![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের অস্তিত্ব আমাদের পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং সঙ্গায়িত।আমাদের অভিজ্ঞতা আমাদের গঠন করে।রূপ দেয়।এ রুপ পরিবর্তনশীল।আমি বিশ্বাস করি যে, পরিবর্তন ই একমাত্র অপরিবর্তনশীল ঘটনা।তাই পরিবর্তন ই সামনে চলার পথ।আর বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন ভালোবাসার ক্ষমতা আর স্বাধীনতার আনন্দ।এ দুটো ছাড়া আমরা অস্তিত্বের সংকটে পড়ি।পানিপোকারা পানির উপরে ভেসে বেড়ায়।বিদীর্ণ করেনা।পানি কি জানে না।নিজেকে জীবনের উপর ভেসে বেড়ানো পানিপোকার মতো মনে হয়।জীবনকে যাপন করতে ভালবাসি।প্রাণ,প্রকৃতি ও জীবনকে জানতে ভালোবাসি।
কটূক্তি এবং বাকস্বাধীনতা নিয়ে নানা তর্ক বিতর্কে চায়ের কাপে ঝড় উঠেছে।নানা তত্ত্বের আলোচনা সমালোচনা চলছে ।কটূক্তি আর বাকস্বাধীনতায় সূক্ষ্ন পার্থক্য আছে।কটূক্তি অপ্রয়োজনীয় এবং বাকস্বাধীনতা প্রয়োজনীয় ।
প্রাসঙ্গিকভাবেই ধর্ম কি তা আলোচনায় সবার আগেই চলে আসে ।কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে ধর্মানুভূতি জড়িত ।
ধর্ম মানুষের বিশ্বাস ।ঈশ্বর মানুষের বিশ্বাস ।বিশ্বাস জ্ঞান নয় ।তা সত্য হতে পারে ।মিথ্যাও হতে পারে ।সাধারণত যা অনিশ্চিত তা বিশ্বাস করতে হয় ।তা কোন সময়ে প্রমাণিত হতে পারে ।আবার অপ্রমাণিত হতে পারে ।যা প্রমাণিত নয় তাই নিয়েই মানুষ তর্ক করে বিশ্বাস নিয়ে জ্ঞানে উত্তরণের জন্য।বিশ্বাস বা অবিশ্বাস যেহেতু অনৈব্যর্ক্তিক তাই এ বিষয়ে অনুভূতির তারতম্য থাকবে ।প্রশ্ন আসছে ,কিভাবে একজন আরেকজনের অনুভূতি রক্ষা করবে ?যে ধর্মে বিশ্বাস করে সে তা প্রমাণের চেষ্টা করবে।যেমন জাকির নায়েকের প্রমাণের চেষ্টাকে অনুভূতিতে আঘাত বলা যাবে না।তেমনি রাসেলের "কেন আমি খ্রিস্টান নই"কে অনুভূতিতে আঘাত মনে করা যাবে না।ইমানুয়েল কান্ট যখন যুক্তি দিয়ে বলবে ঈশ্বর সিস্টেমের সাথে ফিট করে বলে তার মনে হয় তা কারো অনুভূতিতে আঘাত নয় ।আবার নীটশে বা এরিস্টটল যদি যুক্তির মাধ্যমে বলে যথেষ্ট ফিট করে না তাও কারো অনুভূতিতে আঘাত নয় ।একজন মনীষী একটা যুক্তি দেন ।দুশো বছর পরে তা আরেকজন খন্ডন করেন ।তাই যা তর্কযোগ্য তা চলবে এবং এভাবে জ্ঞানের বিকাশ ঘটে ।এটা বাকস্বাধীনতার প্রয়োজনের দিক ।এটা ছাড়া মানুষের প্রগতি বন্ধ হয়ে যাবে ।নিউটন নিয়ে কথা বলার অধিকার না থাকলে আইনস্টাইন আসবে না ।আইনস্টাইন নিয়ে কথা বলার অধিকার না থাকলে আরো মেধাবী কেউ আসার সম্ভাবনা নস্ট হয়ে যাবে ।এই সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে বাকস্বাধীনতা খুবই জরুরী।