নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমরত্বের প্রত্যাশাহীন এই শহরে থেকে যাক কিছু খুচরো কথা...

পদ্মপুকুর

একজন শভেনিস্ট ও স্মৃতিকাতর মানুষ

পদ্মপুকুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্রিদিং মাস্কের ওপাশ থেকে....

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:২১


পশ্চাৎদেশে সার্বক্ষণিক একটা ব্যথা নিয়ে সৃজনশীল চিন্তা করাটা সম্ভব না; অথচ বিভিন্নমুখী সৃজনশীল চিন্তাগুলো দৃশ্যমান করাটা মাহফুজের পেশাগত দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।

সমস্যাটা শুরু হয়েছে সপ্তাহখানেক আগে ‘ভেরিকোসেলেকটমি’ নামের আপাত নিরীহ এক ল্যাপারস্কোপিক সার্জারির পর ডাক্তার যখন বারো ঘন্টার ব্যবধানে দিনে দুটি করে ইনজেকশনের দাওয়া দিলো।

যেহেতু ইনজেকশনগুলো দিতে হবে মাংশপেশিতে, সেহেতু পশ্চাতদেশ ছাড়া গতি কি! অগত্যা সকাল-সন্ধ্যা দু’বেলা সূঁচের আঘাতে প্রাণপাত করতে হচ্ছে। চোখের সামনেই মেল নার্স যখন কাচের জার থেকে স্বচ্ছ ঔষধটুকু সিরিঞ্জে টেনে নিতে থাকে, তখন খুব গাইতে ইচ্ছে হয়- কাঁটার আঘাত দাওগো যার তার, সূঁচের (ফুলের) আঘাত সয়না- তোমার দিল কি দয়া হয় না...

এরও আগে স্ট্রেচারে শুইয়ে অপারেশন থিয়েটারের দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিলো মাহফুজের। দৃষ্টিসীমায় থাকা দু’জন অ্যাটেনডেন্টের মুখের পেছনে ছাদগুলো সড়সড় করে উল্টো দিকে চলে যাচ্ছে।
হাসপাতালে আসার আগে লুবনা বলে দিয়েছিলো যে ‘একদম ভয় পাবা না, ল্যাপারস্কোপি কোনো ব্যাপারই না, আরিবা হওয়ার সময় য্যামনে আমার পেট কাটছিলো.....’। কথা এখানেই থামিয়ে হাতের ইশারায় বাকিটুকু বোঝাতে চাইলো লুবনা।

তবুও মাহফুজ ভয় পাচ্ছিলো। ওর পিঠের নিচের দিকে মেরুদণ্ড বরাবর যায়গাটা শিরশির করছিলো। প্রায় বারো বছর আগে একটা সার্জারি করার সময়ে বিশাল এক সিরিঞ্জ দিয়ে ডাক্তার ওই যায়গাটাতে লোকাল অ্যানেস্থেশিয়া পুশ করেছিলো।
এবার ওরকম কিছু হলো না। ওটি’তে ঢোকানোর পরপরই জাহেদের বাঁ হাতে ক্যানোলা বসিয়ে স্যালাইন জাতীয় তরল জুড়ে দেওয়া হলো। ডাক্তার ওই তরলে সিরিঞ্জ দিয়ে কিছু একটা মিশিয়ে দেওয়ার সাথে সাথেই মাহফুজের চোখে রাজ্যের ঘুম এসে সব কিছু ঝাঁপসা করে দিলো। এরপর আর কিছুই মনে নেই মাহফুজের।

তার ঠিক কতক্ষণ পর ওর জ্ঞান ফিরেছিলো কোনো আন্দাজ নেই, তবে মাহফুজের মনে পড়ে যে খুব সামান্য চেতনার মধ্যে ও প্রথম দেখেছিলো ইসহাকের মুখ, কিছু একটা বলছে। লুবনা প্রেগন্যান্সির আর্লি স্টেজে থাকায় হাসপাতালে আসতে পারেনি, ডাক্তার মুভমেন্টে রেস্ট্রিকশান দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু অফিস থেকে ছুটি নিয়ে পুরো দুইদিনই হাসপাতালে ছিলো ইসহাক আর ওবায়েদ; মাহফুজের ক্যাম্পাসের দুই বন্ধু।

