নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বর্গ-পৃথ্বী অন্তঃস্থলে, বহুকিছু ফিরে-চলে, যাহা বিস্ময়কর

প্রোফেসর শঙ্কু

বুড়ো ভগবান নুয়ে নুয়ে চলে ভুল বকে আর গাল দেয়

প্রোফেসর শঙ্কু › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ খসে পড়া শব্দ যত

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:২৩

'আমরা এখন চলে যাব আমাদের সহকর্মী আহসানের কাছে, যিনি বর্তমানে ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন। আহসান, আহসান, আপনি শুনতে পারছেন আমার কথা?'
-'জি মিমি, আমি শুনতে পাচ...পাচ...পাচহি আপনাকে।'
'আপনার চারিপাশে কি ঘটছে, বিশেষ কিছু কি দেখতে পেয়েছেন আপনি?'
-'আসলে পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে ঘটনাস-স...ঘটনা...ঘটনাস-হল, মানে জায়গাটা; কাউকে ঢুকতে বা কথা বলতে দিচ...দি-দিচ-হে না...'

তরুণ ফিল্ড রিপোর্টারের বিভ্রান্ত প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝতে পেরেছিলাম। সকাল সকাল জোড়াখুনের খবর দিতে এসে আটকে যাচ্ছে বারবার। কেন আটকাচ্ছে নিজেও বুঝতে পারছে না বেচারা। তার মানে শুরু হয়ে গেছে ব্যাপারটা। কিছু করার নেই। টিভি অফ করে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আবার।

লায়লা কল দিল দুপুরের দিকে।
'উঠেছ?'
-হুঁ।
'দেখেছ খবর?'
-হুঁ।
'আসলেই ঘটছে ব্যাপারটা, হ্যাঁ? খেয়েছ?'
-উহুঁ।
'বাসায় খাবার নিয়ে আসছি আমি। দুজনে একসাথে খাবো। তুমি ওঠো। হাত মুখ ধোও। ওঠো ওঠো!'
-এইতো উঠি। তুমি আসতে থাকো।

আর একটু ঘুমিয়ে নিতে চাইছিলাম। ঘুম এলো না। চটে গেছে। কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ করে উঠে পড়লাম। দাড়িগুলো কাটা দরকার। চুল উসকোখুসকো হয়ে আছে। রেজর, চিরুনি এইসব খুচরো জিনিস কই যে থাকে! গোসল করে নিলেই ভাল হবে মনে হয়। তারপর ঘরদোর গুছিয়ে, বিছানাটা ঝেড়েঝুরে ভদ্রস্থ করতে হবে। বাসায় মানুষ এলে ঝামেলার শেষ নাই।

লায়লা আসতে আসতে ড্রয়িংরুমের চেহারা পাল্টে ফেললাম। আশা করছিলাম আমার ঘরে ও ঢুকবে না। খেয়ে, টিভি-টুভি দেখে, সোফাতেই রেস্ট নিয়ে ভাগবে। কিন্তু যেখানে বাঘের ভয়। বাসায় এসে সোজা আমার ঘরে গিয়ে ঢুকল।
-কই যাও?
'কেন, গোসলখানায়!'
-রান-নাঘরের পাশে আরেকটা আছে। জানোই তো।
'ওটা নোংরা, আর পিচ-পিচ [আমি শব্দ ধরিয়ে দিলামঃ ছোট] হ্যাঁ, ছোট। অসস- মানে ভাল লাগে না।'

স্বস্তির ব্যাপার- ঘরের হাল দেখে সকৌতুকে ভুরূ বাঁকালেও, টিটকারি মারল না। ফ্রেশ হয়ে বেরোলে ওকে দেখলাম। এমনিতে মোবাইলে কথা হয় মাঝেমাঝে, কিন্তু অনেকদিন পর ভাল করে চর্মচক্ষে তাকিয়ে দেখলাম। একটু মুটিয়ে গেছে। বয়সের ছাপ কিছুটা পড়েছে মুখে। চোখ দুটো চঞ্চল। কিশোরীদের মতো মিটমিট করে উজ্জ্বল চোখে এদিক ওদিক চাইছে। আমার চেয়ে পাঁচ-ছ বছরের ছোট, তারমানে কম করে হলেও পঁয়ত্রিশ চলছে ওর। একেবারে খাঁটি মহিলা হয়ে গেছে! এই বয়সে এই চোখ কি মানায়?

আমরা খুচরো কথাবার্তা চালান করতে করতে খেলাম। ওদের এনজিও-টা সরকারি সাহায্য পাচ্ছে না। চাকরি ছেড়ে দেবে হয়তো। কয়েক জায়গায় এপ্লাই করেছে। হাত নেড়ে সাংকেতিক ভাষা বলতে জানে ও, সেটা সামনে অনেক কাজে দেবে। আমি ভার্সিটির প্রফেসারি ছেড়ে দিয়েছি সেটা জানালাম। ও খাবার চিবুতে চিবুতে চেয়ে রইল কিছুক্ষণ। তারপর আস্তে করে বলল, 'কাগজপাতি নিয়ে এসেছি। তুমি চাও তো ব্যাপারটা সেরে ফেলি, নাকি...'

ডিভোর্সের পেপারগুলোর কথা বলছে। আমি নানা বাহানায় ঠেকিয়ে রেখেছি এতদিন। ওও তেমন জোর করে নি। আজ একেবারে বাসায় নিয়ে এসেছে কাগজ। কেন? টাকাপয়সা, জায়গাজমির ঝামেলা তো আমরা মিটিয়ে নিয়েছি শুরুতেই। অন্য কিছু তাহলে?

-আমার কথা বাদ দাও, তুমি কি চাও? কাউকে ভাল লেগেছে ইদানিং?, আমি স্থূল রসিকতার চেষ্টা করি।

ব্যর্থ চেষ্টা। কথাটা লেগেছে ওর। চোখ ফিরিয়ে নিয়ে লায়লা টিভি ছাড়ে। মুহূর্তেই কথার বিষয়বস্তু পাল্টে ফেলে। ডিভোর্সের কথা যেন ওঠেইনি কোন কালে, এরকম ভাব ধরে আমরা নতুন উপদ্রব 'ধ্বনি-বিপর্যয়' নিয়ে কথা বলতে থাকি। এই অদ্ভুত ব্যাপারটা শুরু হয়েছে ক'বৎসর আগে। হঠাৎ একাধিক ভাষা জানা ব্যক্তিরা আবিষ্কার করলেন, তারা মাতৃভাষা ছাড়া বাকি ভাষাগুলো ধীরে ধীরে ক্রমান্বয়ে ভুলে যাচ্ছেন। জিনিসটা শুরু হয় একটি শব্দ দিয়ে, দেখা যায় তিনি সেটি আর মুখস্ত বা উচ্চারণ করতে পারছেন না। চেষ্টা সত্ত্বেও পুনরায় শিখতে পারছেন না। তারপর আরেকটি শব্দ। তারপর আরেকটি। এভাবে শয়ে শয়ে ভাষার মৌখিক রূপ ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে হারিয়ে যাচ্ছে, এবং সেই সাথে ক্রমান্বয়ে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে তাদের লিখিত রূপ। ভয়ের ব্যাপার হল, এটা যারা একাধিক ভাষা জানেন- তাদের দুএকজনের ক্ষেত্রে নয়, বরঞ্চ তাদের সবার ক্ষেত্রেই ঘটছে। একটা বিশ্বজনীন আতঙ্ক।

সম্ভাব্য কারণ নিয়ে অনেক মাথা ঘামাঘামি হল। বিজ্ঞানীদের একটি অংশ বললেন, হয়ত কোন ভাইরাস মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশে আক্রমণ করছে, এজন্যে স্মৃতি ও বাচনশক্তি নিয়ে এমন সমস্যা হচ্ছে। কিংবা হয়তো তেজস্ক্রিয়তায় মিউটেটেড কোন জীবাণুর আক্রমণ। গত কয়েক বছরে নিউক্লিয়ার রিএকটর নিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে অনেকগুলো, হতেও পারে। হয়তো জিনিসটা বিজ্ঞানের কুফল। কেউ বললেন, না, প্রকৃতির অভিশাপ। কেউ বললেন, ঈশ্বরের। বহু তত্ত্ব এল, বহু গুজব রটল, কিন্তু সমাধান মিলল না। দিন-মাস-সপ্তাহ কেটে যেতে লাগল, তারপর পেরিয়ে গেল বছর। আসলে প্রক্রিয়াটা চোখের পলকে ঘটে না, সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ঘোড়া না দাবড়িয়ে খুনি যদি শামুকের পিঠে চড়ে আক্রমণ করতে আসে- তবে বিপদটাকে খুব একটা ভয়ানক বলে মনে হয় না, বাস্তব যা-ই হোক না কেন।

এক সময় আমরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, ব্যাপারটা গায়ে সয়ে গেছে। মানুষের অভিযোজন ক্ষমতা অসাধারণ, একটি মাত্র ভাষার সীমিত ব্যবহার নিয়েই আমরা স্বচ্ছন্দে জীবনযাপন করতে শুরু করেছি। বিপদ হল আমার মত কিছু মানুষের। ইংরিজি পড়াতাম ভার্সিটিতে, বুঝতে পারছিলাম ক্রমশ ভুলে যাচ্ছি ভাষাটা। একদিন ক্লাস নিচ্ছি, বোর্ডে লিখছিলাম, হঠাৎ লক্ষ্য করলাম বোর্ডে নিজের লেখা কিছুই বুঝতে পারছি না। বিজাতীয় আঁকিবুঁকি মনে হচ্ছে। কি পড়াচ্ছিলাম সেটাও মনে করতে পারলাম না। নাটক মনে হয়। ষোড়শ শতাব্দীর এক লেখকের। খুব বিখ্যাত ছিল ব্যাটা, নাম যেন কি?

পরবর্তী কয়েক ঘণ্টায় অনেক চেষ্টা করেও যখন ইংরিজির কিছুই মাথায় আনতে পারলাম না, নিজেকে ফালতু মনে হতে লাগল। ইস্তফা দিয়ে এসে পড়লাম। অযথা ছাত্রদের সামনে অপদস্থ হবার কি দরকার!

