নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
আগের পর্ব পড়তে নিচে ক্লিক করুণ
অমাবস্যার ভুত (গল্প পর্ব-১)
নাদুকে বললাম, চাচা, কোনরকমে জালটা উদ্ধার করে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলেন, আর মাছের দরকার নাই। খালুইতে যা আছে এতেই হবে।
নাদু বলল, চাচা হাতের লাঠিটা দ্যানতো।
আমি হাতের লাঠি নাদুর হাতে দিয়ে দিলাম। নাদু লাঠি হাতে নিয়ে আমাকে বলল, চাচা আমার কাছে আহেন।
আমি তার কাছে দাঁড়াতেই সে হাতের লাঠি দিয়ে কালো দেহটিতে আস্তে আস্তে কয়েকটি গুতা দিলো। লাঠির গুতায় নরম কিছু মনে হলো না। একটু শক্ত শক্ত মনে হলো। এবার দেহটি সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়ার জন্য নাদু লাঠি দিয়ে ছোট করে দু’তিনটি বাড়ি দিল। দেহ থেকে খট খট শব্দ হলো না বটে তবে নরম কিছু মনে হলো না।। নাদু এবার জোরে জোরে দু’তিনটি বাড়ি দিয়ে নিশ্চিত হয়ে বলল, চাচা এইটা আর কিছু না, ভাসা কাঠ।
নিশ্চত হওয়ার পর নাদু দু’হাত দিয়ে জালের ভিতর থেকে কাঠ বের করতে গিয়ে বলল, চাচা এইটাতো পোড়া কাঠ। কাঠ ফেলতে গিয়ে দেখল জালের ভিতর কিছু পোড়া কাঁথাও উঠে এসেছে। তাড়াতাড়ি পোড়া কাঁথাগুলো দু’হাত দিয়ে নদীর পানিতে ফেলতে ফেলতে বলল, শালা পোড়া কাঁথা আইলো কইত্থিকা।
নাদু তাড়াতাড়ি জাল পরিস্কার করলো। আনেক মাছ উঠেছে। মাছগুলো বালুর ভিতর লাফালাফি করলেও আমি আর মাছ ধরার চেষ্টা করলাম না। নাদুও মাছগুলো ধরার ব্যাপারে কোন আগ্রহ দেখাল না। মাছগুলো বালুর উপর রেখেই আমরা দু’জন জাল, খালুই, লাঠি ও হ্যারিকেন নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলাম। বালুর ঢাল বেয়ে উপরে উঠতেছিলাম হঠাৎ সামনে তাকাতেই একটি খাড়া বাঁশের মতো মনে হলো। নাদু বিষয়টি লক্ষ্য করে নাই। আমি নাদুকে জিজ্ঞেস করলাম, চাচা এখানে বাঁশ পুঁতে রেখেছে কে?
নাদু আশ্চার্য হয়ে পাল্টা প্রশ্ন করল, কই?
আমি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বললাম, ঐ তো উপরে!