এরপর আবারও ঘুম-জাগরণ, ঘুম-জাগরণ করতে করতে যখন পূর্ণমাত্রায় জ্ঞান ফিরে আসলো, মাহফুজ তখন পোস্ট অপারেটিভ রিকভারি ইউনিটে একটা বেডে শুয়ে আছে। প্রচণ্ড পানি পিপাসা লাগায় একজন নার্সকে পানির কথা বলতে গিয়ে মাহফুজ খেয়াল করলো যে ওর মুখে ব্রিদিং মাস্ক আটকানো এবং গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না। অসহায় চোখে মাহফুজ দ্রুত পায়ে এদিক ওদিক যাওয়া নার্সদের দিকে তাকিয়ে থাকলো।

মাহফুজের বা হাতে তখনও স্যালাইনের মত তরল ঔষধ চলমান। অন্য হাত দিয়ে পেট স্পর্শ করে ওর সার্জারির ধরনটা বুঝতে চেষ্টা করলো। না, লুবনা ঠিকই বলেছিলো, ল্যাপারস্কোপিক সার্জারি খুব কঠিন কিছু না। নিজের পেটে বড় ধরনের কোন কাটাকাটির চিহ্ন পেলো না, কেবল তিন পাশে ব্যান্ড এইডের চেয়ে একটু বড় ব্যান্ডেজের মত কিছু একটা লাগানো।

কিন্তু মাহফুজের এই সুখভাবনা খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। গায়ের ওপর দেওয়া কাপড়টা পায়ের কাছে একটু সরে গিয়েছিলো, আরেক পা দিয়ে ওটা ঠিক করার জন্য যেই না পা উঁচু করেছে, অমনি মনে হলো পেটের ডান দিকের ব্যান্ডেজটার নিচে কেউ যেনো একটা ধারালো ছুরি ঢুকিয়ে গেঁথে দিলো! শুধু গাঁথাই নয়, মনে হয় একটা মোচড়ও দিলো!!

প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কঁকিয়ে উঠতেই একজন নার্স দৌড়ে এসে বললো, ‘নড়বেন না’।

পরের এক সপ্তাহ মাহফুজ খুব ভালো করে বুঝতে পেরেছিলো নার্সের ওই সাবধানবাণী ‘নড়বেন না’র গুরুত্ব কত বেশি। দু’দিন হাসপাতালে থেকে বাসায় ফিরে এসেও ওকে বিশ্রামে থাকতে হয়েছে আরো সপ্তাহ খানেকের মত। এই সময়ে নড়তে চড়তে গিয়ে, বিশেষ করে শোয়া থেকে উঠতে গেলেই ওই ক্ষতগুলোতে এমন টান লাগতো যে মনে হতো কেউ বুঝি প্রাণটা ধরেই টান দিলো! অথচ ছোট ছোট মাত্র তিনটা ক্ষত!

এই সময়ে মাহফুজ শুয়ে শুয়ে লুবনার কথা ভাবতো। আরো ভাবতো ওর বোনেদের কথা, পরিচিত মেয়েদের কথা, বাংলাদেশের তাবৎ মা হওয়া নারীদের কথা। নিজের পেটের তিনদিকে তিনটা ছোট্ট ক্ষত নিয়ে যে যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে, সেখানে বাচ্চা প্রসবের সময় মেয়েদের সিজারটা কত বেশিই না যন্ত্রণাদায়ক হয়! অথচ এত বড় একটা ক্ষতের ওই যন্ত্রণা সহ্য করেই দিনের পর দিন কোনো ত্রুটি না রেখেই নবজাতকের পরিচর্যা করে যায় ওরা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংসারের যাবতীয় কাজও!

