নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের এলাকাতে ঈদের আগের দিন রাতে পিকনিক করার একটা চল আছে । বিশেষ করে স্কুল কলেজের ছেলেদের মাঝে এটা বেশি দেখা যায় । অবশ্য আমার আগে কখনই রাত জেগে পিকনিক করা হয় নি । কারণ বাসায় সব সময় নিয়ম ছিল একদম সন্ধ্যার পরপরই বাসায় চলে আসা । তাই চাইলেও আগে কখনই রাতে এই পিকনিক করাটা হত না । আমার মনে আছে আমি প্রথম এমন একটা পিকনিক করেছিলাম ভার্সিটির দ্বিতীয় বর্ষে । বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরপরই বিশেষ করে যখন থেকে নিজের ব্যয় নিজেই বহন করতে শুরু করলাম তখন একটা ব্যাপার খেয়াল করা শুরু করলাম যে বাসায় সেই আগের মত শাসনে আমাকে রাখা হচ্ছে না । আমার মনে আছে সেইবার বাসায় ফিরতে আমার প্রায় রাত বারোটা বেজে গিয়েছিলো । সেইবারই প্রথম এতো রাত অবদি আমি বাইরে ছিলাম ।
যাই হোক এইপর থেকে প্রায় প্রতি কোরবানীর ঈদেই আমরা চেষ্টা করতাম ঈদের আগের দিন এই পিকনিক টা করার জন্য । রোজার ঈদে আমাদের স্কুলের বন্ধুদের সবাই চুয়াডাঙ্গাতে আসতো না । কিন্তু দেখা যেত কোরবানীর ঈদে সবাই মোটামুটি আসতো । মূলত আমি আর আরেকজন এই পিকনিকের দায়িত্বে থাকতাম সব সময় । সবাইকে ফোন দাও, টাকা তোল, তারপর বাজার কর এই সব কাজ আমি আর আমার ঐ একজন বন্ধুটিই করতাম । সন্ধ্যার পরে সবাই এসে হাজির হত । আশে পাশের বন্ধুদের বাসা থেকে হাড়ি পাতিল আসতো । রান্না হত আমাদের অন্য আরেক বন্ধুর বাসায় । গল্প আড্ডা খেতে খেতে রাত এগারোটা বারোটা বেজে যেত প্রতিবার । করোনার কারণে এই দুই বছর এই পিকনিকটা হয় নি । এবার আবারও ঈদের আগের দিন পিকনিক করা হল । তবে এবার আমি একদম বাসা থেকে বের হই নি । সন্ধ্যার সময় গিয়ে দেখলাম যে সব কিছু যোগার করা হয়ে গেছে । রাজহাঁস কেনা হয়েছে একটা ।
রাসেল রান্নায় কাজে লেগে গেছে এরই ভেতরে । আমরা এভাবে বসে থাকা যায় না । আমিও হাত লাগিয়ে দিলাম । রান্না হতে হতে সেই সাড়ে দশটা বেজেই গেল । তারপর এক সাথে খাওয়া দাওয়া ।
আমরা স্কুল ছেড়েছি সেই ২০০৫ সালে । সময়ের হিসাবে এটা একটা লম্বা সময় । কিন্তু একটা ব্যাপার আমাদের এই স্কুলের বন্ধুদের মাঝে আছে সেটা হল আমাদের সম্পর্কে সেই স্কুলে যেমন আছে এখনও ঠিক তেমনই আছে । আমাদের মাঝে অনেকে অনেক স্থানে চলে গেছে । বিয়ে শাদী করে সবাই জীবনে সেলেটড হয়ে গেছে । কিন্তু এখনও আমাদের মাঝে সেই আন্তরিকতা রয়ে গেছে । আমরা সেই স্কুল জীবনে ঠিক যেভাবে একে অন্যের সাথে ব্যবহার করতাম, ইয়ার্কি ঠট্টা মারতাম ঠিক একই ভাবে সবার সাথে আচরন করি ।
আমার কলেজ জীবনে কোন বন্ধু ঠিক তৈরি হয় নি । স্কুলে যাদের সাথে পড়তাম কলেজেও তারাই ছিল । নতুন যারা হয়েছিলো তারা কোথায় কোন দিকে চলে গেছে কোন খোজ নেই । এখনও ঠিক আগের মতই টিকে আছে স্কুল জীবনের বন্ধুরা । এমনও কিন্তু না যে আমাদের মাঝে কথা হয় নিয়মিত । আমাদের কোন গ্রুপও নেই ঠিক মত । কিন্তু ঠিক ঠিক সবাই হাজির হয়ে যায় এই সময়ে । রোজার ঈদে আমরা এক সাথে একটা ইফতার পার্টি করি আর কোরবানীর ঈদে এই পিকনিকটা !
