আত্মকথন !

১০ ই জুন, ২০১৫ রাত ১০:২৩

দুপুর হয়, ভার্সিটি ছুটি দেয়। ভার্সিটির বাইরে সারি সারি রিক্সা,ভাড়া নেবে ২০ টাকা। মোটামুটি ক্লান্ত, রিক্সা নেব না, হেঁটেই যাব আজ,২০ টাকা বাচবে।হাঁটা শুরু করি। আমি একা নই, মাথার উপর সূর্য চলছে আমার সাথে! ঘামছি, শার্ট ভিজছে,চারপাশ দেখছি।রাস্তার পাশের হোটেলগুলোতে দুপুরের খাওয়ার প্রস্তুতি চলছে,পাশেই কিছু অভুক্ত বাচ্চার দল দেখা যাচ্ছে ! আমিও এইমুহূর্তে অভুক্ত,বড় এক ব্যাংকের পাশে একটা ছোট্ট গাড়িতে আনারস কাটছে। কেটে কেটে মরিচ আর কি যেন মাখাচ্ছে, দেখতে বেশ ভালই লাগছে । অপ্রিয় এই আনারসকে এইমুহূর্তে কেন যেন অনেক প্রিয় লাগছে,এক প্লেট খেয়েই নেয়া যায় ! এই যা !! ১৫ টাকা খরচ হয়ে গেল ! হলো না টাকা বাঁচানো!! হবে না হবে না করেও,হয়ে যায় অনেক কিছু, অপ্রিয় একটা ব্যাপারও প্রিয় হয়ে ওঠে এক সময়, হয়ে যায় সবচেয়ে প্রিয় অনুভুতিগুলোর একটা !


সন্ধ্যে হয়, বেড়িয়ে পরি বাতাস আর ধুলা খেতে! সাথে বন্ধুরাও থাকে, ওরা সুখটান দেবে ! সিগারেট খাওয়া ওদের কাছে সুখটান ! একজন টাকা চায়, আমি দিই না ! দুঃখটান নামে কিছু থাকা উচিত ছিল, থাকলে আমি নিজেই সবাইকে কিনে দিতাম,নে তোরা টানতে থাক, দুঃখগুলো শুষে নে! পকেটে ২০ টাকা আছে, মাজুনি কিনতে হবে,গা মাজুনি । দোকানের মামা মাজুনি দেয়,২০ টাকাই চায়,কম রাখে না, বরাবর ২০ টাকাই রাখবেন উনি ! তার যুক্তি, ‘মামা মোড়ের টং এ ১২ টাকা দিয়া বেন্সন কিনেন আর আমগো কাছে আইলে, ছাড় চান !’ তাকে বোঝানো অসম্ভব, আমার দ্বারা ও সম্ভব না,ওটা আমায় টানে নি কখনো। আমার পরিধি বেবিডল আর দেশি স্টাইল দেখাতেই সীমাবদ্ধ। আমার দ্বারা মোড়ে দাড়িয়ে সুখটান দেয়ার সাহস হবে না, স্মার্ট হওয়াও আর হবে না ! মামা কি মনে করে, ৫ টাকা ফেরত দিল। যাই, বাসায় যাই, মাজুনি দিয়ে আরেকবার গোসল করতে হবে, গায়ের ময়লা ধুয়ে ফেলতে হবে।
।
......... মনের ময়লা ধোঁয়া উচিত হবে না, আমি স্মার্ট হব !!!
,
শান্তি নিকেতন
রাত ১২ টা বেজে ৫৫ মিনিট !
১০ই জুন,২০১৫

৩ টি +০/-০