নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কুয়াশা

কুয়াশা

কুয়াশা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলমানদের সেই সোনালী দিনগুলো আজ কোথায়? \'দুনিয়া কাঁপানো মুসলিম আবিষ্কারক\'

০২ রা নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৬

মুসলিম সভ্যতার ক্রমবিকাশে মুসলিম মনীষীদের অবদান অবিস্মরণীয়। যুগ যুগ ধরে গবেষণা ও সৃষ্টিশীল কাজে তাঁদের একাগ্রতা প্রমাণিত। বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের নিজস্ব ধ্যান-ধারণা সভ্যতার বিকাশকে করেছে আরও গতিশীল। রসায়ন, পদার্থ, জীববিজ্ঞান, কৃষি, চিকিৎসা, জ্যোতির্র্বিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস সর্বত্র ছিল তাঁদের অগ্রণী পদচারণা। বহু মুসলিম বিজ্ঞানী দিগন্ত উন্মোচনকারী আবিষ্কার করে গোটা বিশ্বের চেহারাই বদলে দিয়েছেন। সেসব আবিষ্কার ও গবেষণার আধুনিকীকরণ ঘটেছে, তার সুফল ভোগ করছে আজকের বিশ্ববাসী। দুনিয়া কাঁপানো মুসলিম আবিষ্কারকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজনকে নিয়ে আজকের রকমারি-
জাবির ইবনে হাইয়ান
মুসলিম বিজ্ঞানী জাবির ইবনে হাইয়ান আল-আজদি আস সুফি আল-ওমাবি। আরবের দক্ষিণাংশের বাসিন্দা আজদি গোত্রের হাইয়ান ছিলেন তাঁর পিতা। চিকিৎসক পিতার সন্তান হলেও সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে উমাইয়া খলিফা তাঁর পিতাকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করলে বাল্যকালে তিনি চরম দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হন। শৈশবে কুফায় বসবাস করলেও পিতার মৃত্যুর পর তিনি দক্ষিণ আরবে স্বগোত্রে ফিরে আসেন। কুফায় বসবাসের সময় তিনি রসায়ন শাস্ত্র গবেষণায় বিশেষ মনোযোগী হন। ওই পরিপ্রেক্ষিতে কুফায় একটি রসায়ন গবেষণাগারও প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলিম ঐতিহাসিকরা ওই গবেষণাগারকে পৃথিবীর প্রথম রসায়নাগার বলে অভিহিত করেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে রসায়নের প্রাথমিক প্রক্রিয়াগুলো চর্চা করার উপায় উদ্ভাবন করেন। রসায়ন শাস্ত্রের পাশাপাশি তিনি চিকিৎসা, খনিজ পদার্থ বিশেষত পাথর, দর্শন, যুদ্ধবিদ্যা, জ্যামিতি, জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে অবদান রাখেন। তিনি প্রায় ২ হাজার বই রচনা করেন। এর মধ্যে চিকিৎসা বিষয়ে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৫০০।
আল বিরুনি
পারস্যের মুসলিম মনীষী আবু রায়হান আল বিরুনি। তিনি জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কাটিয়েছেন মধ্য এশিয়ায়। ২০ বছর বয়সে তিনি জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ শুরু করেন। তিন বছর ধরে তিনি গোটা পারস্য চষে বেড়ান এবং বিভিন্ন পন্ডিতের অধীনে পড়ালেখা করে নানা বিষয়ে জ্ঞানার্জন করেন। ৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি জুরজানে (বর্তমানে ‘গুরগান’, উত্তর ইরানের একটি শহর) স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। জীবনের পরবর্তী ১০ বছর তিনি উত্তর ইরানের এই ছোট্ট শহরেই বসবাস করেন। নিজের গবেষণা চালিয়ে যান, বই লিখেন এবং জ্ঞানার্জনে রত থাকেন। আল-বিরুনি ভূবিদ্যার একজন পথিকৃৎ। তিনি শতাধিক বিভিন্ন ধরনের ধাতু এবং রতœপাথর সংগ্রহ করে সেগুলো পরীক্ষা করেন। একাদশ শতাব্দীতে আল বিরুনি তাঁর বর্ণময় কর্ম এবং বিভিন্ন বিষয়ের গবেষণায় নতুন ও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেন। তিনি আবিষ্কার করেন কীভাবে পৃথিবী তার কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান।
স্থিতিবিদ্যা এবং গতিবিদ্যাকে একীভূত করে বলবিদ্যা নামক গবেষণার নতুন ক্ষেত্রের প্রবর্তন করেন।
ইবনে সিনা
৯৮০ খ্রিস্টাব্দে বোখারা শহরে জন্মগ্রহণ করেন বিখ্যাত চিকিৎসাবিজ্ঞানী ও দার্শনিক আবু আলি সিনা। বোখারা শহরটি সে সময় ছিল ইরানের অন্তর্ভুক্ত। ইবনে সিনা তাঁর দর্শন চর্চা করেছেন, বিজ্ঞান চর্চা করেছেন, জোতির্বিজ্ঞান থেকে শুরু করে যুক্তিবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, অঙ্ক ইত্যাদি সব জ্ঞান চর্চা করেছেন। তিনি মাত্র ১৬ বছর বয়সে সমকালীন জ্ঞানী-গুণী, চিকিৎসক এবং মনীষীদের পড়িয়েছেন। ফলে সহজেই বোঝা যায় তিনি ছিলেন সে সময়কার সবচেয়ে বড় চিকিৎসক। কথিত আছে, ইবনে সিনা যখন ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়তেন তখন অমীমাংসিত প্রশ্নগুলো তাঁর মানসপটে স্বপ্নের মতো ভাসত। তাঁর জ্ঞানের দরজা খুলে যেত। ঘুম থেকে উঠে তিনি সমস্যার সমাধান করে ফেলতেন! একজন বিখ্যাত চিকিৎসক হিসেবে সর্বত্র তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি আল মুজমুয়া নামে একটি বিশ্বকোষ রচনা করেন। এর মধ্যে গণিত ছাড়া সব বিষয় লিপিবদ্ধ করেন। ইবনে সিনা পদার্থবিজ্ঞান, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, জ্যামিতি, গণিত, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি ছিলেন তাঁর সময়ে পৃথিবীর সেরা চিকিৎসক।
ওমর খৈয়াম
অনেক ইতিহাসবিদের মতে, সুলতান মাহমুদের মৃত্যুর কিছু আগে ওমর খৈয়াম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ওমর খৈয়ামের শৈশবের কিছু সময় কেটেছে অধুনা আফগানিস্তানের বলখ শহরে। সেখানে তিনি খোরাসানের অন্যতম সেরা শিক্ষক হিসেবে বিবেচিত ইমাম মোয়াফেফক নিশাপুরীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। দিনে জ্যামিতি ও বীজগণিত পড়ানো, সন্ধ্যায় মালিক-শাহর দরবারে পরামর্শ প্রদান এবং রাতে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি জালালি বর্ষপঞ্জি সংশোধন সবটাতে তাঁর নিষ্ঠার কোনো কমতি ছিল না। জীবদ্দশায় ওমরের খ্যাতি ছিল গণিতবিদ হিসেবে। তিনি প্রথম উপবৃত্ত ও বৃত্তের ছেদকের সাহায্যে ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান করেন। ওমরের আর একটি বড় অবদান হলো ইউক্লিডের সমান্তরাল স্বীকার্যের সমালোচনা যা পরবর্তী সময়ে অ-ইউক্লিডীয় জ্যামিতির সূচনা করে। ১০৭০ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পুস্তক মাকালাত ফি আল জার্ব আল মুকাবিলা প্রকাশিত হয়। এই পুস্তকে তিনি ঘাত হিসেবে সমীকরণের শ্রেণিকরণ করেন এবং দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধানের নিয়মাবলি লিপিবদ্ধ করেন। ওমর খৈয়াম জ্যোতির্বিদ হিসেবেও সমধিক পরিচিত ছিলেন।
