নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যুর বাগানে নিমন্ত্রণ আপনাকে।

মরুভূমির জলদস্যু › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (কাহিনী সংক্ষেপ)

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩০

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা কাকাবাবু সিরিজের তৃতীয় বই “ পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক”
সিরিজের প্রথম বই “ভয়ংকর সুন্দর”
দ্বিতীয় বই “সবুজ দ্বীপের রাজা”
এই দুটি বইয়ের কাহিনী সংক্ষেপ আগে লিখেছি তাই এবার লিখছি তৃতীয় বইয়ের কথা।



“ পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক”
এবার সন্তু আর কাকাবাবু এসেছে গোরখেশপ, এটা এভারেস্ট যাত্রীদের একটা বেসক্যাম্প। সামনেই একটা ছোট পাহার নাম তার কালাপাথর, এখান থেকে এভারেস্টে চূড়া স্পষ্ট দেখা যায়। সন্তুদের সাথে দুজন শেরপা আর ৫জন মালবাহক বা কুলী। কিছু দিন আগে কাকাবাবু বিদেশ থেকে ফেরার সময় একটা কাচের বাক্সে করে একটা দাঁত নিয়ে এসেছিলেন, সেই দাঁতটা এখানেও নিয়ে এসেছেন।

যদিও সন্তুদের এভারেস্ট যাওয়ার কথা কিন্তু দেখা গেলো কাকাবাবু গোরখেশপ এসে আর এগুলেন না। এখানে একটা গম্বুজ মত আছে, যার দোতলায় একটা খোলা জানলা আছে। কাকাবাবু রাতে সেখানে দূরবীন নিয়ে বসে থাকেন। তাই সন্তুর ধারনা হল কাকাবাবু ইয়েটি খুঁজতে এসেছেন, কারণ কাকাবাবুর কাছে বড় একটা দাঁত আছে, সেটা নিশ্চয় ইয়েটির দাঁত। কিন্তু কাকাবাবু ইয়েটির কথা শুনে বললেন ইয়েটি বলে কিছু নাই।

এই দাঁতটা বিজ্ঞানী কোয়েনিংসওয়াল্ড বেইজিং এর ফুটপাত থেকে কিনে ছিলেন, সেখান থেকে তিনি ৩টি দাঁত কিনেন। কাকাবাবুর কাছে যে দাঁতটা আছে সেটা স্বাভাবিক মানুষের দাঁতের তুলনায় অনেক বড়। এতো বড় দাঁতের মালিক হতে হলে সেই মানুষকে ২৫ ফুট লম্বা হতে হবে। বিজ্ঞানী এই কাল্পনিক দানবীয় মানুষের নাম দেন জাইগ্যান্টোপিথিকাস।

কিছুদিন আগে শিপটন বলে একজন অভিযাত্রী এখানে এসে কালাপাহাড়ে একটি বিরাট আকারের মানুষ দেখেন বলে তার ডায়রিতে লিখে রেখে গেছেন। বেস ক্যাম্প থেকে একা হাঁটতে বেরিয়ে সে একদিন বেমালুম গায়েব হয়ে যায়।

এদিকে কাকাবাবুর একদিন রাতে কালাপাহাড়ে দুটি আলোর বিন্দু দেখতে পান। পরদিন সকালই তিনি শেরপাদের সর্দারকে ডেকে বলেন এখনই তারা সামনের দিকে এগুবেন, আজকে রাতে কালাপাহাড়ে গিয়ে ক্যাম্প করবেন। সন্তু তার ব্যাগ গোছানোর জন্য গম্বুজে ঢুকে দেখে শেরপাদের একজন নাম তার "নোরবু ", গম্বুজ ঢুকে কাচের বাক্সে রাখা দাঁতটার দিকে তাকিয়ে আছে। সন্তু নিষেধ করা সত্তের নোরবু দাঁত রাখা বাক্সটা নিয়ে বাইরে চলে যেতে চেষ্টা করলো। কিন্তু সন্তু কারাটের প্যাচে তাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে বাক্সটি হাতে নিয়ে নিলো। এমন সময় কাকাবাবু গম্বুজে ঢুকে দেখলেন নোরবু মাটিতে পরে আছে আর সন্তু বাক্সটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছা। সন্তু কাকাবাবুকে আসল কথা বলল না, জানাল নোরবু পা পিছলে পরে গেছে।

