নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

pramanik99

আমার স্কুল জীবনের স্মৃতিগুলো বার বার মনে পড়ে। ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই দিনগুলোতে।

প্রামানিক

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

প্রামানিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজনৈতিক খাদক

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

নেতারা খাই খাই
করে রাজনীতিতে
যত খায় তত চায়
নহে ভয় ভীতিতে।

সুদ খায়, ঘুষ খায়
খায় মাল রিলিফের
লক্ষ টাকা চাঁদা খায়
কোটি পতি দীলিপের।

মান খায়, জান খায়
খায় কর্মী ভক্ত
মিছিল মিটিংয়ে খায়
তাজা তাজা রক্ত।

নেশা খায়, পেশা খায়
খায় অফিস আদালত
গাড়ি খায় বাড়ি খায়
খাওয়া তাদের খাসলত।

হাট খায়, ঘাট খায়
খায় ব্রীজ, কালভার্ট
অফিস ঘরে বসে খায়
পিওনের প্যান্ট সার্ট।

কাট খায়, টিন খায়
খায় লোহালক্কর
ধরা পরলে ফেঁসে যায়
ছোট চামচা বক্কর।

নদী খায়, নালা খায়
খায় উঁচু পর্বত
হোটেলেতে ফাও খায়
দামি দামি শরবত।

মাছ খায়, গাছ খায়
খায় পাখি কাক-চিল।
বড় বড় খুঁটি খায়
সাথে খায় ভুয়া বিল।

রেল খায়, তেল খায়
খায় বাসের চাকাটা
সুযোগ পেলে খেয়ে ফেলে
উড়ো প্লেনের পাখাটা।

বালু খায়, সিমেন্ট খায়
খায় ইট সুরকি
বড় বড় বিল্ডিং খায়
যেন মুড়ি মুড়কি।

সোনা খায়, রূপা খায়
খায় পিতল-দ¯তা
ছোট বড় ব্যাংক খায়
খায় গমের ব¯তা

ঝাড়– খায়, হারপিক খায়
খায় পুরো টয়লেট
যত খায় তত চায়
খাদোকের মহা পেট।

নেতাদের খাওয়া খাওয়ির
কত কবো কিসসা
টেবিলেতে বসে খায়
গরীবের হিস্যা।

ভালো খায়, মন্দ খায়
খায় নিজ দেশেতে
বিদেশেতে পাড়ি দেয়
সব খাওয়া শেষেতে।

ছবি ঃ ইন্টারনেট
রচনা কাল: ০৬-১২-২০১২ইং
সেগুন বাগিচা।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কবিতা ভালো হয়েছে ।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০১

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



প্রামানিক ভাই করছেনটা কি :) এ যে দেখি খুবই ভাব গাম্ভির্যময় সুন্দর একটি ছড়া কবিতা । আপনিতো ভাল
করেই জানেন, সবদিক বিশ্লেষন না করে কোন কবিতাকে আমি সচরাচর সুন্দর কবিতা বলি না । এখানেই বা
ব্যতিক্রম করি কি করে । কবিতাটির সাহিত্যিক অলঙ্কার, কাঠামো, ভাষা-রীতি, ধ্বনিতত্ত্ব, ছন্দ, প্রতীক ও চিত্রকল্প
প্রভৃতির একটি সমন্বিত ছোট্ট বিশ্লেষণ তুলে ধরলাম নীচে । ভুল হলে শুধরে দিবেন ।

কাঠামোগতভাবে কবিতাটি ছোট ছোট স্তবক বা দোলচক্রাকারে এগিয়েছে। প্রতিটি স্তবক একটি নির্দিষ্ট “খাওয়া”
বিষয়কে কেন্দ্র করে বিস্তার লাভ করেছে, যা আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে ।
পুনরাবৃত্তি ও তালযাত্রা এমনভাবে সাজিয়েছেন যে কবিতাটি স্লোগান বা গণআন্দোলনের ভাষার মতো শক্তিশালী
হয়ে ওঠেছে, সুন্দর রূপক সরাসরি বর্ণনার মাধ্যমে ব্যঙ্গাত্মক রাজনৈতিক চিত্র নির্মাণ করেছেন দারুণভাবের।

