নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগে স্বাগত!

আমি ব্লগে পড়তে এসেছি। লিখালিখি হয়না। একনিষ্ঠ পাঠক বলতে পারেন। ভালো কোন গুন নাই। খারাপ অনেক। নিজের খারাপ কথা প্রচারে আগ্রহ নেই।

অরিজিনাল জামির

পরে বলি?

অরিজিনাল জামির › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইন্টারনেটের শক্তিঃ ডু ইট ইউরসেলফ

০৫ ই মে, ২০১৪ সকাল ৭:২৩

আপনি আর আমি কত ভাগ্যবান, তা কখনো চিন্তা করেছেন? একটি অসাধারন মহাশক্তি ২৪ ঘন্টা আমাদের পাশে রয়েছে। যখন দরকার তখনই। তার নাম ইন্টারনেট।



আমি খুব শক্ত ভাবেই বিশ্বাস করি, জ্ঞানই শক্তি। নলেজ ইজ পাওয়ার। মাত্র কয়েক দশক আগেও, এই জ্ঞান অর্জনের পথটা মানুষের জন্য সুগম ছিলোনা। ছিলো ব্যায়বহুল আর দুর্গম। আর এখন আপনি যা জানতে চান, মাউসের এক ক্লিক দূরেই তার ভান্ডার। আপনি যা চান, প্রায় সব করার ক্ষমতা এখন আপনার আছে। এবং এই ক্ষমতা দিয়ে আপনি চাইলে, এই দুনিয়াটা চেইঞ্জ করে দিতে পারেন।



একটা সত্যি ঘটনা বলি। আফ্রিকার দেশ মালয়য়ে জন্ম নেন উইলিয়াম কামকাম্বা।১৯৮৭ সালে। দারিদ্র্যের কারণে তিনি প্রাথমিক শিক্ষাও শেষ করতে পারেননি। কিন্তু কোন কিছু শেখার প্রতি তার ছিলো প্রবল আগ্রহ। তিনি তার গ্রামে রেডিও সারাইয়ের কাজ করতেন এবং অবসর সময়ে কাছাকাছি শহরের লাইব্রেরিতে পড়ে থাকতেন। একদিন একটি ফিজিক্সের বইয়ের কাভারে তিনি উইন্ডমিলের ছবি দেখতে পান। এর আগে কখনো তিনি উইন্ডমিল দেখেননি। তার বেশ আগ্রহ তৈরি হয়। উইন্ডমিল কি, কিভাবে কাজ করে, কিভাবে বানানো যায় এইসব নিয়ে বই পড়া শুরু করেন। ইয়া মোটা মোটা একটার পর একটা বই পড়ে শেষ করতে লাগলেন। অবশেষে তিনি কারো কোন সাহায্য ছাড়াই তার গ্রামে উইন্ডমিল তৈরি করেন এবং উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে গ্রাম আলোকিত করেন।



গহিন গ্রামের কোন এক যুবকের এই প্রচেস্টা মোটামুটি সবখানে সাড়া ফেলে দেয়। তিনি কিভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন, তা নিয়ে বক্তৃতা দেয়ার জন্য টেড (TED) কত্রিপক্ষ তাকে আমন্ত্রণ করে। তিনি শোনালেন, বছরের পর বছর রাতদিন পরিশ্রম করার পর, তিনি কিভাবে উইন্ডমিল তৈরি করলেন। এটা ২০০৭ সালের কথা। তিনি তখনো কোন কম্পিউটার চোখে দেখেনি। টেডের লোকজন তার সামনে ইন্টারনেটসহ একটা কম্পিউটার এনে দিলো। গুগল ওপেন করে দিয়ে বলল- তোমার যা জানতে ইচ্ছে হয়, এইখানে লিখে সার্চ করো। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি লিখলেন- উইন্ডমিল। এবং কয়েক লাখ রেজাল্ট তার সামনে হাজির। তিনি কাঁতর কন্ঠে বললেন- “where was this GOOGLE, all the time that I needed it!!”



উইলিয়ামের প্রথম উইন্ডমিল ঠিকমতো কাজ না করলেও, তিনি পেয়ে যান মহাক্ষমতা। ইন্টারনেট। তিনি এখন একজন লেখক ও উদ্ভাবক। উইকিতে তার প্রোফাইলঃ http://en.wikipedia.org/wiki/William_Kamkwamba



ইন্টারনেট আপনাকে সব কিছু দিতে পারে। সব। এবং ফ্রি।



ফলে পৃথিবী জুড়ে যে নিরব বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে তার নাম- ডু ইট ইউরসেলফ। নিজে করুন। একাডেমিক টার্ম – Autodidactic (knowing a subject without teacher or formal education). khanAcademy, coursera, udacity সহ শত শত মিডিয়া বিশ্বের সেরা লেকচারগুলো পৌঁছে দিচ্ছে আপনার হাতের নাগালে। আপনার ড্রইং রুমেই পৌঁছে যাচ্ছে হার্ভার্ড, এমআইটি কিংবা স্ট্যানফোর্ড! ফলে এখন জ্ঞানের চাইতে সহজলভ্য আর কি আছে!

