নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুভূতির কী নিদারুণ অপচয়

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১০:৪১

আমার কাছে অনলাইনের বেশিরভাগ মানুষ, বিশেষ করে অনলাইনে বেশিরভাগ বাঙালিই হচ্ছে মিথ্যাবাদী। তাই অনলাইনে কিছু দেখে সেটা চট করে বিশ্বাস করে নেওয়াটা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু তারপরও এমন কী, মাঝে মাঝে চোখের সামনে চলে আসে যা দেখলে মনের ভেতরে কোনো সন্দেহ আসে না। প্রথমবারেই বিশ্বাস চলে আসে। এমন একটা ঘটনা ঘটেছিল কয়েকদিন আগে। এই ভিডিওটা অনেকেই দেখেছেন কিংবা এই নিয়ে সংবাদ আশা করি অনেকেরই সামনে এসেছে। কলেজের ড্রেস পরা একটা মেয়ের ছবি। সে সময়মতো এইচএসসি পরীক্ষায় এসে হাজির হতে পারেনি। এই কারণে কান্না। এর পেছনে কারণটা জানার পরে সবার মনের ভেতরেই মেয়েটার জন্য একটা সহানুভূতি এসে হাজির হয়েছে। মেয়েটার বাবা নেই। মা ক্যানসারের রোগী। পরীক্ষার সকালে মায়ের শরীর খারাপ হয়ে যায়, সম্ভবত স্ট্রোক করে এবং মাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় মেয়েটি এবং এই কারণেই তার পরীক্ষার হলে আসতে দেরি হয়েছে।
বেশ সমালোচনা হলো কর্তৃপক্ষের। কেন মেয়েটিকে ঢুকতে দেওয়া হলো না? প্রশাসন এত নিষ্ঠুর কেন! মানবিক প্রশাসন আমরা কবে পাবো! আলোচনা-সমালোচনা, পত্রিকায় লেখালেখির ফলে প্রেস সচিব জানালো যে মেয়েটির পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।
মেয়েটির গল্প জানার এবং তার কান্নারত ছবি দেখে আমার মনের ভেতরে মেয়েটির জন্য একটা অচেনা কষ্ট অনুভব হলো। আমার মনে আছে পুরো একটা দিন আমি মেয়েটির দুর্ভাগ্যের জন্য মন খারাপ করে ছিলাম। একবার কল্পনা করে দেখুন, বাবা নেই, মেয়েটির মায়ের আবার ক্যানসার, তার ওপরে পরীক্ষার দিনই মায়ের শরীর খারাপ হতে হলো! মেয়েটির গল্প শুনলে মনে হবে যেন ওপরওয়ালা দুনিয়ার সব দুর্ভাগ্য বুঝি তার কপালেই লিখে রেখেছিলেন!
তারপর যখন প্রেস উইং থেকে জানানো হলো যে মেয়েটার পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে তখন মনে একটু শান্তি এলো। যাক, কিছুটা শান্ত হয়ে এলো মন। কিন্তু তারপরই আমরা কী জানতে পারলাম? আমরা জানতে পারলাম যে মেয়েটা মায়ের অসুস্থতার যে গল্প বলেছিল সেটা আসলে সত্য নয়! মন্ত্রণালয়ের দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি থেকে এই একই রিপোর্ট এসেছে। সোজা কথায়, মেয়েটি কোনো কারণে সময়মতো পরীক্ষা দিতে আসতে পারেনি এবং নিজের সেই না আসতে পারাটা ঢাকার জন্য মায়ের অসুস্থতার ব্যাপারে মিথ্যা বলেছে!
সত্যি বলতে কী, পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে, এসএসসি কিংবা এইচএসসি, যে ছাত্রছাত্রীরা সময়মতো পরীক্ষার হলে আসতে পারে না তাদের সত্যিই পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা নেই। একজন পরীক্ষার্থীর জন্য এই পরীক্ষা দেওয়ার থেকে অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকতেই পারে না। হ্যাঁ, দেরি কখন হতে পারে? যখন দেশে যুদ্ধ বেঁধে যায় কিংবা প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয় তখন হয়তো দেরি হতে পারে। দয়া করে জ্যামের অজুহাত দেবেন না। পাঁচ লাখ ছাত্রছাত্রী যেখানে জ্যামের ভেতরে পৌঁছাতে পারছে, তুমি পারোনি, তার মানে তোমার ঘাটতি রয়েছে। জ্যাম আমাদের জীবনের অংশ। জীবনের এত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় তুমি যদি সেটাকে অতিক্রম করতে না পারো তাহলে তোমার পড়াশোনার দরকার নেই।
মেয়েটা নিজের দোষ ঢাকতে কী অবলীলায় তার মায়ের অসুখের মিথ্যাটা ব্যবহার করে ফেলল! মনটা বিরক্তিতে ভরে উঠল। সেদিন মেয়েটার জন্য মনের ভেতরে যে কষ্টটা অনুভব হয়েছিল আজকে তার থেকে দ্বিগুণ বিরক্তিতে মন ছেয়ে গেল। সেই সঙ্গে নিজের ওপরেও বিরক্তি এসে হাজির হলো। মনে হলো যে কেন এভাবে নিজের এই অনুভূতিটাকে নষ্ট করলাম একটা মিথ্যাবাদীর জন্য! এই মেয়েকে কষে একটা চড় দিতে পারলে একটু ভালো লাগত!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১০:৪৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বড়োরা এমন করে হয়তো দেখেছে । B:-)

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১১:১৭

অপু তানভীর বলেছেন: আমাদের স্কুলগুলোতে ভাল নাম্বার পাওয়া শেখানো হয় অথচ সৎ হতে হবে সেটা শেখানো হয় না!

২| ১২ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১২:২৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমি অনলাইনের কোনকিছুই চট করে বিশ্বাস করি না। আবার বাংলাদেশের তদন্ত কমিটিগুলোর রিপোর্টও চট করে বিশ্বাস করি না। মেয়েটার ভিডিও দেখেছিলাম, মনও খারাপ হয়েছিল। কিন্তু তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশের পরে মেয়েটার কোন বক্তব্য এসেছে? সে কি স্বীকার করেছে যে, যে সে মিথ্যা বলেছে? আমাদের ''সাংঘাতিক''রা কোন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দিয়েছে? চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসার আগে এইসব প্রশ্নের উত্তর জানা জরুরী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.