নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পিনাকীর ব্লগ

চিত্ত যেথা ভয়শূন্য

পিনাকী ভট্টাচার্য

চিকিৎসক, লেখক। কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, আমাদের অর্থনীতি।

পিনাকী ভট্টাচার্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে শাসকদের সংকট কী? বারবার কোথায় তাঁরা ভুল করে?

১০ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২২

স্বাধীনতার পর থেকেই বহুমুখী রাজনৈতিক সংকটে ভুগছে বাংলাদেশ। ৯০ এর ছাত্র গন অভ্যুত্থানের পরে একটা প্রগতিশীল রূপান্তরের সম্ভাবনা সৃষ্টি হলেও সংকট আরো গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে। এই সংকটের সৃষ্টি সম্পর্কে নানা ব্যাখ্যা প্রচলিত আছে, সেই সংকট থেকে উত্তরণের রাস্তাও অনেকে খুঁজছেন, কিন্তু সংকটের প্রকৃত প্রকৃতি না বুঝতে পারলে যেটাই করা হোক না কেন, সংকট কাটবে না।



কোনও একটি দেশের বা জনগোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিতে গেলে দুইটা জিনিসের দরকার হয়। ১/ লেজিটিমেসি বা বৈধতা। যেটা আমরা ভোটের মাধ্যমে নিশ্চিত করি। ২/ হেজিমনি।



হেজিমনির অর্থ হচ্ছে, সমাজের উপর বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নৈতিক নেতৃত্ব। এই হেজিমনি রূপায়িত হয় কোনও আদর্শবাদ দিয়ে। এই আদর্শবাদ ডমিন্যান্ট বা প্রমিনেন্ট ক্লাসের ইন্টারেস্টকে একটা সার্বজনীন রূপ দেয়; পাশাপাশি আপাতদৃষ্টিতে সাবর্ডিনেট ক্লাসের ইন্টারেস্টকেও প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।



কোনও সরকার লেজিটেমেট হতে পারে, বৈধ হতে পারে কিন্তু সে তাঁর হেজিমনিক কন্ট্রোল মানে বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নৈতিক নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা হারাতে পারে। যেমন আমরা দেখি ১৯৯০ এর পর থেকে সকল নির্বাচিত সরকারের শেষ বছরগুলোতে। আবার কোনও সরকার ইল্লেজিটেমেট বা সাংবিধানিকভাবে অবৈধ হতে পারে কিন্তু সমাজে পর্যাপ্ত হেজিমনিক কন্ট্রোল থাকতে পারে ঠিক যেটা ঘটেছে ২০০৭-২০০৮ এর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথম কয়েকটা মাস।



আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের হেজিমনিক টুল ছিল বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ এবং বাংলার জনগণের উপর পাকিস্তানি শোষণ। পাকিস্তানের শুরু থেকেই পাকিস্তানি শাসকদের সঙ্গে বাঙ্গালী রাজনৈতিক নেতৃত্বর সংঘাতই পরবর্তীতে ব্যাখ্যাত হয়েছে বাঙ্গালী জাতির বিরুদ্ধে পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্র হিসেবে। সাবল্ট্রান, মধ্যবর্তী এবং বর্ধিষ্ণু ধনিক শ্রেণী সকলের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে এই বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ এবং পাকিস্তানি উপনিবেশিক শোষণ মুক্তির লক্ষ্যের মধ্যেই এই ভূখণ্ডের সকল শ্রেণী সেই পাকিস্তানি উপনিবেশিক শোষণ মুক্তির মধ্যে নিজের স্বপ্ন পূরনের আশা করেছে। সেটাই হয়ে উঠেছিলো হেজিমনিক কন্ট্রোলের টুল।



আমাদের শাসকরা সব সময়েই হেজিমনিক কন্ট্রোলের সমস্যায় ভুগেছে। হেজিমনিক কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠার ব্যর্থতায় রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে সমস্ত সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কোনও শ্রেণীই তাঁর হেজিমনি তৈরি করতে পারে না যদি তাঁর আদর্শ তাঁর নিজস্ব শ্রেণীর সীমানার বাইরে আবেদন রাখতে ব্যর্থ হয়। স্বাধীনতার পর থেকেই ধনিক শ্রেণীই সব সময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, তাঁরা কখনো তাদের ক্ষুদ্র শ্রেণী স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে পারেনি। এই লুম্পেন ধনিকদের লুটপাটের আদর্শই সুবিধাভোগী নাগরিক সমাজের আদর্শ হয়ে উঠেছে। এই লুটপাট আর দুর্নীতির আদর্শকে বৃহত্তর সমাজ কখনো গ্রহণ করেনি। সে কারণেই ওয়ান ইলেভেনের সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সংকল্প নিয়ে যখন ক্ষমতায় আসলো, এবং কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিল, বৃহত্তর সমাজ মুহূর্তেই এক নতুন আশা নিয়ে তাঁর পিছনে দাঁড়ালো। সেই এক ঘোষণাই ওয়ান ইলেভেনের সরকারকে কিছুদিনের জন্য হলেও হেজিমনিক কন্ট্রোল এনে দিল।



