নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমার রাতগুলো তুমি আকাশকে দাও, আমি আকাশ দেখতে ভালবাসি, \nযদি তোমার মন কাঁদে তবে\nফিরে এসো কোন এক বর্ষায়।

অপরিচিত মানব শুণ্য

আমার সত্ত্বা আজন্মা ভালবাসা তৃষ্ণা নিয়ে সুখে মরে যায়, অবিশ্বাসের কটাক্ষে। নিজেকে এখনও আমি জানতে পারিনি না পেরেছি চিনতে। আমি মুক্ত বিহঙ্গ এক অপরিচিত মানব।

অপরিচিত মানব শুণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

হায় রে বিদ্বেষী

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫১

এক জায়গায় হিসেব দেখলাম যে
কুরবানির ঈদ উপলক্ষে এবছর বাংলাদেশে
প্রায় ৯৫ লক্ষ পশু জবাই করা হবে। এর
মধ্যে ৬০ লক্ষ গরু আর ৩৫ লক্ষ ছাগল ও
ভেড়া। গরু প্রতি ৩০ হাজার টাকা আর
ছাগল ও ভেড়া প্রতি আড়াই হাজার
টাকা হিসেবে মোট প্রায় ১৮,৮৭৫ কোটি
টাকা খরচ হবে, যার সমমূল্য প্রায় ২৪০
কোটি মার্কিন ডলার।
তাদের প্রস্তাবনা হল এই বিশাল অঙ্কের
টাকাটা কুরবানির পিছনে খরচ না করে
দেশের ৫০ লক্ষ সুবিধাবঞ্চিত মানুষের
মাঝে বিতরণ করে দিলে পরিবারপ্রতি
প্রায় ৩৮ হাজার টাকা করে পেতে
পারতো। ফলে পুনর্বাসন, স্বাস্থ্য,
কিংবা উন্নয়নমূলক খাতে টাকাটা ব্যয়
হোত আর ফলস্বরূপ দেশের জন্য আরো
উত্তম কিছু হোত।
দেশ ও দেশের মানুষের উন্নতির জন্য
তাদের এরূপ প্রস্তাবনা দেখে আমারও
ভালো লাগলো। বস্তুত কুরবানি ও হজ্জ
নিয়ে এধরণের প্রস্তাবনা অনেকের
মাথাতেই ঘুরপাক খায়। কেউ বলে,
অনেকেই বলে না। তাই আমি একটি সরল
হিসেব দিতে এই লেখাটি লিখছি।
এখানে আমি উপরের উপাত্তগুলোই
ব্যবহার করবো যেন প্রস্তাবনা
প্রদানকারীদের পরবর্তীতে হিসেব
করতে আরো সুবিধা হয়।
প্রথমেই একটি প্রশ্ন করিঃ কুরবানির
ঈদে পশু কেনা-বেচার কারণে যে ২৪০
কোটি মার্কিন ডলার হাতবদল হল সেটা
কি কালোটাকা না সাদাটাকা?
এর পুরোটা সাদাটাকা। প্রতিটি পশু হাট
থেকে কেনার সময় দামের ৫ থেকে ৬
শতাংশ টাকা হাসিল হিসেবে সরকারি
খাতে চলে গেছে আর বাকি টাকা পশু
বিক্রেতাদের হাতে গেছে। এরা
অধিকাংশই এদেশের প্রান্তিক মানুষ।
মানে ২৪০ কোটি মার্কিন ডলারের ৯৫
শতাংশ, অর্থাৎ ২২৮ কোটি মার্কিন
ডলার মাত্র এক সপ্তাহে এদেশের
প্রান্তিক মানুষদের হাতে পোঁছে গেছে
এক কুরবানি উপলক্ষে।
কতগুলো পরিবারে এই টাকা পৌঁছে
যাচ্ছে কোন ধারণা আছে আপনাদের?
ধরে নিলাম, প্রতিটি প্রান্তিক পরিবার
৩৬ হাজার টাকা করে হাতে পেল।
অর্থাৎ এদেশের ৫০ লক্ষ প্রান্তিক
পরিবারের হাতে মাত্র এক সপ্তাহে ৩৬
হাজার করে টাকা পৌঁছে গেল কুরবানি
উপলক্ষে।
টাকা যখন হাতবদল হয় তখন অর্থনীতির
পরিভাষায় সেটাকে Circulation of
Money বলে। Circulation of Money
প্রবৃদ্ধির একটা সূচক। আপনার হিসেব
দেখলে সাদাচোখে মনে হয় ২৪০ কোটি
মার্কিন ডলার শুধু শুধু পানিতে ফেলা
হল, আর বিনিময়ে কিছু পশু হত্যা করা
হল। ব্যাস!