নাদু তাচ্ছিল্যভাবে বলল, মনে হয় কেউ আমীন দিয়া চরের সীমানা মাপছে।
কথাটি বলার পরেই আমার হাত থেকে হ্যারিকেন নিয়ে মাথার উপরে উঁচু করে ধরল। অন্ধকারের ভিতর হ্যারিকেনের আলো উপর দিকে ছড়িয়ে পড়ায় বাঁশের মাথায় একটি কাপড় চোখে পড়ল। দখিনা বাতাসে কাপড়টি পতাকার মতো পত্পত্ করে উড়ছে।
আমরা আরেকটু উপরে উঠে বাঁশের গোড়ার দিকে তাকালাম। বাঁশের গোড়ায় বালু দিয়ে ঢিবি তৈরী করা হয়েছে। ঢিবির উপরে একটি মাটির কলসি। কলসিটি পানি দিয়ে ভরা। সামনে তাকাতেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু পোড়া কাঠ, ছাইভস্ম ও কয়লা চোখে পড়ল। আমাদের আর বুঝতে বাকি রইল না যে এখানে হিন্দুদের মরা পোড়ানো হয়েছে।
নাদু আমার এক হাত ধরে বলল, চাচা তাড়াতাড়ি চলেন, এই এলাকায় আর বেশি দেরি করা ঠিক হইবো না।
আমরা পশ্চিম দিকে খাল থাকায় দক্ষিণ দিকে হাঁটতে লাগলাম। কিছুদূর যাওয়ার পর নাদু জিজ্ঞেস করল, চাচা, পশ্চিম পাড়ার কর্তিকের মা’ও যে মারা গ্যাছে তারে কোনহানে পোড়াইছে।
আমি বললাম, দুপুরে তো মরা ঘাড়ে করে এদিকেই নিয়ে আসতে দেখেছি।
নাদু মাথা ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে বলল, হুঁ বুঝছি, তাইলে মনে হয় এইহানেই কার্তিকের মায়েরে পোড়াইছে। জালে যে পোড়া কাঠ উঠছিলো ওইটা ঐ মরা পোড়ানের কাঠ। আগে জানলে আইজকা মাছ ধরবার আইতাম না। কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার নাদু বলল, চাচা, পোড়া কাঠের সাথে যে মাছ উঠছিলো মাছগুলা কি ধরছেন?
আমি বললাম, না।
নাদু বলল, ভাল করছেন। ঐ মাছগুলা নেওয়া ঠিক হইবো না। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে নাদু আবার বলল, চাচা আইজকা সন্ধ্যার সময় কি হিন্দু পাড়া গেছিলেন?
আমি বললাম, না।
-- হিন্দু পাড়া থিকা উলুর ধ্বনি হুনছিলেন।
-- শুনেছিলাম, কেন?
-- হিন্দু পাড়ায় কি ছোট ছোট অনেকগুলো বাতি লাগাইছিলো?
-- হুঁ, সন্ধ্যার সময় অনেক বাতি লাগানো দেখেছি।
-- তাইলে আইজকা বুড়া আমাবাশ্যা। আইজকা আমাগো মাছ ধরতে আসা ঠিক হয় নাই।
-- অমাবশ্যায় মাছ ধরলে কি হয়?
-- বুড়া আমাবশ্যায় শয়তানগুলা ঝাউ-জঙ্গল ছাইড়া মাইনষের এলাকায় চইলা আইসে। এইদিন ওরা মাঠে-ঘাঠে মনের আনন্দে ঘুইরা বেড়ায়। নানা ধরনের উৎপাত কইরা মানুষ-জনের ক্ষতি করার চেষ্টা করে।
নাদুর কথা শুনে আমার গা শিউরে উঠল। কালি পুজা যে অমাবশ্যায় হয় গ্রামের লোকেরা সেই অমাবশ্যাকে বড় অমাবশ্যা মনে করে। এই দিন হিন্দূরা লম্বা লাল জিহ্বা বের করা, রক্তমাখা নরমুন্ডর মালা পরিহিতা কালো কুচকুচে উলঙ্গ কালি প্রতিমার পুজা করে। কালির চেহারা দেখতেও ভয়ঙ্কর। রাতের অন্ধকারে কেউ যদি কালির চেহারা একা একা কোন নির্জন মাঠে দেখে তাহলে নিশ্চয়ই সে ভয় পাবে। মুহুর্তের মধ্যে সেই কালির চেহারা চোখে ভেসে উঠল। একে তো ভুতের ভয় তার উপর সত্যিই যদি বড় অমাবশ্যা হয়ে থাকে তাহলে ভুতের কবল থেকে আজ রেহাই পাব কিনা সন্দেহ আছে। দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম।
এমনি সব কাল্পনিক ভুতের ভয় ভীতি নিয়ে দু’জনে বালুচর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলতেছিলাম। হঠাৎ দক্ষিণ পশ্চিম দিকে শ্মশান ঘাটের দিকে নজর পড়তেই ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে একটি ছোট আলোর মতো মনে হলো। আমি অন্যদিকে তাকিয়ে আবার ঐ দিকে তাকালাম, আলোটি আর দেখা যায় না। আমি আবার এদিক ওদিক তাকিয়ে শ্মশানের দিকে তাকালাম, আলোটি দেখা যায়। এমনি তিন চারবার লক্ষ্য করার পর দেখলাম আলোটি কিছুক্ষণ পর পর জ্বলে আবার নিভে। একেতো বড় অমাবশ্যার রাত, তারোপর শ্মশান এলাকা। মনের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিল। সত্যি সত্যিই ভুতের কবলে পরলাম নাকি?