সকালে সবাই তৈরি হয়ে নিয়ে কালাপাহাড়ের দিকে এগিয়ে চলতে শুরু করল। অনেকটা পথ আসার পরে কাকাবাবুর সন্তুকে ডেকে বলল বাকি দল নিয়ে কালাপাহাড়ে গিয়ে তাঁবু খাটাতে। তিনি এখানে থেকে চারপাশটা খুঁজে দেখবেন, কারণ তার ধারনা গত রাতে এখানেই সেই আলো দুটি দেখেছেন। সন্তু এগিয়ে গেলে পরে কাকাবাবু খুঁজে ছয়টি পায়ের ছাপ দেখতে পেলো। মানুষের পায়ের ছাপের চেয়ে অনেক বড় আর গভীর। কাকাবাবু সেগুলির ছবি তুলে মাপ লিখে রাখলেন। এমন সময় মিংমা আর দলের বাকি সবাই দৌড়ে এসে জানালো নোরবু ইয়েটি দেখতে পেয়েছে, এখনই এখান থেকে পালাতে হবে। কাকাবাবু রাজি না হওয়াতে তাকে কজনে মিলে কাঁধে করে নিয়ে ফেরার পথ ধরলো।

গম্বুজের কাছে এসে কাকাবাবুকে নিচে নামানো হলে তিনি সেখানেই থেকে যেতে চাইলেন। শেষে কাকাবাবু আর সন্তু ছাড়া বাকি সবাই চলে গেলো। রাতটা সন্তুরা গম্বুজে কাটানোর সময় কাকাবাবু জানালেন যে তিনি ওয়ারলেসে আগেই সাহায্য চেয়ে আরো একটি দল পাঠাতে বলেছেন, ওরা দু দিনের মধ্যই চলে আসবে। রাতে হঠাত করেই গম্বুজের লোহার দরজায়া ধুম ধুম করে শব্দ হতে লাগলো। মনে হচ্ছে কেউ দরজা ভাংতে চাইছে, কাকাবাবু বারবার জিজ্ঞাস করতেও বাইরে থেকে কোন জবাব পেলেন না। শেষ পর্যন্ত যখন দরজা পেটার শব্দ থেমে গেল তখন কিছুটা সময় পরে ওরা দরজা খুলতে গিয়ে দেখল তা খোলা যাচ্ছে না। বাইরে থেকে কেউ দরজা তালা মারার হুকের সাথে আটকে দিয়েছে। সন্তুরা ছোট্ট গম্বুজে আটকা পরে গেছে।

কাকাবাবু ওয়ারলেসে হেলিকপ্টার নিয়ে তাদের উদ্ধার করার জন্য বলেছেন, সকালেই একটি হেলিকপ্টার চলে এলো। দুজন সামরিক অফিসার এসে দরজার তালা ভেঙ্গে সন্তুদের উদ্ধার করলেন। গম্বুজ থেকে বেরিয়ে কাকাবাবু দেখলেন সামনেই এক চীনাম্যান মরে পরে আছে। কাকাবাবু দেখলেন এই লোক কম করেও দুদিন আগে মারা গেছে, আর কাকাবাবুর গতকাল যখন এখানে এসেছেন তখন এই মৃতদেহ এখানে ছিল না।

ওরা হেলিকপ্টারে করে মৃত দেহটি কাছের একটি শহরে পাঠিয়ে দিল। হেলিকপ্টার ফিরতে ঘন্টাদুয়েক লাগবে, এই ফাকে কাকাবাবু যেখানে ইয়েটি দেখা গিয়েছিল সেখানে যেতে চাইলেন। ওরা রওনা হবে এমন সময় মিংমা ফিরে এলো। সেও যেতে চায় সন্তুদের সাথে। ওরা সবাই চলল সেই যায়গাতে। যায়গাটার কাছাকাছি যেতে কাকাবাবু অনেকটা পিছিয়ে পরেছিলেন। সমনে থেকে সন্তুরা হঠাত করেই দেখল পেছনে কাকাবাবু নেই। ওরা কাকাবাবুকে খুঁজতে গিয়ে দেখে বরফের উপরে কাকাবাবুর একটা ক্র্যাচ পরে আছে, তার পাশেই কতটুকু রক্ত। কিন্তু কাকাবাবু যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। এদিকে আকাশের অবস্থা খারাপ হতে থাকে তাই সামরিক লোক দুজন হেলিকপ্টার ফিরে এলে বড় সার্চ পাটি নিয়ে আসার জন্য চলে যায়। সন্তু আর মিংমা গম্বুজে থেকে যায়।

পরদিন সকালে সন্তু আর মিংমা যায় কাকাবাবুকে খুঁজতে। ওরা এক যায়গায় নরম বরফর দেখেছিল চোরাবালির মত। সেখানে বরফ খুরে ওরা একটা লোহার দরজা দেখতে পায়। দরজাটি হঠাত খুলে যেতে সন্তু সেখান দিয়ে নিচে পরে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। মিংমা কোন রকমে উপরে উঠে আসে, কিন্তু কোমরে প্রচণ্ড চোট পেয়ে রক্ত ঝরতে থাকে।

