নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পিনাকীর ব্লগ

চিত্ত যেথা ভয়শূন্য

পিনাকী ভট্টাচার্য

চিকিৎসক, লেখক। কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, আমাদের অর্থনীতি।

পিনাকী ভট্টাচার্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিষয়টা কী?

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫১

বাংলাদেশে বর্তমানে বহুল উচ্চারিত শব্দ “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা”। কিন্তু কখনো প্রশ্ন করতে পারবেন না, এই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিষয়টা কী? এটা নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সেখানে কেউ কেউ কমেন্ট করেছেন যে এটা নিয়ে যারা প্রশ্ন করে তারা "রাজাকার"। অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আপনি শুধু জাবর কাটতে পারবেন বুঝতে চাইতে পারবেন না, কারণ সেটা ঐশ্বরিক। ঠিক এভাবেই বুদ্ধিজীবীরা এটাকে সংজ্ঞায়িত করতে চান।



ইউ ল্যাবের শিক্ষক মোহিত উল ইসলাম “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জিনিসটা কী” এই প্রসঙ্গে একটা নিবন্ধে লিখেছিলেন, “চেতনা কার্যত একটি অদৃশ্যমান অনুভূতি,কিন্তু এটার দৃশ্যমান প্রতিফলন হয় বাস্তব জগতে কর্মের মাধ্যমে। কর্মটাকে বুঝলে চেতনাটাকেও বোঝা যাবে। খুব সাদামাটাভাবে বললে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে সেই কর্মটি যার ফলে বাঙালির স্বশাসিত একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র অর্জিত হয়েছে।“ দেখুন খুব সুচতুর ভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে একটা অদৃশ্যমান অনুভুতি বানিয়ে ফেলা হোল। এতে সুবিধা অনেক কারণ নিজের পছন্দ আর ইচ্ছামত যে কোন কিছুতেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তকমা লাগিয়ে দিলে কাজটাও উদ্ধার হবে আবার যেহেতু সেই চেতনা অদৃশ্যমান তাই সেই চেতনার বাস্তবায়নের দায় নিতে হবেনা।



আমি “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” এই কী ওয়ার্ডে গুগলে সার্চ দিলাম। যেই লেখাগুলো পেলাম সেখান থেকে উদ্ধৃত করছি উনারা “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” বলতে কী বোঝেন?



ইউ ল্যাবের শিক্ষক মোহিত উল ইসলাম “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জিনিসটা কী” নিবন্ধে আবার ও লিখেছিলেন।



“মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার ব্রত। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে আজ ৪০ বছর, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কার্যকরতা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। খাপছাড়া গোছের শোনাবে কথাটি, কিন্তু যে বৈঠকি আলাপটি সেদিন আমার মন বিষিয়ে দিয়েছিল, সেটাতে যত সুধীজন অংশগ্রহণ করেছিলেন তাঁদের এক থেকে শেষ পর্যন্ত সবারই প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফলে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে।“

তাঁর মানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যেটাই হোক সেটার জন্ম ১৬ ই ডিসেম্বরের আগে। এবং এই চেতনার ব্রত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিলো। কিন্তু সেই “ব্রত” টা কী? আরো খুজতে থাকি।



“মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের বাংলাদেশ” শিরোনামে প্রফেসর ড. এম শমশের আলী লিখেছেন “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবারই চেতনা। “ খুব ভালো কথা তার মানে সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহারের যদি প্রতিবাদ করি সেটাও তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা!!



মুক্তমনা ব্লগে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের বাঙলাদেশ শিরোনামে মোঃ জানে আলম লিখেছেন, “আমাদের স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্যদিয়ে গড়ে ওঠা চেতনা ও মূল্যবোধগুলোই আমাদের স্বাধীনতার চেতনা হিসাবে বিকশিত হয়ে গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র-ধর্মনিরপেতা-জাতীয়তাবাদ প্রভৃতি চার মূলনীতি হিসাবে সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের সংবিধানে গৃহীত হোয়েছিল।“ এটাকে মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে কারণ আমরা আগেই স্থির করেছি এই চেতনাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিলো, এবং এটা অবশ্যই ২৬ শে মার্চের আগের বিষয়। সংবিধান তো রচিত হয়েছে স্বাধীনতার পরে।



মুক্তিযুদ্ধের চেতনা: বর্তমান ও ভবিষ্যৎ শিরোনামে মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন লিখেছেন, “শোষণ জুলুমের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম পরিচালনা করার অগ্নি শপথপুষ্ট চেতনার নামই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।“ তাহলে আজকের গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলন কী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?



মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশপ্রেম ও নতুন প্রজন্ম শিরোনামে লিখেছেনঃ মাসিক সুহৃদ “১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক সেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল যে বোধ বা চেতনাকে কেন্দ্র করে, তারই নাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা একটি বলিষ্ঠ চেতনা, আত্মপ্রত্যয়ের সুদৃঢ় উচ্চারণ।“



উত্তর কোথাও থেকে পেলেন না। কোন কিছুই স্পষ্ট হোল না। এটা নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার পরে বন্ধু মাসুদ রানা জানান, স্বপন কুমার চৌধুরী, যিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটীর একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। যুদ্ধের আগে সম্ভবতঃ ৭১-এর শুরুতে বা ৭০-এর শেষ দিকে, তিনি 'স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ'-এর প্রস্তাব করেছিলেন। সেটি গৃহীত হয়েছিলো। এটি এসে থাকবে বঙ্গভঙ্গের শেষের লগ্নে শরৎবসু ইত্যাদির প্রাস্তাবিত স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলা থেকে। ১৯৭১ সালের ২রা বা ৩রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্পেসিফিক্যালী 'স্বাধীনতার ইশতেহার' পাঠ করা হয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন, প্রস্তাবক ও লড়িয়েরা হচ্ছেন প্রাথমিকভাবে বাঙালী ছাত্র সমাজ, যাঁরাঃ (১) ১৯৪৮ সাল থেকে ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ তে শিক্ষা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণ-অভূত্থানের মধ্য দিয়ে দারুন এক পরিপক্কতা নিয়ে জাতির অগ্রসরতম চিন্তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। সে-সময়ে বিশ্বব্যাপী ছাত্রদের উত্থান ফ্রান্স থেকে শুরু হলেও ১৯৬৮ সালে ফ্রান্সে তা বিফল হয়। কিন্তু ১৯৬৯ সালে বাংলায় তা সফল হয়। এটিই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা তৈরী করে। ৬ দফা ও ১১ দফা হচ্ছে ঐতিহাসিক পূর্বগামী ডকুমেন্ট। মার্চের স্বাধীনতার ইশতেহার সচেতন ও স্পষ্ট উচ্চারণ। এখানে কোনো দ্বিধা বা বিতর্কের বিষয় নেই ২৬ শে মার্চের মতো। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সবচেয়ে অগ্রসর চিন্তা ধারণ করেছিলেন ছাত্ররা - তরুণ প্রজন্ম। এটি বুঝতে পারাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ - আগামী দিনের জন্যেও।



মাসুদ রানা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিষয়ে কয়েকটা বিষয় স্পষ্ট করলেন। তিনি সুনির্দিষ্ট ভাবে নির্দেশ করলেন এটা কোথায় কোথায় খুজতে হবে ১/ স্বাধীনতার ইশতেহার। ২/ ৬ দফা ৩/ ১১ দফা।



যেই পূর্বগামী ডকুমেন্ট থেকে ইশতেহার তৈরি সেগুলো একটু পর্যবেক্ষণ করি।

৬ দফায় যে বিষয়ে দাবী জানানো হয়েছিলো সেগুলো ছিল।

১/ শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি।

২/ কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা।

৩/ মুদ্রা ও অর্থ বিষয়ক ক্ষমতা।

৪/ রাজস্ব কর ও শুল্ক বিষয়ক ক্ষমতা।

৫/বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা

৬/ আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা



আসুন আমরা আবার দেখি ১১ দফা কর্মসূচী



১. শিক্ষা সমস্যার আশু সমাধান। অর্থাৎ, হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় সমস্ত আইন বাতিল করা এবং ছাত্রদের সকল মাসিক ফি কমিয়ে আনা।

২. প্রাপ্ত বয়স্ক ভোটে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা এবং পত্রিকাগুলোর স্বাধীনতা দেওয়া এবং দৈনিক ইত্তেফাকের প্রকাশনার নিষেধাজ্ঞা তুলে ফেলা।

