নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত,

পি কে বড়ুয়া

চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত,

পি কে বড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশী বৌদ্ধদের আত্মবিস্মৃত অবস্থান

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৫

কালক্রমে বাংলাদেশী বৌদ্ধ (বড়ুয়া) রা একটা প্রবল কোলাহল ময় সম্প্রদায় এ রূপান্তরিত হয়ে গেছে । গৌতম বুদ্ধ মানুষকে সুনির্দিষ্ট ভাবে বলে দিয়েছেন ' প্রত্যেকে যেন তার নিজ নিত্য কর্মে সদা অপ্রমত্ত থাকেন ', কিন্তু পরিতাপের বিষয় তাঁর অনুসারীরা এখন ১৮০ ডিগ্রী বিপরিতে চলে গেছেন । প্রমত্ততা ছাড়া তাদের কোন কর্মই এখন সম্পাদন হয় না। তাদের ধর্মীয় অনুষ্টান গুলো অন্যান্য দের মতো হয়ে উঠেছে প্রচন্ড শব্দ দূষণকারী, শান্তি বিনষ্টকারী । যারা অনুষ্টানে উপস্থিত সাধারনত তাদের জন্যেই মাইক সীমিত রাখার সভ্যতা আমাদের দেশের কোন ধর্মীয় সম্প্রদায় ই গেরাহ্যি করে না । চতুর্দিকে অনেক অনেক দূরে মাইক লাগিয়ে আশে পাশের নিকট দূর গৃহবাসী দের জন্যে কর্ণবিদারী পরিস্থিতির এই যে অনধিকার অত্যাচার আমাদের দেশে সহনীয় সংস্কৃতি এখন । কিন্তু এই ক্ষুদ্র জন গোসটির এমনটি হবার কথা ছিল না । প্রসঙ্গত, কাল একটি অন্তেষ্টক্রিয়ায় যোগ দিয়েছিলাম। প্রয়াত একজন সামাজিক ব্যক্তিত্ব । সেই সুত্রে অনেক লোকের সমাগম । সেটা তাঁর জন্যে যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে । কারো মাঝে, শোক ,শ্রদ্ধা, ভালবাসার লেশ মাত্র নেই ।অস্থির প্রমত্ত আগত মানুষ আর অস্থির ভিক্ষু কুল। তার মাঝে শোক ক্লিষ্ট পরিবার পরিজন অসহায় । শ্রদ্ধা জানানোর নামে একেক জনের বজ্রকন্ঠের গগন বিদারী গর্জন, পরিমিতি বোধের লেশ চিহ্ন হীন লাগামহীন বাগাড়ম্বর। উপস্থিত রাজনৈতিক দলের চেলাদের আত্মপ্রচারের মাঝে সবার হাততালিতে মানুষ বেমালুম ভুলে গেছে কেন তারা সেখানে সমবেত হয়েছে। চরম অবমানকর একটি পরিবেশের মাঝে বসে থেকে উপলব্দি করলাম মানুষ মরলে নাকি সব কিছুকে অতিক্রম করে চলে যায়। ফুলের তোড়া ,ধুপের সুবাস, দীপের আলো কিছুই তাঁকে ছুঁতে পারে না। কিন্তু বড়ই অবাক লাগে, মৃত্যুর পরেও মানুষ রাজনীতির উরধে উঠতে পারে না । সেখানেও বিভিন্ন লক্ষকোটি টাকার প্রতিশ্রুতি আর অপরিণামদর্শী মানুষের হাততালি । সাধারনত মৃত ব্যক্তিকে নিয়েই মানুষ মনে হয় বেশি মিথ্যাচার করে । অথচ এমনটি হবার কথা ছিল না । মৃত মানুষের দেহ নিয়ে এই তথাকথিত 'অনিত্য' কর্মের চেয়ে কি ভাল নয় তা মানুষের কল্যানে দান করে দেয়া ? এমন কি সেই দেহ অন্য যে কোন প্রানীর আহারে লাগলেও তা এমন অবাঞ্চিত মনে হত না । একেবারে ন্যুনতম সত্য আর সুন্দর কে ধরে রাখতে আমাদের কেন এমন অনীহা ?
আমি যেবার বুদ্ধ গয়া গেলাম, যে কয়দিন ছিলাম মহাবিহার তথা সেই বোধি বৃক্ষের কাছাকাছি নীরবে বসে ছিলাম প্রতিদিন। আমি তেমন কোন ধর্মীয় আচারে সামিল হই নি । শুধু দূর থেকে দেখছিলাম গভীর প্রশান্তির পরিবেশ, বোধি বৃক্ষের বিশাল ডালপালা দূরে ছড়িয়ে আছে - যে গাছের নিচে গৌতম বুদ্ধ সম্যক জ্ঞান লাভ করেছিলেন । বোধি বৃক্ষ আর তৎসংলগ্ন মহাবিহার মন্দির এর চারপাশে বৃত্তাকারে ঘুরছে মানুষ, যার যার মতো ভঙ্গিমায় প্রনাম করছে ঐতিহাসিক বৃক্ষের মুলে । কত দেশের মানুষ একের পর এক, বাংলাদেশ, মিয়ারমার, শ্রীলঙ্কা, তিব্বত, চীন, কম্বডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড,ভুটান,নেপাল, আরও কত পশ্চিমা দেশের মানুষ,কত বিচিত্র পোশাক, কত বিচিত্র তাদের শ্রদ্ধার ভঙ্গিমা । গভীর বিস্ময়ে আমি প্রতিদিন এই দৃশ্যই শুধু দেখেছি । দেখেছি এক নীরব সৌন্দর্য কে ।কারো সাথে কারো আচারের কোন বিরোধ নেই, নেই প্রশ্ন । এ রকম বৈচিত্রের মাঝে এমন ইউনিফরমিটি আর কোথাও সহজে মেলে কিনা জানি না ।সে রকম একটা সুন্দর কে যারা সত্যি ধারন করবে, তারা কী করে বিভ্রান্ত হয়, কি করে অমর্যাদা করে এমন হাজার বছরের মূল্যবোধ কে ? তুচ্ছ বৈষয়িকতা আমাদের মুল্য বোধ কে প্রতিদিন হনন করছে । শুধু আমাদের বৌদ্ধদের নয়, সকল সম্প্রদায়ের মানুষদের ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৪৪