শেষ স্তবক পর্যন্ত একটি ক্রমবর্ধমান লোভের গ্রাফ তৈরি করেছেন, শেষে দেশ থেকে বিদেশে পলায়ন পর্যন্ত পৌঁছায়ে
এটিকে একটি “ক্রমোন্নয়নমূলক কাঠামোতে পরিনত করেছেন। চার মাত্রার ছন্দ গতি ও দ্রুত রিদমিক প্রবাহের
মাধ্যমে খাই শব্দের পুনরাবৃত্তিকে জোরদার করেছেন সুন্দরভাবে।

ভাষা অত্যন্ত সহজ, সরল, প্রাঞ্জল এবং জনগণের কথ্যভাষার কাছাকাছি। ব্যঙ্গ, রসাত্মক কৌতুক, তীব্র তির্যকতা,
এবং সামাজিক প্রতিবাদ একসাথে কাজ করেছে। রূপক অলঙ্কার খাওয়া শব্দটি প্রকৃত অর্থে খাওয়া নয়, এটি যে
দুর্নীতি, লুটপাট. ক্ষমতাভোগ, লাম্পট্য, নিষ্ঠুরতা এসবের প্রতীক। পুরো কবিতাটিই যেন এক বিস্তৃত রূপক নির্মাণ।

কবিতায় থাকা কথামালার ব্যঞ্জনাও সুন্দর ও যতার্থ হয়েছে । যথা নদী খাওয়া, গাছ খাওয়া, ব্রিজ খাওয়া প্রভৃতি
পরিস্কার ভাবে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে লুটপাট, মান খাওয়া, জান খাওয়া বলতে মানবিকতা বিনাশ, রক্ত খাওয়া
বলতে রাষ্ট্রীয় সহিংসতা আর টয়লেট পর্যন্ত খাওয়া বলতে সীমাহীন লোভের চরম পর্যায়। এসব প্রতীক বাস্তব
রাজনৈতিক জীবনের গভীর সত্যকে ব্যঞ্জনায় প্রকাশ করেছেন সুন্দরভাবে ।

পুরো কবিতার মর্মই রাজনৈতিক ব্যঙ্গ। সরাসরি আক্রমণ নয়, বরং ঠোঁট-চেপে হাসির মতো তীক্ষ্ণ কাটাছেঁড়া।
ব্যঙ্গ-রসের মাধ্যমে সত্যকে আরও জ্বালাময় করে তুলেছেন ।খায়, খায়, খায় শব্দের ধারাবাহিক ব্যবহারে
তাল সৃষ্টি হয়েছে, লোভের অন্তহীনতা বুঝিয়েছেন সুন্দর করে ।

মোট কথা হল কবিতাটি কোথাও সরাসরি উপদেশ দেয় না কিন্তু পাঠক হিসাবে আমাদের মনে আত্মবোধ ,ক্ষোভ,
ঘৃণা আর বিবেকবোধ জাগায়। এটি নীরব অথচ শক্তিশালী একটি প্রতিবাদী কাব্যগাথা। রাজনৈতিক খাদকের
দৃশ্যমান চিত্রও সুন্দরভাবে একেছেন কবিতায় যথা অফিসে বসে খাওয়া, রক্ত ভেজা রাজনীতি, উন্নয়ন প্রকল্পের
শকুন, গরীবের হিস্যার টেবিল এসবই বাস্তব জীবনের দৃশ্যকল্প হয়ে আমাদের সামনে দাঁড়ায়।

শব্দ প্রয়োগ ও উচ্চারণে তীব্রতা আছে যা ক্রোধের ধ্বনি বহন করে। এবং গণমুখি কাব্য ধারার একটি গুরুত্বপূর্ণ
নমুনা করে । এটি এমন একটি কবিতা যেখানে ভাষা সরল তবে ভাব গভীর, ব্যঙ্গ তীক্ষ্ণ কিন্তো কাঠামো শক্ত.
রূপক প্রবল এবং প্রতিটি চরণ মানুষের বিচারবোধকে জাগানোর অস্ত্র।

তাই নির্ধিদ্ধায় বলা যায় এই কবিতা শুধু ব্যঙ্গকবিতা নয় এটি রাজনৈতিক বাস্তবতার দলিল, নৈতিক অবক্ষয়ের
আখ্যান, ক্ষমতার বিপরীতে মানুষের এক নীরব চিৎকার।

কবিতাটি প্রিয়তে গেল ।

শুভেচ্ছা রইল




আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.