![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবাক শিশু মহাবিশ্বের প্রতিটা মলিকুলকে ভালবাসে এবং অবাক হয়ে অনুভব করে। অবাক শিশু কারো মত হতে চায়না, অবাক শিশুই থাকতে চায়।
অনেকদিন আগে রিডার্স ডাইজেস্টে ভারতের বংশদ্ভূত Santha Rama Rau এর একটা আর্টিকেল পরেছিলাম, "Have we lost our senses?" যেখানে লেখিকা বলেছিলেন তার ছোটবেলার কথা। একজন মাছওয়ালার কাছ থেকে নেয়া একটা বরফের টুকরার মধ্যে মাছের আঁইশ আটকে থাকতে দেখে ছোট্ট লেখিকার চরম অবাক এবং আনন্দিত হওয়ার কথা। বরফের টুকরার মধ্যে মাছের রূপালী আঁইশ এবং সূর্যের আলো পরে তার মধ্যে রংধনুর সাতরং ঝিকমিক করে ওঠা একটা শিশুর মধ্যে আনন্দ জাগাবে এটাইতো স্বাভাবিক।
অবাক শিশুর কাছে একজন মানুষের সকল কর্মকান্ডের প্রধান উদ্দেশ্য যেটা মনে হয় তা হল সুখী হওয়া, অন্তরের প্রশান্তি অর্জন করা। কিন্তু পঞ্চইন্দ্রিয়ের ব্যবহার ছাড়া প্রশান্তি অর্জন কিভাবে সম্ভব তা অবাক শিশু বুঝতে পারেনা। ইন্দ্রিয় গুলো ব্যবহার করে খুব সহজেই, খুব ছোট ছোট বিষয়গুলো থেকেই আনন্দ পাওয়া সম্ভব। আমার মনে হয় আমরা শুধুমাত্র আমাদের মস্তিষ্ককে ব্যবহার করাতেই শিখছি। শিক্ষাগত, পেশাগত সাফল্যের জন্য আপাত দৃষ্টিতে মস্তিষ্ক ছাড়া আর কিছু ব্যবহারের প্রয়োজন হয়না। (যদিও আবার অনেক সময় মস্তিষ্কের ভুল ব্যবহারও শিখছি!) তবে অন্তরের প্রশান্তির জন্য শুধুমাত্র মস্তিষ্কের ব্যবহার অবাক শিশুর কাছে যথেষ্ট মনে হয়না। ইন্দ্রিয়ের ব্যবহার কমাতে কমাতে যে আমরা শূণ্যের কোটায় এনে ঠেকিয়েছি!
স্কুল ছুটির পরে কোন স্কুলের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় একটা কমন দৃশ্য নিশ্চয়ই আপনার চোখে পরেছে; ছোট ছেলে বা মেয়েটা বেলুনওয়ালার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে আর তার বাবা বা মা তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে বাবা-মারা তাদের সহজে আনন্দিত হওয়ার ক্ষমতা প্রায় নষ্টতো করেই দিয়েছে, তাদের শিশুদেরটা-ও নষ্ট করার ধান্দায় আছে। দুঃখজনক। তারা তো নিশ্চয়ই পড়াশোনার দোহাই দিবেন। কিন্তু অবাক শিশুর মনে হয়, পড়াশোনার নামে আমরা যা করছি তা-ও কম দুঃখজনক না। স্ট্যান্ডার্ড একটা দেশের পড়াশোনার অবস্থা দেখুন, সেখানে এত ছোট ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার চাপ কি এত বেশি? আস্তে আস্তে চাপটা বাড়ে। আর আমাদের দেশে? প্লে গ্র“পে পড়া একটা বাচ্চা দিনে কয় ঘন্টা পড়ে আর ভার্সিটির একটা ছাত্র দিনে কয় ঘন্টা পড়ে? আমাদের এক টিচারের ভাষায়, পিরামিড উল্টে দিয়ে বসে আছি আমরা। তবে দেশের যে অবস্থা, তাতে “শাইন” করতে হলে নিঃসন্দেহে এই প্রসিডিউর মেনেই চলতে হবে। তবে আপনি করতে চান বা না চান মানতে বাধ্য হবেন যে সিস্টেমে চেঞ্জ দরকার।
দক্ষিনের জানালা দিয়ে পাশের জলাটার কচুগাছগুলো দেখা যায়। বাতাসে কি চমৎকার দুলে দুলে ওঠে। আর বৃষ্টি হলেতো কথাই নেই, কি চমৎকার খেলা করে কচুপাতার পানি। অবাক শিশু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে পারে সেদিকে একটানা অনেকক্ষন। পানিতে বৃষ্টির শব্দ থেকে শুরু করে বজ্রপাতের মহাশব্দ শুনে অবাক শিশু অবাক হয়। প্রচন্ড গরমে দক্ষিনের বৃষ্টিভেজা বাতাসের স্পর্শে অবাক শিশু শিহরিত হয়। ইলিশ ভাজার গন্ধের মত মরিচ ভাজার গন্ধও ফেভারিট। অবাক শিশু ঝাল খেতে পারেনা, কিন্তু বোম্বে মরিচের স্বাদ নাকের, চোখের জলের সাথে একাকার হয়ে এক অন্যরকম অনুভূতির জন্ম দেয়।
অবাক শিশু তার মস্তিষ্কের সাথে তার ইন্দ্রিয়গুলোরও ডেভলপ করতে চায়।
©somewhere in net ltd.