আমি ভয়ে ভয়ে নাদুকে বললাম, চাচা, শ্মশানের দিকে তাকান তো!
নাদু বলল, ক্যান?
আমি হাত উঁচিয়ে আলোর দিক নির্ণয় করে বললাম, ওই দিকে একটি আলো দেখা যায় না?
নাদু আমাকে সাহস দেওয়ার জন্য তাচ্ছিল্যভাবে বলল, ও কিছু না, কেউ হয়তো আমাগো মতই মাছ ধরতে আইতেছে।
আমি বললাম, না চাচা আলোটি একটু পর পর জ্বলে উঠে আবার নিভে যায়।
আমার এমন কথা শুনে নাদুও শ্মশানের দিকে তাকালো। একটু পরেই আলোটি জ্বলে উঠল। কিছুক্ষণ পর আবার নিভে গেল। আলোটি মনে হলো নড়াচড়া করছে, কখনো উপরে উঠে আবার কখনো নিচে নেমে যায়। নাদু দাঁড়িয়ে গেল, আমিও দাঁড়ালাম। দু’জনের দৃষ্টি আলোর দিকে। আলোটি জ্বলা বা নিভার জন্য যতটা না ভয় হচ্ছে তার চেয়ে বেশি ভয় হচ্ছে আলোটি আমাদের দিকেই আসছে।
নাদু সাহস দিয়ে বলল, চাচা ভয় পাইয়েন না, যাই হোক না ক্যান ও আমাগোরে কিছুই করতে পারবো না। আমাগো কাছে আলো আছে, লাঠি আছে, জাল আছেÑ কুনুই ভয় নাই।
আমাকে আশ্বাস দিয়ে নাদু রাস্তা বদল করে অন্য দিকে হাঁটা শুরু করল।
আমি বললাম, চাচা কোন দিকে যাবেন?
নাদু বলল, পূবের চরে যাওয়ার জন্য দক্ষিণে একটা রাস্তা আছে। যে রাস্তা দিয়া মানুষজন নদী পার হয়, ঐ রাস্তায় যাই।
-- কেন?
-- মানুষ জন যে রাস্তায় চলাচল করে সে রাস্তায় ওরা (ভুতেরা) মানুষের ক্ষতি করতে পারে না। আসে পাশে থাইকা শুধু ভয় দেহায়। ভয় পাইলেই ক্ষতি করার সুযোগ পায়, আর ভয় না পায়া সাহস নিয়া দাঁড়ায়া থাকলে কিছুই করবার পারে না।
এতোই অন্ধকার যে হ্যারিকেনের আলো যে পর্যন্ত যায় ঐ পর্যন্তই চোখে পড়ে এর বাইরে কিছুই চোখে পড়ে না। আমি বললাম, এই অন্ধকারে তো উত্তর দক্ষিণ কিছুই বোঝা যায় না, আপনি কি করে বুঝলেন যে আমরা দক্ষিণ দিকে যাচ্ছি?