যাকগে ওসব কথা। এরপরে প্রশ্ন উঠল- পরের ধাপটা কি? মানুষ কি নিজের মাতৃভাষাও ভুলে যাবে একসময়? আমরা আমাদের সমস্ত সভ্যতা, আধুনিকতা নিয়ে নিঃশব্দে বসে থাকব, পাশের জনের সাথে একটা নিকৃষ্ট জন্তুর মতো কথাও বলতে পারব না? গবেষকরা বললেন- এটা শুরু হবে ধীরে ধীরে। হয়তো আজই, হয়তো আগামি সপ্তায়, আগামি মাসে, এক বছর কি দশ বছর পর। কখন তা ঠিক করে বলা যায় না। কিন্তু শুরু হবেই। প্রথমে মানুষ হয়তো যুক্তাক্ষরগুলো কিভাবে উচ্চারণ করতে হয় সেটা ভুলে যাবে। নির্ভর করে ভাষার গঠনের ওপর। তারপর একটা একটা করে শব্দের পালা। তারপর একটা সময়, নৈঃশব্দ্য নেমে আসবে সবখানে। আমরা আদিম মানুষের মত ইঙ্গিতে কথা কইব, ইশারায় গাল দেব, ভুলে যাব শব্দের ব্যবহার।
-সেই ধাপটাই শুরু হল আজ, বুঝলে? মানবজাতির জন্যে ভয়ানক একটা দিন - আমি লায়লাকে বলি।
'কিসের ভয়ানক! বাইরের পরিবেশ দেখেছ? আকাশ দেখেছ? কতদিন এরকম তরল রোদ ওঠেনি বলো দেখি!'
-কথা বলতে না পারাটা তোমার কাছে ভয়ানক লাগে না?
'লাগে। তাই বলে ভয় আঁকড়ে ধরে পড়ে থাকব? সময়ের সাথে সব পাল...প-পাল মানে বদলায়, আসিফ। মানুষও বদলে নেবে নিজেদের।'

খাওয়া শেষে লায়লা উঠে পড়ল। ডিভোর্সের পেপারগুলো ব্যাগে ভরে চুল ঠিকঠাক করতে লাগল।
'উঠি আসিফ। মা বাসায় একা। দুশ... ভাববেন দেরি হলে।'
-আবার আসবে কবে?
ওর চোখ নরম হয়ে আসে, 'আজ তোমায় দেখতে এসেছিলাম, ঠিক আছ কিনা। তা তো ভালই আছো।'
-আবার আসবে কবে? গোঁয়ারের মত পুনরাবৃত্তি করি কথাটা।
'আর আসব না আসিফ। এখানে এলে আমার দম বন...বন...বনহ [আমি ঘাড় নেড়ে বোঝালাম যে বুঝতে পেরেছি কি বলতে চাইছে] হয়ে আসে। পুরনো কথা মনে পড়ে যায়।'
আমি চুপ করে থাকি।
'আর ভাল কথা, সোমবারে আমি বাসায় থাকব। এসে তোমার ডায়েরিগুলো নিয়ে যেও। ধুলো জমছে ওগুলোর গায়ে। আসি তাহলে।'

লায়লা চলে গেলে আমি টিভি দেখতে থাকি অন্যমনস্ক হয়ে। ডায়েরির কথাও তুলল অবশেষে! বারো বছর বয়েস থেকে আমি ডায়েরি লিখতাম। আব্বা খুব উৎসাহ দিতেন। 'লেখ লেখ, বড় হয়ে দেখবি এগুলো কত বড় সম্পদ মনে হবে।' ওই বয়সে অনেকেই লেখে ডায়েরি। ছয়মাস-এক বছর লিখে বাদ দিয়ে দেয়। আমি বাদ দিইনি। কৈশোরের ওই সময়টার কথা অম্লান বদনে লিখে গেছি। ডায়েরি চুরি করে পড়বে এমন কেউ ছিল না আমাদের পরিবারে, সুতরাং সত্য লিখতে আটকায় নি। করোটির ভেতরে যত সুন্দর এবং কুৎসিত এবং অন্যান্য চিন্তা ছিল, তার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠছিল ডায়েরিতে। তারপর যুবক হলাম, স্কুল কলেজ পেরিয়ে ভার্সিটিতে উদ্দাম একটা সময় কাটল। সবই লিখতাম। আমার একান্ত ভাবনা, ভয়, ক্ষোভের কথা; কাকে ভাল লাগে, কি ভাবি, কি করলাম, কি করব- সব। রেজাল্ট ভাল ছিল, পাস করে বেরিয়েই চাকরি পেয়ে গেলাম। আম্মা বিয়ে করানোর জন্য জান লড়িয়ে দিতে লাগলেন। অবশেষে মাসছয়েক পর হার মেনে বললাম- যাও, করব বিয়ে। মেয়ে খুঁজে নিয়ে আসো।

লায়লাকে পছন্দ করেছিলাম নাম শুনে। লায়লা। রাত্রি। নিশি। রহস্যময়ী নাম। ছবি চাইলাম ঘটকের কাছে। দেখলাম- ওর ছবিটাও অন্যরকম ছিল, অন্যদের মতো স্টুডিয়োতে তোলা নয়। কারো বিয়েতে গিয়েছিল, তখন তোলা হয়েছে। চুল পেছনে নিয়ে বড় খোঁপা করে বাঁধা, সবুজ-নীল শাড়ি, হাতে একটা মেয়েলি ঘড়ি। ঘাড় ঘুরিয়ে হাসছে। এটাও ব্যতিক্রম, এমনিতে ছবির বাকি মেয়েরা সেজেগুজে বড় বড় ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে থাকত আমার দিকে। আম্মাকে বললাম, চলো, মেয়ে দেখে আসি। আমরা তখন গুষ্টিসুদ্ধু আলিফ লায়লা নিয়মিত দেখি, মামাত-চাচাত ভাইয়েরা খ্যাপাতে লাগল 'আসিফ লায়লা/ আসিফ লায়লা/ আসিফ লায়লাআআআআ' গাইতে গাইতে।

এরপর যা করার বাকিরাই করল। আমি খালি কয়েকবার হবু শ্বশুরবাড়ির লোকের সাথে কথা বললাম, গায়ে হলুদ মাখানোর সময় মুখ কুঁচকে রইলাম, বিয়ের সময় কিছু নির্দিষ্ট শব্দ উচ্চারণ করলাম। তারপর অনুষ্ঠান শেষে ঘরে ঢুকে বুঝতে পারলাম, বিছানার মাঝখানে বসে থাকা অপরিচিত এই মেয়েটিকে আমি সত্যিই, একেবারে কলমা পড়ে আপাদমস্তক বিয়ে করে ফেলেছি। বুকের ভেতরে আছড়ে পড়ছিল সাগরের ঢেউ, কথা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এখন বুঝতে পারি, সদ্য বিবাহিত লায়লা নিশ্চয়ই সে রাতে স্বামীটির কাজকর্ম দেখে ভড়কে গেছিল। কই লোকটা কাছে এসে বসবে, রোমান্টিক কিছু বলবে, তা না করে গাদা গাদা নোটবুক এসে বিছানায় রাখছে। পাগল নাকি! আসলে ঘাবড়ে গেছিলাম। আমাকে, ভেতরের ঘুণে কাটা শ্যাওলাধরা আসল আমাকে কিভাবে চিনবে মেয়েটা? কিভাবে বুঝবে আমি কেমন মানুষ? এক সাথে বছরখানেক কাটিয়ে যদি বলে আর সহ্য করতে পারছে না, তখন? তার চেয়ে এভাবেই পরিচয় হোক। পনেরটা নোটবুক বিছানায় রেখে বলেছিলাম - এই দ্যাখো। এইটেই আমি। পড়ে দ্যাখো। তারপর তুমি বলবে, আমরা স্বামী-স্ত্রী থাকব কি থাকব না।

বিশাল বোকামি ছিল কাজটা। বিয়ের প্রথম রাতে কি কেউ স্বামী-স্ত্রী হয়ে থাকা না থাকার কথা বলে? কিন্তু জীবন-সঙ্গিনীর কাছে নিজেকে তুলে ধরার এরচে ভাল উপায় খুঁজে পাইনি তখন। পরবর্তী একটা মাস চরম অস্বস্তি নিয়ে কাটালাম। দুজনে একই বিছানায় শুই, এক কাতে রাত পার করে দিই। লায়লা রাত জেগে অনেক সময় ডায়েরি পড়ে। অনেক সময় হাসে। আবার মুখ গম্ভীর করে পড়ে যায় নিঃশব্দে, কথা বলে না। তখন আমি মনে মনে বের করার চেষ্টা করি- কোন অংশটা পড়ছে। ওর দিকে মুখ ফেরাতে সাহস হয় না।

তারপর থেকে আমাদের সম্পর্কটা কেমন যেন আশ্চর্যরকম সহজ হয়ে গেল। এমন একজন মানুষ পেলাম, যে আমার সবটাকেই চেনে, কিন্তু আমি তাকে চিনতে শুরু করেছি কেবল। লায়লার তুমি তুমি ডাক শুনতে অদ্ভুত আনন্দ লাগত বুকে। আমরা ঘনিষ্ঠ হতে লাগলাম। লায়লা আর আমি রাত জেগে কথা বলি। ওর ছোটবেলার কথা, ওর আত্মীয়-স্বজনের গল্প। কিভাবে পা পিছলে একবার ঘাটে পড়ে গেছিল, ছোট বোনদের সাথে কিরকম ঝগড়া করত। হাত পা নেড়ে নেড়ে নানান মুখভঙ্গি করে কথা বলতে দেখে আমি হাসি আটকাতে পারতাম না। ও রেগে যেত, 'এইই, হাসো কেন? জানো হাঁটুর ওপরে কতটুকু ছিলে গেছিল? এই যে এখনও কালো দাগ হয়ে আছে।'

আমি প্রেমে পড়ে যাচ্ছিলাম।

মোবাইল বেজে উঠল হঠাৎ। স্ক্রিনে নাম দেখলাম- হাসান কল দিয়েছে। ওকে অবশ্য আমিই কল দেবার কথা ভাবছিলাম, পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিচ্ছে জানার জন্যে। এরকম অবস্থায় একজন শব্দবিজ্ঞানীর গুরুত্ব অনেক। রিসিভ করলাম। হাসানের গলা কাঁপছে, তার মধ্যে অনেক শব্দ উচ্চারণ করতে পারছে না। কথা শেষ করতে অনেকক্ষণ লাগল।

হাসান বলছে- ওদের ইন্সটিটিউটে গবেষকরা পাগলের মত হয়ে যাচ্ছেন। তারা , কিন্তু মানুষের শব্দ ভুলে যাবার হার বের করে ফেলেছেন। তারা বলছেন, আর সর্বোচ্চ এক সপ্তা, তারপর মানুষ সম্পূর্ণ ভুলে যাবে যার যার মাতৃভাষা। অক্ষর চিনতে পারবে না। শব্দের অর্থ বুঝতে পারবে না। স্রেফ গুহাবাসী মানুষের মত অর্থহীন ধ্বনি উচ্চারণ করে যাবে। ও অবশ্য কল দিয়েছে অন্য কারণে। কিছু টাকা আর আমার গাড়িটা ধার চাইছে। দুই মেয়ে আর বউকে নিয়ে গ্রামে চলে যেতে চায়, অবস্থা খারাপ হতে শুরু করলে শহরে থাকাটা নিরাপদ হবে না। মানুষ এরকম অদ্ভুত পরিস্থিতিতে কি দিয়ে কি করবে কিছুই বলা যায় না। রাস্তায় আর্মি নেমে গেছে ইতোমধ্যে। জ্বালাও-পোড়াও-লুটপাট শুরু হয়ে যেতে পারে যেকোনো সময়। জবাবে কাল সকালে এসে টাকা আর গাড়ি নিয়ে যেতে বললাম। আমি কোথায়ই বা যাব, বউ নেই বাচ্চা নেই একা মানুষ; গাড়িটা শুধু শুধু পড়ে আছে গ্যারাজে। আরেকজনের কাজে লাগলে ক্ষতি কি?

