নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম, অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।
তৃতীয় জীবনে আমি ছিলাম বিজয় কৃষ্ণ দুলাল পাল, মাত্র পাঁচ বছর বয়সে আমার মৃত্যু হলো। সোমেন চন্দ্র নন্দী আমাকে ধাক্কা দিয়ে পুকুরের জলে ফেলে দিয়েছিল। আমার মৃত্যু হলো ১৯৪৩ সালে। আমার মা বিষ্ণুপ্রিয়া আমাকে নিয়ে অনেক সিনেমা দেখেছিল। শেষ ছবি আমি দেখেছিলাম মায়ের সাথে, সেই শেষ ছবি হলো -"পরিচয়।"
সেই সিনেমার একটি গান আমার খুব প্রিয় ছিল। আমি অনুকরণ করে সেই গান গাইতাম। মা আমাকে নিয়ে ভোজেশ্বর গ্রামে গিয়েছিল। মা আমাকে বললো,"খোকা, তুমি তোমার দাদু দিদিমাকে ঐ গানটি গেয়ে শোনাও।" আমি বললাম,"মা,আমি গাইবো না।" মা আমাকে আবার বললো, "খোকা একবার গেয়ে শোনাও।"
বললাম,"বারান্দায় উঠে গাইবো।" মা বললো,"তাই গাও।"
আমি বারান্দায় উঠে হাতে তীর ধনুক নিয়ে গাইতে লাগলাম, "আমার নাম অঞ্জনা, শিকারীর জাতি,
বাঘ মারলাম, সিংহ মারলাম, মারলাম কত হাতি।
পাহাড় পর্বত নদীনালা দিয়ে মোরা পাড়ি,
শিকারের লাগি শুধু দেশে দেশে ঘুরি রে,
দেশে দেশে ঘুরি।
তাক্ করেছি তাক্ তাক্, তাক করেছি তাক্,
লাগ্ নিশানা লাগ্ লাগ্, লাগ নিশানা লাগ্।
পরিচয় বইতে গানটি যেভাবে গাওয়া হয়েছিল, আমি সেইভাবে গাইতাম। আমি "লাগ্ নিশানা" বলার সময় বাম চোখ টিপতাম।
দাদু দিদিমা হেসে গড়াগড়ি।
তেমনি আমার মা বিষ্ণুপ্রিয়াও একটা কলসী কোমরে রেখে তারপর দুহাতে কলসীটাকে মাথার ওপর তুলে, কোমর দুলিয়ে নাচতো আর গান গাইতো-
"ছল্ ছল্ ছল্ নদীরই জল বড়ই উছলে
ছল্ ছল্ ছল্ নদীরই জল বড়ই উছলে,
সেখানে কলসী কাঁখে যাবো কি জল আনিতে
সেখানে কলসী কাঁখে যাবো কি জল আনিতে।
ঘাট যে বড় পিছল পিছল রে
ছল্ ছল্ ছল্ নদীরই জল বড়ই উছলে।
আমার দিদিমা মৃণালিনী রায় মায়ের মুখে গান শুনে আর নাচ দেখে খুব আনন্দ করতো। আমি মায়ের সাথে থাকতাম।
ঈশ্বরকে আমার প্রণাম। আমার স্মৃতির দরজা খুলে যাচ্ছে।
©somewhere in net ltd.