নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ রংপুর থেকে ১৭ই এপ্রিল পাক সেনারা গাইবান্ধা শহরে ঢুকেই অনেক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। মানুষ সেই কারণে জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। পাক সেনারা যাতে এলাকায় আসতে না পারে সেজন্য জনসাধারণ নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার চেষ্টা করতে থাকে। কোথাও বড় বড় গাছ ফেলে আবার কোথাও রাস্তা কেটে গর্ত করে বাধার সৃষ্টি করে। তেমনি ফুলছড়ি থানার লোকেরদেরও চেষ্টার ত্রুটি ছিল না।
পাক সেনাদের ফুলছড়ি থানা দখল করার পরদিন সকাল বেলা দেখি একদল ছাত্র জনতা ফুলছড়ি এলাকা থেকে লাঠি সোটা নিয়ে ওয়াপদা বাঁধ দিয়ে উত্তর দিকে আসতেছে। তাদের মুহুর্মূহু মিছিলের স্লোগানে আকাশ বাতাস কেঁপে উঠছে। অনেকের হাতে কোদাল কুড়াল। তাদের দেখে বুঝতে বাকি থাকল না পাক সেনারা যাতে এলাকায় না ঢুকতে পারে তার জন্য কিছু একটা করতে হবে।
আমার বড় ভাই, আমি এবং আমার জেঠাতো ভাইসহ তিন চার ভাই কোদাল ঘাড়ে নিয়ে দৌড়ালাম সেই মিছিলের দিকে। মিছিলে একত্রিত হয়ে উত্তর দিকে রওনা হলাম। মুহুর্তেই মিছিলে শত শত লোক জড় হয়ে গেল। মিছিল আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় এক মাইল উত্তরে গড়াইমারী বারো মাইসা নদীর উপর নির্মিত ওয়াপদা বাঁধের স্লুইস গেটে গিয়ে পৌছলে নেতারা সøুইস গেটটি ভাঙার জন্য পরিকল্পনা করে। নেতারা ভাঙার কথা মুখে আনতেই একদল উৎসাহী জনতা কোদাল কুড়াল দিয়ে স্লুইস গেটের ইট ভাঙা শুরু করে দেয়। উৎসুক জনতার গেট ভাঙার ধরন দেখে ঐ গেটের চৌকিদার ভয় পেয়ে যায়। তখন ঐ স্লুইস গেটের চৌকিদারের দায়িত্বে ছিলেন গড়াইমারী গ্রামের নালচান মিয়া। তিনি সবার হাত পা ধরতে লাগলেন। তার চিন্তা হলো-- যেহেতু তিনি এই স্লুইস গেটের দায়িত্বে আছেন, তার উপস্থিতিতে স্লুইস গেট ভাঙা হলে তার চাকরি থাকবে না। কিন্তু কে শোনে কার কথা। লালচান ভাইকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে সংগ্রামী জনতা গেটের গার্ডারের উপরিভাগ কোদাল, কুড়ালের ঘাড়া (কুড়ালের মুখের উল্টো দিক) দিয়ে ভাঙতে থাকে।
গার্ডারের কংক্রিটের গাথুনি এতো শক্ত ছিল যে অনেক চেষ্টা করেও ভাঙা সম্ভব হচ্ছিল না। তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হলো গার্ডার না ভেঙে স্লুইস গেটের দক্ষিণ পাশে মাটি কেটে গর্ত করতে হবে। সেই সিদ্ধান্ত নিতেই সবাই কোদাল নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে। মাত্র এক দেড় ঘন্টার মধ্যেই স্লুইস গেটের দক্ষিণ পাশে প্রায় দশ বারো ফুট গভীর করে বিশাল একটি গর্ত করা হয়। গর্ত করার কারণ হলো-- পাক সেনারা যাতে ট্যাংক, কামান, লড়ি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে যেতে না পারে। আমাদের ধারণা ছিল যে এই গর্তের কারণে পাক সেনারা আর আমাদের এলাকায় গাড়ি নিয়ে ঢুকতে পারবে না। কিন্তু তারা এই গর্তটি পরে মেরামত করেই এলাকায় গাড়ি নিয়ে এসে হামলা করেছিল।
ছবি ঃ মোবাইলে ধারণ করা
০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৯
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। হার্টএ্যাটাকের যন্ত্রনায় মৃত্যুর কাছাকাছি বসে আছি তাই ভাবলাম কিছু লিখে যাই।
২| ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৬
রানার ব্লগ বলেছেন: তারপর কি হলো ?