আমারও হাসানের মত ফুটফুটে দুটো মেয়ে থাকতে পারত। লায়লা আমার পাশে থাকতে পারত। কিন্তু বাস্তব হল- তেমন কিছু ঘটে নি। গল্পে যেরকম ঘটে, একটা দিক শুধু দেখানো হয়। দুটো মানুষ কাছাকাছি আসে, ভালবাসে, তারপর চিরকাল সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকে। আসলে কি তাই ঘটে? আলোর পেছনে আঁধারের কথা কেউ বলে না। একটা মিষ্টি কথা হলে তিক্ত শব্দ ছোঁড়াছুঁড়ি হয় দশটা, প্রেমিক মন জেগে ওঠে হয়তো একদিন, আর বাকি মাসে সেই একই রসকষহীন বস্তুবাদি মানিয়ে চলা জীবন। এই একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে অনেকে বাচ্চা নেয়। তখন হঠাৎ দেখা যায়, প্রেমিক-প্রেমিকা জামাই-বউ বলতে কারো অস্তিত্ব নেই। কেবল আছে বাচ্চার মা-বাচ্চার বাপ নামক দুইটি বিভ্রান্ত-চিন্তিত প্রাণী। আকণ্ঠ চিরন্তন প্রেমের কথা তখন কেউ বলে না, বরঞ্চ দিনের শেষে যারা মেজাজ ঠিক রেখে একে অপরকে সহ্য করে চলতে পারে- তারাই তখন প্রকৃত সফল দম্পতি। আমি আর লায়লা এরকম সফল দম্পতি হতে পারতাম। দিনশেষে দুজন বিছানায় এলিয়ে পড়ে একে অপরের বিরক্তির, ক্লান্তির কথা বলতাম। ঝগড়া করতাম। ভালবাসতাম। দুজনে মিলে একসাথে বেঁচে থাকতাম পৃথিবীতে। আমাদের তেমন শুভ সমাপ্তি হয় নি। হয়তো কিছু মানুষ থাকে, অভিশপ্ত। নইলে কেন বিয়ের দুই বছর পরেও আমাদের কোন বাচ্চা হবে না? কেন ডাক্তার এসে বলবে, আপনারা সন্তান নিতে পারবেন না?

ফ্যামিলি ডাক্তার তো, সরাসরি বলে নি কেন নিতে পারব না। দোষটা কি আমার? নাকি লায়লার? পরিষ্কার করে নি। এবং কি আশ্চর্য, আজ পর্যন্ত আমি জানি না অক্ষমতা কার ছিল। জানা কি খুব জরুরি? যদি আমার দোষ হয়, লায়লা কি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে? কিংবা বিপরীত হলে আমিই কি ওকে ছাড়ব? কি হাস্যকর কথা! কি তুচ্ছ একটা ব্যাপার! আমরা বরঞ্চ একটা বাচ্চা দত্তক নেব। সে এসে আমাদের এই ক্ষুদ্র আণুবীক্ষণিক অক্ষমতা ভুলিয়ে দেবে, আমাদের সম্পর্কের অদৃশ্য ফাটলটাকে বুজিয়ে দেবে। বাচ্চারা ঈশ্বরের দূত, তারা কি না পারে!

অনেক খোঁজাখুঁজির পর, তেমন একজন দূত এসেছিল আমাদের দ্বারে। দেড় বছরের ফুটফুটে শিশু। সারাক্ষণ হাসছে। ওর হাসি দেখে অনেক দিন পর আমি লায়লাকে হাসতে দেখলাম। খুব সতর্ক হয়ে ও কোলে নিলো মেয়েটাকে, যেন তার শরীর ডিমের খোসা দিয়ে বানানো। ওর হাত কি ভীষণভাবে কাঁপছিল! আমরা দোকানে দোকানে ঘুরে ক্ষুদে ফেরেশতা-টার জন্যে কাপড় কিনলাম। দোলনা কিনলাম। ছোট ছোট জামা, প্যাম্পারস, পিচ্চি পিচ্চি জুতো, সেগুলো পরে হাঁটলে নাকি চিক চিক করে শব্দ হয়, আলো জ্বলে; কতগুলো প্লাস্টিকের খেলনা, দুটো টেডি বেয়ার, অনেকগুলো পুতুল- লায়লা তুমুল উৎসাহ নিয়ে কিনল ওসব। বাচ্চাটার মা একটা হাসপাতালের নার্স, বয়েস মাত্র একুশ। বাচ্চাটাকে রাখতে পারছে না বলে অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করল লায়লাকে ধরে। বাচ্চার বাবা বিদেশে চলে গেছে, বছর কেটে গেলেও কোন খবর নেই। তাকে নার্সের কাজ করে সংসার চালাতে হয়, শ্বশুর-শাশুড়িকে দেখে রাখতে হয়; এমন অবস্থায় সে কি করে মেয়েকে সময় দেবে? লায়লাও তাকে ধরে কাঁদল। আমি একই সাথে দুজন নারী এবং তাদের হৃদয়ের ভেতরে চেপে রাখা ভিন্ন দুরকম ঝড় বয়ে যাওয়া দেখছিলাম। মাতৃত্বের এই রূপ দেখে নিজেকে বড্ড ছোট মনে হচ্ছিল। আমি কখনো কি আমার সন্তানকে এরকম করে ভালবাসতে পারব?

সময় একটা অনন্ত বৃত্তের মতো। একই ব্যাপার ঘুরে ঘুরে আসে। একবার। দু'বার। বারবার। দত্তক নেবার পর তিরিশ দিন সময় দেওয়া হয় বাচ্চার প্রকৃত মা-কে, এই সময়ে সে মন পরিবর্তন করলে অন্য পরিবারটি বাচ্চাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য থাকবে। আমাদের বলা হয়েছিল এটা স্রেফ সম্মতিপত্রের কাগুজে একটা নিয়ম, বাস্তবে এরকম কেউ করে না। নার্স মেয়েটা ফিরে এলো আটাশতম দিনে। সারা মুখে আনন্দ ঝকমক করছে। তার স্বামী ফিরে এসেছে দেশে, এবং দত্তকের কথা শুনে তখনই তাঁকে পাঠিয়ে দিয়েছে মেয়েকে নিয়ে আসতে। সেদিন একই দৃশ্য পুনরায় অভিনীত হতে দেখলাম। বৃত্ত ঘুরে এসেছে এক পাক, চরিত্রগুলো উল্টে গেছে শুধু। বাচ্চাটাকে নিয়ে গেল যখন, খারাপ লাগছিল। মেয়েটাকে দোষ দিতে পারছিলাম না, কিন্তু মনে হচ্ছিল সুযোগ পেয়ে আমাদের খুব ঠকিয়ে নিয়েছে কেউ। তারপর অসহ্য লাগতে শুরু করল ঘরের শূন্য দোলনাটা দেখে। খেলনাগুলো দেখে। জুতোজোড়া দেখে- যেগুলো পরে হাঁটলে নাকি চিক চিক করে শব্দ হয়, আলো জ্বলে। এগুলোও দিয়ে দেওয়া উচিৎ ছিল। কি হবে রেখে? লায়লা একটা টেডি বেয়ার হাতে নিয়ে চুপ করে বসে রইল। স্থবির। নিশ্চুপ। কেউ কোন কথা বলিনি, কিন্তু দুজনেই বুঝতে পারছিলাম আমাদের সেই অদৃশ্য ফাটলগুলো কড়কড়-মড়মড় শব্দে বিস্তৃত হয়ে ধীরে ধীরে ভয়াল আঁধারে জমাট বেঁধে উঠছে।

দু'মাস পর আমাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল। টিকিয়ে রাখার জন্যে আত্মীয়-স্বজনরা অনেক চেষ্টা করেছিল যদিও। আমরা যেন একসাথে থাকি, কেন আলাদা হয়ে যাচ্ছি, সম্পর্কে তো উত্থান-পতন থাকবেই, তাই বলে আলাদা হয়ে যাওয়া কি কোন সমাধান হল? দত্তক নেবার জন্যে আরও কতশত বাচ্চা পড়ে আছে, এই বোকামি করছি কেন ইত্যাদি ইত্যাদি বিভিন্ন কথা, আদেশ, অভিযোগ। কাজ হয় নি। লায়লা বিশ্বাস করত আমাদের সম্পর্কটা অভিশপ্ত, আমি এই যুক্তির বিরুদ্ধে বলার মতো কিছু খুঁজে পাই নি। সুতরাং পারস্পরিক বোঝাবুঝি নিয়ে পুরো ব্যাপারটা শেষ করে ফেললাম দুজনে। আমাদের মাঝে অবশ্য কোন তিক্ততা, গ্লানি ছিল না। বরঞ্চ আমি বলব অদ্ভুত একটা সহমর্মিতার প্রলেপে দুজন আবৃত হয়ে ছিলাম। আমি প্রফেসারিতে মন দিলাম, খাতা দেখা, ক্লাস নেবার মাঝে ডুবে গেলাম। লায়লা পথশিশুদের নিয়ে কাজ করে এরকম একটা এনজিওতে কাজ নিলো, এবং খুব দ্রুতই ব্যস্ত হয়ে পড়ল। হয়তো বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করে ও মাতৃত্বের সেই শাশ্বত আনন্দের কিছুটা খুঁজে পেত। আমরা কথা বলতাম, মাঝে মাঝে। বেশিরভাগ সময় খোঁজখবর নিতেন আমার প্রাক্তন শাশুড়ি, লায়লার মা। ওনার সাথে দেখা হয় না অনেকদিন। সোমবার তাহলে যাওয়া যাক একবার। দেখা করে আসব। ডায়েরিগুলোও নিয়ে আসা যাবে এই ফাঁকে, তারপর বাসায় নিয়ে এসে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ওগুলোর প্রয়োজন ফুরিয়েছে।


