নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারন মানুষ, সাধারণ চিন্তা

রেজা শাহ্‌

আমি তো এই আমি ব্রহ্মপুত্র বিধৌত পুত্র

রেজা শাহ্‌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হামানদিস্তা

২২ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:১৬




১.৪৫ মিনিটে ফ্লাইট।

ইমিগ্রেশন ক্রস করার আগে খেয়াল করলাম সবাই কেমন জানি নাক ছিটকাচ্ছে মানে কিসের গন্ধ সেটি বোঝার চেষ্টা করে অদ্ভুতভাবে শ্বাস নিচ্ছে ।

মনে করেন,
আপনার আশে পাশের কেউ একজন কুত্তার গুয়ে পারা দিছে।

আপনার নাকে সেই গন্ধ গেলে আপনি কেমন করতেন??

নারী-পুরুষ সকল ইমি পুলিশ ভ্যাবাচেকা খেয়ে পাসপোর্টে সিল মারছে আর নাক ঘসছে।।

সিকিউরিটি চেকের সময় আমি স্বভাবতই ২-১ বার জুতা উল্টায়া দেখলাম আমার জুতায় কিছু লাগাইছি কিনা।

ডান পা উচা করে একবার ডান জুতা দেখি।
বাম পা উচা করে একবার বাম জুতা দেখি।

এরুম পিকিউলারভাবে জুতা দেখায় আমার উপর সন্দেহ হলে পূনরায় দেহ তল্লাশি দিতে হলো।

গন্ধ কিসের ছিলো সেটি পরে বলতেছি।

বিমানের ভিতর হ্যান্ড লাগেজ রাখতে রাখতে হঠাৎ দেখলাম দেশী কাপল চাচা-চাচীও আমার সামনে কেবিনে ব্যাগ রাখতেছেন।

চাচার কোমরের নিচের দিকে মহিলাদের মত কেমন জানি অদ্ভুত মোটা মোটা লাগতেছে।।

ছোট বিমান।

ডান পাশে তিন সীটের সারি ।
বাম পাশে দুই সীটের সারি।

মাঝে দাড়িয়ে লাগেজ রাখতেছে সবাই।

আমার ঠিক সামনেই ডান দিকে জানালার পাশে চাচা-চাচির সিট।

দেশী বলে আমাদের মধ্যে ইশারায়, চোখে-চোখে অনেক কথা হয়ে গেলো।

যেমন ধরেন,
=চাচা রাইতে কি খাইছুইন?
= আর কয়ো না বাবা, বিচি কলা চেটকায়া দুধ দিয়া ভাত খাইছি। তয়, একটা বিচি অহনো দাঁতের চিপাত আটকা।
= কি কন?
= হ বাবা, ইটালী যায়া ডাক্তর দিয়া বিচি বাইর করবাম। বেদনাআআআ....

বেদনাটা এমনভাবে বল্লেন যেন একটু আগেই উনার মুসলমানি সম্পন্ন হইছে। এখন বেডে শুয়া।।

যাই হোক,
১০ মিনিট পর বিমান ছাড়লো।
১৮ মিনিট পর চাচায় পাশের স্প্যানিশ এক যাত্রীকে ইশারায় সরিয়ে দিয়ে বের হলেন ।

ঘটনা কি?

দেখি প্যান্ট খুলতেছে।

=চাচা কি করেন?
= প্যান্ট খুলি, চোহে দেহো না !

ভাই,
১০ সেকেন্ডে দুই হাতে টান দিয়া প্যান্ট খুলে ফেল্লো।

দেখি ভিতরে তব্বন (লুংগি) পরা ।

কোমর মোটা লাগার রহস্য উদ্ঘাটিত হইলো।

=ইংলিশ পেন পইরা বইয়া আরাম পাই না বাবা। তাই তব্বন (লুংগি) ব্যবস্থা।

সকল যাত্রীর চোখ তখন চাচার তব্বনের দিকে।

দুই হাত দিয়া প্যান্ট ঝারা দিয়া যেমনে লুংগি খানা টেনে টুনে গিট্টু করিলেন তাহা ছিলো অনবদ্য আর্ট।

