নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজের চেহারার দিকে তাকিয়ে কিছুই দেখি না। তবে, মানুষ হয়ে মানুষকে ভুল বোঝা আমার স্বভাবে নেই, আপনার পেশা যাই হোক না কেন।

প্রসেনজিৎ হালদার

প্রসেনজিৎ হালদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোথায় আছেন ভাই

১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৮:৫৫

চাকরির পরীক্ষায় পরীক্ষক জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কবে কেঁদেছেন?’ পরীক্ষার্থী একটুখানি সময় চেয়ে নিয়ে থ্রি ইডিয়টসের একটা কাহিনী শুনিয়ে বললেন, ‘তখন একটু কান্না পেয়েছিল।’ পরবর্তী প্রশ্ন, ‘কতদিন আগে?’ উত্তর, ‘তাও বছর পাঁচ সাতেক’। এই কাহিনী একটি দীর্ঘ চাকরির ভাইভা পরীক্ষার ক্ষুদ্রাংশ। প্রায় পৌনে এক ঘন্টাব্যাপী সেই জিজ্ঞাসাবাদে অনেক কিছু ছিল। সেগুলো শুনে আপনাদের কোন লাভ নেই। তাই আসল কথায় আসা যাক।
আমার ভাই-বন্ধু যখন মামলা হামলার ভয়ে দেশান্তরী তখন একদিন ফোনে বললো, ‘আসবো কোথায়? নিজের ঘরেই যাওয়ার জায়গা নেই।’ আমি অকপটে বলে দিলাম, আমার ঘরে আসতে। সে শুনে অনেকটা কেঁদে দিল। যেখানে কেউ তাকে ভালো চোখে দেখতে পারছে না, সেখানে আমার মতো একজন মানুষ তাকে আশ্রয় দিতে চাইলো। খুব খুশি হলো।
বছর পেড়িয়েছে। মধ্যেখানে অনেক সময় চলে গেছে। জীবনের দোলাচলে দুজন দুরকম রাস্তায়। সম্পর্কটা থেকে গেছে। সেই রাজনৈতিক মামলা আজও চলে, তার নাম নেই। সে এখন অনায়াসে চলাফের‍া করে। কোন সমস্যা হয় না। নিরাপত্তার অভাব অনেকটাই ঘুঁচে গেছে। কিন্তু, যে লোক নিরাপত্তা দিল, সে আজ নিরাপত্তাহীনতা ভুগছে। কোথায় যাবে সে? সুহৃদ আজ চাপাতি হাতে পাহাড়ায় রয়েছে। যে কোন সময় ঘটবে অঘটন।
আসল প্রসঙ্গ হামলা। সনাতন ধর্মাবলম্বীর ঘরে জন্মেছি। ভালোই আছি। অর্থকষ্ট থাকলেও নিরাপত্তাহীনতা কিংবা সংকোচ নেই কোন কিছুতেই। হৃদয়ও সংকুচিত নয়। যা হ্যাঁ, তা হ্যাঁ-ই। যা না, তা না-ই। আবেগ থাকবেই। আজ পত্রিকার পাতায় উত্তরবঙ্গে সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার এক নারী কান্নাজর্জরিত চেহারা দেখে কান্না ধরে রাখতে পারলাম না। না, সাম্প্রদায়িকতার জন্য নয়। নিরাপত্তাহীনতার জন্য। আজ, আমার মা-বোন যদি অন্যায়ের শিকার হয়, কাল আপনারও এমন সমস্যা হতে পারে। একজনের সুখে-দুঃখে, আনন্দে পাশে থাকার নাম সাম্প্রদায়িকতা। এখানে ধমান্ধতার কোন সুযোগ নেই। যে যার ধর্ম পালন করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, তাতে অন্ধ হওয়ার কিছু নেই। কারণ, সবার শেকড় একজায়গাতেই। আর তা হলো মানবতা। কোথায়? কোথায়? কোথায়? সেই জিনিস!
