নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এখানে নতুন,সবার সহযোগিতা চাই

ভালোবাসা দিয়ে,ভালোবাসা পেতে চাই

পুলক20

আমি নিজেকে খুব সাধারণ মনে করি।বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে পছন্দ করি।আমি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি,স্বপ্ন দেখি একদিন আসবে যেদিন আর কোনো শিশু রাস্তায় ভিক্ষা করবে না।

পুলক20 › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাগজবিহীন পরীক্ষা

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫১

পরীক্ষার আগের রাতে ঠিকভাবে খাওয়া না হলেও যে কাজটা ঠিকভাবে হবে তা হল ফেবুতে স্ট্যাটাস দেয়া।আমার মনে হয় যেদিন পরীক্ষার রুটীন পাবলিশ হয় সেদিনই ঠিক হয়ে যায় কোনদিন কি স্ট্যাটাস যাবে।কেউ স্ট্যাটাস না দিলে চ্যাটে নক আসে,"কি মামা!ফাটায়ে ফেলতেসস?" পলক ভাবে,"আচ্ছা পরীক্ষা নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে কি শেষ করা যাবে?"

প্রাইভেট ভার্সিটির শুরুই তো হয় পরীক্ষা দিয়ে;টাকার পরীক্ষা।এক সেমিষ্টারের টাকা দিয়ে শ্বাস ফেলার আগেই চিন্তা,"পরের সেমিষ্টারের টাকা চাইবো কিভাবে?"
এই চিন্তা চলে প্রতি চারমাসে তিনবার করে বছরে ১২ বার,চার বছরে ৪৮ বার।কেউ হয়ত বা কয়েকবার এই পরীক্ষায় পাশ করতে পারলেও পলক প্রায়ই ফেল করে বসে।বন্ধুরা নতুন সেমিষ্টারে উঠে যায়,পলক রয়ে যায় সেমিষ্টার ব্রেকে।
হঠাত হাটার পথে দেখা হলে বন্ধু জিজ্ঞেস করে,"কিরে কোন সেকশনে?"
পলক হেসে বলে,"আই নিড এ ব্রেক।তাই গ্যাপ দিলাম" আস্তে করে হেটে চলে যায় টিউশনি করাতে;মাসের শেষে রুম ভাড়া ম্যানেজ করতে হবে যে!

টাকার পরীক্ষাতেই জীবন থেমে থাকে নাহ।বন্ধু হয়তবা ল্যাপটপ চালায়,স্মার্টফোন চালায়।সেখানেও দিতে হয় আরেক পরীক্ষা;সেলফকন্ট্রোলের পরীক্ষা।বন্ধু নামীদামী হোটেলে গিয়ে সেলফি তোলে,সেই সেলফিতে পলক লাইক দেয় আর নিজের ফোনের দিকে তাকায়।মাসের শেষে টিউশনির টাকা জমিয়ে একটা স্মার্টফোন কিনে,সেলফি তোলে কিন্তু সেই সেলফি আর আপলোড দেয়া হয় নাহ।২৭ নাম্বার বাস থেকে নেমে পকেটে হাত দিয়ে দেখে ফোনটা নেই।হাতের তলা দিয়ে চোখ মুছে আর হেসে বলে,"ফকীরের পেটে কি আর ঘি হজম হয়!হয় নাহ" শুরু হয় আরেক পরীক্ষা;সাজিয়ে গুছিইয়ে মিথ্যা বলার পরীক্ষা।বন্ধুরা ফোন দেয় কিন্তু ফোন আর ওপাশে যায় নাহ,আজ হয়ত নেটোয়ার্ক প্রব্লেম,কাল চার্জ নেই।এভাবেই চলে যায় দিন।

১২ সেমিষ্টারের চার বছরের পড়া,বন্ধুরা পাশ করে বের হয়ে যায় কিন্তু পলকের পাঁচ বছর যায়,ছয় বছর যায় কিন্তু ভার্সিটি আর শেষ হয় নাহ।কোন এক সন্ধ্যায় বাবার কাছে ফোন আসে,"বাবা সেমিষ্টারের টাকাটা?আর মাত্র দুটা বাকী"
বাবা চুপ করে থাকে;বাকী আছে শুধু জমিটা।ছেলের কথা ভেবে সেটা বেচে টাকা পাঠায়,পলক পাশ করে বের হয়।শুরু হয় আরেক পরীক্ষা;চাকরীতে ঢোকার পরীক্ষা।ইন্টারভিউ দিতে দিতে কালো জামা ঘামে ভিজে সাদা হয় কিন্তু চাকরী আর হয় নাহ!

অবশেষে কোন একদিন কোন একটা কল আসে,চাকরী শুরু হয়।বন্ধুরা হানিমুনে দেশের বাইরে যায় পলক ৯-৫টা অফিস করে,ভাবে,"খারাপ কি! ভালৈ তো আছি"।

কোন একরাতে ফেবুতে বসে,নিউজফিড চেক করে,হঠাত কোন এক বন্ধুর ছবিতে চোখ আটকে যায়,বিয়ের ছবি,মেয়েটাকে খুব পরিচিত মনে হয় পলকের।
ফেসবুক আর ভালো লাগে নাহ।বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়,সিগারেট ধরায়,হঠাত করেই যেন কলেজের কথা মনে পড়ে যায়,সেই খেঁজুর বেনী করা মেয়েটার কথা।পেছনে গান বাজে-

"নিকষ কালো এই আধারে,
স্মৃতিরা সব খেলা করে,
রয় শুধু নির্জনতা
নির্জনতায় আমি একা......"

দুচোখ গড়িয়ে অশ্রু পড়ে,কিন্তু ছেলে মানুষের তো কাঁদতে নেই।চোখ মুছে ফেলে,শু্রু হয় আরেক পরীক্ষা.

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৩

ঘূণে পোকা বলেছেন: ভালো লিখেছেন :)
শুভকামনা রইল :)

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৫

পুলক20 বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.