৩. ছয় দফা দাবির প্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তানে পূর্ন সায়ত্তশাষন প্রতিষ্ঠা।

৪. পশ্চিম পাকিস্তানের সকল প্রদেশগুলোকে (অর্থাৎ, উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ,বেলুচিস্তান,পাঞ্জাব,সিন্ধু) স্বায়ত্তশাসন দিয়ে একটি ফেডারেল সরকার গঠন।

৫. ব্যাংক, বীমা, পাটকলসহ সকল বৃহৎ শিল্প জাতীয়করণ।

৬. কৃষকদের উপর থেকে কর ও খাজনা হ্রাস এবং পাটের সর্বনিম্নমূল্য ৪০ টাকা(স্বাধীনতার দলিলপত্রে উল্লেখ রয়েছে) ধার্য করা।

৭. শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা এবং শ্রমিক আন্দোলনে অধিকার দান।

৮. পূর্ব পাকিস্তানের বন্যা নিয়ন্ত্রন ও জল সম্পদের সার্বিক ব্যবহারের ব্যবস্থা গ্রহন।

৯.জরুরী আইন, নিরাপত্তা আইন এবং অন্যান্য নির্যাতনমূলক আইন প্রত্যাহার।

১০. সিয়াটো (SEATO), সেন্ট্রো (CENTRO)-সহ সকল পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি বাতিল এবং জোট বহির্ভূত নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ।

১১. আগরতলা মামলায় অভিযুক্ত ব্যাক্তি সহ দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক ও রাজনৈতিক কর্মীদের মুক্তি ও অন্যান্যদের উপর থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহার।



৬ বা ১১ দফায় আমরা চেতনার চাইতে অনেক বেশী বৈষয়িক বিষয় পাই এবং আক্ষরিক অর্থেই সেগুলো পূর্ববর্তী ডকুমেন্ট যেখান থেকে চেতনা উৎসরিত হয়েছে কিন্তু চেতনা বিষয়টা ঠিক সেখানে খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

এবার আসুন দেখি স্বাধীনতার ইস্তেহারে কী ছিল?



‘৫৪ হাজার ৫০৬ বর্গ মাইল বিস্তৃত ভৌগলিক এলাকার সাত কোটি মানুষের জন্য আবাসভুমি হিসেবে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাস্ট্রের নাম বাংলাদেশ । এই দেশ গঠন করে নিম্নলিখিত তিনটি লক্ষ্য অর্জন করতে হবেঃ



১) স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে পৃথিবীর বুকে একটি বলিষ্ট বাঙালি জাতি সৃষ্টি ও বাঙালির ভাষা, সাহিত্য , কৃষ্টি , সংস্কৃতির বিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে ।

২) স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে অঞ্চলে অঞ্চলে,ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে বৈষম্য নিরসন কল্পে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু করে কৃষক শ্রমিক রাজনীতি কায়েম করতে হবে ।

৩) স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে ব্যক্তি,বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সহ নির্ভেজাল গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে ।



এটাকে যদি আরও বুলেট পয়েন্টে বলতে হয় তবে, বলিষ্ঠ বাঙ্গালী জাতি, বৈষম্যহীন ন্যায়ের সমাজ, গণতন্ত্র।



তাহলে এই পর্যন্ত এসে দাঁড়ালো তিনটা মুল বিষয় হচ্ছে সেই চেতনা যা ছাত্ররা ৩ রা মার্চ জাতির সামনে তুলে ধরল। এর পরে এল ২৫ শে মার্চের কাল রাত। অতর্কিত হামলার পর তৈরি হোল প্রবাসী সরাকার। ১৭ ই এপ্রিল ঘোষিত হোল আমাদের প্রক্লেমেসন অব ইন্ডিপেন্ডেন্স। যেটা আমাদের যুদ্ধের বৈধতা দাবী করলো। সুস্পষ্ট ভাবে ঘোষণা করলো, কেন আমরা এই যুদ্ধ করছি। এবং আমরা যুদ্ধে জিতে কেমন দেশ তৈরি করবো। যেটাকে আগের সবাই “ব্রত” বলেছেন। সেখানে ছিল তিনটা বিষয়

