নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দোকান থেকে চোখ বন্ধ করে ঊর্মির জন্য সানগ্লাসটা কিনে ফেললাম। গত ক'দিন ধরে এই সানগ্লাসটার জন্য আমাকে পাগল করে ছেড়েছে । আগামীকাল তাকে নিয়ে নীলগিরি বেড়াতে যাবো তাই এটা তার লাগবেই লাগবে। কালো ফ্রেমে আবদ্ধ নীলাভ গ্লাসের চকচকে সানগ্লাস । নীলগিরির চূড়ায় মেঘের পালক স্পর্শ করে একটা সেলফি তোলা তার বহু দিনের শখ। তাই আজ অফিস থেকে ফেরার পথে চশমাটা নিয়েই নিলাম। সাথে আমার জন্যও একটা কিনেছি। নীলগিরির চূড়ায় ওর পাশে সানগ্লাসবিহীন আমাকে বেখাপ্পা লাগুক তা আমি মোটেই চাই না।
ব্যাগ গোছাতে গিয়ে একটা পুরানো কাগজ হাতে পড়ল আমার। প্রতিটা ভাঁজে ভাঁজে যেন চিড় ধরেছে। মায়ের লিখা চিঠি। মা লিখেছিলেন- তোর বাবার জন্য একটা চশমা পাঠিয়ে দিসতো বাবা। তাঁর চশমার ডান দিকের অংশটা ভেঙ্গে গিয়েছে। তোর দাদু যেভাবে সুতা বেঁধে তাঁর মাথার পেছনে গিট্ট দিয়ে চশমা পড়তেন ঠিক সেভাবে এখন তোর বাবা চোখের সামনে চশমাটা আটকে রাখেন। এক কাজ করিস বাবা, এই মাসে তো পারবিনা, পরের মাসে পাঠিয়ে দিস।
চিঠি পাওয়ার দু'বছর পর বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে যখন আমি বাড়ি গিয়েছিলাম তখন পাশের বাড়ির এক জেঠিমা আমার হাত ধরে বলেছিলেন, তোরা শহরে থাকিস, ভালো চাকরিবাকরি করিস অথচ বাবার জন্য একটা চশমা কিনতে পারলি না ! তোদের কাছে আমরা আর কি আশা করবো বাবা? তোর বাবা শেষের দিকে চশমা, চশমা করেই মারা গেলেন !
ঊর্মি আমার হাত থেকে একটানে কাগজটা নিয়ে নেয়। নীলাভ গ্লাসের সানগ্লাসটা পড়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে- দেখো, দেখো, কেমন লাগছে আমাকে। আমি ভাবলেশহীন দাঁড়িয়ে থাকি। বুকের ভেতরটা পুড়ে যাচ্ছে আমার। কলিজাটা দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে যেন। ঊর্মি উচ্ছ্বাসিত কন্ঠে বলে- হুররে...রাত পোহালেই নীলগিরি !
কিছু কিছু ভুলের সংশোধন হয় না। তার প্রায়শ্চিত্ত অনিবার্য।
এই মুহূর্তে বাবার চেহারাটা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। বাবার মুখটা যেন আমার মুখেরই প্রতিচ্ছবি। আমি যেন সুতা লাগানো ভাঙ্গা চশমা পড়ে আমার ছেলের সানগ্লাস পড়া চোখের দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছি। এ হাসি যেন তাচ্ছিল্যের হাসি। বড় করুনার হাসি।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৩৫
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ ব্লগার।
শুভাকামনা নিরন্তর।
২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০২
শামচুল হক বলেছেন: কষ্টের কাহিনী। প্রিয়ার খুশির জন্য অনেক কিছুই করি কিন্তু যারা কষ্ট করে মানুষ করল তাদের প্রয়োজনীয় জিনিষটাও দেয়ার প্রয়োজন মনে করি না।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৩৭
পার্থ তালুকদার বলেছেন: সেটাই।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
৩| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার লেখাটা পড়ে মনটা বিষন্ন হয়ে গেল!
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৩৯
পার্থ তালুকদার বলেছেন: নির্মম বাস্তবতা মনকে বিষন্ন করে ফেলে।
ধন্যবাদ রাজীব ভাই।
৪| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩২
Mahabub Rahman বলেছেন: সত্যিই অসাধারণ।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:০০
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
৫| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২০
লিসানুল হাঁসান বলেছেন: ভাল লাগল
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:০১
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
৬| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২০
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন:
বেশ হৃদয়বিদারক লেখা । আমার তো মনে হয় এই আফসুসের কোন প্রায়শিত্ত নেই ।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:০৩
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ঠিকই বলেছেন, এমন ভুল ক্ষমার অযোগ্য।
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
৭| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৪৭
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমরা অনেক ভুল করি।। কিন্তু যে অন্তরে একবার হলেও অনুতপ্ত হয়, আমি মনে করি সে মুক্ত, সব অন্যায় থেকে।।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৪
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ঠিকই বলেছেন।
শুভকামনা।
৮| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৪:১৯
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সময় থাকতে পিতা মাতাকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। একটু অবহেলা সারা জীবনের বেদনা...
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮
পার্থ তালুকদার বলেছেন: পিতা মাতার দিকে যত্নবান হওয়া উচিত।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
৯| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২২
ধ্রুবক আলো বলেছেন: গল্পটা কষ্টের। ভালো লিখেছেন
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৪
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
১০| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৫২
ইমরান নিলয় বলেছেন: সুন্দর অনুগল্প হইসে।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৯
পার্থ তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই !
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৭
জোকস বলেছেন: হি হি হি আমার চস্মা দেখতে কেমতে লাগে?
ঠিক বলেছেন, কিছু কিছু ভুলের সংশোধন হয়না। তার প্রায়শ্চিত্ত অনিবার্য।
শুধুই স্মৃতি।
গল্পটি মন ছুইয়ে গেল, ভাল লাগলো।