৪৩ হাজার রিকশা ভ্যানের নম্বরপ্লেট ছাপিয়ে বিতরণ করেছে।
সুত্র : https://www.dailyinqilab.com/article/208922 /রাজধানীতে-চলে-১২-লাখ
অনুরূপভাবে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে নম্বরপ্লেট বিক্রির আড়ালে ক্রমেই নাকি বেড়ে চলেছে
রাজধানী শহড় ঢাকায় রিক্সার সংখ্যা।
আর যানজটের কারণ হিসাবে রিক্সাকেই দায়ী করা হয় দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ।
ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পসহ ঢাকার যানজট নিরসন ও পরিবহন ব্যবস্থা উন্নয়নে
যে সব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে সেগুলো প্রতিটিতে রিকশা নিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক অনেক আগেই ঢাকা শহরের প্রধান রাস্তাগুলোতে রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
আরোপের সুপারিশ করেছে।এরই মধ্যে নগরীর শাহবাগ থেকে ফার্মগেইট, সায়েন্স ল্যাবরেটরী
থেকে মিরপুরসহ কয়েকটি প্রধান রাস্তায় রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও
কি সমস্যার কিছু উন্নতি হয়েছে ।
তাই আমার মনে হয় বরং উল্টাটি করলেই ভাল , ঢাকার কেন্দ্রীয় অংশকে বড় গাড়ী চলাচলের
জন্য বন্ধ ঘোষনা করে সেখানে হাটাপথে কিংবা রিক্সায় চেপে যাতায়াতের বিধান চালূ করা যেতে
পারে । গাড়ীওয়ালা ধনবান লোকেরা বসবাস করুক রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন অভিজাত হাউজিং
এস্টেটে , ঢাকার কেন্দ্রস্থলে এসে হেটে কিংবা রিক্সায় চেপে যাক তাদের অফিস কিংবা গন্তব্যে ।
শুধু রিক্সার প্রযুক্তি একটু উন্নত করে বেটারী চালিত করা যেতে পারে । তাতে রিক্সা চালকের
কায়িক পরিশ্রম কমার সাথে রিক্সার গতি বৃদ্ধি পাবে , এখনো ঢাকায় মোটরগাড়ীর গতি নাকি
ঘন্টায় ৭ কিলোমিটারে যা প্রায় হাটার গতির সমান হয়ে গেছে । তাই বিষয়টি নিয়ে ভাবার
অবকাশ আছে । এছাড়া ঢাকায় রাস্তার সংখ্যা আর আয়তন বাড়ানোর সম্ভাবনা একেবারেই
নাই। তাই প্রাইভেট গাড়ী রাস্তায় যে জায়গা দখল করে সে জায়গা দখল করে ৪ টি রিক্সা
চলতে পারে ।প্রতি প্রাইভেট কার যেখানে চালক ব্যতিত গড়ে ৪ জন যাত্রি নিয়ে চলতে
পারে সেখানে একই গতিতে রিক্সায় প্রায় ৮ জন তথা দ্বিগুন যাত্রী বহন করতে পারবে ।
বায়ু ও শব্দ দুষনো কমে যাবে । দেশে দুর্নীতি বৃদ্ধি পাওয়ার পিছনে একটি বাড়ীও একটি
গাড়ি করার মানসিকতাও নাকি বেশী দায়ি , তাই প্রাইভেট গাড়ীর উপোগীতা কমাতে