নাদু আকাশের তারার দিকে তাকিয়ে বলল, ঐ যে সাত ভাই তারা আছে না, ঐ তারাগুলা সবসময় দক্ষিণ দিকে থাকে। অন্ধকার রাইতে যহন ঠিক-ঠিকানা পাওয়া যায় না তহন ঐ তারার দিকে তাকাইলে অন্ধকারে উত্তর দক্ষিণ ঠাহর পাওয়া যায়।
নাদূর কথামতো তাকে অনুসরণ করে হাঁটছিলাম। কিছুক্ষণ পর ঠিকই পায়ে চলার একটি রাস্তা পাওয়া গেল। নাদু রাস্তায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে দিক ঠিক করে নিল। এরপর পশ্চিম দিকে হাঁটতে লাগল। তার ঘাড়ে জাল হাতে লাঠি। আমার এক হাতে হ্যারিকেন অন্য হাতে মাছ ভর্তি খালুই। শ্মশানের আলোটি তখনও দূরে। কিন্তু বিপদের লক্ষণ হলো, আমরা যে আলোর ভয়ে রাস্তা বদল করে অন্য রাস্তা ধরে পশ্চিম দিকে যাচ্ছি, আলোটিও ঠিক তার চলার পথ পরিবর্তন করে পশ্চিম দিক থেকে পূর্বদিকে অর্থাৎ আমাদের দিকেই আসছে। আলোর রাস্তা পরিবর্তনের কারণে ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। দেহের শক্তি লোপ পেল। তবু মনের মধ্যে সাহস এনে নাদুর পিছনে পিছনে হাঁটতে লাগলাম।
আমাদের নজর সব সময় ঐ আলোর দিকে। আলো কোন দিক থেকে কোন দিকে যায় এবং কোথায় জ্বলতেছে আর কোথায় নিভতেছে এইসব খেয়াল রাখতে গিয়ে পায়ের নিচে কি আছে না আছে বা কোন দিকে যাচ্ছি সে দিকে খেয়াল করার মতো হুঁশ নেই। দু’জনের অবস্থা একই। কারণ এধরনের বিপদের সম্মুখীন আমরা এর আগে কখনই হইনি। ভুতের অনেক গল্প শুনেছি কিন্তু সরাসরি কখনও ভুত দেখিনি। তাই ভুতের আলোর দিকে তাকিয়ে ভয়ে ভয়ে হাঁটছিলাম। কখন ভুত সামনে এসে ভকাত্ করে আলো জ্বালিয়ে বিশাল ভয়ঙ্কর মুর্তি ধারণ করে বা খপ্ করে ঘাড় ধরে মট্কে ফেলে অথবা বিকট কলো মুর্তি ধারণ করে ইত্যাদি নানা ধরনের ভয়ভীতি কল্পনা করে হাঁটছিলাম। এমন সময় হঠাৎ নাদু ওরে বাবারে বলে লাঠি জালসহ উপুর হয়ে পড়ে গেল। আমিও নাদূর পাশাপাশিই হাঁটছিলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মনে হলো পায়ে কেউ লাথি মেরে দিল। আর সঙ্গে সঙ্গে নাদূর উপর হুড়মুড় করে পড়ে গেলাম। আমার হাতের খালুই ছিটকে দূরে পড়ে গেল। হ্যারিকেন শক্ত করে ধরা ছিল। হাত থেকে ফসকে না গেলেও আছাড় খেয়ে নিভে গেল। পা থেকে মাথা পর্যন্ত সমস্ত লোম কাঁটা দিয়ে উঠল। মনে মনে ভাবলাম অন্য কিছু নয় ভুতেই লাথি মেরে ফেলে দিয়েছে, এবার হয়তো আমাদের দু’জনকে টুটি চেপে ধরে মেরে ফেলবে, নয়তো ঘাড় মটকে রক্ত চুষে খাবে। ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল। কথা বলার শক্তিও হারিয়ে ফেললাম।
নাদু তাড়াতাড়ি উঠে এসে অন্ধকারে আমার হাত ধরে বলল, চাচা ভয় পাইয়েন না। এটা কিছুনা। আমরা কোন কিছুর সাথে হোচট্ খায়া পইড়া গেছি। আপনার কাছে ম্যাচ আছে না? হারিকেন জ্বালান।
আমি আমার কোমরে গুঁজে রাখা দিয়াশলাই খুঁজলাম। কিন্তু দিয়াশলাই খুঁজে পেলাম না। লুঙ্গির উল্টা প্যাচে কোমরে গুঁজে রেখেছিলাম। কোমরে না পেয়ে অন্ধকারে বালির উপরে দু’হাত দিয়ে খুঁজতে লাগলাম কিন্তু তাতেও পেলেম না। ভয়ে হাত পা কাঁপতে লাগল। আগুন থাকলে নাকি ভুতেরা কাছে আসে না। ভাবলাম কোমর থেকে কি ভুতেরা দিয়াশলাই সরিয়ে ফেলল?
