নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার খেরোখাতা

প্রিন্স ঠাকুর

আমি নই কবি, হলাম কবির ছবি, মনটা ভিষণ একা, চেষ্টা করি কবিতা লেখা...

প্রিন্স ঠাকুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট্ট চিঠি

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৩২

০৫.০৩.১৯৯৮ ইং



প্রিয় মানসী

তখনও গোঁধূলীর বেলাভূমিটা অতটা রক্তিম হয়ে ওঠেনি, সারি সারি মেঘের ভেলা কিভাবে যে ওড়ে, কোথায় যায়, সেই ধারনার মর্মতলে পৌঁছাতে পারিনি এখনও... এলোমেলো সব চিন্তাগুলো মাথার পুরোটা জায়গা দখল করে নিয়েছে।



ভাবতে থাকি তোমায়... লিখতে থাকি চিঠি। কলমের বুক চিরে বের হয় কালো রক্ত। সেই রক্তের কালিতে দু’কলম লেখা-



"আমার কাছে আসতে হবে, একটু ভালবাসতে হবে

বাহিরে নয় বাহিরে নয়, ভিতর জ্বলে ভাসতে হবে-

আমায় ভালবাসতে হবে, ভীষণ ভালবাসতে হবে..."



এইসব ইত্যাকার ইতিকথা আমার ডায়েরীর এপিটাকে লিখে রেখে চেয়েছি একবার মেঘ হবো, একবার ভেবেছি শ্রাবণের জ্বলে ভাসিয়ে দেবো আমার সব ব্যাকুলতা। তা স্বত্বেও পৃথিবীর কোন মূল্যে এই প্রথম টের পাচ্ছি আমি একেবারে তোমার সুবর্ণ নদীর তীরে এসে পৌঁছে গেছি। একচুলও এদিক ওদিক হলে তোমার ঐ নদীতে অনন্ত স্নান।



যেহেতু প্রেম থাকে সাপের ফনায় জর্জরিত বীষে, সেহেতু ধনুকের সীলায় জন্ম নিয়েও সোনার পাখিটি শিকার করতে পারেনি বন্ধুদের কেউ কেউ। আমি আমাকে ধন্য মনে করি। কারণ আমার মনের ময়নার সন্ধান আমি পেয়েছি। মন যাকে চায়, যাকে একান্ত ভাবে অনুভব করা গেল তাই তুমি, তাই বাস্তব। তাই তুমি ছাড়া আর কোন তীর্থ নেই আমার ভালবাসার শাস্ত্রীয় প্রার্থনায়।



সোনা বউ,

মহীনের ঘোড়াগুলি কি ঘোর পূর্ণিমায় ঘাশ খেতে নেমে আসবে না মাটির পৃথিবীতে? তুমি কি পারনা তোমার ঐ হস্তিনাপুরের আলাইপুরে আমাকে নিয়ে যেতে? তোমার কোলে মাথা রেখে একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে আমার যে বড্ড ইচ্ছে হয়।



গভীর রাত। চারিদিকে নিস্তব্দ। পৃথিবী ঘুমায়। ঘুম নেই আমার চোখে। ঘরের জানালায় জ্যোৎস্নার আলোর মাখামাখি। আমি বেলকনিতে ইজি চেয়ারে বসে পায়ের উপর পা রেখে দোল খাচ্ছি আর অসম্ভব সুন্দরে ভরা চাঁদের আলো গায়ে মাখছি আর তারায় তারায় ঝিকিমিকি করা আকাশটা দেখছি। বেলকনিতে ঝিরঝিরে বাতাসের আনাগোনা, সেই বাতাসে হাসনা ও বেলী ফুলের সুবাস। এমন সময় কাছে পেতে চাচ্ছিলাম এই মেয়েটিকে যে কিনা আমার চোখের ক্লান্তিতে লেগে আছে সর্বক্ষন।



ধান ক্ষেতের সবুজকে তোমার এত ভাললাগা চাইযে, তোমার স্বত্বার অন্তহীন পরিচয়ে ঐ পরিচয়টুকু যুক্ত হলো। সবুজে সবুজ, সজিবতা আর সবুজ প্রাণ।



আমার চোখের ছায়ায় তুমিইতো দেখেছিলে স্বপ্ন, তুমিই ছিলে তার সার্বক্ষনিক অংশীদার। বধূয়া বলো সেই স্বপ্ন, সেই প্রেম কিভাবে উপেক্ষা করি।



কেমন আছো জানাবে অবশ্যই। আমি ভালো নেই। কারণ, সব চেয়ে আপন মানুষটি আমার কাছ থেকে অনেক দুরে এবং সে যে তুমি তা নিশ্চয়ই নতুন করে বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। আমি তোমাকে যে কি পরিমান ভালবাসি, বিশ্বাস করি সে শুধু জানি আমি আর জানেন আমার অন্তরজামী আর কেউ তা জানে না, কোনদিন জানবেও না। সেই আমি কি তোমাকে কষ্ট দিতে পারি? আত্মার সম্পর্ক কখনও ছিন্ন হবার নয়। তোমার সাথে যে আমার আত্মার সম্পর্ক রয়েছে, থাকবে চিরদিন। সৃষ্টিকর্তা ভালোদের ভালো কিছু দেয় এবং তা কেড়ে নেয় না এটা অতিব সত্যিকথা।



আজ মোবাইলের জগতে ও চিঠিই হচ্ছে ভালবাসার জীবন। তাই একটা সময় আসে, যখন চিঠি লেখার প্রয়োজনটা মনে হয় বেশি করে অনুভব করতে হয়। ভালবাসাকে বুঝতে অনুভুতি ও একটু সময় দেওয়া প্রয়োজন। সেই প্রয়োজনটা বোধ হয় আমাদের থাকা উচিৎ। পাশাপাশি পারস্পরিক মূল্যবোধ, চাওয়া ও পাওয়া এবং ভালবাসার মানুষকে চিঠি লেখার দায় থাকাও প্রয়োজন। তোমার চিঠি পাওয়া থেকে আমাকে বঞ্চিত করোনা লক্ষিটি, প্লিজ। তোমার ভালবাসাকে ভুলিনি। তুমি আমাকে কতোদিন ধরে লিখছোনা, একবারও কি ভেবে দেখনি? আমাকে তুমি লিখছোনা এই চিন্তা ইদানিং আমাকে আহত করে ফেলেছে। তোমার জন্য আমার হৃদয়ে তো আন্তরিকতার কোনই অভাব নেই। তাহলে বলতে পারো লক্ষিটি চিঠি না লেখার কি কারণ থাকতে পারে? তোমার ভালবাসা থেকে আমাকে এক মুহুর্তের জন্যে বিচ্ছিন্ন করতে পারে এমন কিছু আকর্ষনীয় আমার নেই। ভালবাসা এমন এক সম্পদ যা সবার মাঝে ভাগ করা যায় না। তাই আমি তা পারি না। তোমাকে হারাতে পারবো না কোনদিন।



ইতি-

ভালবাসায় সিক্ত

সেই আমি।



তাং: ০৫.০৩.১৯৯৮ ইং, খুলনা আর্ট কলেজ হোষ্টেল।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৪

প্রিন্স ঠাকুর বলেছেন: যারা আমার এই চিঠি পড়েছেন তাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।

সবাই ভাল থাকবেন সব সময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.