ধর্মের ব্যাপারে একটু ভিন্নতা আছে ।এক্ষেত্রে অনুভূতি জড়িত যা কোন অন্য জ্ঞানের তত্ত্বের সাথে জড়িত নয় ।যে ইসলাম ধর্মকে যৌক্তিক মনে করে সে অন্য ধর্মকে অযৌক্তিক মনে করে ।কেন মনে করে তার কারণ প্রকাশ করা তার বাকস্বাধীনতা ।তবে এই প্রকাশের সাথে প্রকাশভঙ্গী জড়িত যা অন্যান্য বাকস্বাধীনতায় জরুরী না ।সে বলতে পারে রামায়ণে রামের রথে ওড়াটা আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না।এই কথাটা সে নানাভাবে বলতে পারে ।সে শালীন ভাষায় বলবে এই কারণে যে এই ব্যাপারটাকে আরো অনেক মানুষ বিশ্বাসযোগ্য মনে করে যার সাথে সে একই সমাজে বাস করে।পরস্পর নির্ভরশীল হিসেবে বাস করে ।আবার উল্টোভাবে একজন হিন্দু মুসার লাঠিকে সাপে পরিণত হওয়াকে অযৌক্তিক মনে করতে পারে ।কেন মনে করে তা সে প্রকাশ করতে পারে যৌক্তিকভাবে ।তর্কযোগ্যভাবে ।নাস্তিক কিছুই বিশ্বাস না করতে পারে ।কেন করে না তা যৌক্তিকভাবে বলতে পারে যা নিয়ে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে ।প্রশ্ন হচ্ছে কেন যুক্তি ও বিশ্লেষণ করা যাবে কিন্তু কটূক্তি অপ্রয়োজনীয়?কারণ প্রত্যেকের উদ্দেশ্য তার বিশ্বাস বা অবিশ্বাসকে প্রতিস্ঠিত করা যার একমাত্র উপায় যুক্তি ও বিশ্লেষণ ।কটূক্তি কোন সত্য প্রতিস্ঠার উপায় নয় ।তাই এটি অপ্রয়োজনীয় ।আর বর্জনীয় এই কারণে যে এটি সমাজে বসবাসের শর্ত।এদেশের আদিবাসী বা নৃগোস্ঠীরাও একটা বিশ্বাস নিয়ে বাঁচে ।নানা মানুষের নানা অনুভূতি ।একজনের বিশ্বাসে আরেকজনের বিশ্বাসের কোন ক্ষতি হয় না যতক্ষণ তা সামাজিক সমস্যায় পরিণত হয়।তাই সুস্ঠু সমাজের স্বার্থে একজনের বিশ্বাস অবিশ্বাস নিয়ে কটূক্তি অনুচিত ও অপ্রয়োজনীয়।
প্রত্যকেই কিছু না কিছু না বিশ্বাস করে।তার অর্থ কিছু না কিছু না অবিশ্বাসও করে ।অর্থাত্ বিশ্বাস অবিশ্বাস মানবিক সত্য ।তাই তা তর্কযোগ্য এবং বিশ্লেষণ যোগ্য।যৌক্তিক প্রাণী হিসেবে মানুষ যে কোনটা মেনে নিতে পারে ।এটা তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার ।কটূক্তির কারণে কেউ বিশ্বাসীও হয় না আবার অবিশ্বাসীও হয় না ।তাই কটূক্তি অবাঞ্ছনীয় কারণ এতে সামাজিক বিশৃঙ্গলা ছাড়া আর কিছু হয় না ।কটূক্তি অনুত্পাদনশীল এবং নেতিবাচক প্রেষণা এবং বাকস্বাধীনতা ও যৌক্তিকতা সৃষ্টিশীলতার সহায়ক ।এ পার্থক্যটুকু না করতে পারলে আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি হারিয়ে ফেলবো এবং এর চূড়ান্ত অবস্থায় দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিপন্ন হয়ে পড়বে ।
©somewhere in net ltd.