জয়নুল আবেদীন আগে জানলে ছবি না এঁকে এভাবে তব্বন খোলা পরা প্র্যাকটিস করতেন। (এটা কথার কথা)।

উপরে শার্ট-টাই, নিচে তব্বন ।

আবার হাপ্পেন্ট পরা পাশের সুন্দরী যাত্রীকে ইশারায় সাইট হতে বলে ভিতরে ঢুকে বসে গেলেন।

ভাই,
৩০ মিনিটও যায় নাই।

মাঝ রাত । চোখটা ঘুমে লেগে আসছে।

খটাস খটাস আওয়াজ।

হুড় মুড় করে ভয়ে উঠে বসলাম।

আশে পাশে তাকিয়ে বুঝলাম সকল যাত্রীর চোখে মুখে আমার মতই জিজ্ঞাসা।

=চাচী কি করেন?
= বাবা, ঘুমো ধরে না। তাই সুপারী ছেচি। তুমার চাচায় আবার ছেচা সুপারি ছাড়া পান খায়া আরাম পায় না।।


পিতলের হামানদিস্তাখানা বিমানের মৃদু আলোতেও চকচক করছিলো।

এতক্ষনে ২/৩ জন সুন্দরী এয়ার হোস্টেস এসে হাজির।

তিনারা বোঝানোর চেষ্টা করলেন না যে, “এটা বিমান”।
তিনারা বোঝানোর চেষ্টা করলেন যে, “শব্দে অন্যান্য যাত্রীদের খুবই সমস্যা হচ্ছে”।।

অভিজ্ঞ একজন এয়ার হোস্টেস হয়তো আমাদের কথা বলতে দেখেছেন। বা চেহারায় এশীয় এশীয় ভাব মিল আছে । তাই মায়া মায়া চোখে আমার দিকে তাকালেন।
বুঝতে পারলাম আমি দেশী ভাষায় চাচীকে যেনো ম্যানেজ করি।।

(আমি হিসাব বিজ্ঞানে মাস্টার্স করলেও ম্যানেজমেন্ট ভালো পারি) ।

=চাচী, এইটা তো বিমান; আপনি শব্দ করায় সবাই বিরক্ত হচ্ছে।
= ঐ বেডা, টেহা দিয়া টিকেট কাইট্টা বিমানে উঠছি। তুমি চুপ থাহো।
= চাচী আমি আপনের ছেলের বয়সী আমাকে বেডা বল্লেন যে।
(খটাস খটাস আওয়াজ চলমান)
= তুমার দাড়ি দেহি পাহা (পাকা), বেডাইতো ডাহাম।

=চাচা, চাচীরে একটু থামতে বলেন না প্লিজ।

চাচা টুকটুকা লাল দাঁত বের করে এমন একটা হাসি দিলেন যাতে আমার বোঝা হয়ে গেছে তিনি ছেচা সুপারি দিয়া পান পাইলেই মহাখুশি।

এতক্ষনে এক খিলি পান রেডি।

=She is Making one special local Medicine for her husbands Teeth pain. She will take just few moments. Please ignore her.

=Ok. Thanks sir বলে সবাই চলে গেলেন।।

কিছুটা নিরবতা।

চেখ বন্ধ করে আন্তর্জাতিক গুগল ম্যাপ থেকে ফিলিস্তিনের সীমানে রেখার সাথে কিভাবে নাম-গন্ধ মুছে দিল সেটা নিয়ে ভাবছিলাম ।

আসলে আমরা সুজা সরল ও বুদ্ধিমান জাতি ।

পরিবারকে যদি বলি সালুনে লবন বেশি হইছে খাইতারিনা। কি রানছেন?
তাইলে তিনি ঘপাত করে একটু পানি ঢেলে দিয়ে দুইটা আলু কেটে ঘুটা দিয়ে লবনের ঘুষ্ঠি মেরে দেবেন। প্রব্লেম সলব্ড।

আম্মারে যদি জিগায়
“সবুজের মা আপনার ছেলের নাম কি?
আম্মা উত্তর দিবেন “সবুজ”। কেন? ওর কি হইছে??