***


লায়লা বাসাতেই ছিল। একা। বলল ওর মা-কে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছে। শহরে গত কয়েক দিনে কারফিউ জারি করা হচ্ছে বিকেল ৫টার পর থেকে। তবুও মানুষের ক্ষোভ, আতঙ্ক কারফিউয়ের বাঁধ উপচে উপচে পড়ছে। ভেঙে যাবে যেকোনো মুহূর্তে। টিভিতে দেখলাম পুলিশ-সামরিক বাহিনী এরাও আর সরকারের নির্দেশ মানছে না। অর্ধেক শহর ছেড়ে পালিয়েছে, বাকিরা ইউনিফর্ম খুলে নেমে পড়েছে ইচ্ছেমতন লুটতরাজে। আসলে মানুষের ভেতরের অসুখি-অসামাজিক প্রাণীটা ভঙ্গুর একটা আবরণে নিজেকে লুকিয়ে রাখে। ঠিক জায়গায় সামান্য একটা টোকা দিলেই প্রাণীটা বের হয়ে এসে নরক নামিয়ে আনে পৃথিবীর বুকে। ওই ব্যাপারটাই ঘটছে এখন। এমন অবস্থায় মানবজাতির আদর্শ সংস্করণ কি করত? তারা নিজেদের নবীন এবং প্রাচীন সদস্যদের আগলে রাখত। নৈরাজ্যের মোকাবেলা করত শৃঙ্খলা দিয়ে, পশুত্বের বিরুদ্ধে লড়ত ভালবাসা দিয়ে, আর তাদের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানিরা বাকি সময়টাতে চেষ্টা করত একটা সমাধান বের করতে। আর আমরা কি করছি? পালাচ্ছি। মুখোশ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে পালাচ্ছি। কার কাছ থেকে? নিজেদের কাছ থেকে। গ্রামে যাচ্ছে এতো মানুষ, কি হবে গিয়ে? ওখানেও তো এরকম অবস্থা হতে পারে। কে জানে? হাসান, রাকিব, পল্লব- আমার বন্ধু, কলিগ সবাই শহর ছেড়ে গেছে গ্রামে। এরপরে কাউকে কল দিয়ে পাই নি। হয়তো মোবাইলের নেটওয়ার্ক সিস্টেম ভেঙে পড়েছে। কিংবা হয়তো ওদের সবারই খারাপ কিছু হয়েছে। হতে পারে না? নিরাপত্তা নেই কোন জায়গায়। আমি আজকে যে লায়লার বাসাতে এসেছি, তাও প্রচণ্ড রিস্ক নিয়ে। বাসার সামনেই একটা মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে মানুষ। আমি চুপি চুপি সিঁড়ি ধরে উঠে এলাম, দুই চারজন তখনো চেয়ে ছিল। বুক ধকধক করছিল, এরা যদি পিছু পিছু উঠে আসে? কি করব আমি? কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে, কেউ আসে নি। রাস্তার মাথায় আরেকটা গাড়ি থামিয়ে হৈচৈ করছিল। জানালা সরিয়ে একটু পরে দেখলাম আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।

এরকম প্রতি রাতেই গাড়ি পোড়ায় একদল মানুষ। ইশারায় মশাল জ্বেলে ল্যাম্পপোস্টের নিচে আগুন জ্বালায়, দোকান ভাংচুর করে। এবং কথা বলতে না পারা সত্ত্বেও, তাদের প্রত্যেকটি অপরাধে একটা 'দশে মিলে করি কাজ' এর মত অস্বাভাবিক ভ্রাতৃত্ববোধ দেখা যায়। পোড়া ধাতুর গন্ধে তাদের অবাস্তব জীবনে একটু হলেও কি বাস্তবতা ফিরে আসে? বুনো দৃষ্টি তাদের চোখে, একটা সফল বিপ্লবের সৈনিকের মত তাদের হাবভাব। এখনো যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা শুরু করে নি তাই আশ্চর্যের ব্যাপার। খুব দেরিও নেই হয়তো। হিংস্রতা মানুষের মাঝে খুব স্বচ্ছন্দে বেঁচে থাকে, বড় হয়। আমি অবস্থার যে এতো দ্রুত অবনতি ঘটবে তা প্রথমে বুঝতে পারিনি। অন্ততঃ লায়লাকে সাবধান করে দিতাম।
-মা-র সাথে তুমিও যেতে পারতে। যাওনি কেন?
'এমনি। কারণ নেই কোন।'
-চাকরিতে যাও এখনো?
'নাহ। ওরা আমাকে ছুটি দিয়ে দিয়েছে। চাকরি নেই এখন', লায়লা বিষণ্ণ হাসে।
-তাহলে কি...কি করছ তুমি এখানে? বাইরের কি পরিবেশ দেখেছ?! মাথা খারাপ হয়ে গ্যাছে নাকি তোমার??

আমার দুশ্চিন্তা লায়লাকে বিন্দুমাত্র স্পর্শ করে না। ও শান্ত পায়ে জানালার কাছে যায়, পর্দা সরিয়ে উঁকি দেয় বাইরে, তারপর বলে- 'সুন্দর জ্যোৎস্না উঠেছে আজকে। চলো ছাদে যাই। বাতাস আছে বাইরে।'

আমি আগের বাক্যটাই পুনরাবৃত্তি করি। ওর প্রকৃতস্থতা নিয়ে আরও সংশয় প্রকাশ করি। লায়লা এমনভাবে কথা বলে যেতে থাকে যেন আমার কথা শোনেই নি। 'পুরো ব্যাপারটা মানসিক বোধহয়, তাই না?'
-কোন ব্যাপারটা?
'এই যে, মানুষের কথা বলতে ভুলে যাওয়া। বাইরের লোকগুলো একেবারেই কথা বলতে পারে না, জানো? আমি সারাদিন জানালার কাছে বসে বসে দেখেছি। তবু ওদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি নেই কোন। আর আমরা এখনো কথা বলতে পারছি।'
-খুব বেশি সময় নেই। আমাদেরও একইরকম হবে। ওরা বাইরে আছে বলে বেশি খারাপ প...পররভাব পড়েছে হয়তো।
'তাহলে থাক। ছাদে যাব না। বোসো, ই বানিয়ে আনি। খাই আর কথা বলি।'
-ই?
লায়লাকে বিভ্রান্ত দেখায়, 'হ্যাঁ, মানে ওই যে, চিনি আর কালো গুঁড়ো মিশিয়ে বানায় না?'
-কফি? কফির কথা বলছ?
ও কিছুক্ষণ মনে করার চেষ্টা করে, তারপর হাল ছেড়ে দেয়। 'জানিনা বাপু ই কি, বানিয়ে আনি, তারপর দেখা যাবে।'

বাইরে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের শব্দ হয়। অস্পষ্ট চিৎকার ভেসে আসে। রান্নাঘরে লায়লা টুংটাং শব্দে 'ই' বানাচ্ছে। আমি ওই টুংটাং শব্দেই কান দেবার সিদ্ধান্ত নেই। ডায়েরি নিয়ে এখন কথা বলা যায়। আচ্ছা, ওকে জিজ্ঞেস করব কি, ডিভোর্স পেপার কেন নিয়ে গেছিল? পরিস্থিতির সাথে প্রশ্নটা হয়তো যায় না, কিন্তু মনের ভিতরে খুচখুচ করছে। আসলে অদ্ভুত জিনিস মানুষের মন। এতদিন নির্জীব হয়ে এক কোণায় গুটিসুটি মেরে পড়ে ছিল, কিছুই চায় নি, কিছুই জিজ্ঞেস করে নি। যেই দেখা হল আবার, একগাদা প্রশ্ন নিয়ে তড়াক করে দাঁড়িয়ে গেল। কিন্তু তার পরেও জিজ্ঞেস করার সাহস পাচ্ছে না।
'ধরো।'
সাদা কাপে কালো কফি। চুমুক দিলাম সাবধানে।
'কেমন?'
-...গরম। খুব!