পিকনিকের কোন ছবি তুলতে আমাদের কারোরিই মনে থাকে না কোন বার । আসলে গল্প আড্ডায় এমন মেতে থাকি যে সময় কোন দিক দিয়ে চলে যায় কারো খেয়াল থাকে না আর ছবি তো দুরে থাক সামনের বার পিকনিক হলে এবার মনে করে অবশ্যই ছবি তুলবো ! উপরে যে ছবিটা দেখা যাচ্ছে সেটা খিচুড়ি বসানোর সময়ে তুলেছিলাম ।
১২ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১২:১৯
অপু তানভীর বলেছেন: স্কুলের বন্ধুদের সাথে এই বন্ধুত্ব আন্তরিকতাটা রয়ে গেছে । থাকবে আশা করি আজীবন !
২| ১২ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ৯:১৫
ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমার স্কুলের বন্ধুদের মধ্যে মাত্র একজনের সাথে এখন যোগাযোগ আছে, বেশ ভালোভাবে। বাকী অনেকের কথা মাঝে-মধ্যে এদিক-সেদিক থেকে খুচরা আকারে কানে আসে, কিন্তু যোগাযোগ আর হয় না। সেইদিক দিয়ে আপনি ভাগ্যবান। আপনার স্কুল ছাড়ার পর খুব বেশী সময় এখনও পার হয় নাই (আমার তুলনায় আর কি!!!)। এই যোগাযোগ আর বন্ধনটা অটুট থাকুক বাকী জীবন।
খিচুরীর টেস্ট কেমন হয়েছিল? আর রাজহাস??
১২ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৫৭
অপু তানভীর বলেছেন: আসলে সারা বছর আমাদের কারোই কারো সাথে দেখা হয় না । স্কুল বন্ধুদের কেবল একজন থাকে কেবল ঢাকাতে । তার সাথে দেখা সাক্ষাত হয় । আর সবাই নানান দিকে থাকে । কেবল ঈদের সময়ে আসে চুয়াডাঙ্গাতে । তখন সবাই এক সাথে হওয়া হয় ।
আপনার তুলনায় অবশ্য খুব বেশি সময় হয় নি এটা সত্য । তাও তো প্রায় ১৭ বছর কম কিন্তু না । এতো গুলো বছরে যখন আগের মত সব আছে সামনেও থাকবে আশা করি ।
হ্যা খিচুড়ি আর রাজহাস ভাল রান্না হয়েছিলো । বিশেষ করে রাজ হাসটা খুবই টেস্ট হয়েছিলো । খিচুড়ি রান্নার সময় মনে হয়েছিলো হয়তো ভাল হবে না । চুলাটা একটু ছোট ছিল বড় ডেস্কির তুলনায় কিন্তু খাওয়ার সময় দেখা গেল তেমন কিছুই না । রান্না ছিল ভাল !
৩| ১২ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:৪২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি নিভৃতচারী..... তাই আমি কখনও কোলাহল পিকনিক জাতীয় আনন্দ উৎসব পছন্দ করি না।
১২ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৫৮
অপু তানভীর বলেছেন: আমিও সব সময় ভীড় এড়িয়ে চলি । তবে কাছের কিছু বন্ধু বান্ধব আছে । তাদের সাথে গল্প গুজব হয় তখন বাসায় যাই ।
৪| ১২ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:২৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমরাও আগে ঈদের আগের রাতে নানান পার্টি করতাম। এখন তেমন ভাবে হয়ে উঠেন না।
১২ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৫৯
অপু তানভীর বলেছেন: অবশ্য এখন সবাই ব্যস্ত নিজ নিজ জীবনে । তবে চাইলে কিন্তু এই ছুটির দিন গুলোতে এক সাথে বন্ধুদের সাথে কিছু সময় পার করাই যায়!