“ডু ইট ইউরসেলফ” এর মানে এই নয় যে “ডু ইট এলোন!” ইন্টারনেটের এই জগতে আপনি একা নন। আমি গভীর রাতে আমার রুমে বসে এই লিখাটি লিখছি, আপনি হয়তো আপনার বাসায় দুপুরের ঘুমের আগে বুকের উপর ল্যাপ্টপ নিয়ে আরাম করে পড়ছেন। আমার আপনার মধ্যে এই অসাধারণ যোগাযোগ ব্যাবস্থাও কিন্তু “ডু ইট ইউরসেলফ” বিল্পবের ফল। অর্থাৎ ইন্টারনেটে প্রচুর মানুষ রয়েছে, যারা ঠিক আপনারই মতো। একই চিন্তা ধারার মানুষ! তারা আপনাকে যেকোন সময় সাহায্য করতে প্রস্তুত।



ইন্টারনেট লার্নিং এর এই প্রক্রিয়াটি তিন ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে আপনাকে তথ্যটি খুজে বের করতে হবে। গুগল, উইকিপিডিয়া, ইউটিউবের মতো সাইটগুলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। দ্বিতীয় ধাপ হলো, তা ফরওয়ার্ড করা। ফেইসবুক, টুইটার এবং ফোরাম সাইট গুলাতে তথ্যটি শেয়ার করা এবং কার্যকরী ডিসকাশন তৈরি করা। শেষ ধাপ হলো, পে ইট অফ! দেনা শোধ করা। আপনি যা শিখেছেন, তা অন্য কারো জন্য লিখে যাওয়া। শেষ ধাপে আপনি শিক্ষক।

ভালো করে চিন্তা করে দেখুন, এই প্রক্রিয়াটি প্রচলিত শিক্ষা ব্যাবস্থা থেকে অনেক আধুনিক ও কার্যকরী। লেখাপড়ার বিষয় থেকে শুরু করে ক্লাসটাইম পর্যন্ত সব কিছু আপনার মর্জিমাফিক। আপনি যতটুকু চান, ঠিক ততটুকুই। অতিরিক্ত বোঝা নেই। একঘেয়েমি নেই। উৎকট পরীক্ষার চাপ নেই। যতটুকু পড়া, শুধু জ্ঞানের জন্য পড়া। যতটুকু শেখা, শুধু আত্মউন্নয়নের জন্যই শেখা।



তাই এই বিপ্লবে অংশগ্রহণ করুন। যে কোন কিছু দিয়েই শুরু করতে পারেন। আপনার নষ্ট হওয়া টর্চ লাইটটা, ঠিক করতে বসে যান। ইন্টারনেট থেকে রেসিপি নিয়ে ইতালিয়ান কোন ডিশ রান্নায় লেগে যান। নিজের ওয়েবসাইটটা নিজেই তৈরি করতে শিখুন। অবসর সময়ে ছবি আকা শিখুন। কিংবা গান শিখুন। নতুন কোন ভাষা শিখতে বসে যান। জাদু শিখুন। বিজ্ঞানের বেসিক এক্সপেরিমেন্টগুলা করুন। মোট কথা, যা আপনার ইচ্ছা, একদম ক্ষুদ্র কোন বিষয় দিয়ে হলেও পা রাখুন – অটোডাইডাক্টিকের এই যুগে। গ্যারান্টি দিচ্ছি, জ্ঞানের এই সমুদ্র আপনাকে আজীবন মোহগ্রস্ত করে রাখবে!



// লিখাটি ন্যাশ ইসলাম, সিইও, ম্যাঙ্গোজ মোবাইল ইঙ্করপোরেশন’এর টেডএক্স ঢাকা বক্তৃতা থেকে অনুপ্রানিত

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:১২

নীল জোসনা বলেছেন: অনুপ্রেরনা মূলক লেখা ।

ধন্যবাদ আপনাকে ।

২| ০৫ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:৪৭

এস.কে.ফয়সাল আলম বলেছেন: চমৎকার অনুপ্রেরণাদায়ক লেখা।

আসলেই এই ইন্টারনেট শক্তি ছাড়া বর্তমান সময় অচল মনে হয়।

ধন্যবাদ লেখককে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.