এই মুহুর্তে মাছ আর খালুই নিয়ে দু’জনের মাথা ব্যাথা নেই এবং এসবের কথা মনেও নেই। মাছের চেয়ে এখন জীবন বাঁচানই শ্রেয়। ভুতের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আমাদের হাতে ধরা আছে হ্যারিকেন, লাঠি আর জাল। আমরা আলো জ্বালাতে না পেরে দু’জনেই পায়ে চলা রাস্তায় বালুর উপর বসে পড়লাম। দু’জনেই খুব কাছাকাছি গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বসে আছি, আর ঘন ঘন শ্মশানের দিকে তাকাচ্ছি। অনেকক্ষণ হলো আলো চোখে পড়ছে না। মনের মধ্যে ভয় ধরে গেল, ভুত হয়তো আস্তে আস্তে কাছে এসে ভয়ংকর কোনো রূপ ধারণ করবে নয়তো আলো জ্বালাবে।
এসব চিন্তা করতে না করতেই আামদের অনতি দূরে ভকাত্ করে আলো জ্বলে উঠল। আলো জ্বলার সাথে সাথে যে দৃশ্যটি চোখে পড়ল সেটি আরো ভয়ঙ্কর। জীবনে এমন দৃশ্য আর কখনও চোখে পড়েনি। মুখের কাছে আলো জ্বলছে। আলোটি কখনো বাড়ে আবার কখনো কমে। আলোর পিছনে সাদা কাপড়ে ঘোমটা দেওয়া একটি নারী মুর্তি। নারীটি দেখতে বিশাল লম্বা। আলো জ্বলার একটু পরেই ভুক করে নিভে গেল। ভয়ে কাঁপতে লাগলাম। এতদিন হয়তো এই ডাইনিই নারী মুর্তি ধারন করে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে ভয় দেখাতো, আজ সে সরাসরি আলো জ্বালিয়ে আসছে। বুড়ো অমাবশ্যার সুযোগে বড় বড় দাঁত বেড় করে কামড়িয়ে রক্ত চুষে খাবে! আমাদের আর বাড়ি ফেরা হবে না। আজকের এই মুহূর্তটাই হয়তো আমাদের জীবনের শেষ মুহূর্ত।
দু’জনের কারো মুখে কোন কথা নেই। কথা বন্ধ হয়ে গেছে। হঠাৎ পিঠের উপর কার যেন হাতের ছোঁয়া। অমনি চমকে উঠলাম। হৃৎপিন্ড বন্ধ হওয়ার উপক্রম। হাতের দিকে তাকানোর সাহস নেই। কাঁপতে কাঁপতে অনুমান করলাম এটা নাদূর হাত। নাদু নিজের হাতে জাল দিয়ে পা থেকে মাথা পর্যন্ত সেসহ আমাকে পেঁচিয়ে দিচ্ছে। গায়ের সাথে জাল জড়ানো থাকলে নাকি ভুতে থাবা মারতে পারে না। সেইটা মনে করেই হয়তো নাদু জাল দিয়ে জড়িয়ে দিচ্ছে।
দ’ুজনের গায়ে জাল জড়িয়ে দিয়ে নাদু লাঠিটা পায়ের নিচে ফেলে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল। আমিও অন্ধকারে যতটুকু অনুমান করা যায় নাদূর মত করে বসে পড়লাম। ভয়ে অন্য কিছু খেয়াল নেই। মন্ত্র-তন্ত্র বা দোয়া-দরুদ কিছুই মনে পড়ছে না। চোখের সামনে শুধু ভূতের নানা রকম ভয়ঙ্কর চেহারা কল্পনায় ভাসছে।
চোখ বন্ধ করে ঠক্ঠক্ করে কাঁপছি। হঠাৎ মনে হলো ধুপ্ ধুপ্ শব্ধ করে কি যেন আসছে। কান পাততেই পায়ের আওয়াজের মতো মনে হলো। চোখ বন্ধ করে ফেললাম। কি জানি চোখ খূললে ভয়ঙ্কর কিছু চোখে পড়ে। ভয়ে চোখ খোলার সাহস পাচ্ছি না। ভয়ঙ্কর কিছু দেখে কলিজা ফেটে মরার চেয়ে চোখ বন্ধ করে কোন কিছু না দেখে মরাটাই উত্তম। মনে মনে ভুতের আক্রমণের অপেক্ষা করছি।
(চলবে-)
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২৪