সোজোন বাদিয়া বলেছেন: অতিব দুঃখজনক একটি সত্যি তুলে ধরেছেন। যে ধর্মের প্রবর্তক বলে গেছেন 'অহিংসা পরম ধর্ম' সেই ধর্মের দেশ (জাপান) কীভাবে নৃশংস যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে তা দেখে রবীন্দ্রনাথও কম বিস্মিত হন নি। আধুনিক কালেও দেখছি পাশের দেশ মিয়ানমারে বিজাতীয় নিধনে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের উৎসাহ। তেমনি যে ধর্মের প্রবর্তকে বলে গেছেন 'তোমার এক গালে চড় মারলে, আর এক গাল পেতে দাও' তাঁর অনুসারীরা সমগ্র মধ্যযুগে মানব সভ্যতার যে ইতিহাস রচনা করে গেছে তা ইতিহাসই হয়ে থাকবে। একই রকমভাবে যেধর্ম তার নামটিই রাখল 'সালাম' বা 'শান্তি' শব্দটি দিয়ে সেই ধর্মের দোহাই পেড়ে বর্তমান পৃথিবীতে আমাদের দেশেও কী যে চালানো হচ্ছে তাও আমরা সবাই দেখছি। ধর্মগুলো কেন এভাবে ব্যর্থ হলো তা একটি হেঁয়ালি বটে।

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৪

পি কে বড়ুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো বলেছেন। তবে এটুকু বলে রাখি। জাপান সে সময় , বৌদ্ধ দেশ ছিল না । এখন সেখানে শিন্ট মতবাদের প্রাধান্য । তাই আমি মনে করি জাপান কে সামনে রেখে বুদ্ধ কে উদাহরন দেয়া টা খুব সমীচীন হবে না। তবে হ্যাঁ, প্রাচীন কাল থেকেই জাপানীরা যুদ্ধবাজ। রবীন্দ্রনাথ জাপানী শিশুদের স্কুলে যুদ্ধ বিদ্যা শেখানো হচ্ছে দেখেই মর্মাহত হয়েছিলেন । আমি কোন ধর্ম কে আবরণের মাঝে রাখতে চাই না। তবে সত্য টা হল , সামান্য কয়েক জন ভিক্ষু মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রহিংগা দের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত ছিলেন। যারা মুলত গনতান্ত্রিক আন্দোলনে সি আই এ সৃষ্ট ভিক্ষু বস্ত্রে এক্টিভিস্ট । মুদ্রার অপরপিটে খোঁজ নিলে দেখবেন বিপরীত দৃশ্য । এমন কি ভিক্ষুর মৃত দেহ রাজ পথে । সেখানে যা দেখেছি ভিক্ষুদের মাঝে নিধন নয়, বরং বিরুদ্ধ সংস্কৃতি কে উত্তানে বাধা প্রধান । আপনি শ্রীলঙ্কা কে আনেন নি, কিন্তু সেখানেই বধু বালা সেনা নামে একটি উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষু সংগঠন আছে, যাদের কে সেখানকার বৌদ্ধ রাই প্রতিরোধ করে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.