আমার জিভ বের করে হ্যা হ্যা করা দেখে লায়লা হাসে কিছুক্ষণ। 'তাহলে এতো সাবধানে চুমুক দিয়ে লাভ হল কই?'
আমিও হাসি। ব্যাপারটা ইচ্ছাকৃত, গুমোট পরিবেশটা হালকা করাই উদ্দেশ্য ছিল। উদ্দেশ্য সফল বলা যায়। তারপর আমরা কথা বলতে থাকি, এটা সেটা নিয়ে। ঘড়ির কাঁটা ঘুরতে থাকে। কফির কাপে চুমুক দেই। শব্দ ভুলে যেতে থাকি একটা একটা করে। বিষয়ের পরিধি কমে আসতে থাকে। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার, তা কারুরই নজরে পড়ে না। বরঞ্চ একজন আরেকজনের সঙ্গ কতটা যে উপভোগ করতাম, সেটা পরিষ্কার হয়ে মনে পড়তে থাকে তখন। ঘণ্টাখানেক পরে, রসিকতা করে লায়লার খাদ্যরুচির কথা তুলতে গিয়ে দেখলাম কিছুই বলতে পারছি না। আমি জানি ও কি পছন্দ করে, জানি কোন উপাদানটা তৈরি করতে গিয়ে ও বিপদে পড়েছিল, মাথার ভেতরে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি আমি পুরো ব্যাপারটা; কিন্তু বর্ণনা করতে পারছি না। বলতে পারছি না। অনেকক্ষণ চুপ করে বসে থাকার পর আমি ওর দিকে চাইলাম।

লায়লা বুঝতে পেরেছে। ও নিজেও বলার চেষ্টা করল, আমি দেখলাম, কিন্তু কিছু উচ্চারণ করতে পারল না। চোখে অপার্থিব এক দৃষ্টি নিয়ে ও আস্তে করে হেসে বলল, 'আসিফ লায়লা'।

সেই মুহূর্তে আমার ভেতরে একটা ঝড় বয়ে গেল যেন। আমি লায়লাকে বলতে চাইলাম- নিজেকে অকেজো মনে হয় আমার। বলতে চাইলাম- মধ্যবয়সের একাকীত্ব জঘন্য একটা অনুভূতি। আমার বয়েসি বাকি মানুষেরা রীতিমত সংসার করে ক্লান্ত, আড্ডায় তাদের পাওয়া যায় না। তাদের সাথে কথায় ঘুরে ঘুরে আসে পরিবারের কথা। চোখে কিরকম স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে। মেয়ে কেমন চঞ্চল হয়েছে, বাপকে দেখলেই দৌড়ে কোলে গিয়ে ওঠে। পকেট হাতড়ে দ্যাখে বাবা চকলেট এনেছে কিনা। কিংবা ছেলেটা এখনো নিজে হাতে ভাত খায় না, মা তার সাথে বসবে, মা তাকে খাইয়ে দেবে- তবেই পেট ভরবে ছেলের। এরকম কাহিনীগুলো শুনে আমি আর বলার মত কিছু খুঁজে পাই না। ফাঁকা কণ্ঠে সুর মেলাই, বিমল হাসির ফেনা তুলি। একসময় সবাই ফিরে যায় যার যার ঘরে। আড্ডার মানুষ খুঁজে বেড়াই পরিচিত মহলে, কিন্তু একসময় বাসায় ফিরতেই হয়। আবার জাপটে ধরে একাকীত্বের ক্লান্তি। মাথায় আবোল-তাবোল চিন্তা আসে। মরে যেতে ইচ্ছে করে। বলতে চাইলাম- আমার ভীষণ একা লাগে আজকাল।

কিচ্ছু বেরোল না গলা দিয়ে। অস্পষ্ট, অর্থহীন কিছু ধ্বনি বেরিয়ে বিদ্রূপ করল শুধু। লায়লা একদৃষ্টিতে চেয়ে রইল আমার দিকে। আমার অসহায় মুখের দিকে। শব্দের ওপর প্রভুত্ব হারিয়ে ফেলেছি দুজনেই। যেন এক মহাকাল কেটে গেল এর মাঝে। পরিত্যক্ত কফির কাপে শ্যাওলার বেড়ে ওঠা, জীর্ণ বাতির টিমটিমে আলো, দেয়ালে বসা টিকটিকির তড়িৎ পলায়ন। অনন্ত কাল ধরে ঘড়ির নিরন্তর টিকটিক করে চলা। তারপর আমরা দুজনেই একটা সম্ভাবনা আবিষ্কার করলাম। একটা সম্ভাব্য সমাধান।

হয়তো, হয়তো কণ্ঠ নিশ্চুপ হলে শরীর তখন কথা বলে।

বাইরে তখন বিস্ফোরণের শব্দ ঘন ঘন হচ্ছিল। বিচ্ছিন্ন গোলাগুলির শব্দ, চিৎকার কাছিয়ে আসছিল ধীরে ধীরে। কিন্তু ওসব বহু দূরের বিষয়, অবাস্তব। পুরো বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে শুধু এই ঘরটা বাস্তব, আমরা দুজন বাস্তব। বাকি সব ভ্রম। সময় বলতে কিছু নেই আমাদের এখানে। চারপাশের জগত যখন খসে খসে পড়ছিল, আমরা দুজন ভাঙা মানুষ একে অপরকে সারিয়ে নিচ্ছিলাম। সেখানে কিছুক্ষণের জন্য স্বর্গ বলে যদি কিছু থাকে, তবে তাই নেমে এসেছিল। আমরা দুজন প্রথম মানব মানবী হয়ে ঘুরে বেরিয়েছিলাম স্বর্গে। টের পেয়েছিলাম জীবনের আদি স্পন্দন।

অন্ধকার একটা ঘরে শুয়ে থেকে, নিজেদের শ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ শুনতে শুনতে এরপর নিজেকে খুব সুখি মনে হতে থাকে আমার। আর কিছু বলার নেই। নেই আর কিছু করার। কিছুক্ষণের জন্যে সমুদ্রের সব স্রোত থেমে গিয়েছিল, নিভে গিয়েছিল সব তারা, এখন আবার সেই প্রাচীন চক্র ঘুরতে শুরু করেছে। এখন প্রিয় মানুষটিকে জড়িয়ে শুধু অপেক্ষা। পরবর্তী ধাপের অপেক্ষা। আর তাই সিঁড়ি বেয়ে একদল মানুষের উঠে আসার শব্দে দুজনের কেউ আঁতকে উঠি না। দরজায় তাদের রাগান্বিত চিৎকারে, ধাক্কায় কোন ভয় লাগে না কেন যেন। আমি জানি, পাশে শুয়ে থাকা এই মানুষটি হাজার হাজার বছর ধরে একইভাবে আমার কাছে আসবে। দূরে সরে যাবে। আমরা অবশ হাতে শূন্য দোলনা দুলিয়ে যাব। একে অপরকে খুঁজে নেব আবার।

কারণ সময় একটা অনন্ত বৃত্তের মতো।
একটা অনন্ত অভিশপ্ত বৃত্তের মতো।
একই ব্যাপার ঘুরে ঘুরে আসে।
একবার, দু'বার;
বারবার।

মন্তব্য ১০৮ টি রেটিং +২৩/-০

মন্তব্য (১০৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৭

রাসেলহাসান বলেছেন: অসাধারন!

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ রাসেল!

২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২

কাবিল বলেছেন:


দারুন লাগল।
অসাধারন সব কথামালা। (হয়তো, হয়তো কণ্ঠ নিশ্চুপ হলে শরীর তখন কথা বলে।)
চক্রবিধিকারে সময়ের উপস্থাপন

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: পছন্দের লাইনটা দেখিয়ে দেবার জন্যে ধন্যবাদ কাবিল।

শুভেচ্ছা রইল।

৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮

জেন রসি বলেছেন: প্রোফেসর, আপনার গল্পের অপেক্ষায় থাকি। আপনার গল্প মানেই অন্যরকম কিছু। যা একধরনের সাহিত্যকর্মের স্বাদ দেয়। এই গল্পটিও অসাধারণ হয়েছে।শব্দ হারিয়ে যাওয়া মানে মূল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া।মানুষকে প্রায়ই লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়।তবে হেমিংয়য়ের মত বলা যায়, মানুষ ধ্বংস হলেও কখনও পরাজিত হয়না। কারন মানুষ সবসময় ভালোবেসে আঁকড়ে ধরার জন্য কিছু একটা পেয়ে যায়।

গল্প প্রিয়তে নিলাম। :)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:৫৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভাল বলেছেন। শব্দ হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটাই প্রথমে সেন্টার স্টেজে রাখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু মানবিক দিকটাই মনোযোগ ধরে রাখতে পারল। পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ সুপ্রিয়।

আর কৃতজ্ঞতা প্রিয়তে নেবার জন্যেও :)

৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:১৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন:
অনেক ভালো লেগেছে প্রোফেসর। নির্লিপ্ত বর্ণনা গল্পের, অসাধারণ ভঙ্গি বাক্যগুলোর। সহজে এগুনো যায় কাহিনী ধরে।
খুব ভালো থাকুন, আর লিখতে থাকুন অসাধারণ সব গল্পগুচ্ছ

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:০০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আরও লেখার আশা রাখি। ধন্যবাদ আরণ্যক :)

৫| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:৫৫

সৌরভ ঘোষ শাওন বলেছেন: অসাধারন গল্প স্যার। ঘোরের মধ্যে আছি। আবার পড়ে আসি।

ভালো থাকবেন।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:০২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: খাইসে, স্রেফ শঙ্কুদা বলবেন! এত ফর্মালিটির কিছু নাই!

ভাল থাকবেন আপনিও।

৬| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৩০

আহমেদ জী এস বলেছেন: প্রোফেসর শঙ্কু ,




সম্ভবত " মাস আলজিমার্স " রোগে ধরেছে জাতিকে । তাই শব্দেরা খসে খসে যাচ্ছে । মস্তিষ্কের ধুসর কোষে কোষে ময়লা জমে উঠতে শুরু করেছে ।
শুনছেন না ( সাথে দেখছেন না ও হবে ) টিভি রিপোর্টাররা কিছু বলতে গেলেই হে..হে.চকি তু.তুলছে ? আর কথা শুরুর আগে পিছে এ্যা...এ্যা..এ্যা . করে আর কথা খুঁজে পাচ্ছেনা ?

আপনার এই গল্পেও আলজিমার্সের ছোঁয়া । নইলে অত সুন্দর করে দুজনের ভালোবাসার ছবি এঁকে আবার ভুল মেরে দিয়ে বসে কি কেউ ? শেষে একত্রে না থাকাটাকে ও ভুলে গিয়ে আবার স্বর্গ নামিয়ে আনলেন মাটির পৃথিবীতে ?

ভালো লাগার প্্র ..রর কাশ..শ এভাবেই কররর....ররর.. লুম ।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৪৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: :) :) হুম, তাই হবে হয়তো!

ভাল কথা মনে করেছেন। একটা প্লটের কথা ভেবেছিলাম। আলঝেইমারসে ভোগা এক লেখকের গল্প। প্রতিদিন সকালে সে একটা করে তার শেষ উপন্যাসের অনুচ্ছেদ লেখে। রাত হলে ভুলে যায় যে কিছু লিখেছিল। সকালে আবার লিখতে যায়, দ্যাখে তার মাথার ভেতরে যা ভেবে রেখেছিল তাই তার হাতের অক্ষরেই অন্য কেউ লিখে রেখেছে। ভয়, আত্মপরিচয় হারানোর আতঙ্ক, আর বৃদ্ধ বয়সের বিস্মৃতি-রোগ মিলিয়ে তার মানসিক আবস্থা নিয়ে গল্পটা এগোবে। লিখতে পারলে ভালই হত।

শুভেচ্ছা রইল ভদ্রে!

