নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অামি অতি সাধারণ, সাধারণ থাকতে চাই ।

পার্থ তালুকদার

আমি ভাই সাধারণ, সাধারণ থাকতে চাই।

পার্থ তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুগল্প: ভালবাসা বারবার

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৮



কী মামা, নতুন সম্পর্কে তো জড়াই গেছো। কতটুকু অগ্রসর হইলা ? এখনও কি হাতের মধ্যেই আটকে আছো নাকি সাপের মতো প্যাঁচানো খেলা শুরু হয়েছে।

বন্ধুর রসাত্মক টিপ্পনী শুনে শরীরটা শিউরে উঠল কনকের। প্রায় দু'সপ্তাহ হলো নিশা'র সাথে তার মন দেয়া-নেয়া শুরু হয়েছে। হাত ধরা তো দূরের কথা, এখনও চোখে চোখ রাখার লজ্জা কাটিয়ে উঠার সময় পায়নি। একবার পাশাপাশি হাঁটতে গিয়ে শরীরের বাঁ পাশটা নিশার ডান পাশ স্পর্শ করেছিল মাত্র, তাতেই মনের মধ্যে যেন বিজলীবাতি জ্বলে উঠছিল তার।

- শুনো বন্ধু, সাগরজলে যেহেতু পা দিয়েই ফেলেছো অযথা লজ্জা পেয়ে কোন লাভ নেই বরং সময় নষ্ট না করে শরীরটা ডুবিয়ে দাও।

শীতের রাতে বিছানায় চটপট করছে কনক। কিছুতেই ঘুম আসছেনা তার। মোবাইলের গ্যালারী ফোল্ডার থেকে নিশা'র একটা ছবি বের করলো সে। লাল ওড়না আর সবুজ সেলোয়ার কামিজের ড্রেস পড়া নিশাকে বেশ আকর্ষনীয় লাগছে । ছবিটার দিকে অনেক্ষণ তাকিয়ে থাকলো কনক। এতো মায়াবী ছবি- সে আগে খেয়াল করেনি। জুম করে নিশার মায়াবী মুখমন্ডলটা তীক্ষ্ণভাবে লক্ষ্য করছে সে। চোখদুটো কেমন যেন নেশা লাগানো। নাকটা ধারালো না হলেও চেহারার সাথে বেশ মানিয়েছে। কপালে এঁটেছে কালো টিপ। বাঙালী ললনা বলতে যা বুুঝায় তাতে যেন কোন অংশেই কমতি নেই তার।

এবার কনক ছবিটা জুমআউট করে। পুরো ছবিটাতে চোখ বোলায় সে। নিশার হাত, পা, গলা, বক্ষ....। একটা সুপ্ত কামুক বাসনা তার হৃদয়কে তছনছ করে দিচ্ছে যেন। যেন শিরদাঁড়ায় বয়ে চলছে মাঘের হিমশীতল বারিধারা।

পাশে রাখা কোলবালিশকে জড়িয়ে ধরেছে কনক। এই মুহূর্তে নিশার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে তার। মোবাইলটা হাতে নিয়ে আবার রেখে দেয়। না, এতো রাতে ফোন দেয়া ঠিক হবে না। 'কাল বিকেলে তোমাকে নিয়ে রিক্সায় ঘুরবো' - নিশাকে ম্যাসেজটা পাঠিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করে সে।

আধভাঙা রাস্তা দিয়ে ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে রিক্সা চলছে। রাস্তার দুপাশে ভর করেছে গোধুলীর নির্জনতা। কনক অনেকটা ইচ্ছাকৃত আবার অনিচ্ছাকৃত ভাবে নিশার শরীরে তার শরীর স্পর্শ করে। বাতাসের দোলায় তার মুখে অাসা নিশার চুলের গন্ধ শুঁকে। নিশার শরীর থেকে আসা একটা মোহনীয় গন্ধ তার হৃদয়কে তোলপাড় করে দিচ্ছে।

নিশা গর্তে পড়া ব্যাঙের মতো নিশ্চল, নিশ্চুপ। হয় সাপের কাছে নিজেকে সমর্পণ করবে নতুবা ঝাঁপ দিতে হবে গহীন বনের অতল গহ্বরে।

কনক হঠাৎ নিশার হাত চেপে ধরে । বাম হাতটা নিশার পেছন দিয়ে তার কাঁধে এলিয়ে দেয়। সবকিছু স্বপ্নের মতো লাগে তার। আরো, আরো কাছে পাওয়ার তীব্র বাসনা তার হৃদয়কে জ্বলসে দিচ্ছে। হৃৎপিন্ডের কম্পন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এই তো সময়, গোধুলীর আলো আধারি যেভাবে অঙ্গে অঙ্গে মিশে আছে ঠিক সেভাবে, হ্যাঁ, ঠিক সেভাবেই নিশাকে পেতে চায় কনক !

