নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গদবাধা জীবন যাপন করি আমরা সবাই। জন্মের পর থেকে ঘুরে ফিরে একই কাজ। আপনি হয়তো আলাদা, কিন্তু আমি নিজেকে একজন সৈন্যই ভাবি সেনাপতি নয়। সকালে ঘুম থেকে উঠি, এই সেই করি, খাই, ঘুমাই, আবার ঘুম থেকে উঠি। একেকজন একেক ধরণের কাজ করলেও সবাই একই চক্রে ঘুরপাক খায়। এখান থেকে পালানোর উপায় নেই।
নিত্যদিনের নানান সমস্যা, আনন্দ বেদনা নিয়েই সবার বাস। কেউ রাত জেগে কাজ করে দিনে ঘুমায়, আবার কেউ এর উল্টোটা করে। কাজ ওই একই। জীবনটাও গদবাধা। ভাবছেন, ভালোই তো আছেন। কিন্তু, তা কতদিন? এই যায়। যে কোন সময় আসল বিপদ ঘটে যাবে। দেখতে দেখতে শরীরটা অকেজ হয়ে যাবে। উপায় নেই আটকানোর। কতশত মহাবিজ্ঞানী মহাগবেষক এ নিয়ে গবেষণা করেছেন, কিন্তু জীবনের বিধান উল্টানোর হিসাব তাদের আয়ত্তের বাইরেই থেকে গেছে। তবে হ্যাঁ, আপনার যে তৃতীয় চোখটি আছে তা কিন্তু অনেক কাজের। চাইলেই দেখতে পারছে যা খুশি তাই। সেটাকে কাজে লাগালে হয়তো ভালো ফল পেতেও পারেন। মর্জি আপনার।
বলছি গদবাধা জীবন নিয়ে। আমার মতো ঠিক আপনাকেও কোন মা জন্ম দিয়েছেন। যে কারণে সবুজ সুন্দর পৃথিবীটা আপনি ভোগ করতে পারছেন। আপনিও কাওকে জন্ম দিয়েছেন কিংবা দেবেন। তারাও একই কাজ করবে। এভাবেই গোটা দুনিয়ায় শত কোটি মানুষ। ওই একই চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে বিশ্ব। এখানে যারা আছেন বা চলছেন সবাই অনেকটা পুতুলের মতো। সময় হলে আসে আবার চলেও যায়। আসল গন্তব্য অজানা। অনেকে এমনই মনে করেন। অর্থাৎ, গদবাধা এই জীবন থেকে মুক্তির উপায় নেই। কোন না কোন এক সময় আপনাকে এখানে ফিরে আসতেই হবে, যেতেও হবে।
শ্রোতা যদি বিরক্ত হয় তাহলে বক্তার মূল্য শূন্য। আর শ্রোতা যদি মনোযোগী হয় তাহলে সার্থক বক্তা। আমার প্রয়াসও সেখানেই। প্রতিটি সময় এমন কিছু খুঁজি যা গদবাধার থেকে একটু আলাদা। নিজেকেও তাই গদবাধা এই জীবনে অন্যরকম কিছু দিতে চাই। একটি কবিতায় রবার্ট ফ্রস্ট দুটো রাস্তা দেখেছিলেন। একটিতে অনেক লোকের চলাচল, পরিস্কার। আরেকটি কন্টকময়, অনেকটাই লোকশূন্য। অনেক চিন্তা করে সে পরের রাস্তাটি বেছে নিয়েছিলেন। জানি না কেন, তবে মনে হয়, সেও অন্য কিছু চেয়েছিলেন। যা অন্তত গদবাধা হবে না।
এই সময়ে সবাই ভাইরাসটি নিয়েই মাতামাতি করছে, ভয়ে কুঁচকে যাচ্ছে। অথবা, ঘরে বসে মাথা ব্যাথা ছাড়া কিছু করার নেই। বেশিরভাগেরই তাই। রাস্তায়ও নেমেছেন অনেকেই। বাঁচার কি আকাঙ্ক্ষা! মৃত্যু জেনেও, আমারও আছে। কারণ, আমিও কোন না কোনভাবে গদবাধা জীবন উপভোগ করি। ঠিক এই সময়েই আবার অন্য রকমও ভাবি। অর্থাৎ গদবাধা চিন্তার বাইরে। মরেই যাই। একবার বাসের নিচে, অন্যবার বালু বোঝাই বড় নৌকার নিচে গিয়ে খুব কাছ থেকে জীবন দেখেছি। তাই জীবনটার ওপর লোভ হয় না। আবার হয়ও। দুই মন দুই আশা নিয়েই যত জ্বালা। কিন্তু কোন উপায়ও নেই।
এক ভদ্রলোক সকালে ঘুম থেকে উঠেই ঈশ্বরের নাম করতে থাকেন। অথচ, সারাটা দিনেও তার মুখ থেকে একটা ভালো কথা বের হয় না। ভালো চিন্তা তো দূরে থাক। খাওয়া বা ভোগের চিন্তাই তার কাছে মূখ্য। সে ভদ্রলোক এই কারণে যে আমি তাকে মূল্যায়ন করি। মানুষ হিসেবে জন্ম নেওয়াটাই তা সবচেয়ে বড় যোগ্যতা। সেও একটি গদবাধা জীবন পালন করেন যেখানে ভোগ ছাড়া তার অন্য চিন্তা আসে না। কিন্তু, প্রতিদিন ওই লোক শৌচাগারে গিয়ে রক্ত ঝরান। তাতেও তার ত্যাগের বাসনা আসে না। এও তো গদবাধা জীবনেরই একটি অংশ। ত্যাগে নয়, আসলে ভোগেই সুখ। কিন্তু কিভাবে? কোন না কোন উপায়ে ত্যাগ করতেই হয়।