৭| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫৭

দীপংকর চন্দ বলেছেন: অসাধারণ এবং অসাধারণ!!!

গল্পের কোন বাক্যাংশ বিশেষভাবে উল্লেখ করার চেষ্টা করলে পুরো গল্পটাই উঠে আসবে আসলে! তবু কিছু বাক্যের প্রতি মোহ তো থাকবেই বিশেষভাবে!

যেমন, ঘোড়া না দাবড়িয়ে খুনি যদি শামুকের পিঠে চড়ে আক্রমণ করতে আসে- তবে বিপদটাকে খুব একটা ভয়ানক বলে মনে হয় না, বাস্তব যা-ই হোক না কেন।

শুভকামনা জানবেন। অনিঃশেষ।

অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ দীপঙ্কর। আপনার মন্তব্যে আপ্লুত হলাম।

শুভকামনা জানবেন সব সময়।

৮| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:০৭

সুমন কর বলেছেন: গল্প অসাধারণ, কিছু বলার নেই। এ যেন নিজের কাছে নিজেই হেরে যাওয়া।
বহু লাইন ছিল কোট করার মতো। তাই আর করিনি।

সামুতে যে ক'জন ভালো গল্পকার আছে। তার মধ্যে আপনি এবং হাসান ভাই অসাধারণ এবং ক্ল্যাসিক। সাহিত্যজ্ঞান বলতে যা বোঝায়, তা আপনাদের যথার্থ। আমরা অনেক কিছু শিখতে ও জানতে পারি। শব্দ-বাক্য-বুনন-ধরন পড়লে মনে হয় যেন প্রতিষ্ঠিত কোন সাহিত্যিকের লেখা পড়ছি। লেখা ছাড়বেন না। চালিয়ে যাবেন, যেমন করে পারেন।

অনেক ভালো লাগা সাথে প্লাস।


অ.ট.: আবার কয়দিনের জন্য ডুব দিচ্ছেন?

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:২৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: কি বলব! অভিভূত, আর লজ্জিত হলাম আপনার কথায়। এই প্রশংসা প্রাপ্য কি না জানি না, তবে চেষ্টা করব আপনার কথা রাখতে, লেখালেখি চালিয়ে যেতে। এরকম উদ্দীপনা পেলে আর কিছু লাগে না, সত্যি করে বলছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুমন!

অ.ট.: নাহ এইবার ভেসে থাকতে চাই যতদিন পারি। কাজ বাগড়া না দিলে আছি :)

৯| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:২৮

এহসান সাবির বলেছেন: উউ!!! ওয়াও!!

কত দিন পর আপনার লেখা পড়লাম। সেই অদ্ভুত স্বাদ......!!

'লায়লাকে পছন্দ করেছিলাম নাম শুনে। লায়লা। রাত্রি। নিশি। রহস্যময়ী নাম।'
আসিফ মনে হয় না কোন ভুল করে ছিল..... তাই তারা দুজন প্রথম মানব মানবী হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছিলো স্বর্গে। টের পেয়েছিলো জীবনের আদি স্পন্দন।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৩৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আপনাকেও দেখলাম অনেক দিন পর। ভাল আছেন আশা করি :)

১০| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৪২

অন্ধবিন্দু বলেছেন: কিছুটা পড়লাম, আর কিছুটা খসানোর চেষ্টা করছি।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৪৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: চেষ্টা চলতে থাকুক :)

১১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১:০৭

মুহাম্মদ রাফিউজ্জামান সিফাত বলেছেন: অনেকদিন পর আসলেন, বরাবরের মতোই মাতিয়ে দিতে গেলেন। ভালো লাগা প্রোফেসর

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:৪৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ সিফাত! ভাল থাকুন অনেক।

১২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ২:০৬

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: সুমন করের মত অনেকই ছিলো কোট করার কিন্তু লখার চেয়ে তা বড় হবার হবার ভয়ে বিরত হয়েছি।। তবে লায়লার অংশটা মনের গহীনকোনে বদ্ধ দরজাটিকে কেমন করে জানি খুলে দিলো।। আমার লায়লাও এমনই ভেবে অকালে হারিয়ে গিয়েছিল।। আজ তা মানতে দ্বিধা নেই।।

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:০১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: লায়লার অংশটা আপনার ভাল লেগেছে শুনে খুশি হলাম :) এবং আপনার লায়লার কথা শুনে খারাপ লাগল একই সাথে।

১৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:১৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


এই জাতীয় গল্প পড়তে ভাল লাগে। গল্পে জীবন বোধ থাকে, দর্শন থাকে।

যথারীতি চমৎকার।

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:০৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ কান্ডারি! বেশ কদিন পর দেখলাম আপনাকে।

১৪| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:১৩

জুন বলেছেন: ভালোলাগলো প্রফেসর

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৩৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, সুপ্রিয় ইবনে বতুতা :)

১৫| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:১৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: অসাধারণ এবং ক্রিয়েটিভ থিম। পঞ্চইন্দ্রিয় দ্বারা যাপিত একটির অভাব মানুষকে সভ্যতার বন্দিত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে এক বহুল আকাঙ্খিত ডিসটোপিয়ান জগতে নিয়ে যায়। মানবসমাজ এক শক্তিশালী নিউ্ক্লিয়ার বোমা। কোন এক ব্যত্য়ে তারা সানন্দে পশু হয়ে যেতে পারে।

শুভ বিকেল প্রফেসর।

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ হামা। থিমটা মাথা থেকে নামাতে পেরেই ভাল লাগছে!

শুভ সন্ধ্যা।

১৬| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:২২

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: দারুন গল্প ভাই। অসাধারন প্লট। আগে আপনার কিছু পড়ছি নাকি মনে নাই। এইটা জটিল লাগলো। শুভকামনা রইলো।

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: মনে না থাকলেও ক্ষতি নাই। এটা পড়েছেন তাতেই খুশি!

ধন্যবাদ জানবেন।

১৭| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৮

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: খুব ব্যস্ততা থাকা সত্যেও পুরোটা লেখা পড়ে নিলাম।
কথামালা গুলি ধারুন লেগেছে, ধারুন লেগেয়েছে গল্পের মূল বিষয়।

অনেক ভালো লাগা রেখে গেলাম লেখা লেখকে।

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: সময় দেবার জন্য ধন্যবাদ নুর ইসলাম।

১৮| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: একজন জাত গল্পকারের লিখা পড়লাম ।
অভিনন্দন প্রফেসর !

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় পাঠক। শুভেচ্ছা রইল।

১৯| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫০

ঢাকাবাসী বলেছেন: আমার জন্য লেখার সাইজটা বড় ছিল, তবু পড়ে শেষে আনন্দ পেলুম। ধন্যবাদ।

০৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: শুনে খুশি হলাম ঢাকাবাসী। ভাল থাকবেন।

২০| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৪৭

রোদেলা বলেছেন: কারণ সময় একটা অনন্ত বৃত্তের মতো।
একটা অনন্ত অভিশপ্ত বৃত্তের মতো।
একই ব্যাপার ঘুরে ঘুরে আসে।
একবার, দু'বার;
বারবার--------------------------

শুরুটা যেমন চমৎকার ,শেষ্টাও এসে ঘোর লেগে রইলো।বহুদিন পর মন ছোঁয়া গল্প পড়লাম,মুগ্ধতা।

০৬ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৫০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: :) ধন্যবাদ।

২১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৫০

অরুদ্ধ সকাল বলেছেন:
শুধু একটা কথাই বলবো...
বারবার পড়বার মতো

০৬ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৫০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: একটা কথাই যথেষ্ট। শুভরাত্রি।

২২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৫৬

একলা চলো রে বলেছেন: আপনার হাতে শব্দ জীবন্ত হয়ে ওঠে, এই ধরণের লেখার হাত শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের রয়েছে। মাঝে মাঝে আমি বিভ্রান্ত হয়ে যাই, কার লেখা বেশি তীক্ষ্ণ, আপনার না শীর্ষেন্দুর। বাড়িয়ে বলছি না, বিশ্বাস করুন।

গল্পের প্রথম কিছু অংশ পড়ে মনে হয়েছিল, এটা বোধহয় সাইন্স ফিকশান। পরে মনে হলো, সাইন্স ফিকশান লেখার মানুষ আপনি নন। আসলেই তাই। একটা রহস্যময় পরিস্থিতির মধ্যে দু'জন মানুষের অনুভূতি চালাচালির গল্প লিখেছেন। সভ্যতার সুক্ষ্ম সাম্যাবস্থাটুকু ফুটিয়ে তুলেছেন নিপুণ কৌশলে। কিছু কিছু লাইনে গভীর জীবন দর্শন ফুটেছে। ক'টা লাইন মন ছুঁয়েছে খুব-


গল্পে যেরকম ঘটে, একটা দিক শুধু দেখানো হয়। দুটো মানুষ কাছাকাছি আসে, ভালবাসে, তারপর চিরকাল সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকে। আসলে কি তাই ঘটে? আলোর পেছনে আঁধারের কথা কেউ বলে না। একটা মিষ্টি কথা হলে তিক্ত শব্দ ছোঁড়াছুঁড়ি হয় দশটা, প্রেমিক মন জেগে ওঠে হয়তো একদিন, আর বাকি মাসে সেই একই রসকষহীন বস্তুবাদি মানিয়ে চলা জীবন। এই একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে অনেকে বাচ্চা নেয়। তখন হঠাৎ দেখা যায়, প্রেমিক-প্রেমিকা জামাই-বউ বলতে কারো অস্তিত্ব নেই। কেবল আছে বাচ্চার মা-বাচ্চার বাপ নামক দুইটি বিভ্রান্ত-চিন্তিত প্রাণী। আকণ্ঠ চিরন্তন প্রেমের কথা তখন কেউ বলে না, বরঞ্চ দিনের শেষে যারা মেজাজ ঠিক রেখে একে অপরকে সহ্য করে চলতে পারে- তারাই তখন প্রকৃত সফল দম্পতি।


একটা বিষয় একটু দৃষ্টিকটু লেগেছে। সেটা হলো, সব কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করার পর, শেষে শরীর নিয়ে ঘটনাগুলোর মধ্যে কেমন যেন লুকোছাপা করেছেন বলে মনে হলো, বুঝে শুনে শব্দ চয়ণ করে বেফাঁস কিছু বলা থেকে বিরত থাকতে চেয়েছেন, এমন মনে হলো। সাহিত্যে শারীরিক ঘটনার প্রয়োজনীয় বর্ণনা অশ্লীল নয়, বরং শরীরকে এড়িয়ে যাওয়াই অশ্লীলতা।

আপনার ভক্ত ছিলাম এতদিন, এই গল্প পড়ে অন্ধ ভক্ত হলাম। শুভকামনা রইল।

০৬ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১:১০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ওরেব্বাস, বিশাল কমপ্লিমেন্ট! কি বলব বুঝতে পারছি না। মহীরুহ একজন মানুষের কথা বললেন, যার সাথে একই লাইনে অবস্থানের দুঃসাহস আমার নেই। আপনাকে সাথে থাকার জন্যে, এরকম উৎসাহের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাতে পারি কেবল!

