নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

pramanik99

আমার স্কুল জীবনের স্মৃতিগুলো বার বার মনে পড়ে। ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই দিনগুলোতে।

প্রামানিক

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

প্রামানিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভরতখালীর কালী মন্দির

২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ৮:১৮

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক


ভরত খালীর কালী মন্দিরটি দুইশত বছরেরও অধিক পুরানো। এই মন্দির সম্পর্কে কোন ইতিহাস পাওয়া যায় না। তবে প্রচলিত লোক কাহিনীতে জানা যায়, প্রায় দুই শত বছর পূর্বে ঘাঘট নদী দিয়ে একটি কাঠের গুঁড়ি ভেসে আসে। এক লোক এই কাঠের গুড়িটি তুলে এনে কুড়াল দিয়ে আঘাত করলে কাঠের গুড়ি থেকে রক্ত বেরিয়ে আসে। এটা দেখে ওই লোক ভয় পেয়ে যায় এবং কাঠের গুঁড়িতে আর কুড়ালের কোপ দেয়ার সাহস পায় না। এই ঘটনার সেই রাতেই সেখানকার জমিদার রমনী কান্ত রায় স্বপ্নে কালী দেবীর আদেশ পান যে, “আমি তোর ঘাটে এসেছি, তুই সমাদর করে পুজা দে”। এই স্বপ্ন দেখে পরদিন জমিদার কাঠের গুড়িটিকে কারিগর দিয়ে কালী মুর্তি তৈরী করে পুজা অর্চনা শুরু করেন।

প্রথমে তিনি একটি খড়ের ঘরে মুর্তি স্থাপন করে পুজা অর্চনা শুরু করেছিলেন, পরবর্তীতে খড়ের মন্দিরটিকে পাকা দালানে পরিণত করেন। সেই থেকে জাগ্রত কালী হিসাবে আজ অবধি এই মন্দিরে পুজা অর্চনা হয়ে আসছে।

মন্দিরের প্রধান দরোজা

সারা বছরই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এখানে আগমন ঘটে থাকে। তবে প্রত্যেক বছর বৈশাখ মাসে পুরো মাস জুড়ে পুজা উৎসব হয়ে থাকে। এখানে হিন্দু ধর্মের লোকজন তাদের মনোবাসনা পুরনের জন্য পাঠা বা কবুতর মানত করে থাকেন। বৈশাখ মাসের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার পাঠা বলী দেয়া হয়। তখন গাইবান্ধা জেলা ছাড়াও অন্যান্য জেলা থেকেও প্রচুর হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকের আগমন ঘটে। এমন কি ভারত এবং নেপাল থেকেও অনেক লোক এসে থাকে। প্রতি বছর বৈশাখ মাসে কমপক্ষে দেড় হাজার পাঠা আর তিন হাজার জোড়ারও অধিক কবুতর এই কালী দেবীর চরণে উৎসর্গ করা হয়। কালী পুজা উপলক্ষ্যে পুরো বৈশাখ মাস জুড়ে মেলার আয়োজন হয়ে থাকে।

পাঠা বলী দেয়ার স্থান

১৯৯০ সালে যমুনার করাল গ্রাসে ভরতখালীর পূবাংশ ভেঙ্গে বিলীন হয়ে যায়। একটা পর্যায়ে নদী কালী মন্দিরের সীমায় এসে ঠেকলে সবাই ভেবেছিল এবার হয়তো কালী মন্দীরকে আর রক্ষা করা সম্ভব হবে না। আর মাত্র একশ হাত ভাঙলেই পুরো মন্দিরটি নদীর গর্ভে চলে যাবে। কিন্তু নদীর ভয়াবহ ভাঙন কালী মন্দীরের পূর্বপাশে এসে থেমে যায়। একটা পর্যায়ে কালী মন্দিরের সামনে চর পড়ে নদী আবার একমাইল পূর্বদিকে চলে যায়। কোন প্রটেকশন ছাড়াই নদী না ভেঙে কালী মন্দির থেকে দূরে চলে যাওয়ায় একটি কথা প্রচলিত আছে, যমুনা নদী কালী দেবীর সাথে দেখা করতে এসেছিল এবং দেখা করে তার পূর্বের জায়গায় চলে গেছে। আগে থেকেই এই কালী মন্দিরকে হিন্দু ধর্মের লোকজন জাগ্রত কালী মন্দির হিসাবে ¯্রদ্ধা ভক্তি করে আসছে, বর্তমানে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙন থেকে রক্ষা পাওয়ায় আরো এই কালী মন্দিরকে হিন্দু ভক্তবৃন্দ মনে প্রানে জাগ্রত কালী মন্দির হিসাবে বিশ্বাস করে থাকে।

