নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

webprogrammingtips.com

অৈথ

ফালগুন

অৈথ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে ন্যায়বিচার আরেক ধরনের অপরাধ

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:৪০

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতা-বিরোধীদের বিচার কার্যক্রমের কঠোর সমালোচনা করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাময়িকী দি ইকোনমিস্ট। আজ ২৩ মার্চ শনিবার সাময়িকীটির ছাপা সংস্করণে ‘বাংলাদেশে বিচার, আরেক ধরনের অপরাধ’ শিরোনামের নিবন্ধটি প্রকাশিত হওয়ার কথা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সাময়িকীটির অনলাইনে এটি প্রকাশ করা হয়েছে। নিবন্ধটি শুরু করা হয়েছে ইসরায়েলে এক নাৎসি কর্মকর্তার বিচারের ঘটনা উল্লেখ করে। এতে বলা হয়, ১৯৬১ সালে অ্যাডলফ আইখম্যানকে আর্জেন্টিনা থেকে অপহরণ করে নিয়ে আসে ইসরায়েল। এরপর তাঁকে জেরুজালেমে বিচারের মুখোমুখি করা হয় ২০ বছর আগের অপরাধের অভিযোগে। আইখম্যান ছিলেন নাৎসিদের ওয়ানসি সম্মেলনের সেক্রেটারি। ওই সম্মেলন থেকেই ইহুদি নিধনযজ্ঞের সূত্রপাত। নিবন্ধে বলা হয়, জেরুজালেমে আইখম্যানের ওই বিচার ছিল যথাযথ বিচার-প্রক্রিয়ার একটি মডেল। বিচারে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল। আর আসামিপক্ষে ছিলেন জার্মানির একজন শীর্ষ অ্যাটর্নি। বিচার কার্যক্রম প্রকাশ্যে সম্প্রচার করা হয়। কোনো কিছুতেই গোপনীয়তা ছিল না, পুরো বিচার-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় প্রকাশ্যে। সাময়িকীটি লিখেছে, এখন বাংলাদেশের ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যে বিচার চলছে, তার কথা বিবেচনা করা যাক। এখানেও বিচার করা হচ্ছে বহু বছর আগের অপরাধের, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়কার। আসামিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, গণধর্ষণ এবং দেশের মানুষের একটি অংশকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলে আইখম্যানের বিচারের ওই মডেলের সঙ্গে বাংলাদেশের বিচারের বিস্তর ফারাক। নিবন্ধে বলা হয়, আদালতের কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করছে সরকার। বিচার-প্রক্রিয়া নিয়ে প্রকাশ্যে মত প্রকাশের ওপরও বিধিনিষেধ আছে। বিবাদীপক্ষের সব সাক্ষীকে সাক্ষ্য দিতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি আসামিপক্ষের এক সাক্ষীকে আদালত চত্বর থেকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। একটি ঘটনায় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেন এবং ওই মামলায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন এমন তিনজন বিচারপতি, যাঁরা পুরো সাক্ষ্য শোনেননি। অপর একটি মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী মামলার প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সময় পাননি। ওই মামলায়ও আসামির মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। বিচার-প্রক্রিয়ায় ব্যাপক ত্রুটি রয়েছে। ঘাটতি বা ত্রুটি শুধু আইখম্যানের বিচারের মানদণ্ডের দিক দিয়ে নয়, বাংলাদেশি আইন অনুযায়ীও এখানে ত্রুটি আছে। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার এ বিচার দেশের বিচারিক কার্যক্রমের জন্য একটি আদর্শ মডেল হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তবে সরকারের এ দাবির সঙ্গে বিচার-প্রক্রিয়ার বৈপরীত্য আছে। ইকোনমিস্ট লিখেছে, লোক দেখানো এবং প্রশংসা কুড়ানোর এ বিচারের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের জন্মের বিরোধিতা করে যারা অপরাধ করেছিল, তাদের বিচারের আওতায় আনা। এদিক দিয়েও এ বিচার-প্রক্রিয়ার ব্যর্থতা চরম। কেননা, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। ইসলামপন্থী এ দলটি দেশের প্রধান বিরোধী জোটের শরিক। দেশের অন্তর্ঘাতমূলক রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেছে বিচার-প্রক্রিয়া। জামায়াতের দুষ্কৃতকারীরা হাতবোমা নিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, পুলিশকে লড়াই করতে হচ্ছে উত্তেজিত জনতার সঙ্গে। মারা গেছে অনেক মানুষ। অসহিষ্ণুতার ঘূর্ণাবর্তে তলিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কথা বলছে। আর প্রধান বিরোধী দল হয়ে পড়ছে আরও বেশি ইসলামপন্থী। গুজব ছড়িয়ে পড়ছে, চলতি বছরের সাধারণ নির্বাচন ভেস্তে যেতে পারে। সাময়িকীটি আরও লিখেছে, দুঃখজনকভাবে ট্রাইব্যুনালের ত্রুটিপূর্ণ বিচার-প্রক্রিয়াতেও উল্লসিত বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ। যখন আদালত একটি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে) রায় দিলেন, তখন আদালতের এ উদারতার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এল জনতা। ঢাকায় গত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হলো। এখন সরকার আপিলের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সুযোগ তৈরির জন্য আইন সংশোধন করতে চায়। আইনের সঠিক প্রক্রিয়ার পরোয়া কেউ করছে বলে মনে হচ্ছে না। বরং সবাই মনে করে, আসামিরা শেষ পর্যন্ত তাঁদের প্রাপ্য শাস্তিই পাচ্ছেন। সাময়িকীটি আরও বলছে, জামায়াত বা তাদের মদদদাতাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি ইকোনমিস্ট-এর কোনো সহানুভূতি নেই। কিন্তু ন্যায়বিচার কেবল কোনো সুনির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষের জন্য নয়। আইখম্যানের বিচারে যেটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, গণহত্যার শিকার মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য সঠিক বিচারিক প্রক্রিয়া অপরিহার্য। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশিরাও সেটা বুঝবে এবং সঠিক জবাবদিহির দাবি জানাবে। কিন্তু ততক্ষণে হয়তো খুব বেশি দেরি হয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সেই কুয়াতেই বিষ ঢালছে, যার পানি এক দিন বাংলাদেশ পান করতে চাইবে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:৫৩