৫| ১২ ই জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:১৫
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে রাত ১২ টা পর্যন্ত বাইরে ছিলেন, বাহ!!এত ভদ্র!
১২ ই জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:৩৮
অপু তানভীর বলেছেন: রাতে ১২ টা পর্যন্ত বাইরে থাকলে অভদ্র ?
শ্লার বাঙাল যেই দেশেই থাকুক তাদের চিন্তা ভাবনা যে সেই মধ্যযুগের বলদের মত তা আর বদলাবে না !
৬| ১২ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:১৬
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
আমাদের সময়ও আমরা পিকনিক করেছি। বিচিত্র কারণে পিকনিকে খিচুড়িই রান্না হতো, কারণ এছাড়া আর কিছু রান্না জানতাম না। সময় অনেক দ্রুত চেলে যায়। - সময় ও সুযোগ হলে বিস্তারিত লিখবো কোনো একদিন।
১৩ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১০:১২
অপু তানভীর বলেছেন: খিচুড়ি রান্নার প্রধান কারণ হচ্ছে এটা সহজেই খাওয়া যায় অন্য কোন তরকারি না হলেও চলে । অন্য দিকে ভাত পোলাও হলে সাথে খাওয়ার জন্য আরও নানান কিছু দরকার হয় !
সময় সুযোগ করে নিয়ে লিখে ফেলুন !
৭| ১৩ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১০:৪৯
ইসিয়াক বলেছেন: খিচুড়ি আর রাজহাঁসের মাংস!
জিভে জল এসে গেল যে... হা হা হা। বনভোজন নিয়ে আমারও এমন চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা আছে। এসব স্মৃতিগুলো আসলেই অন্য মাত্রার। ঈদ নিশ্চয় ভালো ই কেটেছে। যাহোক আপনাদের বাড়টা বেশ সুন্দর। চারপাশে গাছগাছালিতে ভরা। এমন নিরিবিলি পরিবেশ আমার ভীষণ পছন্দ।
ঈদের শুভেচ্ছা রইলো।
১৪ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:১৮
অপু তানভীর বলেছেন: হাঁসের মাংস রান্না করা খুব কঠিন একটা ব্যাপার । বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় মাংসে একটা কেমন গন্ধ থেকে যায় । সবাই এটা ঠিকমত রান্না করতে পারে না । তবে আমাদের রান্নাটা হয়েছিলো খুবই চমৎকার । অনেক দিন পরে এমন চমৎকার হাঁসের মাংস রান্না খেলাম।
আমাদের বাড়িটা আসলে ছবিতে যতখানি নিরিবিলি মনে হচ্ছে বাস্তবে আসলে ততখানি না । আমাদের বাড়িটা একদম প্রধান সড়কের পাশেই । তাই সারাদিন সেখানে গাড়ি চলাচলের আওয়াজ থাকেই । তবে রাত হয়ে গেলে যখন যানবাহন চলাচল কমে যয় তখন বেশ চমৎকার হয়ে ওঠে ।
ঈদ কেটেছে একই রকম । এখন আসলে বাসার ঈদ গুলো সব একই রকম ! সারাদিন শুয়ে বসে কাটানো আর !
আপনাকেও ঈদের শুভেচ্ছা রইলো ।
৮| ১৬ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:৩৭
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: আমরাও পিকনিক করি তবে ঈদের পরে।
হার্ডিঞ্জ ব্রীজ এর আশেপাশেই আমাদের পিকনিক স্পট।
১৭ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১২:২৬
অপু তানভীর বলেছেন: তাহলে আমার মত অনেকেই দেখা যাচ্ছে পিকনিক করতো ।
আর আপনাদের পিকনিক স্পটটা তো সত্যিই চমৎকার দেখা যাচ্ছে ।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১১:৫৮
ভার্চুয়াল তাসনিম বলেছেন: খুব ভালো। বন্ধুত্ব সবসময় সুন্দর। অম্লান থাকুক আজীবন।