মন্দিরের পিছনের বট মূলে প্রজ্জলিত দ্বীপ ও বিভিন্ন ভোগের সামগ্রী


মন্দিরের পূর্বপাশে ভক্তবৃন্দদের জন্য ছাউনি

এখান থেকেই যমুনা নদী পূর্ব দিকে ফিরে গিয়েছে

ভক্তবৃন্দের জন্য বসার ঘর

মন্দিরের পুরোহিতের থাকার ঘর

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:২৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: গুগল করে জানতে হলো ভরতখালী বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৩

প্রামানিক বলেছেন: আমারই ভুল হয়েছে। ঠিকানাটা ভালোভাবে উল্যেখ করা উচিৎ ছিল।

২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৩৬

শেরজা তপন বলেছেন: জমিদারবাবু কেন খড়ের ঘরে এমন একটা মুর্তি স্থাপন করল?
কাটতে গিয়ে রক্ত বেরুল কিন্তু মুর্তি বানাতে গিয়ে কিছুই ঘটল না- ব্যাপারটা ঠিক মানায় না।
দেড় হাজার পাঁঠা বলি আর তিন হাজার জোড়া কবুতর উৎসর্গ -বেশ বড় আয়োজন। কবুতর উৎসর্গের বিষয় কি অন্য কোন পুজোয় আছে?

অনেক তথ্য জানা হোল

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৮

প্রামানিক বলেছেন: সনাতন ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী আপনার প্রশ্নের উত্তরটা হলো-- যে লোক কাটতে গিয়েছিল সে হয়তো লাকড়ি করার জন্য কাটতে ছিল কিন্তু জমিদার বাবু যখন মিস্ত্রি দিয়ে কাঠ কাটার আয়োজন করে সেটা লাকড়ির জন্য নয় পুজোনীয় মুর্তি তৈরীর জন্য অন্তর্জামী কালি হয়তো সেই কারনে রক্ত প্রদর্শন বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে এই উত্তরটি মুসলিম মতে নয় হিন্দু ধর্ম মতে।

৩| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৫৯

শায়মা বলেছেন: উপরের দুইটা মন্তব্যই আমার মনের কথা। ভরতখালী কোথায় ভাবছিলাম। আবার এটাও ভাবছিলাম রক্ত বের হওয়া কাঁঠ দিয়ে মূরতী হলো কেমনে?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৯

প্রামানিক বলেছেন: উত্তরটি দুই নম্বরে দেয়া আছে।

৪| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমার কেন জানি মনে হচ্ছে ভরতখালি আমি গিয়েছি। কিন্তু আর কিছুই মনে করতে পারছি না।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩১

প্রামানিক বলেছেন: বাহাদুরাবাদ ঘাট পার হয়ে যমুনা নদীর পশ্চিম পারে এসে ট্রেন ছাড়ার পর প্রথম যে স্টেশনটি দেখা দিত সেটাই ভরতখালি।

৫| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:২৬

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: কিছু গাছ আছে যা কাটলে লাল কষ বের হয়,গেজুর গাছ কাটলে মিষ্টি রশ বের হয় এতে অবাক হবার কিছু নাই।কিন্তু জাগ্রত কথাটা বুঝলাম না।কিছু জাগ্রত মাজার আছে।জাগ্রত গির্জাও কি আছে?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩৩

প্রামানিক বলেছেন: এটা জাগ্রত গির্জা নয় হিন্দু ধর্মের মন্দির। এটা হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস থেকে এই ঘটনাকে বিশ্বাস করা হয়।

৬| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৩৯

উদারত১২৪ বলেছেন: মনের কথ
হিন্দুস্থানে সর্বপ্রথম যেভাবে ইসলাম প্রচার হয়েছিল | Real Hindusthani Muslim History in Banglaহিন্দুস্থানে সর্বপ্রথম যেভাবে ইসলাম প্রচার হয়েছিল

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩৫

প্রামানিক বলেছেন: বাংলায় ইসলাম প্রচারের একটি বই আমার কাছেও আছে। ইসলাম এবং হিন্দু ধর্ম সম্পূর্ণ আলাদা।

৭| ২৭ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:০৪

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: যারা সেই সময় মুসলমান হয়ে ছিলো তাঁরাই ভালো বলতে পারবে,ইতিহাস থেকে ভাল বুঝা যায় না।প্রচার ধর্মী ইতিহাস থেকে কোন সত্যই জানা যায় না।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩৫

প্রামানিক বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। ধন্যবাদ

৮| ২৭ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:০৬

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: উপরের মন্তব্যটি উদরত১২৪ জন্য।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩৬

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.