এই হেজিমনিক কন্ট্রোল হারালে বা হেজিমনিক রাপচার হলে সাংবিধানিক বৈধতা থাকলেও সেই সরকার সামাজিক কর্তৃত্ব হারায় এবং জনগণ সেই সরকারের কর্তৃত্বকে প্রত্যাখ্যান করতে থাকে। গ্রামসির মতে দুভাবে এই হেজিমিনিক রাপচার হতে পারে, ১/ যদি শাসক দল গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অঙ্গীকার পূরণে ব্যর্থ হয়। ওয়ান ইলেভেনের সরকার এভাবেই হেজিমনিক কন্ট্রোল হারিয়েছিল। অথবা ২/ জনগণের একটি বড় অংশ মূলত কৃষক এবং পেটি বুর্জোয়ারা রাজনৈতিক নিষ্ক্রিয়তা থেকে কিছু মাত্রায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। গ্রামসি আরো বলেন, এই হেজিমনিক রাপচার বা হেজিমনিক ক্রাইসিসের পরিণতি দু ধরণের হতে পারে ১/ মধ্যবর্তী, যেখানে রাজনীতির মাঠ কোনও ধরনের সহিংস সমাধানের দিকে যেতে পারে, যেখানে ত্রাতার ভূমিকায় কোনও “ম্যান অব ডেস্টিনি” র নেতৃত্বে কোনও অজানা শক্তির উদ্ভব হতে পারে। অথবা ২/ দীর্ঘ মেয়াদে সমাজে নানা মরবিড সিমটম বা মৃত্যুকালীন উপসর্গ দেখা দেয়, কারণ পুরনো আদর্শ মৃত কিন্তু নতুন আদর্শ এখনো জন্ম নিতে পারেনি। আমাদের সমাজে এবং রাষ্ট্রে নানা সময় আমরা মধ্যবর্তী পরিণতির উদাহরণ দেখেছি। আর এখন বর্তমান সংকট হচ্ছে সেই হেজিমনিক রাপচারের দীর্ঘমেয়াদী পরিনতি, মরবিড সিমটম।



স্বাধীনতার পরে আমাদের হেজিমনিক রাপচার কীভাবে হোল? মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হেজিমনিক টুল “পাকিস্তানি শোষণ মুক্তি” পাকিস্তানের পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে অপসৃত হোল। এর পরে প্রয়োজন ছিল একটা নতুন হেজিমনিক টুল, নতুন ইকোনমিক এবং সোশ্যাল অর্ডার। আওয়ামী লীগের র‍্যাডিক্যাল অংশ মুক্তিযুদ্ধকে অসমাপ্ত বিপ্লব আখ্যা দিয়ে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে “বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র” প্রতিষ্ঠার ডাক দিল। এই ডাকে শেখ মুজিবের সাড়া না পাওয়ায় ১৯৭২ এর এপ্রিলে এই অংশ আওয়ামী লীগ ত্যাগ করলো। এর পরে মে মাসে কৃষক লীগের র‍্যাডিক্যাল অংশ, জুনে শ্রমিক লীগের র‍্যাডিক্যাল অংশ আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে জাসদ গঠন করলো। বলাই বাহুল্য, জাসদের সকলেরই মুক্তিযুদ্ধে গৌরব জনক ভুমিকা ছিল। জাসদ শুধু আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেই ক্ষান্ত হোল না, তাঁরা শাসক দলের বিপরীতে নতুন আদর্শ হাজির করলো। তাঁরা বলল, উদীয়মান ধনিক শ্রেণী রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে শোষণমূলক সামাজিক স্ট্রাকচার তৈরি করেছে, একমাত্র সর্বহারার বিপ্লব এবং সমাজের সমাজতান্ত্রিক রূপান্তরই একমাত্র শোষিত শ্রেণীর জন্য স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে পারে। জাসদের আদর্শিক অবস্থানের অনেক স্ববিরোধীতা এবং দুর্বলতা সত্ত্বেও অল্প সময়েই এই নতুন দলটি দারুণভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। একই সময়ে সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টি আত্মগোপনে থাকা সত্ত্বেও গ্রামীণ অঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে। বিকল্প হেজিমনির উত্থানে শাসক দল পাল্টা আদর্শ তুলে ধরে, সেই আদর্শ ছিল “মুজিব বাদ”। এই মুজিব বাদের মুল উপাদানগুলো ছিল, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সমাজতন্ত্র। কিন্তু বাস্তবে প্রায়োগিক দিকে থেকে মুজিব বাদ নানা আভ্যন্তরীণ অসঙ্গতির (এটা আরেকটা বিস্তারিত আলোচনা, আরেকটা লেখায় পুর্নাংগ আলোচনার ইচ্ছে রইল) জন্ম দিতে থাকায় হেজিমনিক হয়ে উঠতে পারেনি। পাশাপাশি পাল্টা র‍্যাডিক্যাল বাম হেজিমনির উত্থানে এটা স্পষ্ট হয়ে যায়, শাসক শ্রেণীর হেজিমনিক কন্ট্রোল রাপচার হয়েছে।