০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৮
প্রামানিক বলেছেন: এরপরেরটা ধারাবাহিক যখন লিখবো তখন পাওয়া যাবে। ধন্যবাদ
৩| ০৯ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০১
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: সংগ্রামী জনতার সংগ্রামে আমরা পেলাম স্বাধীন দেশ।
১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪
প্রামানিক বলেছেন: ঠিক বলেছেন
৪| ০৯ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬
কামাল১৮ বলেছেন: হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হবে কি করে বুঝলেন?
১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৫
প্রামানিক বলেছেন: হার্ট বর্তমানে খুবই দুর্বল মাত্র ২৯% কাজ করে
৫| ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৫
শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ লেখাটির জন্য প্রামানিক ভাই। এই ছোট-খাট ঘটনাগুলোও আমাদের জানার প্রয়োজন আছে।
১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭
প্রামানিক বলেছেন: প্রত্যেক এলাকায়ই কিছু না কিছু যুদ্ধের ঘটনা আছে যেগুলো লিখে রাখলে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে
৬| ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৪০
শেরজা তপন বলেছেন: চেষ্টা উদ্যোম ছিল -কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা ও নেতৃত্বের অভাবও ছিল!
১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৮
প্রামানিক বলেছেন: তখন সঠিক নেতৃত্ব দেয়ার মতো লোকের অভা্ব ছিল।
৭| ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৪৮
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আশা করছি লিখবেন ধারাবাহিক ভাবে।
১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে, লেখার চেষ্টা আছে।
৮| ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৬
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
চমকপ্রদ ঘটনা। ধন্যবাদ।
১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২
প্রামানিক বলেছেন: তখন বাংলার মানুষদের পাক সেনাদের আতঙ্কে দিন কাটত। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
৯| ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩০
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আরও লেখা আশা করছি। ইতিহাস আশ্রয়ী লেখা বরাবরই কৌতূহলোদ্দীপক।
১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৩
প্রামানিক বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ, লেখার চেষ্টা করে যাবো।
১০| ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৩
এম ডি মুসা বলেছেন: স্বাধীনতার সুফল কুফল নিয়ে অনেক কথা চলে আসে। মুক্তিযুদ্ধের গল্প গুলো আরো জানতে চাই
১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৫
প্রামানিক বলেছেন: যুদ্ধের সময় পুরো নয় মাস মৃত্যুর ভয়ে বেশিরভাগ লোকের দিন কাটত।
১১| ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮
ধুলো মেঘ বলেছেন: তারা যখন মেরামত করেছিল, তখন কেন তাদের উপর হামলা করা হলোনা?
১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৩
প্রামানিক বলেছেন: তখন হামলা করবে কি ভাবে, পাকসেনাদের হাতে মেশিনগান, মর্টার সেল, ট্যাংক, কামান সহ আধুনিক অস্ত্র, বাঙালির হাতে তখন লাঠিসোটা ছাড়া কোন অস্ত্রই নাই নিরস্ত্র অবস্থায় সেনাদের উপর হামলা করা মানেই পুরো গ্রাম লাশে পরিণত হওয়া। নিরস্ত্র ফিলিস্তিনের অধিবাসিরাও তো অনেক চেষ্টা করতেছে তারা কি পারতেছে ইসরাইল সৈন্যদের হত্যাযজ্ঞসহ আগ্রাসন ঠেকাতে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অসাধারণ বর্ণনা। আমি নিজেই চলে গিয়েছিলাম ৭১-এর উত্তাল দিনগুলোতে। আমার নিজের চোখে দেখা কিছু ঘটনা এখনো চোখে উজ্জ্বল স্মৃতি হয়ে ভাসে।
আপনার যে এত বয়স আমি তো আগে কখনো কল্পনাও করি নি।
বিরাট এক প্লাস রইল পোস্টে।