সাইন্স ফিকশন আমার খুব প্রিয় একটা ক্ষেত্র, কিন্তু এখানে মানবিক অনুভূতিটাকে অনেক সময় ব্যাকস্টেজে ফেলা রেখে বিজ্ঞানকে সামনে আনা হয়। এরকম লেখা টেকে না। আমি চেষ্টা করি গল্পে মনুষ্যত্বটাকে ধরে রাখতে।

শরীর নিয়ে লুকোছাপার ব্যাপারে ঠিক বলেছেন- সাহিত্যে শারীরিক ঘটনার প্রয়োজন মানতে হয়। রবিবাবুর যুগ ফুরিয়ে গেছে অনেক আগেই। কিন্তু শেষটায় গল্পের চরিত্রগুলোর মানসিক ডেভেলপমেন্ট এবং পরিবর্তন যে হারে ঘটছিল, এবং সমাপ্তি হল যেভাবে; সেখানে শরীরের ব্যাপারটাও বিশ্লেষণী দৃষ্টিতে দেখলে সেই গল্প বলার গতিটা বজায় থাকত না; বর্ণনাগুলি আউট অফ প্লেস, বড্ড চোখে বাজত মনে হয়। তবু, আপনার কথা মাথায় থাকবে। ধন্যবাদ বলার জন্যে।

শুভরাত্রি, প্রিয় ব্লগার!

২৩| ০৬ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১:০২

কলমের কালি শেষ বলেছেন: গল্পে অসাধারণ লাগলো প্রফেসর সাহেব ।

০৬ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১:১১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!

২৪| ০৬ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১:১৪

তওসীফ সাদাত বলেছেন:


অনেকদিন পর ব্লগে কোন একটা পোস্ট পড়লাম।
আর আপনার গল্প বরাবরের মতই আমার প্রিয় :)

"আসলে মানুষের ভেতরের অসুখি-অসামাজিক প্রাণীটা ভঙ্গুর একটা আবরণে নিজেকে লুকিয়ে রাখে। ঠিক জায়গায় সামান্য একটা টোকা দিলেই প্রাণীটা বের হয়ে এসে নরক নামিয়ে আনে পৃথিবীর বুকে।"
এই কথাটাই আমি এতদিন একটু অন্যরকম ভাবে নিজেকেই বলতাম।

০৭ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৪৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আমিও দেখলাম আপনাকে অনেক দিন পর। ভাল থাকবেন!

২৫| ০৬ ই জুলাই, ২০১৫ ভোর ৬:৪৭

রিকি বলেছেন: গল্পটা পড়তে পড়তে চরিত্রগুলোর মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিলাম....এরপর তাদের নির্লিপ্ততার ভাষা কি হবে, কি করবে...সম্পর্কগুলো দূরে চলে গেলেই হয়ত হারিয়ে ফেলার হাহাকার তার সব ভাষা হারিয়ে ফেলে এবং নতুন কোন ভাবে সেটা প্রকাশের উপলক্ষ্য খোঁজে...কেউ কেউ পায়, কেউ অন্তঃসারশূন্য হয়ে যায়...অসাধারণ অসাধারণ too much অসাধারণ দাদা. গতকাল অর্ধেকটা পড়েছিলাম আজ বাকিটুকু পড়লাম. :)

০৭ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৪৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: পুরোটা পড়ে মন্তব্য করার জন্যে ধন্যেবাদ জানাই রিকি :)

অন্তঃসারশূন্য হয়ে যাওয়াটাই তো ঝামেলার। ওটা না হলেই হয়।

২৬| ০৬ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:১৩

আমি তুমি আমরা বলেছেন: আপনার গল্প পড়ে আমার শব্দগুলো সব খসে পড়েছে। প্রশংসা করার ভাষা খুজে পাচ্ছি না।

অসাধারণ।দ্বাদশ ভাল লাগা রইল :)

০৭ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৫০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: হাহাহা! প্লাসের জন্যে ধন্যবাদ :)

২৭| ০৬ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৩

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: প্রিয় প্রফেসর, অনেকদিন বাদে আপনার মৌলিক লেখা!

এখনও মনে পড়ে আজ থেকে দু বছর আগের দিনগুলো, যখন প্রথম প্রথম এই ব্লগে একটা অ্যাকাউন্ট খুললাম, আপনার গল্প পড়ার সাথে পরিচিত হলাম, মনে মনে চাইতাম – আপনার মত যেন লিখতে পারি। নিজের লেখা, কি অনুবাদ – সব কিছুতেই কি দারুণ স্বাচ্ছন্দ্য আপনার! আপনার চিন্তার বৈচিত্র্য, প্লটের অভিনবত্ব সবসময় মুগ্ধ করেছে আমাকে।

এই লেখাটিও কি অনিন্দ্য সুন্দর! পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়া অদ্ভুতুড়ে এক সমস্যাকে কেন্দ্র করে একজোড়া নরনারীর ব্যাক্তিজীবনের সমস্যার স্বার্থপর সমাধান এবং নরকের আগুনে শুয়ে থেকেও স্বর্গের স্বাদ লাভ!

যদি মনে চায়, মানুষ কেন কথা বলতে ভুলে যাচ্ছে – সেই অংশটুকুর ব্যাখ্যা একটু স্পষ্ট করার ব্যাপারটা আরেকবার ভেবে দেখতে পারেন। মানবজাতির অস্তিত্ব সংক্রান্ত একটা সমস্যার একটা যুতসই ব্যাখ্যা, বা দু’ একটি সম্পুরক কার্যকারণ না দেখালে খুব সুক্ষ একটা ফাঁক রয়ে যায়। তবে সেটা আপনার গল্পের গাঁথুনি বা অনুভূতির জায়গায় যে অসাধারণত্ব, সেটা কে খেলো করে দেয় না মোটেই!

নূতন গদ্য লেখার কাজে হাত দেবার অনুপ্রেরণা নিয়ে যাচ্ছি!

০৭ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৫৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: চেক করে এলাম, লিখেছেন কি না গল্প। এপ্রিলের পরে আর দেননি। শীঘ্রই দিয়ে ফেলেন, অপেক্ষায় রইলাম।

দুইবছর হয়ে গেছে ভাবলেই অবাক লাগে। সৌভাগ্যক্রমে আপনাদের মত সহব্লগার পাওয়ায় সময়টা উড়ে কই দিয়ে চলে গেছে বুঝতেই পারিনি! সাথে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।

ব্যাখ্যাটা স্পষ্ট করা যায়, আমি চাচ্ছিলাম ওই ব্যাপারটাকে রহস্যাবৃত করে রেখে মানবিক ব্যাপারটার ওপরে লাইমলাইট ফেলি। আপনি বলেছেন যেহেতু, অবশ্যই ভেবে দেখব এটা নিয়ে।

শুভ বিকেল, সাজিদ!

২৮| ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৭:৪৩

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: গল্পের ভালো লাগা মন্তব্যের ঘরে লেখার মত ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। শুধু ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম শঙ্কু দা।

০৭ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৫৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রবাসী। শুভেচ্ছা জানবেন।

২৯| ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:১৪

আলোরিকা বলেছেন: প্রক্রিয়াটি তাহলে সত্যিই শুরু হয়ে গেছে!! ..... খুউব সু সু ....কি যেন বলে ..... ধ্যাত কিছুতেই মনে পড়ছে না ....ওই আরকি যা বলে তাই !!!!+++++.......... :)

০৭ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:১২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: + পেয়ে আনন্দিত হলুম খুব!

৩০| ০৮ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:০৯

নস্টালজিক বলেছেন: খুব অন্যরকম থীম। আর ছোট ছোট শব্দে দৃশ্যকল্পের টানটান বুনোন।

লায়লা ক্যারেকটার-টা খুব ভালো লেগেছে।

শব্দ খসে গেলে কি থাকে? শূন্যতা!


শুভেচ্ছা, শঙ্কু।


ভালো থাকো নিরন্তর।

১১ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৩:৩৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: গল্প পড়ায় অনেক ধন্যবাদ, নস্টালজিক।

শুভরাত্রি।

৩১| ০৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:২৮

ইমরান নিলয় বলেছেন: সময়ও বাঁচতে পারলো না, মুখোস খুলে দিলেন?

চরম শেষ থেকেই পরম শূন্য শুরু, এবং শূন্য != শূন্য।

১১ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৪৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: :) কৃতজ্ঞতা জানাই ইমরান।

৩২| ১১ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:০৫

মশিকুর বলেছেন:

সম্পর্কের টানাপোড়ন বাস্তবতার ছোঁয়া পেয়েছে; আপনার কল্পনার বিস্তার দেখে প্রতিনিয়তই অবাক হই...

ভাল থাকুন :)

১৪ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:০১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ মশিকুর :)

৩৩| ১২ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:১২

শঙ্খচিল_শঙ্খচিল বলেছেন: পড়েছি আগেই, আলসেমিতে আর মন্তব্য করা হয়নি :)!

শব্দ হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। খুবই ভাল লেগেছে ।

ভাল থাকুন আর লিখতে থাকুন। আপনার সাবলীল লেখার খুব প্রতীক্ষায় থাকি। শুভকামনা।

১৪ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:০২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: চেষ্টা করব আরও লেখার জন্যে। ভাল থাকবেন।

৩৪| ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:১৯

দীপান্বিতা বলেছেন: +++ :)

১৪ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:০৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: :)

৩৫| ১৬ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৪৪

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
ইন্দ্রিয়যু্ক্ত আন্তঃসম্পর্ক যখন মানবিকতার সুঁতোকে টানতে থাকে তখন অচল হয় আগামী ৷ একঘেয়ে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত জীবনকথন নিজেকে কখনই চেনা হয়ে উঠে না ৷ অনেক দিকদর্শনের মোটিফকে ছুঁয়ে গেল পাঠে, তবে হয়ত গভীরতা অতলস্পর্শীর প্রত্যাশা রইল ৷ বৃত্তায়নকে ভেঙ্গে মানুষই যুগ-যুগান্তরী ৷

ক্ষণ পাঠে মহাকাল দর্শন ৷ শব্দ কিন্তু চির আদিগন্ত বিদ্যমান ৷ শুভেচ্ছা নিত্য..............

