| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবাই স্বপ্ন দেখে।কেউ দেখে ঘুমের ঘোরে, কেউ বাস্তবে।কিছু স্বপ্ন হয় কল্পনাপ্রসূত, কিছু শয়তানপ্রদত্ত, আর কিছু আল্লাহপ্রদত্ত।আমি আজ স্বপ্ন দেখছি; তবে এটা বলতে পারব না যে, স্বপ্নটা বাস্তবে, না ঘোমে।হতে পারে উভয়টিই।এটা ও বলতে পারব না যে, স্বপ্নটা কোন পর্যায়ের আল্লাহপ্রদত্ত না কল্পনা প্রসূত।উভয়ই হতে পারে; তবে শয়তানপ্রদত্ত যে হবে না, তার একশ পার্সেন্ট নিশ্চয়তা দেয়া যায়।
যাক আর যা কিছুই হোক, আমি স্বপ্ন দেখছি এটা সত্য।স্বপ্নে আমি একটি অপরিচিত শহরে অবতরণ করেছি।কিভাবে অবতরণ করেছি বলতে পারব না।তবে অবতরণ করেছি এটা ঠিক আছে।
আমি শহরের রাজপথে হাঁটছি।এমন শহর আমি দেখেনি; তবে শুনেছি কি না মনে নেই।শহরটি প্রাচুর্যে নিউইয়র্ককে ও হার মানিয়েছে; সৌন্দর্যে হার মানিয়েছে প্যারিসকেও।শহরটি বস্তির ঘনত্বের দিক দিয়ে ঢাকা থেকে ও এগিয়ে; তবে ঢাকার মত পরিবেশ এমন দুষিত নয়।এমন শহর পৃথিবীতে বর্তমানে বা অতীতে কখনো ছিল কিনা, ভাবতে লাগলাম।ইতিহাস আমাকে জানিয়ে দেয়, হ্যাঁ, ছিলো।হালাকু-তান্ডবের পূর্বের বাগদাদ এমনই ছিলো।
আমি হাঁটতে থাকি।ক্ষণিক বাদে একটি প্রাসাদোপম ইমারত দেখে থমকে দাঁড়াই।মনে হলো, এটা এরাজ্যের বাদশার প্রাসাদ মনে হয়।কিন্তু অবাক হই, কোন রক্ষী না দেখে।কৌতুহল নিয়ে এগিয়ে যাই।বুঝতে পারি এটি মসজিদ।ভেতর থেকে ভেসে আসে হাদিসের ধ্বনি।একজন মুহাদ্দিস হাদিস পড়াচ্ছেন সামনে হাজার হাজার ছাত্র।একটু পরে সেই মহাদ্দিসই দেখি মুফাচ্ছির হয়ে কোরআনের তাফসির পড়াচ্ছে।একটু পর মুফতি হয়ে ফিকাহ পড়াচ্ছেন।একটু পর আদীব হয়ে সাহিত্য পড়াচ্ছেন।একটু পর তিনি আবার দার্শনিক বনে গেলেন।আমি তন্ময়ে তাকিয়ে থাকি, একটি লোক কিভাবে এতটি বিষয়ে দরস দিলেন? ইতিহাস বলে, মামুনুর রশীদের যুগে এটা কোন ব্যাপারই ছিলো না।
মসজিদ থেকে বেরুচ্ছি।মসজিদের আঙ্গিনায় দেখি বিশাল এক স্তুপ।না ময়লার স্তুপ নয়; স্বর্ণ-রৌপ্যের স্তুপ।জিজ্ঞেস করে জানতে পারি এগুলো জাকাতের সম্পদ।জাকাত-গ্রহিতা না পাওয়ায় এগুলো পড়ে আছে।বিস্ময়ে আমার চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসে, এমন যুগ ও কি পৃথিবীতে কখনো ছিলো? ইতিহাস বলে, হ্যাঁ, সেটা ছিলো উমর ইবনে আব্দুল আজিজের যুগ।
আবার সামনে হাঁটতে থাকি।হাঁটতে হাঁটতে চলে আসি আদালত চত্বরে।আদালতে এখন বিচার শেষ।লোকদের জিজ্ঞেস করে জানলাম, বাদী এক ইহুদি আর বিবাদী হলেন বাদশাহ।আমি অবাক বিস্ময়ে থ হয়ে যাই, এমন বাদশাও কি পৃথিবীতে ছিলেন? ইতিহাস জানায়, হ্যাঁ, তিনি ছিলেন হযরত আলী (রা.)।
এখন সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়েছে।কিন্তু আমার হাঁটা থামেনি।হয়ত আমার আরো কিছু দেখার বাকি আছে।আমি হাঁটছি।এক লোক কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে চার দিকে পর্যবেক্ষণ করছে।আমার সন্দেহ হলো, চোর হয়ত।কিন্তু না পরে জানলাম, তিনি বাদশাহ; ছদ্মবেশে প্রজাদের অবস্থা দেখছেন।ইতিহাস জানিয়ে দিল,হযরত উমর(রা.) এমনই একজন বাদশা ছিলেন।আমি আর হাঁটতে পারলাম না।অবাক-বিস্ময়ে আমার চলার গতি থেমে গেল।এখন বাস্তবে না স্বপ্নে আছি ---বুঝতে পারছি না।
©somewhere in net ltd.