নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমরত্বের প্রত্যাশাহীন এই শহরে থেকে যাক কিছু খুচরো কথা...

পদ্মপুকুর

একজন শভেনিস্ট ও স্মৃতিকাতর মানুষ

পদ্মপুকুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবার কলকাতা...

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪১


মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত আর আমার দৌড় কলকাতা পর্যন্ত! আরো দুরে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে ভারতে ঢুকলেও বিভিন্ন কারণে কলকাতায় এসে আটকে যাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয় আমার জন্য। তবে যতবারই আমি কলকাতায় আসি, ততবারই আগেরবারের চেয়ে বেশি হতাশ হয়ে পড়ি।

সীমান্ত এলাকার মানুষ হওয়ায় অনেক কম বয়স থেকেই এ শহরের সাথে পরিচয়। সে সময় কলকাতা ভ্রমণ শুধু নতুন জায়গা ঘোরার আনন্দেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেক কিছুই তুলনামূলকভাবে বিচার্য হয়ে দাড়িয়েছে। আর এখানটাতে এসেই আমার হতাশা বাড়তে থাকে। পুরনো মূল্যবোধ এবং অবকাঠামো অবিকৃত রেখে মূল উন্নয়নের জায়গাগুলোতে কলকাতা দিনে দিনে এতটা উন্নত হয়েছে যে নিজের বসবাস করা শহরটার সাথে তুলনা করলেই হেরে যাই প্রতিনিয়ত।

এমন নয় যে ভারতের অন্যান্য শহরগুলো কলকাতার মত উন্নত নয়; বরং সেগুলো আরো বেশি উন্নত। মুম্বাই বা দিল্লী হয়ত আর এক দশকের মধ্যেই পশ্চিমের মূল শহরগুলোর সাথে একই কাতারে চলে যাবে। কিন্তু, একই আবহাওয়া, একই ভাষা, একই গড়নের আমরা আর কলকাতার মানুষের মধ্যে কি বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য রয়েছে যে তারা শুধু এগুতেই থাকবে আর আমরা পেছাবো?

কলকাতার মানুষ, বিশেষ করে সেন্ট্রাল কলকাতার মানুষের কৃপণতা, অনুদারতা বা রূক্ষ ব্যবহার নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তবে দেশের প্রতি তাদের প্রেম, পেশার প্রতি নিবেদন, এগুলো নিয়ে উচ্চ বাচ্য করার কোন সুযোগ নেই বলেই আমি মনে করি। আর এখানেই আমরা হেরে যাচ্ছি চরমভাবে। তাদের পরিকল্পনাগুলো হয় সুদুরপ্রসারী আর কার্যকর।

২০০৪ সালে আমাদের সদ্যনির্মিত খিলগাঁ ফ্লাইওভার নিয়ে আপ্লুত আমি কলকাতা শহরের বহু আগে প্রায় গ্রাম এলাকায় নির্মাণাধীন এক ফ্লাইওভার দেখে আমি তাচ্ছিল্যের হাসি হেসেছি ওদের নির্বুদ্ধিতা মনে করে, কিন্তু এখন দেখছি সেই ফ্লাইওভারের কার্যকারীতা। অন্যদিকে, এতদিন পর আমরা মগবাজার-মৌচাকের যে ফ্লাইওভার করছি, সে সম্পর্কে প্রথম আলোর রিপোর্টটা দেখুন!

গেল সপ্তাহে কলকাতায় ব্যস্ততম সময়ে আমি যেখানে নিউমার্কেট থেকে নিউ গড়িয়ায় আমি মাত্র ৩০ মিনিটে পৌঁছে গেছি, সেখানে গত রবিবার সকালে আব্দুল্লাপুর থেকে রামপুরা আসতে আমার পাক্কা চার ঘন্টা লেগেছে। গড়িয়ার মত নির্জন রাস্তায় আমি দেখলাম সিগনাল পড়ার সাথে সাথেই সব গাড়িই দাড়িয়ে যাচ্ছে; এমনকি মোটর বাইকগুলোও। নিয়ম ভঙ্গ না করার ক্ষেত্রে কলকাতাবাসীর সূচক ক্রমউর্দ্ধমূখী আর ঢাকাবাসী নিয়ম ভঙ্গ করার মধ্যেই বীরত্ব খুঁজে পায়।

আমি কলকাতা শহরের যেখানে যেখানে গিয়েছি, কোনখানেই রাস্তা খুড়াখুড়ি দেখিনি। কনস্ট্রাকশনের মচ্ছব দেখিনি। মূল কলকাতা শহরকে এখনও একটা নিপাট ইতিহাস বলেই মনে হয়। সেই পুরোন আমলের স্থাপনার সাথে নতুনকে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে নিপুণভাবে। একটা শহরের মধ্যে এত বেশি গাছ, এত খোলা মাঠ, এমনকি স্বচ্ছ পানির পুকুর, দিঘীও রয়েছে।

আমি বাকরুদ্ধ হয়ে যাই। কষ্ট পাই। এই ব্যক্তিগত দুঃখগাঁথা ব্লগে প্রকাশের কিছু নয়; তবু কিঞ্চিত আশা, একদিন আমার দেশ, আমার শহরও এমন শৃঙ্খলাবদ্ধ হবে, সবুজ হবে। শুধু প্রদর্শনী নয়, সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের পদচারণায় দীপ্ত হবে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৭

সুমন কর বলেছেন: একদিন আমার দেশ, আমার শহরও এমন শৃঙ্খলাবদ্ধ হবে, সবুজ হবে। শুধু প্রদর্শনী নয়, সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের পদচারণায় দীপ্ত হবে।

২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১১

SHONAR BANGLA বলেছেন: বেশ ভাল হয়েছে।দারুন হয়েছে। @ http://pcjobs24.com/

৩| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:২৬

রেজা এম বলেছেন: কোলকাতায় max traffic halt 3 minutes. বুঝেন তাহলে !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.