১/ সাম্য

২/ মানব সত্ত্বার মর্যাদা

৩/ সামাজিক ন্যায় বিচার।



সূক্ষ্ম ভাবে বিচার করলে স্বাধীনতার ইশতেহার আর প্রক্লেমেসন অব ইন্ডিপেন্ডেন্স অভিন্ন। এই দুটোকে এক করে আমাদের সহজ বোধের ভিতরে নিয়ে আসতে চাইলে বলতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিলঃ



১/ বৈষম্যহীন, মুক্ত এবং ন্যায় বিচারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন

২/ যেই রাষ্ট্রে বলিষ্ঠ জাতি হিসাবে আমাদের বিকাশ ঘটবে এবং

৩/ সেই রাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা আমাদের মানব সত্ত্বা বিশ্বে মর্যাদা পাবে।



মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোন ধোঁয়াটে অদৃশ্য বিষয় নয় অত্যন্ত মূর্ত বিষয় এবং বলাই বাহুল্য যেই রাষ্ট্র এবং সমাজ তৈরি লক্ষ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো সেই লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, তাই শাসক শ্রেণী সব সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মূর্ত করতে চায়না।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এই বিষয়ে একটা পোষ্ট লিখেছিলাম......

-----"আমরা স্বাধীন হয়েছি আজ ৪২ বছর। দু:খজনক হলো আজও পুরো জাতি স্বাধীনতার ঐক্যমতের পূর্ণ ইতিহাস পায়নি! দ্বি-দলীয় খন্ডিত ইতিহাসে আজ যে হিরো কাল হয়ে যাচ্ছে ভিলেন!!

এর আশু সমাধান হওয়া দরকার। আর একটা মূল বিষয় হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
যা নিয়ে সকলেই বক্তৃতায় ফেনা তোলে, আবেগে উদ্বেলিত হয়, আলোচনায় জোশ আসে। কিন্তু কেউ ষ্পষ্ট করে বলে না- চেতনার স্বরুপ।

কৃষক,শ্রমিক, জেলে, মুটে মজুর, ছাত্র শিক্ষক, কূলবধু, ছাত্রী, হুজুর, পন্ডিত, ব্রাহ্মন সকল সকল জনতা যে চেতনায় উজ্জিবীত হয়েছিল- সেই চেতনার স্বরুপ কি ছিল?



চাইলে দেখতে পারেন।


মুক্তিযুদ্ধের চেতনা- কে কি এবাবে বলা যায় না?-

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা- স্বাধীন ভাবে বাঁচা
স্ব-অধীনতার দায় পালন করা।
অর্থনৈতিক মুক্তি- ব্যক্তিক এবং সামাজিক
স্ব-নির্ভর সুন্দর দেশ গড়ে তোলা
সকল মৌলিক অধীকার সকল নাগরিকের জন্য
সমান ভাবে নিশ্চিত করা
এই ভাবে যদি বলি তাতে কি কিছু বাদ পড়ে যায়?

অথচ কিছূ লোক এটাকে ধর্মহীনতা, একটা নির্দিষ্ট দলীয় আইটেম বানানো সহ যে যার মতো সুবিধাবাদীতায় ব্যবহার করছে.......


আসলেই এটা নিয়ে বিশাল আঙ্গিকে কাজ হওয়া দরকার।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৯

পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন: ঠিক বলেছেন বিদ্রোহী ভৃগু। এটা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হওয়া দরকার।

২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৯

এম আর ইকবাল বলেছেন:
৭১এর চেতনা "আমাদের দেশ বাংলাদেশ ।"
বর্তমান চেতনা " দেশ আমার "

৩| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৬

শাহ আজিজ বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আর ভাবিনা কারন ৭৪ এর ফেব্রুয়ারি তে ওটা মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে জমা পড়েছে , এরপর থেকে অদ্ভুত এক গাধার পিঠে আমরা চলছি নিরন্তর । এখন যা চলছে তা সুশিলদের " পাক চেতনা", কষ্ঠে বুকটা ফেটে যায় এসব বলতে ---------!!