রেজা সিদ্দিক বলেছেন: হা, হা, আমাদের জন্য ইকনোমিস্ট-এর তো অনেক দরদ।

২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৩৮

নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেছেন: শাহবাগের আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ করে বিরোধী দলনেত্রী যেইমাত্র বলেছে, শাহবাগের আন্দোলনকারীরা নষ্ট-ভ্রষ্ট, নাস্তিক। বিরোধী দলের নেত্রীর কথা মাটিতেও পড়তে দেয়নি। তার আগেই গণজাগরণের তথাকথিত নেতা ইমরান এইচ বিকল্প সরকার হুট করে বলে বসলেন, ‘নষ্ট-ভ্রষ্টরাই মুক্তিযুদ্ধ করেছে।’



Click This Link

৩| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৫৯

প্রকৃত দেশপ্রেমিক বলেছেন: তারা নিজেরাই তো হানাদার তার পুরো মিথ্যা তথ্যের উপর ইরাক হামলা করে দেশটা শেষ করে দিল আর এখন আসছে আমাদের ওয়াজ শুনাইতে তাদের মুখে থু

৪| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:৪৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ইকোনমিষ্ট, বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়ার ও কিছু বিদেশী কলাম লেখক, যারা লিখেছিল "গনজাগরন মঞ্চ ভারতীয় মদদে হচ্ছে"।
কিছু দেশী বুদ্ধিজিবী নামের শুয়রের বাচ্চাদের পয়শা খাইয়ে কিছু ফরমায়েসি রিপোর্ট ছাপানো হয়েছিল যা কখনো এদেশে গ্রহনযোগ্যতা পায় নি। এইসব আবর্জনা সুধু ছাগুদের ও 'নিরোপেক্ষ নামের মাদারচোদদের' খাদ্য হিসেবে আছে।

Click This Link
Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.