ড্রাইভার, রিক্সা থামান।

নিশা অনেকটা গর্জে উঠে।

ছিঃ কনক, ছিঃ... তুমি এসব কী শুরু করলে। এই ছিল তোমার মনে ! এই তোমার ভালবাস। এজন্যই তুমি একটা বছর আমার পেছনে ঘুরঘুর করেছ !

কনক হতবিহ্ববল হয়ে হাতটা সরিয়ে নেয়। অন্তরআত্মা কেঁপে উঠে তার। কিছু বুঝে উঠার আগেই নিশা তড়তড় করে রিক্সা থেকে নেমে যায়। কনক তার চলে যাওয়ার দৃশ্য অপলক দৃষ্টিতে খেয়াল করে।

থমকে যাওয়া সন্ধ্যায় মেসের একটা আবদ্ধ রুমে কনক শুয়ে আছে। নিশার মোবাইলে বারবার কল করছে সে। ক্ষানিক পর নিশার মোবাইলটি বন্ধ দেখাচ্ছে।

বন্ধুটি তার পাশে বসে তাকে শান্তনা দিচ্ছে।

-দেখিস, ঠিকই নিশা তোকে ফোন করবে। ম্যাসেজ দিবে। আমার কথায় ভরসা রাখ বন্ধু। আরে দেখলি না, আমাদের সুজনেরও একই ঘটনা ঘটেছিল। পরে ঠিকই তার প্রেমিকা তার কাছে ফিরে এসেছে। এখন তারাইতো ক্যাম্পাসের সেরা জুটি।

কনক একটু পরপর মোবাইল চেক করে। কোনো ম্যাসেজ আসলেই বুক ধরপর করে তার। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নিশার পুরাতন ম্যাসেজ পড়ে। আবেগতাড়িত হয়।

দিন যায়, মাস যায়। বন্ধুরা আবার খোশ মেজাজে দিনযাপন শুরু করে। একসময় কনকও তাদের সাথে যোগ দেয়। ভালবাসার নেশায় বুঁদ হওয়া কনক মাঠে নামে নতুন কোনো নিশার খোঁজে। হয়তো সে পাবেও আবার। পেয়ে হারাবেও বারবার।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৬

চানাচুর বলেছেন: শেষের অংশটুকু চমৎকার

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৪

পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ ব্লগার ।

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১৫

প্রামানিক বলেছেন: কাহিনী মন্দ নয়।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৫

পার্থ তালুকদার বলেছেন: মন্দ না হলেই ভাল :)

ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই।

৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৬

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: কনকের নিজেকে সামলানো উচিত ছিল। ভাল লেগেছে।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৮

পার্থ তালুকদার বলেছেন: কিছু সম্পর্ক এভাবেই ধ্বংস হয়ে যায়।
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৩০

সকাল রয় বলেছেন: মোটামুটি

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৯

পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ কবি ।

৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫

কালীদাস বলেছেন: লেখাটা ভাল। শেষের অংশটুকু একটা সিগনিফিকেন্ট ম্যাসেজ দিচ্ছে একটা পার্টিকুলার বয়সের বালকদের নিয়ে X(

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১১

পার্থ তালুকদার বলেছেন: আমি সে বিষয়টিই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

ধন্যবাদ ভাই।

৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১০

জেন রসি বলেছেন: মাঝেমাঝে আত্মনিয়ন্ত্রণ একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার বটে।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২২

পার্থ তালুকদার বলেছেন: আসলেই রসি ভাই।
ধন্যবাদ।

৭| ০৫ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:২৮

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: অনার্সে পড়ার সময় এক বড় ভাই বলেছিল- তার কাছে ভালবাসার সম্পর্ক মানে ১ম দিন বুকের জমিনে বিচরণ করা ৩য় দিনের মধ্যে বিছানায় নেওয়ার চেষ্টা।

শুনে লজ্জায় আমার চোখ মুখ লাল হয়েগিয়েছিল।

এখনকার ভালবাসা শুধুই শরীর নির্ভর।

০৭ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:০৬

পার্থ তালুকদার বলেছেন: হয়তো, হয়তো না ।
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.