প্রিয়া _দি আসলে সরল মনে নিজেকে অতি বুদ্ধি_তি প্রমাণ করতে গিয়ে পুরা জাতিকেই humble করে দিয়েছেন।

এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেছি। হয়তো ২০/২৫ মিনিট ঘুমিয়েছি।

দড়ফড় করে লাফ দিয়ে উঠলাম।

খটাস খটাস খটাস।

এইবার মনে হয় শুকনা সুপারি নিয়েছেন।

সকল যাত্রী মুটামুটি দন্ডায়মান।

মনে হইলো,
পাইলট মাইকে আমগো জাতীয় সঙ্গিত “সোনার বাংলা” ছেড়ে দিছেন।

এয়ার হোস্টেস সকলে মুটামুটি অগ্নিমূর্তী।

তর্জমায় আমি বান্দা হাজীর।

=চাচী, চাচা আর কত পান খাবেন?
= তুমার চাচায় না। অহন আমি খায়াম। এরা তুমারে কি কয়?
= উনারা বলেছেন আপনি হামানদিস্তা না থামালে বিমান ঘুরিয়ে আপনাকে রেখে আসবে।। (মিথ্যা ফাপর) ।।

চাচা তখন মুটামুটি নাক ডাকছেন।

আমরা সুজা সরল জাতী বলেই হয়তো এখনো বিশ্বের দরবারে কাপিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছি।

তা না হলে চাচীর মাথায় হাসঁ মার্কা গন্ধরাজ তেলের গন্ধে ইউরোপের এয়ারপোর্ট কাপে!!!

#Long_Live_SorolZati_তবে_ইজ্জত_বাচায়া

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: কিছু বুঝলাম না।

২৩ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:২৬

রেজা শাহ্‌ বলেছেন: মাপ করবেন ভাই। ভবিষ্যতে আরো পরিস্কার করে লেখার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ।

২| ২২ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৩

নীল আকাশ বলেছেন: সেই রকম মজা পেলাম!
আমি তো দেখি আপনার লেখার ভক্ত হয়ে গেলাম!
শুভ কামনা রইল!

২৩ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:২৮

রেজা শাহ্‌ বলেছেন: এত এত গুজব আর কষ্টের নিউজ এর ভিতর মানুষকে একটু বিনোদন যদি দেয়া যায়; তাতে তো আর ক্ষতি নাই।।
ধন্যবাদ ভাই।

৩| ২২ শে জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৫

আনমোনা বলেছেন: চাচীর কাছে পান চাইলে পারতেন! :D

২৩ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:৩০

রেজা শাহ্‌ বলেছেন: তা হয়তো যেতো। সম্ভবত চাচীর কাছে খয়ের ছিলো না । আমি আবার খয়ের ছাড় পান খাই না। খয়ের ছাড়া পান খেলে ঠোট লাল হয় না।

৪| ২২ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:৪৫

ইসিয়াক বলেছেন: হি হি ...।মজা পেলুম।

২৩ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:৩০

রেজা শাহ্‌ বলেছেন: একজনের কাছে হলেও উদ্দেশ্য সফল। ধন্যবাদ।

৫| ২৬ শে জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০২

ঢাকার লোক বলেছেন: বেশ লাগলো !
মনে পড়লো, আমার এক আত্মীয় একবার কানাডা ফিরার সময় তার লাগেজ হারিয়ে যায়, যথারীতি এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কাগজ পত্র জমা দিয়ে বাসায় চলে যান, দুই দিন পর এয়ারপোর্ট থেকে ফোন আসে, লাগেজ এসেছে, উনি তা আনতে গেলে এক লোক কাগজ পত্র দেখে উনাকে দূর থেকেই এক রুম দেখিয়ে দিলেন, "ওই ঘরে আছে, তুমি নিয়ে যেতে পার।" উনি রুমে ঢুকতেই দুর্গন্ধে তার নাক বন্ধ হয়ে আসার জোগাড়! কোনো মতে লাগেজটা নিয়ে বেরিয়ে আসেন, ওই লোক নাকি তখনও দূরে নাক চেপে দাঁড়িয়ে তার দিকে দেখছিলো ! দেশ থেকে নাকি মায়ের রান্না করা মাছ এনেছিলেন লাগেজে করে !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.