পাড়লে প্রকারান্তরে অনেক বিষয়েই সুবিধা বেশী । যাহোক এবিষয়ে বিষেযজ্ঞদের
মতামতই বেশি বিবেচনার দাবী রাখে ।
দ্বিতীয় গল্পটির বিষয়ে পরে সময় করে আরেকবার আসার ইচ্ছা আছে যদি সময় করতে
পারি ।
দুটি গল্পই ভাল লেগেছে ।
শুভেচ্ছা রইল
২১ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৫০
অপু তানভীর বলেছেন: এই ব্যাপারটা আমার নিজেরও মাথায় আসে না । রিক্সা চালকদের মাঝে আসলেই একতা নেই । একদমই নেই । রাস্তা ঘাটে দেখা যায় প্রায়ই কেউ না কেউ রিক্সাওয়ালার গায়ে হাত তুলছে । আশে পাশে আরও কত রিক্সাওয়ালা রয়েছে অথচ কেউ এগিয়ে আসে না । একটা কথাও বলে না । বরং মজা নেয় । অথচ বাস ড্রাইভার কিংবা পরবহন শ্রমিকদের দিকে তাকিয়ে দেখেন, এদের মাঝে কী একতা । এদের গায়ে হাত দিলে পুরো ঢাকা শহরের বাস বন্ধ হয়ে যায় । একবার আমাদের ক্যাম্পাসের কয়েকজনের সাথে এক বাস চালকের ঝামেলা হয় । তারপর আমাদের ক্যাম্পাসের আশে পাশের সব বাস ওরা বন্ধ করে দেয় । পরে আলোচনা করে মাঝেলা শেষ হয় তারপর আবার বাস চালু হয় । অথচ রিক্সাওয়ালাদের এমন কিছু নেই ।
দুর পাল্লার বাস বন্ধের যে একটা কথা বললেন সেটা আসলে কেউ মানবে না । এর একটা বড় কারণ হচ্ছে অফিস গুলো এক জায়গা কেন্দ্রিক । আর অফিসের কর্মী গুলো সব ঢাকার চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে । যেমন ধরেন যে মানুষটার থাকে মিরপুর কিন্তু তার অফিস মতিঝিলে তার জন্য রিক্সা করে যাওয়া আসা করাটা বেশ ঝামেলার সময় আর ব্যয় সাপেক্ষ ।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ । সব সময় ভাল থাকুন । ঈদ মোবারক !
৩| ২১ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৫:৫৪
ইসিয়াক বলেছেন: প্রথম ঘটনাটা সত্য। দ্বিতীয়টি কল্পনা। আমি নিশ্চিত।
ছবিটাও সুন্দর।
শুভ সকাল।
ঈদ/ইদ মোবারক।
২১ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৫১
অপু তানভীর বলেছেন: কোনটা যে সত্য আর কোনটা সত্য না সেইটা বলবো না কোন ভাবেই । আপনি গেস করতে থাকুন । হয়তো একটা সত্য !
আপনাকেও ঈদ মোবারক !
৪| ২১ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৬:৪৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ইসিয়াক বলেছেন: প্রথম ঘটনাটা সত্য।
ইসিয়াক ভাই, অপু তানভীন রিক্সা চালায় না!
আর রিক্সায় বসা লোকটা যদি অপু মনে করেন
তা হলে তার বউ পোলা মাইয়াকে কোথায় রাখবেন?