কাকাবাবুর জ্ঞান ফেরে একটা গুহার মত যায়গায়। পেছন থেকে কে যেন তার মাথায় বাড়ি দিয়ে তাকে অজ্ঞান করে ফেলেছিল। কিছুক্ষণ পরে সামনে থেকে একটা ইয়েটি কাকাবাবুর দিকে এগিয়ে আসে, কিন্তু কাকাবাবু বুঝতে পারেন যে এটা কোন মানুষ ইয়েটি সেজেছে। কাকাবাবু লোকটিকে কাবু করে ফেললে পরে আরও ৩জন লোক আসে। তারা কাকাবাবুর চোখ বেধে গুহার আরও ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানে চোখ খোলার পরে কাকাবাবু দেখেন সন্তু একটা টেবিলের উপর মরার মত পরে আছে। আসলে সন্তুকে অজ্ঞান অবস্থাতেই ঘুমের ইনজেকশন দেয়া হয়েছে।

সেই যে অভিযাত্রী শিপটন এই এলাকায় এসে অদৃশ্য হয়ে গিয়ে ছিল সে আসলে মারা যায়নি। সে একজন গুপ্তচর, এই এলাকাতে সে কিছু অত্যাধুনিক যন্ত্র বসাচ্ছে। আর দুমাস বাদেই তার কাজ সব শেষ হয়ে যাবে এখানকার।

এই লেখায় গল্পের শেষ অংশটুকু লিখলাম না। তাই কোন স্পয়লার সতর্কতা নেই।



পর্যবেক্ষণ - শেষ মূহুর্তে সন্তু কাকাবাবুর জন্য তার ক্র্যাচ দুটি খুঁজে নিয়ে আসে, কিন্তু কাকাবাবু যখন গায়েব হন তখন বরফের উপরে সন্তুরা কাকাবাবুর একটা ক্র্যাচ দেখতে পায়। তাহলে বন্দিশালায় সন্তু দুটি ক্র্যাচ কি করে খুঁজে পেলো?

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৪

নাবিক সিনবাদ বলেছেন: ভালো লাগলো।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৫

আরজু পনি বলেছেন: গোরখেশপ...কি আসলেই কোন ব্যাস ক্যাম্পের নাম ?
শিপটন কী কারণে যন্ত্র বসাচ্ছে তা আর আপনার কাছ থেকে জানার উপায় রইলো না...বই পড়তেই হবে ।
আপনার পর্যবেক্ষণ থেকে তো দিরেন মাথায় চিন্তা ঢুকিয়ে ।
---------------

নাহ এবার টার্গেট কাকাবাবু। আমার কন্যার পরীক্ষা শেষ হলেই ওকে নিয়ে দোকানে যাব ।

আপনি অনুসারিততে থাকায় ভালোই হয়েছে ।
কন্যা প্যান প্যান করছিল ওকে গল্পের বই কিনে দেবার জন্যে ।
ও ক্লাস টু থেকে পাঞ্জেরীর কিশোর ক্লাসিক পড়া শুরু করে ফোরের মধ্যে সব ক্লাসিক শেষ । এখন জাফর ইকবালের বই পড়ছে। এই দফায় ওকে কাকাবাবু সিরিজ দিব ।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে কাকাবাবু শেয়ার দেবার জন্যে ।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আপনার মেয়ের জন্য আদর।
কাকাবাবু পড়ার জন্য এইটাই ওর সঠিক বয়স আমার মনে হয়।
আমার মেয়ে এখনো রিডিং পড়া শুরু করতে পারে নি, অপেক্ষা আছি কবে শুরু করতে পারবে তার।

৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৭

আরজু পনি বলেছেন: বেসক্যাম্প*

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: বেসক্যাম্প এর বিষয়টা আমিও ঠিক জানি না, তবে সত্যি হওয়াটাই উচিত।

৪| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪০

ঈশান আহম্মেদ বলেছেন: ভাল লাগলো।শেষে কি হল কিছুই তো বললেন না।গল্পটা দেখি পড়াই লাগবে।পিডিএফ লিংক থাকলে দেন প্লিজ...

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: গল্পের নাম লিখে সার্চদেন পেয়ে যাবেন।

৫| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৯

উল্টা দূরবীন বলেছেন: ভালো লাগছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এবং স্বি সাথে আমার ব্লগ থেকে ঘুরে আসার আমন্ত্রণ।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য আর নিমন্ত্রণের জন্য।

৬| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:১৩

আরজু পনি বলেছেন:
Gorkhe শব্দটা খুঁজে পেলাম । নেপালেরই একটা শহর। আর গোরখে ওয়ার্কশপ ও আছে ।
আপনার কন্যার জন্যে অনেক দোয়া রইল ।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আপনার আগ্রহ বা কৌতুহল দেখে খুশী হলাম।

৭| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৮

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: রিভিউ ভালো হয়েছে। +++

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য প্রিয় বোকা মানুষ।

৮| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:০৩

রাশমী বলেছেন: ভাই ধন্যবাদ! মাত্রই পড়লাম। যদি কিছু মনে না করেন আমার শিক্ষার্থীদের জন্যে এই গল্পের সারসংক্ষেপ আমি নিয়ে পড়াতে চাই!

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: কোনো সমস্যা নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.