নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত,

পি কে বড়ুয়া

চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত,

পি কে বড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাহিত্যে নোবেল নিয়েও নানা বিতর্কে সুইডিশ একাডেমিঁর অতীত ।

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪২


২০০৯ সালে বিজয়ী হলেন জার্মান-রুমানিয়ান উপন্যাসিক হ্যারতে ম্যুলার। এই লেখিকার নামও তখন শোনেনি বিশ্ববাসী – অন্তত নোবেল পাওয়ার আগ পর্যন্ত । অনেক নোবেল প্রদানের ক্ষেত্রে সুইডিশ একাডেমি নিজেকে বিতর্কে জড়িয়ে ফেলেন তাঁদের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত দিয়ে। হ্যারতে ম্যুলার এর ক্ষেত্রে ও সেই ধরনের অনুযোগের মুখোমুখি হতে হয়েছিল একাডেমিকে । হর হামেশাই কথা উঠেছে যে, সৃজনশীলতাকে স্বীকৃতি দানের ক্ষেত্রেও ছন্দ পতন হয়। যার রোশনাই একেবারে নোবেল এ গিয়ে পড়েছে । কমিটি নিজেই সেখানে রাজ পুরোহিত । রাজনীতি, মানবাধিকার ইস্যু ,কোটারি দৃষ্টিভঙ্গি, এসব উটকো বিপনন সামগ্রী গুলো সৃজনশীলতার মাপকাটি কে ছাপিয়ে গিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি তে হাত লাগাচ্ছে প্রতিনিয়ত । এভাবে শান্তির নোবেল এর মতো সাহিত্যের নোবেল এও ঢুকে গেছে এসব সিঁদেল চোর , যা এখন ইতিহাস । । ১৯৬২ তে একবার প্রবল প্রশ্নবিদ্ধ হয় একাডেমি , যখন জন স্টেইনব্যাক কে তাঁরা পুরস্কার দেয়। ন্যুইয়র্ক টাইমস এই আমেরিকান লেখক কে নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করে ‘ইনি কেন ?’। বিস্ময়কর ভাবে সুইডিশ মিডিয়াও এই প্রশ্নের সপক্ষে কন্ঠ মেলায় । এই উচ্চকিত জিজ্ঞাসা এতোটুকু অবধি গড়িয়েছিল যে, স্বয়ং স্টেইনব্যাক কে ‘আপনি যোগ্য কিনা’ প্রশ্ন করা হলে ,তিনি সরাসরি উত্তর দেন, ’ফ্রাঙ্কলি,নো’ বলে । মার্কিনী মিডিয়ার এই বহমান অভিপ্রায় যে অমূলক নয়, তা যে শুধু আমেরিকান সাহিত্যিকদের নোবেলে কম উপস্থিতির দীর্ঘশ্বাস - প্রতিপক্ষের এমনতরো উস্মাকে এই ঘটনা প্রশমিত করে তা নয় শুধু - তাদের এই উপলব্দির সার্বজনীনতায় এশিয়ান , এমনকি রুশদের প্রতিও রয়েছে ব্যাপক আনুগত্য । কার্যত কথায় কথা উঠে আসে । যেমন লিও টলষ্টয়, আন্তন চেকভ – এরা কেন পান নি ? এঁরা কী সেই ঐতিহাসিক উদাসীনতার শিকার ? হয়তো রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁরা বার বার একাডেমির শুভদৃষ্টি থেকে বঞ্চিত হলেন অথচ সোভিয়েত ভিন্নামতাবলম্বি লেখক আলেক্সেন্দার সলজেনিতসীন অভিষিক্ত হলেন ?? কিন্তু সেটা ও কৌতুক কর যখন দেখি সোভিয়েত