২১ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৫২
অপু তানভীর বলেছেন: হইতে পারে ইসিয়াক ভাই সঠিক আবার হতে পারে আপনিও সঠিক । বলা যায় না কোন ভাবেই
৫| ২১ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৭:২৫
সাসুম বলেছেন: ঢাকা শহরে ১ম ঘটনা কত শত বার ঘটাইছি কল্পনা ও করতে পারবি না। একদিন বউ নিয়া বাইর অইছি। রিক্সা ওয়ালারে জিগাইলাম মামা খাইছেন, কয় না। কইলাম কি খাইবেন? আমরা পিজ্জা খাইতে যাইতাচ্ছি। উনি কইল- পিজ্জাই খাবেন। তারে নিয়া পিজ্জা হাটে গিয়া খাওয়াইলাম।
ভাড়া আসে ৭০ টেকা। দিলাম - ১০০ টেকা। কয়, মামা খাইতে অনেক দেরি অইছে, তার লস অইছে। আরো ১০০ দেন :/ বউ তো পারলে আমারে পিটায়।
এটা ছাড়া উত্তরা তে আমার অফিস এর বাইরে এক লোক দাড়ায় থাক্ত আমারে অফিস থেকে বাসায় নিয়ে যাব্বার জন্য। কত দিন তারে সন্ধায় চা, নাস্তা, ডাব, হোটেলে ভাত খাওয়াইছি মনে নাই। এই জিনিষ আমারে আনন্দ দিত। স্পেশালি কাউরে খাওয়াতে আমি অদ্ভুত আনন্দ পাই। এটার সাথে দুনিয়ার কিছুর তুলনা নাই।
আর পরের ঘটনা তর, মনের। তুই বিয়া কর নাইলে এরকম অদ্ভুত গল্প মাথায় আইব খালি। বিয়ার দাওয়াত খাইতে যামুনা টেনশান নিস না। তাও বিয়া কর একটা বা দুইটা।
২১ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৫৬
অপু তানভীর বলেছেন: তোর ঘটনা শুনে আমার বাপের একটা কথা মনে পড়লো । আমার বাপে তখন থাকতো জয়পুরহাট । বিডিআর ক্যাম্পের পাশে ছোট একটা এলাকা । আমার বাপকে সবাই চিনতো । সেখানে বেশ কয়েকজন রিক্সাওয়ালা আবার বাপ কে দেখলেই দৌড় এগিয়ে আসতো তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য । কয়েকজন দাড়িয়েও থাকতো । আর তারা কখনও ভাড়া চাইতো না বাপের কাছে । কারণ ওরা জানতোই যে চাইলেই লস । বাপে যা দিবো তা চাওয়ার থেকে বেশিই হবে !
আমার বিয়ার দেরি আছে । সামনের বছর শেষের দিকে হওয়ার একটা সম্ভবনা আছে !
৬| ২২ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৫:০৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
উপরে মন্তব্যের ঘরে ছোট্ট পরিসরে আমি বিষয়টি ভালভাবে গুছিয়ে বলতে
পারিনি বলে বিষয়টাতে কিছুটা অস্পষ্টতা থেকে যায় বলে মনে হল ।
আমি শহড়ের কেন্দ্রস্থলে শুধু দুরপাল্লার বাস বন্ধের কথা বুজাতে চাইনি ,
আমি বলতে চেয়েছিলাম রাজধানী শহড়ের কেন্দ্রস্থলে একটি নির্দিষ্ট
পরিসরে সকল প্রকারের যান্ত্রিক যানবাহন ( যথা বাস ,ট্রাক , প্রাইভেট কার
পিক আপ ভেন প্রভৃতি ) বন্ধ করে সেখানে শুধু মানুষের হাটা পথ চালু রাখার
কথা ।
উদাহরণ স্বরূপ আমার নীজের অভিজ্ঞতা হতে বলছি ইউকের একটি বেশ
বড় শহড় নরউইচ সিটির কেন্দ্রস্থলে প্রায় কয়েক বর্গ কিলোমিটার ব্যসের/
পরিধির জায়ড়া জুরে সকল ধরনের গাড়ি ও যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল
নিষিদ্ধ । নীচে ছবি দেখানো হলো
ম্যাপে প্রদর্শিত লাল দাগের ভিতরে কোন গাড়ী প্রবেশ
করতে পারবেনা । ঐ দাগের বাইরে বিভিন্ন স্থানের
বহতুল কার পার্কিং এ গাড়ী রেখে কিংবা যাত্রী নামিয়ে
তাদের জন্য উন্মোক্ত রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করতে