এবার আপনাদের প্রস্তাবনায় ফিরে যাই।
২৪০ কোটি মার্কিন ডলার দেশের ৫০ লক্ষ
পশ্চাৎপদ পরিবারের মাঝে বিতরণ করতে
চান আপনি।
- কীভাবে করবেন?
- কাকে দায়িত্ব দেবেন?
- কাকে বিশ্বাস করতে পারবেন যে
পাওনা টাকাগুলো প্রাপ্যহাতে এক
সপ্তাহে যথাযথভাবে পৌঁছে যাবে?
কুরবানির মাংসের এক-তৃতীয়াংশ
আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে আর এক-
তৃতীয়াংশ দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা
হয়। অর্থাৎ ১৬০ কোটি মার্কিন ডলার
সমমূল্যের খাবার বিতরণ করা হচ্ছে এই
একদিনে। কুরবানির উপলক্ষ ছাড়া অন্য
কোন উপায়ে এটার একটা বিকল্প বলে
দেখান তো!
শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবীতে এই
একদিনের উপলক্ষে যে পরিমাণ খাবার
(মাংস) বিতরণ করা হয়, সেটির
সেক্যুলার একটি বিকল্প কেউ বলতে
পারবেন আমাকে?
কুরবানির মাংস তো মুসলমানরা একা
খায় না, অপরকে দুই-তৃতীয়াংশ দিয়ে
তারপর খায়।
- টাকার হিসেব যদি করবেনই তাহলে
প্রতিবছর পয়লা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ
না খেয়ে সেই টাকাটা মানুষকে দিয়ে
দেবার দাবি করেন না কেনো?
- জনগণের করের টাকায় সরকারি
চাকুরিজীবিদের বেতন-ভাতা বাড়ার
প্রতিবাদ করেন না কেনো?
- সরকারি প্রটোকলের ব্যয়ের হিসেব
চেয়ে প্রতিবাদ করেন না কেনো?
- কালোটাকার হিসেব চেয়ে প্রতিবাদ
করেন না কেনো?
- ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর
রাস্তা-মিনার-সৌধ রঙ করে ফুলের
তোড়া বিছিয়ে যে খরচ হয় সেই টাকা
গরিব-দুস্থদের স্বাস্থ্য কিংবা পুনর্বাসন
খাতে দিয়ে দেবার দাবিতে কোন
প্রস্তাবনা পেশ করেন না কেনো?
এগুলোর কোনটাই আপনারা করেন না,
কখনও করবেনও না, কারণ আল্লাহ'র
পুলিশ-থানা-হাজত-জেলের সরঞ্জাম
নাই। তবে যে সরঞ্জাম আছে, আশা করি
তা সময় হলেই দেখা যাবে।
নেত্রবিস্ফারিত করে দেখে নিয়েন।
এবার আসি অন্য কথায়। কুরবানি-হজ্জ
আল্লাহ'র সন্তুষ্টির জন্য করা ইবাদত।
এখানে যে অর্থ ব্যয় হয় সেটাও আল্লাহ'র
সন্তুষ্টির জন্যই ব্যয় করা হয়। এখানে
টাকার হিসেব করা মানে নামাজ পড়ার
কারণে সময়ের অপচয় হিসেব করার মতন।
কেননা আপনাদের প্রস্তাবনা মতে
নামাজ না পড়ে বরং নামাজের সময়টা
অন্য কাজে লাগালে দেশের জন্য দশের
জন্য আরো ভালো হোত। আপনাদের
কুরবানির হিসেবের যুক্তিও তো এই পথেই
যায়।