আল ফারাবি
মুসলিম বিজ্ঞানী ও দার্শনিক আল ফারাবির আসল নাম আবু নাসের মোহাম্মদ ইবনে ফারাখ আল ফারাবি। আল ফারাবির পিতা ছিলেন উচ্চশিক্ষিত এবং সেনাবাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তাঁর পূর্বপুরুষরা ছিলেন পারস্যের অধিবাসী। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ ও রাজনৈতিক কারণে তাঁর পূর্বপুরুষরা পারস্য ত্যাগ করে তুর্কিস্তানে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফারাবায়। সেখানে কয়েক বছর শিক্ষালাভের পর অধিকতর শিক্ষার উদ্দেশ্যে চলে যান বোখারায়।
এরপর উচ্চ শিক্ষালাভের জন্য তিনি গমন করেন বাগদাদে। সেখানে তিনি সুদীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর অধ্যয়ন ও গবেষণা করেন। জ্ঞানের অন্বেষণে তিনি ছুটে গেছেন দামেস্ক, মিসর এবং দেশ-বিদেশের আরও বহু স্থানে। পদার্থবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, দর্শন, যুক্তিশাস্ত্র, গণিতশাস্ত্র, চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রভৃতিতে তাঁর অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে বিজ্ঞান ও দর্শনে তাঁর অবদান ছিল সর্বাধিক। পদার্থবিজ্ঞানে তিনিই ‘শূন্যতার’ অবস্থান প্রমাণ করেছিলেন। দার্শনিক হিসেবে ছিলেন নিয় প্লেটনিস্টদের পর্যায়ে বিবেচিত।
আল বাত্তানি
৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে মেসোপটেমিয়ার অন্তর্গত বাত্তান নামক স্থানে আল বাত্তানি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন অঙ্কশাস্ত্রবিদ এবং একজন জ্যোতির্বিদ। তিনিই সর্বপ্রথম নির্ভুল পরিমাপ করে দেখিয়েছিলেন যে, এক সৌর বছর ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে হয়। তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যে, সূর্যের আপাত ব্যাসার্ধ বাড়ে ও কমে। সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ সম্বন্ধেও তাঁর বক্তব্য ছিল সুস্পষ্ট। আল বাত্তানি তাঁর নিজস্ব উদ্ভাবিত যন্ত্র দিয়ে প্রমাণ করে দিলেন যে, সূর্য তার নিজস্ব কক্ষপথে গতিশীল। এই মহান মনীষী ৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ৭২ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন।
আল বাত্তানি ছিলেন একজন মশহুর জ্যোতির্বিদ এবং গণিতজ্ঞ। তিনি জ্যোতির্বিদ্যা চর্চার জন্য নিজস্ব মানমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বহু বছর ধরে জ্যোতির্বিদ্যায় প্রচলিত ভুলগুলো সংশোধন করে এই শাখার অনেক সংস্কার ও উন্নতিসাধন করেন। পাশ্চাত্য ইতিহাসবিদরা তাঁকে উল্লেখ করেছেন ‘আল বাতেজনিয়াজ’, ‘আল বাতেজনি’, ‘আল বাতেনিয়াজ’ ইত্যাদি নামে। তাই তাঁর পরিচয় অনেকটাই ইতিহাসে হারিয়ে যেতে বসেছে।
মুসা আল খাওয়ারিজমি
