নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন দেখি। দেখতে ভালোই লাগে... ফিকশন্ ফ্যান্টাসি ।

জীবণের অনুভূতি গুলো সব ছোটগল্পের মত । শেষ হইয়াও হয় না শেষ । পূর্ণতারও কিছু অপূর্ণতা থেকে যায় ।

তোহা ভাই

তোহা ভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ "মন কাঁদানো বৃষ্টি"

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৪৫

সোহানের মেজাজ প্রচন্ড বিগড়ে আছে। সকাল থেকে ছিচ্-কাঁদুনে বৃষ্টি হচ্ছে। ছিচ্-কাঁদুনে বৃষ্টি ওর পছন্দ না, মনে হয় আকাশ কিপ্টামি করছে। আকাশ হল উদার, তার কিপ্টামি করা সাজে না।

আদ্রিয়ার সাথে আজ সকালে ওর দেখা করার কথা ছিল। বৃষ্টির কারণে 'ক্যানসেল' হয়ে গেল। কিছুক্ষণ আগে

আদ্রিয়া নিজে ফোন করে 'ক্যানসেল' করেছে।



-'রাজপুত্রের ঘুম ভেঙ্গেছে?'



-'ঘুম ভেঙ্গেছে, নাস্তা হয়েছে এখন রেডি টু গো আউট'।



-'গুড বয়, তাহলে যাও ঘুরে আসো।'



-'যাও ঘুরে আসো মানে? তুমি ?'



-'আমার মন খারাপ, আমি আজ বের হব না।'



-'হঠাত্‍ কি হল যে মন খারাপ?'



-'কিছুই হয়নি, বৃষ্টি দেখলেই আমার মন খারাপ করে থাকতে ইচ্ছা করে, তাই মন খারাপ করে সারাদিন বাসায় বসে থাকব!'



সোহানের দৃঢ় বিশ্বাস আদ্রিয়ার মাথায় 'ছিট' আছে, এই মেয়ে বড় রকমের পাগলী। আদ্রিয়ার সাথে ওর 'রিলেশন' হবার তিন মাস হল, তার আগে এক বছরের জানাশোনা। সবসময় মুখে হাসি লেগে থাকা প্রাণ খোলা টাইপের মেয়ে, সেই মেয়ের মাথায় 'ছিট' থাকবে এটা সোহানের কল্পনাতে ছিল না। 'ছিট' যে আছে সেটা প্রথম বুঝতে পারল 'অফার' করতে গিয়ে। দুই ঘন্টা ধরে রিকশায় ঘুরেও ঠিক কিভাবে আদ্রিয়াকে 'অফার' করবে সেটা বুঝতে পারছিল না সোহান। পছন্দের মেয়েকে প্রেমের অফার করা

জগতের সবথেকে কঠিন কাজ, এই কাজে সবথেকে 'স্মার্ট' ছেলেটারও প্যান্ট ঢিলা হয়ে যায়!



-'তোমাকে খুব নার্ভাস লাগছে, ব্যাপার কি?'



-'কই নাতো!'



-'কথাবার্তা বলছ না, সারাক্ষণ উসখুশ করছ, মনে হচ্ছে রিকশায় বসে শান্তি পাচ্ছো না। সমস্যা হলে রিকশা ছেড়ে দিয়ে কোথাও বসি।'



-'না, না। কোন সমস্যা নাই। আসলে আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাচ্ছি, কিন্তু বলতে পারছি না।'



-'কেন ? বলতে না পারার কি আছে ? তোমার মুখ তো খোলাই আছে, বলে ফেল।'



-'একটু একটু ভয় পাচ্ছি, যদি 'ডিরেক্ট' না করে দাও!'



-'ডিরেক্ট না করে দিলে কি তোমার খুব সমস্যা হবে?'



-'মরে যাবো!'



-'হুম, তাহলে তো বিরাট সমস্যা! সেক্ষেত্র তোমাকে একটা পরামর্শ দিতে পারি।'



-'প্লীজ..'



-'তুমি কোন এক পূর্ণিমা রাতে বুড়িগঙ্গায় নৌকায় বসে আমার চোখে চোখ রেখে কথাটা বললে আমি 'ডিরেক্ট' না করতে পারব না। তোমাকে একটা গোপন কথা বলি, পূর্ণিমা রাতে চোখে চোখ রেখে কেউ যদি আমাকে প্রেমেরও অফার করে, আমি তাতেও না করতে পারব না! আদিল ভাই বলতেন,"পূর্ণিমা রাতে চাঁদ প্রাণ খুলে হাসে, চাঁদ হাসলে পৃথিবীও হাসে। এমন খুশির মুহুর্তে কাউকে না করতে নেই।"



আদ্রিয়ার এটা আরেক সমস্যা, সে কথায় কথায় আদিল ভাইয়ের 'কোটেশন' ব্যবহার করে। আর এই সময় আদ্রিয়ার চোখে মুখে গদগদ ভাব ফুটে ওঠে, পীরের সামনে দাড়িয়ে ভক্তের চোখ মুখের যে অবস্থা হয় তেমন। আদিল কে সোহান চেনে না, কিন্তু এই লোকটার নাম কানে আসা মাত্রই ওর কান গরম হয়ে যায়! এক চড়ে আদ্রিয়ার 'আদিল ভাই' এর ও কান গরম করে দিতে ইচ্ছা করে। পৃথিবীর সব স্বার্থপর প্রেমিকের মতো সোহানও নিজেকেই আদ্রিয়ার 'কোটেশন' হিসেবে দেখতে চায়!



বাইরে বৃষ্টির বেগ বেড়ে গেছে, ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে এখন। সোহান এক বাটি মুড়ি নিয়ে বসেছে। মরিচ, পেঁয়াজ, তেল দিয়ে মাখানো মুড়ি। আদিলের হাড় ভেবে চিবিয়ে চিবিয়ে মুড়ি গলাধঃকরণ করবে এখন সোহান। শত্রুকে চিবিয়ে খাওয়ার মাঝে একটা আলাদা ভালোলাগা আছে, সব রাগ মাটি হয়ে যায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.