নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত,

পি কে বড়ুয়া

চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত,

পি কে বড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

সকল দৈন্য তব দূর করো ওরে

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৬

আমাদের ছোট একটা দেশে এতো গুলো টিভি চ্যানেল দরকার ছিল না, এতো গুলো ব্যাংক দরকার ছিল না, এতো গুলো বীমা কোম্পানির দরকার ছিল না, এতো গুলো প্রাইভেট বিশ্ব বিদ্যালয়, এতো গুলো, এতো গুলো কোন কিছুরই দরকার ছিল না । কিন্তু এখন তা বাস্তবতা । এদেরকে বাঁচতে হবে। এরা নিজের দেশের উৎস থেকেই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চায় । এর ন্যায্যতা নিয়ে কেউ দ্বিমত করতে পারে না । একটা বিষয়ে আমাদের টিভি চ্যানেল গুলোকে সম্মান জানাতেই হয় । অন্তত এরা বেশি ভালো কিছু অনুষ্টান তৈরি করতে না পারলেও, প্রতিটি চ্যানেল , আমাদের সামাজিক পারিবারিক এবং মুক্তি যুদ্ধের মুল্যবোধের বিরুদ্ধে যায় না । দর্শক ধরার নামে, পাশের দেশের বাংলা চ্যানেল জি বাংলা বা ষ্টার এর মতো চ্যনেল গুলো নাটকের নামে সারাদিন গাঁজাখুরি, মধ্যযুগীয় ধর্ম প্রবন আর পারিবারিক জীবনের ভাওলেন্স এ দুষিত অপসংস্কৃতি এরা ফেরি করে না । এ দুটো চ্যানেল এর প্রচার এখানে বন্ধ করে দেয়া উচিত । যারা একসময় 'সুবর্ণ লতা' র মতো ধারাবাহিক বানিয়েছে তারা বাঙালী নারীর বিষাক্ত চরিত্র রচনা ছাড়া কোন সিরিয়াল ই করতে সক্ষম নয় এখন । এদের 'রিয়ালিটি শো' রিয়ালিটি বর্জিত । এরা ছোট ছোট শিশুদের ধরে এনে দর্শক মনোরঞ্জনের গারদে ঢোকাচ্ছে । ঘেরাটোপের মাঝে থাকা যেমন আত্মহত্যার সামিল , তেমনি মুক্ত দুনিয়া বলতেও কোন কিছু নেই। দৃশ্য বা অদৃশ্য রেগুলেশন আছে এবং থাকবে। সব দেশেই আছে। শিশুদের কথা সব দেশেই ভাবে এবং মিডিয়া কে সেভাবে নিয়ন্ত্রন করে । সিগারেট বা গ্রাফিক ভাওলেন্স এর বিধি মালার মতো , আঠারোর নীচে বয়সী দের জন্যে রয়েছে পাবলিক লি মানা । মানা না মানা ভিন্ন ব্যাপার - সিগারেট খাওয়ার মতই। তবে এটা ঠিক আমরা মানে আমাদের দর্শকরা আগের দিনের মতো সোজা সাপ্টা 'যা পাচ্ছি তা নিয়ে খুশি গোছের' নেই । সামাজিক এবং অর্থনৈতিক স্ফিতি তথা বৈশ্বিক দ্রুত যোগাযোগের কারনে মনো জগতেও বিপ্লব ঘটছে । তাই নিরীহ নাটক গুলো না দেখে বিদেশি ফ্যান্টাসাইজ করা ইতিহাস বা রূপ কথা নির্ভর জাম্বু সাইজের ধারাবাহিক গুলোকে পছন্দ করছে বেশি । এটাই হবার কথা। কারন আমাদের রয়েছে নিজের ভান্ডার থেকে যোগান দেবার অক্ষমতা । সেটা ভান্ডারের দোষ নয় । 'ভান্ডারে তব বিবিধ রতন'। যখন এতো এতো চ্যানেল ছিল না , ক্যবল ছিল না - তখন যা দেখিয়েছে তাই দেখেছি, ভালই ছিলাম । এখন আমাদের শখ বেড়েছে, লাইফ অনেক বেশি ফান্টাসাইজড । সেখানে ডাব করা বিদেশি মেগা সিরিয়াল এর কদর হবেই । সে ক্ষেত্রে দর্শক মনোরঞ্জনের জন্যে সব চ্যানেল গুলো, ভালো ভালো বিশ্বখ্যাত মাষ্টার পিস কাহিনী নির্ভর নির্মিত ধারাবাহিক গুলোকে আমাদের উপযোগী ডাব করে দেখাতে পারে । সে যদি হয়, তাহলে আমাদের শিল্পীরা চলবে কীভাবে ? আমাদের ইতিহাসে, আমাদের হাজার বছরের দিগন্ত বিস্তৃত লোকায়ত বিশাল পরিধিতে কি নন্দিত কাহিনীর অভাব আছে ? আমাদের সৃষ্টি শীলতা কি এখন খরায় আক্রান্ত ? না, তা মোটেই নয় । শর্ট কাট করে পয়সা বানানোর ধান্ধা থেকে সরে আসতে হবে, এই যা । টিভি এডিকশনও আমাদের পূর্ণ মাত্রায় । স্বকীয়তা বিকাশের পথে এটাও একটা প্রতিবন্ধকতা । ছাত্র জীবন শেষ হলে পর কত শতাংশ লোক বই এর সাথে বসবাস করে ? আমরা তো দেশে বসে পশ্চিমা দেশের 'বেলেল্লাপনা' নিয়ে গলা পরিস্কার করি , বিশেষত আমেরিকার । যারা ম্যাক গ্র হিল এর মতো প্রকাশনা সংস্থা দেখেছে, খোঁজ নিয়ে দেখেছে পাঠকের প্রতি তাদের আনুগত্য বা ন্যু ইয়র্কের অলি গলিতে 'বার্ন স এন্ড নোবেল' বই বিপনী তে যারা সময় কাটিয়েছে তাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে ? সেকন্ড হ্যান্ড বই র স্বর্গ রাজ্য পাওয়েল বুকস বা বুকস এ মিলিয়ন এর মতো সাম্রাজ্য যেন মার্কিন সাম্রাজ্যের চেয়েও বড় । এমন কি ন্যু ইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরী তে অন্তত একটা পুরো দিন যারা থেকেছে, তারাই বুঝতে পারবে এর অন্তর্গত সৌন্দর্য কি । অথবা তার ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম গুলো ? আমরা প্রদীপের নীচের অন্ধকার টুকু দেখি কিন্তু তার চাদ্দিকের আলো দেখি না । ভারতকে কথায় কথায় তুলো ধুনো করি সেখানকার মানুষ কী পরিমান বই পড়ে, সেখান কার বই চেইন বিপনী গুলো যেমন ক্রস ওয়ার্ড, ল্যান্ড মার্ক , এ এইচ হুইলার বা অডিসি মতো বই এর দোকান গুলো পৃথিবীর যে কোণেই বই পাবলিশ হয় তা একই সময় দেশের পাঠকের হাতে পেপারব্যাক এডিশন তুলে দেয়। সেদিক থেকে আমাদের দৈন্যতা অপরিসীম । প্রিয় কবির গানের ভাষায় শুধু বলতে ইচ্ছে হয় ' সকল দৈন্য তব দূর করো ওরে ........."

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.