তাঁর পুরো নাম আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে মুসা আল খাওয়ারিজমি। সোভিয়েত রাশিয়ার আরব সাগরে পতিত আমু দরিয়ার কাছে একটি দ্বীপে আনুমানিক ৭৮০ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাটিগণিত, বীজগণিত, ভূগোল, জ্যোতির্বিজ্ঞান, জ্যামিতিতে প্রভূত ভূমিকা রাখেন। তবে মূলত বীজগণিতের জন্যই তিনি সবচেয়ে আলোচিত হন। তাঁর ‘আল জিবর ওয়াল মুকাবিলা’ বই থেকে জানা যায়, তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিম। খলিফা মামুনের বিশাল লাইব্রেরিতে আল খাওয়ারিজমি চাকরি গ্রহণ করেন। এখানেই সম্ভবত তিনি বিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। অসীম ধৈর্যসহকারে অধ্যয়ন করে তিনি বিজ্ঞানের যাবতীয় বিষয়ের সঙ্গে পরিচিতি লাভ করেন।
তিনি ছিলেন একজন জগদ্বিখ্যাত গণিতবিদ। তাঁর সময়ের গণিতের জ্ঞানকে তিনি এক অভাবনীয় সমৃদ্ধতর পর্যায়ে নিয়ে যান।
গণিতবিদ হওয়ার পাশাপাশি ছিলেন একজন উল্লেখযোগ্য জ্যোতির্বিদ। ভূগোল বিষয়ে তাঁর প্রজ্ঞা উৎকর্ষতাকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। তিনি ছিলেন বীজগণিত তথা অ্যালজেবরার জনক। তিনি প্রথম তাঁর একটি বইয়ে অ্যালজেবরার নাম উল্লেখ করেন। বইটির নাম হলো ‘আল জাবর ওয়াল মুকাবিলা’।
তিনি বিজ্ঞানবিষয়ক বহু গ্রিক ও ভারতীয় গ্রন্থ আরবিতে অনুবাদ করেন। পাটিগণিত বিষয়ে তিনি একটি বই রচনা করেন, যা পরে ল্যাটিন ভাষায় অনূদিত হয়। তাঁর হাতেই বীজগণিত পরবর্তী সময়ে আরও সমৃদ্ধতর হয়। বর্তমান যুগ পর্যন্ত গণিত বিদ্যায় যে উন্নয়ন এবং এর সহায়তায় বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যে উন্নতি ও আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে তার মূলে রয়েছে আল খাওয়ারিজমির উদ্ভাবিত গণিত বিষয়ক নীতিমালারই বেশি অবদান। তাঁর রচিত বই ‘কিতাব আল জিবর ওয়াল মুকাবিলা’ থেকে বীজগণিতের ইংরেজি নাম অ্যালজেবরা উৎপত্তি লাভ করে।
বিজ্ঞানের সব শাখায় তাঁদের বিচরণ
আল বলখি
মুসলিম জোতির্বিদদের অগ্রগতি ছিল প্রশ্নাতীত। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানেই মুসলিম জোতির্বিদদের সাফল্যের খোঁজ মিলেছিল। তাঁদেরই একজন জাফর ইবনে মুহম্মদ আবু মাশার আল বলখি। তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত পার্সিয়ান জ্যোতির্বিদ, দার্শনিক, গণিতবিদ। তিনি আল ফালাকি, আবুল মাসার, ইবনে বলখি নামেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর কাজ এখনো প্রশংসনীয়।
আল কিন্দি
আবু ইউসুফ ইয়াকুব ইবনে ইসহাক আল কিন্দি ছিলেন কোরআন শরিফ, হাদিস শরিফ, ফিকাহশাস্ত্র, ইতিহাস, দর্শন, ভাষাতত্ত্ব, রাজনীতি, গণিতশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা প্রভৃতি নানা বিষয়ে বিশারদ। তিনি ছিলেন গ্রিক, হিব্র“, ইরানি, সিরিয়াক এমনকি আরবি ভাষাতেও ব্যুৎপত্তিসম্পন্ন। তিনি নানা বিষয়ে ২৬৫ খানা গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর বইগুলো এখনো বহুল পঠিত।
আল সাইগ
প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ, যুক্তিবিদ, দার্শনিক, পদার্থবিদ, মনোবিজ্ঞানী, কবি এবং বিজ্ঞানী আবু বকর মুহম্মদ ইবনে ইয়াহিয়া ইবনে আল সাইগ।