শেষ কথা। আমি একজন মুসলমান। আমি
এমন একটি ধর্ম ও প্রথার গর্বিত একজন
অনুসারী যার বিরোধিতা সব যুগেই করা
হয়েছে, আর এখনও হচ্ছে এবং সামনেও
হবে। অথচ আমার ধর্ম ও প্রথা শুধু যে
টিকে আছে তা না, বরং স্বমহিমায়
টিকে আছে, আর মাথাব্যথাকারীদের
জন্য উপাদেয় হিসেবেই টিকে আছে এবং
থাকবে। কুরবানিতে পশু হত্যা করা যদি
মুসলমানদের পাশবিকতাই শেখাতো
তবে হাজার হাজার বছরের পুরোনো এই
রীতির ধারে পৃথিবীর জনসংখ্যা এখন
দেড়শ কোটির বেশি হোত না, আর হলেও
ছয়শ কোটিই হোত মুসলমান।
ইব্রাহীম (আলাইহিস সালাম),
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) যা করে গেছেন, তা আমার
দাদা করেছেন, আমার বাবা করেন,
তারপর আমি করবো, আর আমার পরে
আমার সন্তানেরা করে যাবে
ইনশাআল্লাহ। কেয়ামত পর্যন্ত
মুসলমানের সন্তানেরা এটা করেই যাবেই।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৬

মাহফুজ বলেছেন: জাতীয় সঙ্গীত গাইতে গিয়ে লক্ষ কোটি টাকা যখন খরচ হয় তখন উনারা প্রতিবাদ করতে লজ্জা পান, শাহরুখ খান, অক্ষয়দের এনে নাচাতে যে টাকা খরচ হয় সে বলতে ভয় পান। উনাদের চোখে লাগে শুধু ইসলামিক এক্সপেন্সটা।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২১

অপরিচিত মানব শুণ্য বলেছেন: হ্যা,ভাই। এটাই আমাদের রোডেলিস্ট সমাজের রীতি।


ধন্যবাদ,সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৫

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: যে বোঝে সে তো বোঝেই। যে বুঝেনা সে তো বিরোধিতা করবেই। আল্লাহ্‌ নাস্তিকদের বুঝ দান করুণ।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬

অপরিচিত মানব শুণ্য বলেছেন: আল্লাহ তাদের বুঝ দান করুক,

ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।

৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:২০

Tanjir hossain বলেছেন: হিন্দুরা যে সারা বছর ১৫-২০ টা পূজার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা খরচ করে তখন কেন এসব বুদ্ধিবেশ্যারা টু শব্দ করেন

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০০

অপরিচিত মানব শুণ্য বলেছেন: ভাই, এটা বললে যে দাদাদের মনে আঘাত লাগবে। শত হোক দাদা বলে কথা।

ধন্যবাদ, সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৮

প্রামানিক বলেছেন: গরু বিক্রির সব টাকা গ্রামের গরীব কৃষকদের হাতে যায় এটা কোন মস্তান দালাল ঘুষখোরের হাতে যায় না। এই গরু বিক্রির টাকা দিয়ে গ্রামের কৃষকরা কিছুটা হলেও সচ্ছল হচ্ছে। এত টাকা রিলিফ দিলে সরকারী আমলা, এমপি, চেয়ারম্যান, মেম্বার, মাস্তানদের পেটে যেত কৃষকদের ভাগ্যে জুটতো না। আপনার হিসাবটা যুক্তি যুক্ত।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৩

অপরিচিত মানব শুণ্য বলেছেন: হ্যা,আপনি ঠিকই বলেছেন।
এর ৫% ও জনগণের হাতে যাবে কিনা
সন্দেহ।