মাহফুজ মনে মনে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। আরিবা হওয়ার সময় লুবনাও একই কষ্ট করেছে, কিন্তু মাহফুজ একদিনও বুঝতে পারেনি, লুবনা বুঝতে দেয়নি। সামনে আবার আরেকজন আসছে... কষ্টে মাহফুজের চোখে পানি এসে গেলো।

---------------------------------------------------------------------------------------------------------------


আমাদের মহামহিম ডাক্তারবৃন্দ এবং চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পর্কে সাধারণের মধ্যে ধারণাটা মোটের উপর ইতিবাচক নয়। আমি নিজে এই ব্লগেই চার পাঁচটা পোস্ট দিয়েছি ডাক্তারদের নিয়ে; যেগুলোতেও নানারকম অভিযোগের ফিরিস্তি ছিলো। এই অভিযোগগুলো অস্বীকার করারও খুব একটা সুযোগ নেই। অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলো, এই নেতিবাচক ধারণা সম্পর্কে ডাক্তার সম্প্রদায় ভালোভাবেই অবগত থাকার পরও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার গরজ বোধ করেন না। উপরন্তু তাঁরা এতে রোগীদেরই দোষ দেখেন শতভাগ।

ডাক্তারদের যে সংগঠনগুলো বাংলাদেশে ক্রিয়াশীল রয়েছে, তার একটার একজন নেতৃস্থানীয় ভদ্রলোকের সাথে আমার বেশ খাতির আছে। খুব ঠাণ্ডা মেজাজের মিশুক একজন মানুষ, নামাজ কালাম পড়েন নিয়মিত। একদিন আড্ডায় আমি এই প্রসঙ্গটা উঠালাম। উনি সেই ঠাণ্ডা মেজাজ ধরে রেখেই এমন কঠিনভাবে রোগীদের দোষারোপ করতে লাগলেন যে আমি মানে মানে করে থেমে যেতে বাধ্য হলাম।

আমার মেজ বোনের মেয়েটা রাজশাহী মেডিকেলে পড়ছে। ডেভিলস ঔথ-এ উজ্জীবিত। কিছুদিন আগে বাড়িতে দেখা হওয়ার পর একটু অভিমান নিয়েই বললো- মামা, আপনি খালি ডাক্তারদের দোষ দেন... আমি আর কি বলবো, গুণী ব্লগার কাউসার চৌধুরীর ধনন্তরী লেখাটা প্রিন্ট করে ধরিয়ে দিলাম ওর হাতে। তারপর কি হলো তা জানা গেলো না। কারণ ওইদিনই আমি ঢাকা ফিরে আসলাম।

সম্প্রতি আমাকে একটা সার্জারির ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। হ্যাঁ ওপরের গল্পটা আমারই। এই সামান্য একটা সার্জারির কষ্ট আমাকে বেশ ভুগিয়েছে। ইনফ্যাক্ট এখনও ভুগছি। পেট কেটে ফেলার এই কষ্ট আমার চেয়ে ডাক্তাররা ভালো বোঝেন নিশ্চয়। তবুও কোনো এক অদ্ভূত কারণে তাঁরা নর্মাল ডেলিভারি পছন্দ করেন না। প্রসূতী মায়েদেরকে সবসময় অস্ত্রপচার করানোর জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেন, ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করেন, ভয়ভীতিও প্রদর্শন করেন। অথচ এ ধরনের একটা সিজার একজন মেয়ের সারা জীবনের জন্য একটা সেটব্যাক হয়ে যেতে পারে।

ব্লগের যারা বাইরের দেশে থাকেন, তারা নিশ্চয় জানেন যে বাইরের দেশগুলোতে হাসপাতালের ডাক্তাররা একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত স্বাভাবিক প্রসবের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যান, এমন কি অনেক সময় রোগিনী বা তাঁর আত্মীয় স্বজনের চাপ উপেক্ষা করেও। অন্যদিকে আমাদের ডাক্তাররা কেবল কিছু বেশি টাকার জন্য একেকটা মেয়েকে এ রকম একটা বিপদে ফেলতে দ্বিধা করেন না। অথচ ডেভিলস ঔথ অনুযায়ী ডাক্তারদের হওয়ার কথা ছিলো অনেকটা ঈশ্বরের মত গুণান্বিত।