তবে তিনি ইবনে বাজ্জাহ নামে বেশি পরিচিত। তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। উদ্ভিদবিদ হিসেবেও তাঁর সুনাম ছিল। আল সাইগের কবিতাগুলোও প্রশংসাযোগ্য। তাঁর বিখ্যাত বই ‘কিতাব আল নবত’।
ইবনে হাইছাম
প্রখ্যাত পদার্থবিদ, জ্যোতির্বিদ, প্রকৌশলী, গণিতবিদ, চিকিৎসাবিদ, দার্শনিক, মনোবিজ্ঞানী আবু আলী আল হাছান ইবনে আল হাছান আল ইবনে হাইছাম। তিনি বসরায় জন্মগ্রহণ করায় আল বসরি নামেও পরিচিত।
আলোকবিজ্ঞানে অসামান্য সংযোজন ‘কিতাবুল মানাজির’-এর ১৫-১৬ অধ্যায়ে জ্যোতির্বিদ্যার আলোচনা রেখেছেন। এ ছাড়া তাঁর ‘মিযান আল-হিকমাহ’ এবং ‘মাক্বাল ফি দ্য আল-ক্বামার’ গ্রন্থদ্বয়ে তিনি সর্বপ্রথম গাণিতিক জ্যোতির্বিদ্যা এবং পদার্থবিদ্যার সমন্বয় সাধনের চেষ্টা চালান।
আল-রাযি
আবু বকর মোহাম্মদ ইবন যাকারিয়া আল রাযি বা আল-রাযি। তিনি ৮৪১ খ্রিস্টাব্দে ইরানের তেহরানে জন্মগ্রহণ করেন। রাযি ছিলেন একজন দক্ষ পার্সিয়ান চিকিৎসক এবং দার্শনিক। তিনি চিকিৎসাবিদ্যা, আল-কেমি, পদার্থবিদ্যা এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর ১৮৪ টিরও বেশি বই লিখেছেন। তিনি সালফিউরিক অ্যাসিড আবিষ্কার করেন।
তিনি ইথানল উৎপাদন, বিশোধন ও চিকিৎসায় এর ব্যবহার প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন। তিনি একজন বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ছিলেন। তিনি বহু দেশ ভ্রমণ করেন।
বানু মুসা
বানু মুসাকে বলা হয় জোতির্বিদদের মধ্যে বিস্ময়কর একজন। কারণ আর কিছুই নয়, তাঁর সময়ে তিনি যে উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন তা এককথায় অবিশ্বাস্য। নবম শতকে বাগদাদের তিন মনীষীর একজন ছিলেন তিনি। এই তিনজনকে একত্রে বলা হতো মেশিনারি জগতের বিস্ময়। তাঁরা পরিমাপক যন্ত্রের উৎকর্ষ সাধন করেছিলেন। ভিত্তি স্থাপনেও আধুনিকায়ন করেন তাঁরা।
ইবনুন নাফিস
চিকিৎসাবিজ্ঞান ও আইনশাস্ত্রে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। ইবনুন নাফিস মানবদেহে রক্তসঞ্চালন পদ্ধতি, ফুসফুসের সঠিক গঠন পদ্ধতি, শ্বাসনালি, হৃৎপিন্ড, শরীরের শিরা-উপশিরায় বায়ু ও রক্তের প্রবাহ ইত্যাদি সম্পর্কে বিশ্বের জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেন। তিনি মানবদেহে রক্ত চলাচল সম্পর্কে গ্যালেনের মতবাদের ভুল ধরেছিলেন এবং এ সম্পর্কে নিজের মতবাদ সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন।
আল বেতরুগি
নুর আদ-দীন ইবনে ইসহাক আল বেতরুগি। তিনি ইসলামী স্বর্ণযুগে মরক্কোয় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনী খুব বেশি জানা যায়নি। তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ। তিনি ‘স্লেশিয়াল মোশন’ নিয়ে যুগান্তকারী মতবাদ দিয়েছিলেন। তাঁর সীমাবদ্ধতা থাকার পরও তিনি প্লেনটারি মোশন নিয়ে নিজস্ব থিউরি প্রদান করেছিলেন, যা এখন ঠিক।
তানভীর আহমেদ, বাংলাদেশ প্রতিদিন ০৫ই মার্চ ২০২১
তথ্যসূত্র:
Mohammad Mejbaul> IslamWorld Islamic Defence Forum-(WIDF)
©️মুসলিম বিশ্বের ইতিহাস
©History of Islam