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩১

পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন: শাহ আজিজ আপনার মর্মবেদনা আমি অনুভব করতে পারছি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৪

বেকার যুবক বলেছেন: সূক্ষ্ম ভাবে বিচার করলে স্বাধীনতার ইশতেহার আর প্রক্লেমেসন অব ইন্ডিপেন্ডেন্স অভিন্ন। এই দুটোকে এক করে আমাদের সহজ বোধের ভিতরে নিয়ে আসতে চাইলে বলতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিলঃ

১/ বৈষম্যহীন, মুক্ত এবং ন্যায় বিচারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন
২/ যেই রাষ্ট্রে বলিষ্ঠ জাতি হিসাবে আমাদের বিকাশ ঘটবে এবং
৩/ সেই রাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা আমাদের মানব সত্ত্বা বিশ্বে মর্যাদা পাবে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোন ধোঁয়াটে অদৃশ্য বিষয় নয় অত্যন্ত মূর্ত বিষয় এবং বলাই বাহুল্য যেই রাষ্ট্র এবং সমাজ তৈরি লক্ষ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো সেই লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, তাই শাসক শ্রেণী সব সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মূর্ত করতে চায়না।



সুন্দর উপস্থাপন।


মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীরা সবচেয়ে বেশি এর সংজ্ঞা নির্ধারণে সচেষ্ট হয়, এটাই ধোঁয়াশা সৃষ্টির মূল কারণ। ধন্যবাদ।


০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩২

পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন: ধন্যবাদ বেকার যুবক আপনার মতামতের জন্য।

৫| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০১

ঢাকাবাসী বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধ', 'চেতনা' আর 'সংবিধান' এই শব্দগুলো দুনিয়াতে প্রতিমাসে সবচাইতে বেশীবার মুখে উচ্চারিত হয় বা লিখিতভাবে প্রকাশিত হয় 'বাংলাদেশে'।

৬| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫২

দর্পন বলেছেন: একমত ।
বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে পাকিস্থান ভেঙ্গেছে , অর্থনৈতিক বৈষ্যমের কারণে ও গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা না পেয়ে , অতএব মুক্তিযুদ্ধের পিউর চেতণা হচ্ছে গণতন্ত্র ও শোষণমুক্ত অর্থনীতির । এর বাইরে যে আইডোলজিকাল বিষয় সেই গুলো সেকেন্ডারি কোর না । অথচ এই গণতন্ত্রকেই প্রথমে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ বাকশাল করে , যা ছিল বাংলাদেশের মানুষের সাথে এবং মুক্তিযুদ্ধের সাথে সবচেয়ে বড় বেইমানি । এরপর সামরিক শাসনে সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে ।

৭| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৫

সামু মামু বলেছেন: চেতনা ব্যবসায়ী ধরা খাইলো B-)B-) - প্রমাণসহ দেখুন
Click This Link

৮| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৬

রায়ান ঋদ্ধ বলেছেন: গণজাগরণ মঞ্চ প্রতিনিধি সভায় নিয়ন্ত্রকরা দিনাজপুরে যখন এসেছিলেন তখন প্রশ্ন করেছিলেন "মুক্তিযুদ্ধের চেতনা" কী?.. বিজ্ঞদের উত্তরের অপেক্ষায় ছিলাম, কিন্তু কেউ উত্তর দিচ্ছেন না। অবশেষে আমি স্বল্পজ্ঞানে একটা উত্তর দিলাম যেটা অবশ্য গৃহীত হয়নি বা সঠিক ভাবে সংজ্ঞায়িত হয় নি। এরপরপর একজন বলল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হল গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতা। তারপর ভাবলাম স্বাধীনতার চেতনাই জানি না, গণজাগরণ মঞ্চে স্বাধীনতার চেতনা বিরোধীদের ফাঁসির দাবী নিয়ে স্লোগান দিচ্ছি.... আসলেই আমারা ভিত্তি হীন।

আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, আমার পরিবারজনের মধ্যে অংশগ্রহণকারী কেউ নেই। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমার জানা কেবল কিছু বই, কিছু মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর ছবি, ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া কিছু প্রশ্নের উত্তর। এর মধ্যে থেকেই ধারনা নিয়ে যেটা বলেছিলাম সেটা কিছুটা এরকম-
স্বাধীনতার চেতনা হল সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বাক স্বাধীনতা, বিভেদ বৈষম্য নিরসন, সর্বোপরি নিজেদের ভাষা, নিজেদের মাটি, নিজেদের মানুষ নিয়ে একটা স্বতন্ত্র রাষ্ট্র, বাংলাদেশ, গঠনের প্রতিজ্ঞা।

আসলে জানতে চাচ্ছি আমার জাবাবটা স্বাধীনতার চেতনার মাঝে পড়ে?