ধন্যবাদ, মন্তব্যে অসম্ভব ভাল লাগা।

৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৪

একটি পেন্সিল বলেছেন: কোন কিছুর বিনীময় ছাড়া টাকা হস্তান্তর করলে জাতী কখনই অর্থনীতিতে উন্নতি করতে পারবে না। ধরুন আপনার কাছে ৫০ টাকা আছে, আপনি এক জন কে দিয়ে দিতে চান। এখন দেয়ার দুইটা পদ্ধতি আছে। ১, এমনিতেই দিয়ে দিলেন। ২। আপনি বাড়িতে ছোট্ট একটা কাজ করিয়ে দিয়ে দিলেন। কোনটা উত্তম। আপনি যদি কাউকে কোন কিছুর বিনীময় ছাড়া দিয়ে দেন, তাহলে অলসতাকে প্রশ্রয় দিলেন। অলসতা জাতীকে ধ্বংস করে, আর অলসরা আরো অপেক্ষায় থাকে কোন কাজ না করেই কোন কিছু পেতে।
আর আপনি যদি বাড়িতে নিয়ে ছোট একটি কাজ করিয়ে টাকাটা দেন, সেটাই উত্তম। ধরুন, রাস্তায় কয়েকটা ইট বসিয়ে টাকা ৫০ টা দিলেন। তাহলে ৫০ টাকার বিনীময় এটাই হবে আপনার রাস্তার উন্নতি। আর আপনার উন্নতি সামান্য উন্নতি মানে দেশের উন্নতি। কিন্তু আপনি ৫০ টাকা কোন কিছুর বিনীময় ছাড়া দিলে এই উন্নতি টুকু পেতেন কিভাবে। সুতারাং কোরবানীর টাকা গরীবের মাঝে অযথা বিতরন সমর্থন যোগ্য নয়। তাই যদি করেন, তাহলে আপনি জাতীকে একটু হলেও অলসতার দিকে ঠেলে দিলেন।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৬

অপরিচিত মানব শুণ্য বলেছেন: হ্যা, আপনি একজন ঠিকই বলেছেন।
আর কোন বিনিময় চাড়া পাওয়া গেলে এর কদর ও থাকত না।


ধন্যবাদ, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৬| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২১

জাহিদ ২০১০ বলেছেন: কটি পেন্সল বলেছেন: কোরবানীর টাকা গরীবের মাঝে
অযথা বিতরন সমর্থন যোগ্য নয়।

এই হিসেব করলে আমাদের মা বাবার কারনে আমরা সবাই আইলসা বিলাই হইতাম!!!

এ দেশে কর দাতা হলেন মুষ্টিমেয় কয়জন, আর এর সুবিধা ভোগকারী সবাই৷৷

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৮

অপরিচিত মানব শুণ্য বলেছেন: আমার ব্লগে স্বাগতম।

আপনার কথার সাথে আমি
১০০% একমত।


ধন্যবাদ, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৭| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৭

একটি পেন্সিল বলেছেন: জাহিদ ২০১০ বলেছেন: কটি পেন্সল বলেছেন: কোরবানীর টাকা গরীবের মাঝে
অযথা বিতরন সমর্থন যোগ্য নয়।
এই হিসেব করলে আমাদের মা বাবার কারনে আমরা সবাই আইলসা বিলাই হইতাম!!!
এ দেশে কর দাতা হলেন মুষ্টিমেয় কয়জন, আর এর সুবিধা ভোগকারী সবাই৷৷, ,, কি বুঝাতে চাই আর কি বোঝে!

৮| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৩৪

জাহিদ ২০১০ বলেছেন: কোরবানীর টাকা গরীবের মাঝে
অযথা বিতরন সমর্থন যোগ্য নয়।

তার মানে তাদের দিয়ে কাজ করিয়ে এই টাকা আপনি দিতে চাচ্ছেন??? এটা কি ইসলাম সমর্থন করে!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.