নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন দেখি। দেখতে ভালোই লাগে... ফিকশন্ ফ্যান্টাসি ।

জীবণের অনুভূতি গুলো সব ছোটগল্পের মত । শেষ হইয়াও হয় না শেষ । পূর্ণতারও কিছু অপূর্ণতা থেকে যায় ।

তোহা ভাই

তোহা ভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

॥ প্রতীক্ষা ॥

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৪

মোকাররম হোসেন

মহাখালী বাসষ্টান্ডে দাড়িয়ে আছে ।

অত্যন্ত সতর্ক । বউ ফোনে পই পই

করে বলে দিয়েছে সতর্ক থাকতে । ঈদের

সময় বিভিন্ন পার্টির

আনাগোণা বেড়ে যায়, মোকাররম

সেটা ভালো করে জানে । কাপড়ের

ব্যাগটা সে বুকের

সাথে জড়িয়ে রেখেছে । ব্যাগে কোন

টাকা-পয়সা নাই, বেতন-বোনাসের

টাকা সে মোবাইলে পাঠিয়ে দিয়েছে ।

যা আছে সব ওর নিজের কাপড়-চোপড়, আর

বউ এর ঈদ মার্কেট । বিয়ের পর এটাই

প্রথম ঈদ । বউ এর জন্য হাত

খুলে কিনেছে মোকাররম । এর মধ্যে ও শখ

করে দুইটা জিনিস কিনে ফেলেছে, টাইট

ফিট জিন্সের প্যান্ট আর একটা টপ্স্ ।

দিনের বেলা গাঁও-গেরামে এই চিজ্ হয়ত

পরতে পারবে না ওর বউ কিন্তু রাতে শুধু

ওকে দেখানোর জন্য

পরতে তো অসুবিধা নাই । ঢাকা শহরের

মেয়েরা এই জিনিস পরে দিনের

বেলাতেই ঘুরে বেড়ায় । এখন বউ

কি বলবে সেটা নিয়ে ও সংশয়ে আছে ।

বিয়ের সাতদিনের মাথায় মোকাররম

গার্মেন্টসে চাকরি পেয়ে ঢাকায়

এসেছিল । তার তিনমাস পর আজ

বাড়ি যাচ্ছে । লজ্জা ভাবটাই

এখনো কাটে নাই ।

অল্প বয়সেই বিয়ে করেছে মোকাররম ।

বিয়ের সিরিয়ালে ওর আগে ওর দুই

বড়ভাই ছিল, ঘোড়া ডিঙ্গিয়ে ঘাস

খেয়ে ফেলেছে মোকাররম ।

বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব রাখার পর

মোকাররমের বাবা প্রথমে খুব

খেপে গেলেন (নালায়েক ছেলে !নিজের

বিয়ের কথা নিজেই বলে )

এবং একবাক্যে না করে দিলেন । এরপর

ছেলে যখন খাওয়া-দাওয়া বন্ধ

করে দিয়ে বন্ধুদের বাড়িতে রাত

কাটাতে শুরু করল, মোফাজ্জল হোসেন নরম

হতে শুরু করলেন । বাপ হয়ে ছেলের

সাথে বিয়ে বিষয়ক

কথাবার্তা বলা যায় না । তিনি বড়

জামাইকে ডেকে পাঠালেন ।

আসগড় আলী খবর শুনে হায় হায়

করতে করতে ছোট শ্যালকের

সাথে দেখা করতে ছুটে এলেন ।

শ্যালকের মাথায় বিয়ে ভুত চেপেছে ।

পৃথিবীর সব ভুতের ওঝা আছে,

বিয়ে ভুতের নাই । এই ভুত একবার মাথায়

উঠলে আর নামে না ।

-'শুনলাম তুমি নাকি বিয়ে করতে চাও ?'

-'সঠিক শুনেছেন ।'

-'লোকে বলবে কী, বড় ভাইয়ের আগে ছোট

ভাই বিয়ে করতে চায় !'

-'বড়ভাই যদি আজীবণ বিয়ে না করে,

তাহলে কি ছোটভাই কে চিরকুমার

থাকতে হবে ?'

-'কিন্তু তোমার বড় ভাইজান

তো বিয়ে করতে একপায়ে খাড়া,

আব্বাজান কিছু বলে না তাই নিজেও

শরমে কিছু বলতে পারে না ।'

-'দুলাভাই শোনেন, এক মাসের ভিতর

বিয়ে করতে না পারলে আমি পাগল

হয়ে যাব । আপনার শ্যালক দিগম্বড়

হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবে,

সেটা কি খুব ভাল দেখাবে ?'

আসগর আলী আর কথা বাড়ায় নাই ।

সে বেশী কথার মানুষ না, কাজের মানুষ

। এক সপ্তাহের ভিতরে আসগর

আলী পাত্রী দেখা থেকে শুরু করে বিয়ের

সব ব্যাবস্থা করে ফেলল । পাত্রীর

ছবি দেখে মোকাররম

প্রথমে আমতা আমতা করেছিল ।

মেয়ে ফর্সা না, শ্যামা । মোকাররমের

টার্গেট ছিল ফর্সা মেয়ে, যেন

গালে টোকা দিলে রক্ত জমে লাল

হয়ে যায় । আসগর আলী শ্যালক

কে বুঝালেন,

শ্যামা মেয়েরা বেশী মায়াবতী হয় আর

স্বামী সোহাগী হয় ।

মোকাররম এজন্যে দুলাভাইয়ের

প্রতি কৃতজ্ঞ । বউটা তার আসলেই

মায়াবতী, সোহাগীও !

সোহাগের কথা মনে আসতেই কাপড়ের

ব্যাগটাকে আরো জোরে বুকের

সাথে জড়িয়ে ধরে মোকাররম । সময়

কেমন যেন স্লো মোশনে চলছে,

যদি চোখের পলক ফেলতেই

নিজেকে বাড়ির সামনের মেঠো পথটায়

দেখতে পেত !

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.