৯| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩২

শাহ আজিজ বলেছেন: দেশটি স্বাধীন হল ১৬ই ডিসেঃ ১৯৭১ । কিশোর তখন আমি । আজ ৪২ বছর বাদে চেতনা নিয়ে ঠাসা ঠাসি চলছে আর তাও চলছে যারা মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না , স্বাধীনতার পর সবচে সুবিধা ভোগী , আর স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে সম্পৃক্ত । যে চেতনা নিয়ে কৃষক হাল ছেড়ে রাইফেল নিয়েছিল হাতে সেই হতভাগা পরবর্তী জীবনে শ্রম দিয়েছে মুজিবের ক্ষমা প্রাপ্ত রাজাকারের বাড়িতে। চেতনার কোন ধারাই বাস্তবায়িত তো হয়নি বরং রাজাকারের গাড়িতে উড়েছে লাল সবুজ পতাকা । এক মুক্তিযোদ্ধা জিয়া ছাড়া আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারা এসেছে তারা সবাই পাকিস্তানী সেনাদের আশ্রিত ছিল । অবাক হয়ে গেলেন না? একজন মুজিব ধোঁকা দিয়েছে বাঙ্গালিদের , জিয়ার দোষ দেবো কি ?

আমার অনুভূতি এভাবেই লিখেছিলাম /


হৃত স্বাধীনতা

হরন হয়েছে স্বাধীনতা আমার
রাজনীতিকের হাতে
আছে সেনাপতি বুদ্ধিপরজীবি
ওলামা কম্যুনিস্টের জঞ্জাল যত সাথে ।

এ কেমন জীবন দিলে মুজিব-জিয়া
স্বাধীন দেশ হবে ,শেষ হবে
পাকিস্তানী বঞ্চনা
কথাতো তেমনই ছিলো - তবে

তোমরাই হয়ে গেলে ইয়াহিয়া
আইয়ুবের চেয়ে সরেস এক কাঠি
পড়িলে ঝাপাইয়া সাধারন্যে
লয়ে পুলিশের লাঠি

আজিকার পরিস্থিতি তোমাদের সৃষ্টি
অনন্য জঘন্য মৃত বরাহ সমান
এত লোভ লুকাইয়া রাখিয়া
দিয়েছ গণতন্ত্রের বয়ান
দুজনেই গেছো পরলোকে আজিকে
রেখে গেছো গাদা গাদা চ্যালা
সঙ্গে আছে ভয়াবহ দুহিতা,
বিধবা ,গুনধর পুত্র এবং কতিপয় শালা

ডেমোনক্রাটিক স্টাইলে লুটিয়াছে তাহারা
ভরিয়াছে তহবিল দেশ এবং বিদেশে
লজ্জা বলিয়া থাকিত যদি কিছু
লুকাইত মুখ চলিত ভিন্ন বেশে

চৌর্য্যবৃত্তির গৌরব গাঁথায় করিতেছে তাহারা গান
তোমাদের শেখানো বেসিক থিম রাখিয়াছে অম্লান
কে দেবে জবাব ,নেই কেউ সাধারনের লাইনে
ফিরিতেছে তাহারা লইয়া কুমন্ত্র আপাতঃ জরুরী আইনে ।।


০৮.১০.২০০৮ শাহ আজিজ রচিত







১০| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:০০

ফাহিম মোল্লা বলেছেন: আমি মনেকরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মূলত একটিই। আর সেটি হল মুক্তি।

১১| ০৮ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:০০

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: ভালো পোষ্ট। আমার মতে মুক্তিযুদ্ধের আলাদা কোন চেতনা নাই। মুক্তিযুদ্ধটা ছিলো সময়ের দাবী, এছাড়া আর কোন গতি ছিলোনা। সময় ঠিক করে মানুষ কিংবা জাতি কোন পথে হাটবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.