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:




আফগানিস্তানে গবেষণা শুরু হয়েছে।

২| ০২ রা নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১১

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: জীবিত অবস্থায় অনেক কে অমুসলিম ঘোষণা করা হয়।এমন সময় আসবে যখন হুমায়ুন আজাদ কে নিয়ে মুসলমানরা গর্ভ করবে যেমন করা হয় নজরুল কে নিয়ে।নজরুল একবার ইলেকশনে দাড়িয়ে ছিলো,তার জামানত বাজেয়াপ্ত করে দেয় কাফের প্রচার করে।

৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৫

নূর আলম হিরণ বলেছেন: ইহুদি,খ্রিস্টান হিন্দুরা কি এমন ইহুদি বিজ্ঞানী, খ্রিস্টান বিজ্ঞানী, হিন্দু বিজ্ঞানী বলে দিনরাত গলা ফাটায়? বিজ্ঞানী হলো বিশেষ ভাবে জ্ঞানী ব্যক্তি তাদের কাজ সকল মানুষের জন্য। ধর্মের ব্র্যাকেটে তাদের আবদ্ধ করা ঠিক নয়।

৪| ০২ রা নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৫৮

জ্যাকেল বলেছেন: মুসলিম বিজ্ঞানি বললে একদল শকুনের গাত্র দাহ হয় কারণ মুসলমানদের হেয় করতে তাদের অর্গ হয়।

৫| ০২ রা নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:০৫

জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: যাদের নাম বললেন, তাদের কেউই কোরান-হাদিসের আলোকে কিছু আবিষ্কার করেননি। যা কিছু করেছেন, তা বিজ্ঞান, যুক্তি ও প্রযুক্তির মাধ্যমে।
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান, ইহুদি বিভিন্ন ধর্মের অনেক বিজ্ঞানীর এ পর্যন্ত অনেক আবিষ্কারের ইতিহাস রয়েছে, কিন্তু আমাদের মতো কজন তাদের সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গীতে উপস্থাপন করেন?
জানামতে কোন ধর্ম কখনোই আবিষ্কার, প্রগতিকে সমর্থন করে না। তারা অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে মগ্নতায় স্বস্তি বোধ করে। কোন কোন সময় তো বিজ্ঞানী, দার্শনিক, সাহিত্যিকগণ ধর্মবেত্তাদের দ্বারা নিগৃহীত ও নিষ্পেষিত হয়েছেন। নয় কি?
আরেকটা কথা, কিছু বক ধার্মিকদের প্রবণতা অন্যকে গালি দেবার। এরা স্থূলভাবে অন্য মতাবলম্বীদের গালী দিয়ে আত্মতৃপ্তি বোধ করে, যা কোন সভ্য মানুষ করে না।

৬| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: মুসলমানদের সোনালী দিন কোনো দিনই ছিলো না। এগুলো কিচঝু ধার্মিক জোর করে প্রচার করতে চায়।

৭| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৪১

*আলবার্ট আইনস্টাইন* বলেছেন: তুর্কি বংশুদ্ভুত জার্মান মুসলিম বিজ্ঞানী ও ডাক্তার উগর শাহীন ও তার স্ত্রী বিজ্ঞানী উজলেম টুরেসি করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন। এতে নাস্তিকদের গাত্রদাহ হবে।

অপার রহস্যের আধার মানবদেহ নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করতে বলেছেন স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা কি নিজেদের নিয়ে ভাববে (চিন্তা-গবেষণা) করবে না?’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত : ২১) আধুনিক বিজ্ঞান-গবেষণায় মানবদেহের বিস্ময়কর সব রহস্য বের হয়ে আসছে, যা বিবেকবান মানুষকে আল্লাহর পথেই ধাবিত করে।

৮| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৫৯

বিটপি বলেছেন: @চাঁদগাজী, আফগানিস্তানে কোন গবেষণা শুরু হয়নি। তারা খাবে কি এই চিন্তায়ই বাঁচেনা - আবার গবেষণা।

@ নুরা, নজরুল যখন সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় আক্রান্ত হয় বিদ্রোহী কবিতা লিখেছিল, তা সাধারণ মুসলিমের অনুভূতিতে আঘাত করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি মরমী কবি আব্বাসউদ্দীনের সংস্পর্শে আসেন, তখন ইসলামের সৌন্দর্য বুঝতে পারেন এবং কাব্য আমপারা ও মরু ভাস্কর নামে দুটি মহাকাব্য লেখায় হাত দেন। তার মর্মস্পর্শী হামদ নাত মুসলিমদের মনের কথা বলে দেয় বলে মুসলিমদের কাজে এগুলো জনপ্রিয়তা পায়। প্রচুর পরিমাণে রোমান্টিক কবিতা ও গান লিখলেও সেগুলোতে অশ্লীলতার ছিটেফোঁটাও ছিলনা।