আমরা পুরোনোকালের অনেক ডাক্তারদেরকে মনে করতে পারি, যাঁদের মধ্যে এই ধরণের সদগুণাবলী বিদ্যমান ছিলো। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য এই যে নতুন প্রজন্মের ডাক্তারদের মধ্যে সেই সেবার মনোভাব ভয়াবহভাবে ক্রমহ্রাসমান। সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রের অবক্ষয়ের মতই।

উৎসগ: দ্বিতীয়বারের মত মা হতে চলা শুভভাবী

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৬

ওমেরা বলেছেন: আমাদের দেশে তো ডাক্তারী পেশাটা বিজনেস হয়ে গিয়েছে। অলিতে গলিতে ক্লিনিক হয়েছে। ব্যবসায় টিকে থাকতে হলে অন্যের ভাবনা ভেবে নিজের লোকসান কে করবে। উন্নত দেশ গুলোতে এখনো সেটা হয়নি।

ধন্যবাদ।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:০০

পদ্মপুকুর বলেছেন: ইসলামে সৎ ব্যবসায়ীদেরকে অত্যন্ত উচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। সব ব্যবসাতেই সৎ থেকে শুধু লাভের কথা না ভেবে অন্যের ভাবনা একটু ভাবা উচিৎ। তদুপরি, অন্য ব্যবসায় কাস্টমারের দিকটা চিন্তা না করলে ক্রেতার শুধু টাকাই খসবে কিন্তু ডাক্তাররা যদি রোগীকে কেবলমাত্র কাস্টমার হিসেবে ট্রিট করতে থাকেন, সেখানে টাকার সাথে সাথে জীবনটাও হারাবার সম্ভাবনা থেকে যায়। দুর্ভাগ্যজনক।

মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ স্যার।

২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:১৪

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
আপনি এখন সুস্থ আছেন তো?
এ দেশের ডাক্তারদের নিয়ে কি আর বলব।সেটা ভুক্তভোগীরাই ভাল বলতে পারবেন।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৩

পদ্মপুকুর বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইজান। আমি এখন সুস্থ আছি। আমি সার্জারিটা দেশের বাইরে করিয়েছি। এখানে বলেছিলো- শরীরের একটা ছোট্ট অংশ কেটে ফেলতে হবে, অথচ শুধু ল্যাপারস্কোপির মাধ্যমেই বিষয়টা সমাধান করা গেছে। সুতরং এ দেশের ডাক্তারদের নিয়ে কি আর বলব।সেটা ভুক্তভোগীরাই ভাল বলতে পারবেন।

ভালো থাকবেন।

৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৩

পল্লব কুমার বলেছেন: আসলে এখন প্রায় সব ক্ষেত্রেই ডাক্তারদের মন মানসিকতা অনেকটা ব্যাবসায়িক হয়ে গেছে। আপনার শিরোনামটা ভালো লেগেছে।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৪

পদ্মপুকুর বলেছেন: ধন্যবাদ স্যার।

৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: আমি হাসপাতাল গুলোতে যাই-
প্রতিটা হাসপাতাল সেবা দিতে চায় না। শুধু টাকা কিভাবে বাগিয়ে নিবে সেই চেষ্টা করে।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৭

পদ্মপুকুর বলেছেন: কি করবেন স্যার, ডেভিলস ওথটা আজ এখানে মাথা কুটে মরছে।
আমাদের চিকিৎসাসংক্রান্ত কর্তৃপক্ষ যদি বিষয়টা খতিয়ে না দেখেনে, তাহলে ভবিষ্যতে খারাপিই আছে। পাশের দেশে এবং পার্শ্ববর্তী আরো দুয়েকটি দেশে বাংলাদেশী রোগীদের ভীড় ইদানিং ওই সব এলাকার মানুষদেরকে বাংলা ভাষা পর্যন্ত শিখিয়ে ফেলছে....

ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।

৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৪

আখেনাটেন বলেছেন: প্রাইভেট মেডিকেলগুলো ডাক্তারী পেশাটাকে আরো জটিল করে তুলবে অদূর ভবিষ্যতে। কিছুদিন আগে পিজিতে নিয়োগ স্থগিত এরই ইঙ্গিত দেয়।

সাধারণ জনগণের ভোগান্তির জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে এখন।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:০১

পদ্মপুকুর বলেছেন: সাধারণ জনগণ না পারতে এখানে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। আর যে পারছে, সে এ দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার পশ্চাতদেশে সপাটে লাত্থি হাকিয়ে অন্যদেশে চলে যাচ্ছে।

আর প্রাইভেট মেডিকেলসংক্রান্ত মন্তব্যর সাথে একমত। ভালো থাকবেন।

৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:২০

রাকু হাসান বলেছেন:

আহ! কি নিদারুণ যন্ত্রণার কথা অবলীলায় লিখে গেলেন । কিন্তু যারা সহ্য করতে হয় তাদের !! ব্যক্তিগতভাবে স্রষ্টা সুস্থ রাখছেন । সামান্য জ্বর হলেই আমি অস্থির হয়ে যাই । এমন কিছু হলে কি অবস্থা হবে ! আর ভোগ করছেন তাঁদের দিনগুলো কিভাবে পার হচ্ছে ! ভাবতেই শিউরে উঠি । আল্লাহ্ সবাই কে তুমি ভালো রাখ ।
আমাদের দেশের ডাক্টাররা সেবার মানসিকতা নিয়ে চিকিৎসা অনেকাংশে করছে না । অমানবিক ! ডাক্টারদের সবচেয়ে বেশি মানবিক হওয়া উচিত ।

৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:০২

পদ্মপুকুর বলেছেন: ডাক্তারদের সবচেয়ে মানবিক হওয়া উচিৎ। দেখেন কি অদ্ভুত আমাদের সমাজ আর আমাদের নৈতিকতা যে আজ এই কথাটা আলাদা করে বলতে হচ্ছে...

৮| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৬:১৩

মলাসইলমুইনা বলেছেন: পেশেন্টের সাইকোলজিকাল দিকটা যে পুরো চিকিৎসা পদ্ধতির একটা বড় পার্ট হওয়া দরকার সেই ধারণাটা মনে হয় আমাদের দেশের চিকিৎসকদের ভেতর খুব বেশি জোরালো ধাৰণা হয়ে উঠেনি এখনো । কি আর করা যাবে অন্তহীন প্রতীক্ষা করতেই হবে একদিন সব ঠিক হবে সেটা ভেবে সেটাই যখন ভাগ্য লিপি আমাদের

কোনো প্রফেশন ব্যবসা হয়ে গেলে সেটা থেকে ভালো কিছু চাওয়া আর পাওয়া দুটোই অসম্ভব হয়ে পরে সার্ভিস ফি ছাড়া । আমাদের ডাক্তারদের নিয়ে এ'ধরণের অভিযোগ অনেক আগে থেকেই আছে ।কিন্তু এর কোনো রিমিডিতো এখনো চোখে পড়লো না । ডাক্তারদের দোষ,ভুল সিদ্ধান্তগুলো অন্তত নৈতিক বিষয়গুলো দেখভাল করার জন্য বিদেশে কিন্তু কেন্দ্রীয় সংগঠন আছে ওসব প্রফেশনেরই । যেমন আমেরিকায় ডাক্তারদের জন্য স্টেট্ মেডিকেল বোর্ড আছে । এদের বক্তব্য কিন্তু খুব গুরুত্বপায় । যেমন বেআইনি কাজের জন্য এসব কেন্দ্রীয় এসোসিয়েশন লাইসেন্স রিভোক করতে পারে ডাক্তারদের । মেডিকেল বোর্ড ক্যালিফোর্নিয়াতে প্রত্যেক বছর প্রায় হাজার ডাক্তারকে বিভিন্ন ভাবে সতর্ক করে। এমনকি এখানে রোগীর সেবায় অবহেলা, প্রেসক্রিপশন মেডিসিনের অপব্যবহারেরমত অভিযোগেও ডাক্তারদের সতর্ক করা হয় । আমাদের দেশে সে ধরণের কিছু করতে মনে হয় আমাদর ডাক্তাররা খুব বেশি ইচ্ছুক নন আর সেজন্যই নৈতিকতার মাপকাঠিগুলো আমরা ঠিকমতো প্রয়োগ করতে পারি না দেশে ডাক্তারি প্রফেশনে ।এই সুযোগে চিকিৎসা পদ্ধতিতে অব্যবস্থাটা বেড়েই যাচ্ছে ধীরে ধীরে । জরুরি বিষয় নিয়ে ভালো হয়েছে এই লেখাটা ।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৭