মুজিব সরকারের পরে জিয়া সরকার পাল্টা হেজিমনি তৈরির জন্য ধর্ম, ভুঘন্ড ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ, জাতীয় সুরক্ষা (মুলত ভারতের কাছে থেকে) তাঁর আদর্শের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করে। যেহেতু ধর্মের একটি সার্বজনীন আবেদন থাকে তাই হেজিমনিক টুল হিসেবে ধর্মের ব্যবহার শাসক দলের কাছে একটা জনপ্রিয় এবং কার্যকর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া শুরু হোল। যখনই শাসক হেজিমনির সংকটে পড়েছে তখন আশ্রয় খুজেছে ধর্মের কাছে। ধর্মের হেজিমনির বলে বলিয়ান হয়ে তাদের শাসন এবং শোষণ অব্যাহত রেখেছে। এই কাজ করতে গিয়ে নানা সময় নানা ধর্মীয় দল, উপদলকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হয়েছে, এভাবেই ধর্মীয় রাজনীতি বাংলাদেশের পলিটিক্যাল ডিসকোর্সে ক্রমাগত বৃহত্তর স্থান দখল করেছে এবং শক্তি সঞ্চয় করেছে। এই পাকচক্র এখনো চলছে।



৯০ এর পর থেকে এক শাসক দল নানা অঙ্গীকারে ভোটের মাধ্যমে লেজিটিমেসি পেয়ে সরকার গঠন করে কিন্তু হেজিমনিক কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনা। বাস্তবিক অর্থে হেজিমনি প্রতিষ্ঠিত করার কোন পদক্ষেপ ও তাঁরা কখনো নেয়নি। একই ভুল তাঁরা বারবার করেছে। হয় তাঁরা এর প্রয়োজনীয়তাকে বুঝতে পারেনি অথবা তারা ধর্মকে ব্যবহার করে সাময়িক সমাধানের সহজ পথে সব সময় চলতে চেয়েছে। এই সমস্যার চাপ বাড়তে বাড়তে এখন মধ্যবর্তী আর দীর্ঘ মেয়াদী সকল সমস্যা একসাথে মাথা তুলেছে। পুরনো ব্যবস্থা মৃত, নতুন সোশ্যাল এবং ইকোনমিক অর্ডার এখনো ভূমিষ্ঠ হয়নি। আর সেটা না হলে কোন সংকট ই কাটবে না।



কৃতজ্ঞতাঃ আলি রিয়াজ, ইঙ্কনভেনিয়েন্ট ট্রুথ অ্যাবাউট বাংলাদেশী পলিটিক্স

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৪৮

ঢাকাবাসী বলেছেন: বুঝিনি, মনে হল বড়দের ব্যাপার, মাথার উপর দিয়ে গেল!

২| ১১ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:১৮

মাহবুব রশিদ বলেছেন: পোস্টে গড় পরতা একমত।

ইলেকটরাল লেজিমিনেটি পাইয়াও হেজিমনি ছাড়া কোন সরকার বা রাজনীতি টিকে থাকতে পারেনা। কি সেই হেজিমনি?

আওয়ামীলীগের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবসার হেজিমনি। এবং বিএনপির তরফে, আওয়ামী বিরোধীতা-ভারত বিরোধীতার হেজিমনি।

এইসব ন্যরেটিভ প্রতিষ্ঠা খুব সহজ কাজ। দুইটাই খুব সত্য ও বাস্তব ন্যারেটিভ। মুক্তিযুদ্ধরে ডিসঔন করা যায় না। আবার ভারতের যে আধিপত্ব বিস্তারের চেষ্টা তাও খুব সত্য।
কিন্তু কেবল বিরোধীতার রাজনীতি করে আরলে রাজনৈতিক আদর্শও গড়া যায় না। যেইটা বিএনপি কইরা থাকে।