আর হুমায়ূন আজাদ? তার সাথে কবি নজরুলের তুলনা? ছিঃ! হুমায়ূন আজাদ নজরুলের মলমূত্রেরও যোগ্য না।

@আলবার্ট, তারা তুরস্কে বসে আবিষ্কার করলেও ইসলামের নামগন্ধ খুঁজে পাওয়া যেত। কিন্তু জার্মানীতে বসে আবিষ্কার করায় ইসলামের কোন ক্রেডিট থাকছেনা।

৯| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
জার্মান বিজ্ঞানী ও ডাক্তার উগর শাহীন, উনি তুর্কি নহেন, উনি তুরষ্ক দখলকৃত কুর্দি অঞ্চলের কুর্দি বংশদ্ভুত।
তুর্কিরা বা সৌদিরা কুর্দিদের মুসলিম মনে করে না।
তুরষ্ক কুর্দিদের কচুকাটা শুরু করলে উগর শাহীনের পিতা শিশু শাহীনকে নিয়ে পালিয়ে বিভিন্ন দেশ ঘুরে জার্মানিতে আশ্রয় নেয়।
ওরা আর কখনো তুরষ্কে যায় নি।

১০| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:২১

*আলবার্ট আইনস্টাইন* বলেছেন: ##বিটপি
##হাসান কালবৈশাখী

অধ্যাপক উগর শাহিন তার ধর্ম পরিত্যাগ করে বিধর্মী কিংবা নাস্তিক হয়ে যান নাই।

ইতিহাসের বইয়ে হয়তো অনেকেই পড়েছেন, একবার হালাকু খান বাগদাদে হামলা করেছিলেন। হাজার হাজার মুসলমানকে হত্যার পর তাদের মাথার খুলি দিয়ে মিনার বানিয়েছিলেন। আল্লামা ইকবাল যথার্থ বলেছেন, “এই জাতির লাভ-ক্ষতি একই; সবার নবীও এক; দ্বীন-ঈমানও এক; কাবা-বায়তুল্লাহ ও স্রষ্টা সবই এক; কতই না ভালো হতো যদি সব মুসলমানও এক হতো!”

১১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৫৩

কানিজ রিনা বলেছেন: এই ব্লগেই মুসলিমদেরকে ডাবিয়ে রাখা হয় নানান কূটকৌশলে।
মুসলিমদের ভিতরে কোন বিজ্ঞানী নাই, তাই মুসলিমরা এত পিছিয়ে গিয়েছে। মুসলিমরা অজ্ঞ-মূর্খ বলে নানান রকম তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে এই ব্লগের
নাস্তিকরাই ইহুদী জাতির বড় করে দেখে।
বিজ্ঞান কোত্থেকে শুরু হয়েছে, একটি ছোট শিশুর গাড়ি বানাতে প্রথম একটা কাঠের চাকা দিয়ে মাটির উপরে
টেনে নেওয়া গাড়ি যদি বানানো হয়, সেই চাকা এখন যত যানবাহন বিমান রকেটে ব্যবহার করা হয়। এমন কি মঙ্গল গ্রহে চাঁদে যে সমস্ত যান ব্যবহার করা হয়, সেই ছোট কাঠের চাকা থেকে শুরু, একই সূত্র ধরে নানান রকম অত্যাধুনিক চাকা তৈরি করেছে বিজ্ঞানীরা। তাহলে সেই কাঠের চাকার সূত্রই বড় সূত্র। সেই কাঠের চাকা উদ্ভব করার বিজ্ঞানী কে ছিল তাকে কেউ খুজে পাবে?
কিন্তু সত্য ইতিহাস কখনো থেমে থাকে না। মুসলিম বিজ্ঞানীদের সূত্র ধরে আধুনিক বিজ্ঞানের জয়জয়কার। আপনারা কি একটু ভেবে দেখবেন?
মুসলিম বিজ্ঞানীরা ছাড়া ইউরোপের রেনেসাঁ বিপ্লব কোনদিনই সম্ভব হতো না।
ইসরাইল ইসরাইল ইসরাইল সবচেয়ে আধুনিক বিজ্ঞান বলে আপনারা যে চিল্লামিল্লি করেন? এখন ভেবে দেখার সময় হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.