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই টোকাই রাজা। খুশি হলাম।
২| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪০
পারভেজ উদ্দিন হৃদয় বলেছেন: জমে উঠছে,পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রয়লাম,
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৯
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই পারভেজ উদ্দিন হৃদয়। আজকে রাতেই পরের পর্ব পাবেন। শুভেচ্ছা রইল।
৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০৪
টোকাই রাজা বলেছেন: ১ম পর্ব, ২য় পর্ব পড়লাম এখন পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৩০
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই টোকাই রাজা। আপনি মনোযোগ দিয়ে ভুতের গল্প পড়ার জন্য আন্তরিক শুভেচছা রইল।
৪| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ওরে ওরে ওরে.. এতো দেখি শেষ হবার বদলে আরো সাসপেন্সে নিয়ে আটকে দিলেন।
নাদুর মতো দমবন্ধ করা অবস্থায়
তারপর????
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৩১
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই বিদ্রোহী ভৃগু। আপনি আমার লেখা ভুতের গল্প মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন জেনে অনেক খুশি হলাম। অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
৫| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪০
কিরমানী লিটন বলেছেন: অপেক্ষায় রইলাম পরের পর্বের, অনেক শুভকামনা প্রিয় প্রামানিক ভাইয়ের জন্য ...
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫
প্রামানিক বলেছেন: আজ রাতেই পরের পর্ব দিব। ধন্যবাদ ভাই কিরমানী লিটন। শুভেচ্ছা রইল।
৬| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৭
কল্লোল পথিক বলেছেন: রহস্য জমে উঠেছে দারুন গল্প।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৯
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ কল্লোল ভাই শুভ্চেছা রইল।
৭| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪১
স্বপ্নীল পরান বলেছেন: তারপর যে কি হয়.........
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০০
প্রামানিক বলেছেন: পরতে থাকেন হবেই একটা কিছু। ধন্যবাদ
৮| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৫
আজমান আন্দালিব বলেছেন: পড়লাম এ পর্ব। পরের পর্বে যাই...
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৫
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আজমান আন্দালিব। অনেক অনেক শুভেচছা রইল।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২০
টোকাই রাজা বলেছেন: হাজিরা দিয়ে গেলাম, পরে এসে পড়ব।