এক হাজার পৃষ্ঠার বইখানি জুড়ে সব লেখা আছে, কোথায় কি করতে হবে আর কি করতে হবে না বা কি করা যাবে না। কিন্তু, কোথায় তার ব্যবহার! আটশ’ পৃষ্ঠাজুড়ে অনেক ধর্ম-অর্ধের খেলা দেখেছে অনেকেই। কোথায় তা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা! সাতশ’ পৃষ্ঠার বইখানিতেও কোন প্রকার সংঘাত চাওয়া হয়নি। দুই খন্ডের হাজার পৃষ্ঠার বইয়েও এই সারকথা লেখা আছে। কোথায় সেগুলোর ব্যবহার।
দিন দিন মানুষের মস্তিস্ক ব্যবহারের পরিধি বাড়ছে। বছর বছর প্রযুক্তির উন্নয়ন হচ্ছে। মানুষের ধ্যান-জ্ঞানের পরিবর্তন হয়েছে। ধর্মের পরিধি বাড়ছে, মানুষের সুকর্ম-দুষ্কর্ম উভয় বাড়ছে। সবই বাড়তির দিকে। মামলা-হামলাও যেমন বাড়ছে, উন্নতিও হচ্ছে ক্রমবর্ধমান হারে। কিন্তু, বিবেক, বিনম্রতা, আচার, শিষ্ঠাচার, ন্যায়-নীতি; এরা কোথায় যাচ্ছে। সম্পদের পাহাড়, ক্ষমতার হিড়িকের কাছে বিক্রি হচ্ছে মানবতা। ধীরে ধীরে, চক্রবৃদ্ধি হারে। বুঝতে পারছেন? হয়তো পারছেন, আবার হয়তো পারছেন না। যদি বুঝে থাকেন, তাহলে এমন ঘটনা কেন ঘটে। আর যদি না বুঝে থাকেন, তাহলে শরীরে বাড়তি খোলস লাগিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ুন, ধরে ধরে কাপড় নিরীক্ষণ করে আপনার গোত্রের বাইরে যারা রয়েছেন তাদের ব্যবস্থা নিন। এখানে অন্য কাউকে দরকার নেই। তারা বাড়তি।
ঠিক ধরেছেন, এক পুকুর দুধের মধ্যে একফোটা লেবু। লেবু উপকারী হলেও, তা যে সবগ্রাসী হতে পারে তা পুকুরে একফোটা ছেড়ে দিলেই বুঝতে পারবেন। কিন্তু, এখানে ঘটনা তেমন ঘটেনি। এখানে একপুকুর লেবুর মধ্যেই হয়তো দু’এক বালতি দুধ দেখা গেছে। যদি তাই হয়, তাহলে কেমন হবে। শত শত লোকের সামনে যদি আপনার সম্মান-সম্ভ্রম নিয়ে আরও শত শত লোক টানাটানি করে তখন উপায় কি হবে? সম্মানহীন জীবিত থাকার চেয়ে সাড়ে তিন হাত মাটিই প্রত্যাশিত। আর কি-ই বা চাওয়ার থাকতে পারে। কারণ, আপনার কাছেও কিছু নেই।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:৫৮

উদারত১২৪ বলেছেন: যুকতি আছে

২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:০৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: নিজে ভুক্তভোগী না হলে অন্যের দুঃখ অনুধাবন করা যায় না।

৩| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:১০

বিটপি বলেছেন: ভাই, হিন্দু বোনের আর্তনাদ দেখে আমারো চোখে জল এসেছে। আমি কথা দিচ্ছি, যদি আমার আশেপাশে কোন হিন্দু ভাই বোনকে এরকম আক্রান্ত হতে দেখি, ইনশাল্লাহ জীবন দিয়ে তাঁদের রক্ষা করার চেষ্টা করব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.