আমি অধম, তাই বলে আপনি উত্তম হবেন না কেন? গদবাধা জীবনেও অনেক ভালো কিছুর সন্ধান আছে। তা খুঁজে পাওয়ার জায়গাও আছে। শ্রান্ত ভ্যানওয়ালা ভারি জিনিস বহন করে ঢালু জায়গা অতিক্রম করছেন। আপনি ঠিক তার পিছনে। গায়ে শক্তি আছে একটু ধাক্কা দিলেই বেচারা উপকার পায়। শক্তির অপচয় কিংবা কোন চিন্তা না করেই ধাক্কা দিলেন । বিশ্বাস করুন, ঢালু জায়গাটা উঠে আপনার দিকে ফিরে লোকটি যে হাসিখানা আপনাকে দেখাবে তা অন্যকিছুর বিনিময়ে পাওয়া যায় না। গদবাধা জীবনে এটুকুতেও সার্থকতা আসে। অথবা, এক ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পর গ্রহীতার আত্মীয় আপনার হাতে একটি ডাব দিয়ে যে দৃষ্টিতে তাকাবে তাতেও জীবনের সার্থকতা খুঁজে পাওয়া যায়। গদবাধা এই জীবনে এর থেকে আর কি-ই-বা চাওয়ার থাকতে পারে।
এবার একটি গাছ লক্ষ্য করুন, তারও গদবাধা জীবন। একসময় তারও ধ্বংস হয়। অথচ, তার উত্তরসূরিরা তাকে টিকিয়ে রাখে। আপনি আমিও হয়তো থাকবো কারো মাঝে। কিন্তু, গদবাধা এই জীবন চলাকালীন অন্য কিছুর সন্ধান করা উচিত। যেখানে অন্তত গদবাধা জীবন নিয়ে আপনাকে আমাকে দুঃশ্চিন্তা করতে হবে না।
সব থেকে সহজ রাস্তা, এতো কিছু ভাবারই দরকার নেই। যা আছে তা নিয়েই আনন্দে থাকার চেষ্টা করুন। এখানে এসে, এই লেখা পড়ে শুধু শুধ কেন আপনি গদবাধা এই জীবনের কয়েক মূহুর্ত সময় নষ্ট করবেন???
০৪ ঠা মে, ২০২০ সকাল ১০:৩৫
প্রসেনজিৎ হালদার বলেছেন: ভালো কিছু করার চেষ্টা করুন। যাতে মানুষের উপকার হয়। নিজেও খুশিতে সময় পার করুন। আর যদি তা করেই থাকেন (নিয়মিত), তাহলে আপনার জন্য কোন সাজেশান নেই।
২| ০৪ ঠা মে, ২০২০ ভোর ৪:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: মানব জীবন যে কি আজও বুঝলাম না। বড় রহস্যময় জীবন। জীবন কি তা বুঝেই জীবন কাটিয়ে দিচ্ছি।
০৪ ঠা মে, ২০২০ সকাল ১০:৪৩
প্রসেনজিৎ হালদার বলেছেন: গল্প, কবিতা, উপন্যাস; ইত্যাদি জাতীয় সাহিত্যে আমার তেমন আসক্তি নেই। কিন্তু, গদ্যের ওপর একটা টান আছে। জীবনটাকে তাই গদ্যাকারেই সাজাতে চাই। যা ইচ্ছা হলেই শব্দের মাধুরী দিয়ে সাজানো যাবে। নির্দিষ্ট গন্ডির বাইরে যাওয়া ভীষণ দুষ্কর।
৩| ০৪ ঠা মে, ২০২০ ভোর ৪:৪৪
নেওয়াজ আলি বলেছেন: গদবাধা জীবন গদবাধা লেখা
০৪ ঠা মে, ২০২০ সকাল ১০:৩৮
প্রসেনজিৎ হালদার বলেছেন: গদবাধা জীবনে অন্য কিছুর সন্ধান করি। আপনার মন্তব্যে বুঝলাম এ জাল থেকে মুক্তিও সহজ হবে না। গদবাধা লেখার বাইরে কিছু্ দিতে চাই। জানি না পারবো কি না। তবে, বলে দিচ্ছি সহজে হাল ছাড়বো না। ভালো থাকুন। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ২:৫৩
ভুয়া মফিজ বলেছেন: জীবনটাই একটা চক্র। এর থেকে বের হওয়ার কোন উপায় রাখা হয় নি। বিশেষ কিছু মুহুর্তে ক্ষণিকের জন্য আমরা যদিও বা চক্রের বাইরে যাই, আবার ঘুরে ফিরে এই চক্রেই ফেরত আসি। আপনার শেষের কয়েকটা লাইনও সেই চক্রেরই অংশ।
আপনার কোন কনক্রীট সাজেশান আছে?