একনায়ক ষ্টালিন এর গুনমুগ্ধ পাবলো নেরুদা বা জ্যা পল সাত্র আবার নোবেল বরপুত্র । আরজেন্টাইন কিংবদন্তি লেখক লুইস বরজেস স্বদেশে এবং চিলির ডানপন্তি সরকারের প্রতি সহমর্মিতার কারনে জীবদ্দশায় ওমুখো হতে পারলেন না । ১৯৫৩ এ রাজনীতিক এবং রাষ্ট্রনায়ক উইনস্টন চার্চিলের সাহিত্যে নোবেল পাওয়াটাই বা ধরি না কেন ? ১৯৯৭ এ যখন হয় আর্থর মিলার নয়তো সাল মান রুশদি পাওয়ার কথা,তখন পেয়ে যান ইতালিয়ান অভিনেতা,পারফরমার ও চিত্রনাঠ্য লেখক ডরিও ফু, যার ছিল না উল্লেখ করার মৌলিক মসীসৃষ্টি । রুশদিকে নিয়ে নোবেল কমিটি যে আয়াতুল্লা খমেনীখাত সলিলে যে ডুবে মরেছে ,সে কথা পরে ফাঁক ফোকর দিয়ে বেরিয়ে পড়ে । এগুলো সত্যি ই কৌতুককর । এসব মনোরম বিতর্কের রেশ ধরে , ব্রিটিশ উপন্যাসিক টিম পার্ক চমকপ্রদ শ্লেষ মিশ্রিত মন্তব্য ছুঁড়েছিলেন - ‘এসেন্সিয়েল সিলিনেস অফ দ্য প্রাইজ এন্ড আওয়ার ওন ফুলিশনেস এট টেকিং ইট সিরিয়াসলি’ - ‘ পুরস্কারের অত্যাবশ্যকীয় কৌতুক এবং আমাদের অতি মনোনিবেশের বোকামি’ । সেই পুরনো প্রবচন ‘ইউরোসেন্ট্রিজম’ও কালে কালে প্রতিষ্টা পেয়েছে এভাবে ।
যে যাই বলুক নোবেল কমিটির মুল্যায়নই সব শেষ কথা, যদিও সেখানে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ঘুরে ফিরে এসেছে। আসবে নাইবা কেন ? ১৯০১ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৮ জনই সুইডিশ । কয়েক জন কে নিয়ে প্রশ্ন, বিতর্ক, এমনকি ভুল বোঝাবুঝি কমিটির মাঝেই । স্মর্তব্য ১৯০৯সালে বিশ্বে প্রথম নারী নোবেল বিজয়ী সুইডিশ লেখক সেল্মা লগের লপ এর নোবেল প্রাপ্তির ঘটনা । প্রধানত শিশুদের নিয়ে লিখিয়ে এই সাহিত্যিক এর নোবেল দেয়া নিয়ে খোদ নোবেল কমিটির মাঝেই তেতে উঠেছিল অবাঞ্ছিত বিতর্ক । ১৯৭৬ এ সম্ভবত , গ্রাহাম গ্রীন, ভ্লাদিমির নভোকভ, সল বেলো র মতো যুগন্ধর রা মনোনীত হবার পরও তাঁদের কারো জন্যে শিকে ছেঁড়ে নি , মাঝখান থেকে দুইজন সুইডিশ – যারা ছিলেন স্বয়ং নোবেল কমিটির সদস্য, তাদের ভাগ্য খুলে যায় । ২০০৪ সালে যখন অষ্ট্রিয়ান লেখক এলফ্রিডে ইয়েলিনেক তাঁর উপন্যাস ‘পিয়ানো টিচার’ এর জন্যে নোবেল পান, তখন এই বইকে ক্রুরতার চিত্র(shockingly explicit) অভিধায় তাঁকে নোবেল দিতে অসম্মতি জানিয়ে আকাডেমির একজন সদস্য ই পদত্যাগ করে বসেন। কিন্তু তারপরও পাননি - টলষ্টয়, জয়েস, টমাস হার্ডি, গ্রাহাম গ্রীন, ইবসেন, অউডেন, প্রাউস্ট, হেনরি জেমস, এমিল জোলা, মার্ক টোয়েন, আদ্রে মালরোর মতো মহাকায় সাহিত্য প্রতিভারা , যারা এখন প্রয়াত ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.