২৪ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:২৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: বৃত্তের ভাঙ্গন কাম্য, মানুষের জয় আবশ্যক।

ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার। দেরিতে ঈদের শুভেচ্ছা জানাই!

৩৬| ১৬ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:১৫

শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ভালো লাগা +++

২৪ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্যে।

৩৭| ১৮ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৯

এহসান সাবির বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা রইল। ভালো থাকুন সব সময়।

শুভ কামনা।

২৪ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা জানাই এহসান!

৩৮| ১৯ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: বেশির ভাগ চমৎকার গল্পগুলো উত্তম পুরুষে লেখা।

আর আলঝেইমারসে ভোগা এক লেখকের গল্প। টা লিখে ফেলেন।

২৪ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ডুব দেন কোথায় হঠাৎ করে?

লিখে ফেলব। আর না লিখতে পারলে প্লট হলদে বাতির কারাগারের দ্বিতীয় পর্বে ঢুকে যাবে, আর কি :)

শুভরাত্রি।

৩৯| ২৪ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৬

বৃতি বলেছেন: চমৎকার একটি গল্প পড়লাম :) ব্লগে যাঁদের লেখা বেশি টানে- আপনি তাঁদের একজন।
অনেক ভালো থাকুন।

২৪ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ বৃতি। ভাল আছেন আশা করি। বেশ কদিন পর দেখলাম আপনাকে।

৪০| ২৫ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪

বাবুই_পাখি বলেছেন: ভালোবাসার গল্প, মানবীয় গল্প। ভালো লাগছে খুব। অনেকদিন আগেই মোবাইল থেকে পড়ছিলাম, কমেন্ট করা হয়ে ওঠেনি।

( আমার আইডির পাস ওয়ার্ড মনে নাই। তাই বাবুই পাখির টা ধার নিলাম :)

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আমি আজকে ঢুকলাম, প্রথমে পাসওয়ার্ড ভুলেই গেছিলাম :)

৪১| ৩০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:০৩

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া এই ব্লগের গুটিকয় অসাধারণ গল্প লেখকের মাঝে তুমি একজন!!!!!!!!!

অনেক অনেক ভালোবাসা আর শুভকামনা ভাইয়া। অনেক ভালো থেকো!

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ! ভাল থাকুন আপনিও, শায়মা।

৪২| ৩১ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭

শাহেদ খান বলেছেন: ব্যতিক্রম 'থিম'-এর ওপর লেখা চমৎকার একটা গল্প! কিছু বাক্য এবং ভাবনা আলোড়িত করবার মত!

অভিনন্দন এবং অনেক শুভকামনা, প্রোফেসর!

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ, শাহেদ। দেরিতে উত্তর দিলাম, রাগ করবেন না।

৪৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৭

বন্ধু তুহিন প্রাঙ্গনেমোর বলেছেন: এই একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে অনেকে বাচ্চা নেয়। তখন হঠাৎ দেখা যায়, প্রেমিক-প্রেমিকা জামাই-বউ বলতে কারো অস্তিত্ব নেই। কেবল আছে বাচ্চার মা-বাচ্চার বাপ নামক দুইটি বিভ্রান্ত-চিন্তিত প্রাণী।


দর্শন আর বাস্তবাতায় মেশানো একটি গল্প.........ধন্যবাদ পোস্টের জন্য। শুভকামনা লেখক।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আপনার জন্যেও শুভকামনা রইল।

৪৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:১১

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অসাধারন হয়েছে। শুভকামনা থাকলো অনেক।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক দিন পর এলাম। ভাল আছেন আশা করি।

৪৫| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৪৮

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: ঈদ মোবারক প্রিয় শঙ্কু দা।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ঈদ মোবারক প্রবাসীদা। দেরি হয়ে গেল উত্তর দিতে অনেক।

৪৬| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৫

এহসান সাবির বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা রইল।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আরে, এতদিন পরে কমেন্টগুলো এসে দেখছি আর লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে। শুভ কামনা এহসান।

৪৭| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৫৯

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
আসলে গল্পটিতে ভাষার মৌখিক রূপ ভুলে/হারিয়ে যাওয়ার তত্ত্বটি বিকাশ হয় নি। যদিও ল্যাঙ্গুয়েজ এট্রিশ্যণ ব্যাপারটা একাউন্ট করা বেশ জটিলই বটে। মানসিক ট্রমা, মস্তিস্কে জখম, মেমোরি লস ইত্যাদি পাশ কাটিয়ে নিউক্লিয়ার রিএকটর জাতীয় দুর্ঘটনা কয়েন করেছেন, ইন্টারেষ্টিং !! আবার ইঙ্গিত-ইশারার আদি স্পন্দন টেনে চরিত্রগুলোকে গতিও দিলেন। এখানে আমার ভালোলাগা। বৃত্তের অনন্ত মাত্রা বজায় রেখে বারবার ঘুরে আসাটা হজম করতে পারছি না। আপাতবিরোধী লাগছে ...


নতুন লেখার খোঁজ করতে এসে। লেখাটায় দ্বিতীয়বার খস খস করে গেলাম।, প্রোফেসর শঙ্কু।
(হার্ড ফিকশন লিখে/পড়ে আনন্দ বেশি পাই, বদঅভ্যেস। হেহে হে)

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আপনার জন্যে মালকোঁচা মেরে একটা হার্ড ফিকশন আমি এই বছরই লিখব, বলে রাখলুম :) আশা করি ভাল আছেন সব মিলিয়ে।

৪৮| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১০

আহমাদ ইবনে আরিফ বলেছেন: কলমটা থুক্কু কী-বোর্ডটা কি নতুন বছরেই ধরবেন আবার?? এতদিন হয়ে গেল, লিখা চাই প্রোফেসর

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধরেছি এবার :) লিখব অবশ্যি, ধন্যবাদ মনে রাখার জন্যে।

৪৯| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৫

এহসান সাবির বলেছেন: ইংরেজী নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক শুভেচ্ছা জানাই আপ্নাকেও, এহসান। ভাল থাকবেন।

৫০| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৭

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: কারণ সময় একটা অনন্ত বৃত্তের মতো।
একটা অনন্ত অভিশপ্ত বৃত্তের মতো।
একই ব্যাপার ঘুরে ঘুরে আসে।
একবার, দু'বার;
বারবার।
অসাধারন বর্ণনায় অসাধারন গল্প।একটি স্বার্থক গল্পের সব গুণ বিদ্যমান।আপনার লেখা সত্যি অসাধারন।ব্লগের প্রিয় লেখকের একজন শন্কুদা নতুন লেখা পড়ার অপেক্ষা...
নতুন বছরের শুভেচ্ছা সুপ্রিয় লেখক

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ধন্যবাদ রুদ্র। খুশি হলাম আপনাকে পেয়ে। নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানবেন।

৫১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:


আমি প্রথমে ভেবেছিলাম, কেন বারবার আপনি 'কথা না বলতে পাবার' প্রতীকটি নিয়ে আসছেন।

আবার দেখলাম রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা নিয়ে এসেছেন।

সবই আমার কাছে পাঠের সময় অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছিল।

কিন্তু শেষে যেন সবকিছু গিয়ে একই ধারায় মিশেছে।

সত্যিই কি আমরা কথা বলা ভুলে যাই না?! যাই তো।

অসাধারণ গল্প বলার দক্ষতা আপনার!!! মুগ্ধ পাঠ।



(আগে কি কখনও আপনার গল্প পড়েছি, নাকি অনেক দিন পর পড়লাম... ভাবছি। লেখার ধরণ নতুন লাগছে।)

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: পড়েছেন আগে, কিন্তু অনেক আগে, তাই নতুন লাগছে হয়তো!

ধন্যবাদ মাইনুল। সব কথাই এক সময় নিঃশব্দে মেশে, তাই না?

৫২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১২

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: কোথায় আপনি প্রোফেসর শঙ্কু!! ব্লগ তো খুঁজছে আপনাকে!

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আছি তো :) সবার লেখা পড়ছি খুঁজে খুঁজে। ভাল আছেন আশা করি কা_ভা।

৫৩| ২৫ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫১

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: কীভাবে কীভাবে যেন এইগল্পটা আমার নজর এড়িয়ে গিয়েছিলো। পড়তে যেয়ে পরতে পরতে মুগ্ধ হলাম। মুগ্ধতায় স্তব্ধ হলাম। মন্তব্যের ঘরে এসে দেখি, মুগ্ধতার ছড়াছড়ি। প্রিয় ব্লগার আপনার লেখায় শব্দবুনন, ভাষার প্রকাশ, দ্যোতনা, বিস্তার, বিন্যাস নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবু প্রতিবার একেকটা একমেবাদ্বিতীয়ম বিষয়ের অবতারণা করে আমাদের চমকিত করেই চলেছেন। আপনার হাত সোনার কলম কলম হোক।

ভালো থাকুন। শুভেচ্ছা রইলো :)

২৬ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:২৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: মাঝে মাঝে লেখালেখি নিয়ে হতাশা, হীনমন্যতা কাজ করে। তখন এই মন্তব্যগুলো, সত্যি বলছি, টনিকের মতো কাজ করে। সব সময় উৎসাহের প্রধান উৎস হয়ে থাকার জন্যে আমি আপনার মতো আর কতিপয় পাঠকের কাছে ঋণী। ধন্যবাদ সব সময় পাশে থাকার জন্যে।

অনেক ভাল থাকা হোক :)

৫৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:১৯

কল্পদ্রুম বলেছেন: একরকম ঘোরের ভিতর দিয়ে গল্পটা শেষ করলাম।ভাবছিলাম কোন একদিন সকালে উঠে যদি দেখি আমিসহ সারা পৃথিবীর মানুষ কথা বলা ভুলে গেছে তাহলে কি করবো?

হুম...চিন্তার বিষয়।

ও হ্যাঁ,ভালো থাকবেন।

০৬ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালো থাকবেন আপনিও, সুপ্রিয়!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.