পারবে । মানুষজন ঐ চিহ্নিত জায়গার বাইরে যানবাহন
হতে নেমে শহড়ের কেন্দ্র স্থলে অবস্থিত অফিস বা বিপনী
বিতান সমুহে পদব্রজে গমন করে তাদের কর্ম সারে ।
ঐ এলাকার সকল রাস্তার উপরেই হালকা গোলাপী
তথা পুড়া ইটের রং এর মত করে রাখা হয়েছে , যেন
বুঝা যায় এ সকল রাস্তা শুধু পদব্রজে গমনা গমনের জন্য।
আমাদের দেশের লোকজন এককদমও পায়ে হাটতে চায়না
বলে বলেছিলাম শহড়ের কেন্দ্রস্থলে শুধু রিকসা থাকতে
পারে , ভারী ইঞ্জিন চালিত দ্রুতগামী যানবাহন না থাকলে
রিক্সাগুলি স্বাচ্ছন্দভাবে নিরাপদে যাত্রী নিয়ে শহড়ের
কেন্দ্রস্থলে যাতায়াত করতে পারবে । বায়ু দুষন ও শব্দ
দোষনও কমে যাবে । যাহোক, আমাদের জন্য এটা
এই মহুর্তে একটি ইউটোপিয়ান আইডিয়া মনে হতে
পারে । তবে রাস্তার পরিমান বৃদ্ধি না পেয়ে ঢাকা
শহড়ে যে হারে প্রাইভেট কার এর সংখ্যা বাড়ছে
তাতে করে সিটি সেন্টার এলাকায় যানজটে ও
গাড়ীর ভীরে আটকা পরে গাড়ী হতে নেমে পায়ে
হেটেই মানুষজনকে তাদের গন্তব্যে যেতে হবে ,
সেদিন খুব একটা দুরে নয়।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৬
অপু তানভীর বলেছেন: আপনার এই পরিকল্পনা অবশ্য আমাদের ঢাকা শহরে এপ্লাই করা একেবারেই অসম্ভব । এর মূল কারণ হচ্ছে অপরিকল্পিত নগরায়ন । যদি সঠিক ভাবে পরিকল্পনা করা যেত তাহলে হয়তো এমন চমৎকার কিছু করা সম্ভব হত ।
ক্যান্টরমেন্টের ভেতরে এই রকম ব্যবস্থা খানিকটা রয়েছে । সেখানে কেবল হাতে গোনা দুটো কি তিনটে বাস ঢুকতে পারে । ভেতরে রিক্সা আছে আর ব্যক্তিগত গাড়ি - এই হচ্ছে ভেতরে চলাচল । অন্যদিকে গুলশান এরিয়াতেও এমন কিছু সিস্টেম করা আছে । যদিও সেখানে প্রাইভেট গাড়ির ব্যাপারে কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই । তবে সেখানে নির্দিষ্ট এলাকাতে কোন লোকাল বাস চলে না । কেবল মাত্র গুলশান এরিয়াতে চলার জন্য আলাদা বাস রয়েছে যা চক্রাকারে প্রদক্ষিণ করে । সেটাই চলে ।
ধন্যবাদ আলী ভাই ।
৭| ২২ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৮:২৩
বিজন রয় বলেছেন: রিকশা চালক কেন নেতৃত্ব সঠিক না হলে কোন পক্ষের ভিতর একতা আসে না।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৭
অপু তানভীর বলেছেন: আসবেও না কোন দিন মনে হয় !
৮| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:২৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: কল্পনার চেয়েও সত্য এবং সুন্দর ঘটনাগুলো বেশীরভাগ কল্পনাতেই ঘটে ,বাস্তবতার বেড়াজালে এবং নির্মমতায় এসব ঘটার সুযোগ যদিও খুবই কম তবে একেবারে যে ঘটেনা তাও নয়।
আর তাইতো আজও পৃথিবী এত সুন্দর এবং ভালবাসার জায়গা।গল্পে +++।
২৪ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৫২
অপু তানভীর বলেছেন: কল্পনার মত মানুষের জীবন হয় না । কিন্তু মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা কল্পনাকেও হার মানায় !
পৃথিবী আসলেই সুন্দর আর ভালোবাসার জায়গা !
ভাল থাকবেন সব সময় !
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:০৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দ্বিতীয় ঘটনাটা কি আপনার সাথে ঘটেছিলো!!
এখন কি তিনি আপনার সাথে থাকেন ?