বাঙালি ইমোশানের জাতি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে তুলনীয় শক্তিশালী আরেকটা চেতনা আছে- সেটা হোলো ইসলাম।

ইসলাম এবং "মুক্তিযুদ্ধ" এই দুই ধর্ম অল্প মাত্রায় থাকলে খুবই জরুরী জিনিস কিন্তু যেহেতু বাঙালি ন্যাংটা হয়ে না নাচলে মনে করে কিছুই দেখানো হোলো না সেহেতু এই দুই ধর্মকেই ন্যারেটিভের কেন্দ্রে ঢুকায় দুই দল।

এইটাই সাম্প্রতিক রাজনীতির সঙ্কট মনে করি।

৩| ১১ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:২২

ত্রিশোনকু বলেছেন: রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য যেখানে ক্ষমতায় আরহোনের মধ্যমে অতি স্বল্প সময়ে যেনতেনো প্রকারে সম্পদের পাহাড় গড়া, হেজিমনি সেখানে ধর্তব্য নয়।

৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:০৪

ফুরব বলেছেন: শাসকদের দুরদর্শিতা আর নৈতিক অবক্ষয় এ দুটি চরমে----------

৫| ১১ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:০৮

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: আদর্শগত বৈপরীত্য থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্ম এবং বিস্তার। কিন্তু জামাত বা গুটি কয়েক অল্প-পরিচিত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক সমাজতান্ত্রিক দল ছাড়া আমি তো কারও আদর্শ দেখতে পাই না। অবশ্য জামাতেরও কোন আদর্শ এখন আর আলাদাভাবে দেখা যায় না।

আপনি জাসদের আদর্শের কথা বললেন, বললেন আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র আদর্শের কথা। দলের গঠনতন্ত্র আর নির্বাচনী ইশতেহারে হয়তো কিছু লেখা থাকতে পারে। তাদের কথা বা আচরণে আমি তো কোন আদর্শ দেখতে পাই না। জাসদের আদর্শ কি এখনও অবশিষ্ট আছে?

এখানে বিস্তারিত বলা না গেলেও আমি তো মনে করি, বর্তমানে সক্রিয় কোন দলেরই কোন আদর্শিক পার্থক্য নেই। আগে থাকলেও থাকতে পারে, কিন্তু এখন সবারই একটা আদর্শ, সেটা হলো ব্রষ্টাদর্শ অথবা জনশোষণ।

শাসকদের সমস্যাটি এখন যত পরিষ্কার তা আগে কখনও ছিলো না।

৬| ১১ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৩৩

মাহাবুব১৯৭৪ বলেছেন: আমাদের সরকার ব্যাবস্থা উপনিবেশ আমল থেকে আসলে তেমন পরিবর্তিত হয়নি।

স্বাধীন ভারতে একটা স্লোগান খুব জনপ্রিয় ছিল " ইয়ে আজাদী ঝুটা হ্যায়"। এটা আমাদের আম জনতার প্রানের স্লোগান হয়ার কথা।আমরা কিন্তু সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতার সুফল পাইনি। আজও আমাদের দেশের প্রশাসন আর পুলিশি ব্যাবস্থা উপনিবেশ কালীন সময়ের মতই। আজ ও আমাদের সরকার জনগনের বিরুদ্ধপক্ষের ভুমিকায় অবতীর্ণ হন। আজ ও আমাদের দেশে প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী সরকারি কর্মকর্তা, আমলা দের কাছে হেনস্থা হতে হয়। আজ ও আমাদের জনগনের জন্য লাল-সবুজ পাসপোর্ট নাগরিক অধিকার এর পর্যায়ে পড়েনি। আজ ও আমাদের দেশে পুলিশ ভেরিফিকেশন নামক অত্যাচার এর মুখোমুখি হতে হচ্ছে আম জনতাকে। প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণকে রাস্তায় ঘন্টার পর ঘন্টা আটকিয়ে রেখে প্রজাতন্ত্রের সেবক রা নিরাপত্তা চাদরে নিজেদেরকে ঢেকে চলাচল করেন। প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণকে যে চিকিৎসা সুবিধা দেয়া আছে তার উপর প্রজাতন্ত্রের সেবক রা আস্থা রাখতে না পেরে বিদেশে যান চিকিৎসা করাতে। আমাদের দেশ কি সত্যিকার অর্থে স্বাধীন হয়েছে?

কিন্তু আমাদের দেশে কেউ যদি " ইয়ে আজাদী ঝুটা হ্যায়" বা অনুরূপ কোন স্লোগান দেয়, তবে সে নিশ্চিত ছাগু অথবা চীনা বাদাম ট্যাগ পাবে, আম জনতা ট্যাগ পাবেনা। বা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন।

জনগনের যাওয়ার কোন জায়গা নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.