পদ্মপুকুর বলেছেন: এই ব্লগে আমাদের ডাক্তারদের নিয়ে প্রচুর লেখা হয়েছে। কাউসার ভাইয়ের লেখার উ্ল্লেখ আমি আমার লেখাতেই দিয়েছি। গতকালও শার্লিন নামের নতুন এক ব্লগারের একই বিষয়ে একটা লেখা পড়লাম, খুবই কষ্টকর অভিজ্ঞতা। এই সব অভিজ্ঞতা নিশ্চয় শুধুমাত্র ব্লগের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। ব্লগের বাইরেও কানাকানি হয়। ডাক্তার সম্প্রদায়ও নিশ্চয় জানে। তবুও কেনো যে এর কোনো পতিকার হয় না, আল্লাহ মালুম। হয়তো এ দেশে এখন কোনো কিছুই আর প্রফেশন বা সেবামূলক নয়, সবই ব্যবসা। আর ব্যবসা হলে যা হয় সেটা তো আপনি বিস্তারিত বলেছেনই।

আপনি ডাক্তারদের লাইসেন্সের কথা বলেছেন। আমাদের দেশে লাইসেন্স লাগে কি না তাই তো জানি না। আর সাইকোলজিকাল দিক নিয়ে কাজ করতে হলে আগে ডাক্তারদেরকেই ওই কর্মসূচির আওতায় আনা উচিৎ বলে আমি মনে করি।

এই আকালের যুগেও গঠনমূলক এবং অনেক বড় মন্তব্য করেছেন। অনেক ধন্যবাদ স্যার।
ভালো থাকবেন।

৯| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:৫৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার এক সিনিয়র কলীগ সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় বেঘোরে পড়ে গিয়ে হাঁটুতে ব্যথা পান এবং কয়েক জায়গায় তার রক্ত জমে যায়। নিজেই একটা রিক্সা ডেকে নিকটস্থ হাসপাতালে যান। ডাক্তার দেখে বলেন, তার জমাট বাঁধা রক্ত লোকাল এ্যানেস্থেশিয়া দিয়ে মোটা সূঁচ ফুটিয়ে টেনে বের করতে হবে। রোগী তাকে জানালেন, তিনি হৃদরোগী, দশ বছর ধরে নিয়মিত এ্যাসপিরিন খান। ডাক্তার বললেন, কিছু হবে না, এ্যাসপিরিন কয়েকদিন বন্ধ রাখেন। তৃতীয় দিনের মাথায় রোগী আকস্মিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেই ইন্তেকাল করেন। খবর পেয়ে ঐ হাসপাতালেরই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ছুটে এসে হায় আফসোস করে বলেন, আরে, ইনি যে আমারই দশ বছরের পুরনো রোগী। এরা এ্যাসপিরিন বন্ধ করার আগে একবার আমাকে তো বলতে পারতো, অন্য উপায় ছিল!
ভাল লিখেছেন, পোস্টের শিরোনামটাও চমৎকার হয়েছে। পোস্টে ভাল লাগা + +

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.