নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ রাকিবুল হাসান ২০০৪ সালে পটুয়াখালী জেলাধীন বাউফল উপজেলার অন্তর্গত আলকি নদীর তীরে গুলবাগ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নামঃ- মাওঃ মোঃ আব্দুল জলিল। মায়ের নামঃ- মাহমুদা বেগম। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে লেখক তৃতীয়।

মোঃ রাকিবুল হাসান রাকিব ভাই

মোঃ রাকিবুল হাসান ২০০৪ সালে পটুয়াখালী জেলাধীন বাউফল উপজেলার অন্তর্গত আলকি নদীর তীরে গুলবাগ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নামঃ- মাওঃ মোঃ আব্দুল জলিল। মায়ের নামঃ- মাহমুদা বেগম। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে লেখক তৃতীয়। নাজাতের মঞ্চে থেকেই তার লেখালেখির অগ্রযাত্রা শুরু হয়। কুড়িমুকুল, মাসিক বিকাশ, তাবলীগ পত্রিকা, এবং কিশোর আলো পত্রিকায়ও তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে। লেখালেখিতে তিনি অনিয়মিত হলেও তার লেখা অনুগল্প, কাল্পনিকতা ও ছোট কবিতা গুলো খুবই চমকপ্রদ ও ব্যতিক্রমধর্মী। কবিতার জগতেই তাঁর বিচরণ থাকলেও ইসলামী লেখাগুলোতে তার আন্তরিকতা বেশি। শিক্ষা জীবনের বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও দৈনিক পত্রিকা লেখালেখি পরিলক্ষিত হয়। তাঁর লেখা বেশিরভাগ কবিতারই নাগরিক জীবন,বাস্তবতা ও প্রতিবাদীর প্রতিফলন পরিলক্ষিত হয়। লেখক বলেন:- একমাত্র আল্লাহর জন্য লিখে যাচ্ছি। ভালো হচ্ছে না,পাঠক গ্রহণ করছে না। তবুও হ-য-ব-র-ল কিছু লিখে যাচ্ছি। মনে যা আসে তা-ই লিখি,প্রকাশ করি। লৌকিকতা বা লোকো সম্মান পাওয়ার আশায় কখনোই লেখার পিছনে এগিয়ে যায়নি।

মোঃ রাকিবুল হাসান রাকিব ভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প - আমি একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ২ লেখক: ক্ষুদ্রলেখক মোঃ রাকিবুল হাসান

৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:৪০

২. next আমি একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান 3।
গুলবাগ গ্রামের আলতাপ মিয়ার বাড়ি গাড়ি ও দাড়ির সমান প্রাচুর্য। বাউফল থানার সমস্ত পাটের পাটোয়ারী তিনি। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি। কাঁঠাল কোয়ার মত টকটকে রং
তাকে একমাত্র দুঃখ দিয়েছে নিমকহারাম দাঁত ও চুল। প্রথম টা গেছে পড়ে, দ্বিতীয় টা অর্ধেক গেছে উঠে কতেক গেছে পেকে। এই বয়সে এই দুর্ভোগের জন্য তার আফসোসের আর অন্ত নেই। মাথার চুল গুলির অধঃপতন রক্ষা করবার জন্য চেষ্টার ত্রুটি করেনি। কিন্তু কিছুতেই যখন তা রুখতে পারলো না। তখন এই বলে সান্ত্বনা লাভ করলেন যে, সম্রাট সপ্তম এডওয়ার্ড এর টাক ছিল। তার টাকের কথা উঠলে তিনি হেসে বলতেন “টাক বড় লোকদের মাথাতেই পড়ে – কুলি–মজুরের মাথায় টাক পড়ে না।
তা ছাড়া, হিসাব নিকাশ করার জন্য নিকেশ টাক মাথার-ই প্রয়োজন। কিন্তু টাকের এতো ফজিলত থাকার পরও তিনি মাথা থেকে সহজে টুপি নামাতে চাইতেন না।
এ নিয়ে কেউ ঠাট্টা করলে আলতাপ মিয়া বলতেন: “টাক আর টাকা দু’টোই লুকিয়ে রাখতে হয়। নৈলে লোকে বড় নজর দেয়।
আমার সহপাঠী সবুজ আলি। শান্ত শিষ্ট‌ নম্র ভদ্র মানুষ। গরিব শরিফ ঘরের ছেলে দেখে আলতাপ মিয়া তাদের বাড়িতে লজিন রেখেছে বটে। এমন কি পড়ালেখার সমস্ত খরচ যোগান দেয়। তাদের বাড়ি গরু চরানো, বাজার-ঘাট, বদলার খাবার পৌঁছে দেওয়া নেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি কাজ করে থাকে। এখন পৌষ মাস, আমন ধানের ছরাছরি। আলতাপ মিয়া ৩৮ জন বদলা নিয়ে ধানের পালা তুলবে আজ। আম্মা তাদের বাড়িতে বদলাদের জন্য রান্না করার নতুন দায়িত্ব পেলেন।

ভোর হলো, সূর্যের কিরণ আমাদের গৃহে প্রবেশ করেছে। আম্মা পাশের বাড়ির আলতাপ মিয়া থেকে বদলাদের দেয়া মুড়ি খই নিয়ে এসেছেন আমাদের জন্য।
আম্মা বললেন: বাবা! ৭:১৬ বাজ্জে ঘুমে গোনে উঠ ওঠঠ্। পানি দিয়া মুড়ি খই খা। তারপর স্কুলে যা।

আমি তৃতীয় শ্রেণীর পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি। শিশু শ্রেণীতে যখন ভর্তি হলাম তখন পাশের বাড়ির জব্বার পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা শেষ করার কারণে তার স্কুল ড্রেস আমাকে দিলেন। প্রায় চার বছর ধরে একই ড্রেস পরে স্কুলে যাচ্ছি। অনেক কান্নাকাটি করেও গতবছর ঈদে একটি নতুন জামা কিনতে পারি নাই। আব্বা এই বছর নতুন জামার প্রতিশ্রুতি দিলেও আমি আমাদের পরিবারের দৈন্যতা বুঝি।

আমি একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। যাদের কোন চাহিদা থাকতে নেই। বাহির থেকে বোঝার উপায় ছিলনা আমাদের ভেতরের দৈন্যদশা। ছোট বেলা থেকে আমাদের দুটি জিনিস শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। এক, আমরা সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। দুই, আমাদের পেট, তলপেট, উদার, বৃহতন্ত্র, ক্ষুদ্রান্ত্র ক্ষুধার তাড়নায় ফেটে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলেও আমাদের মুখে চাঁদের হাসি লেপ্টে থাকবে।

নতুন পোশাকের কথা ভাবতে ভাবতে স্কুলে চলে আসলাম। অথচ আজকের সকালের ভাত খেতে পারেনি। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে। মুড়ি খই খেয়েই থাকি সকল থেকে দুপুর পর্যন্ত। এমনো হয় দুপুর আর রাত মিলিয়ে সন্ধ্যা ছয়টায় ভাত খেয়ে জীবন ধারণ করি আমাদের পুরো পরিবার। একই জুতা ব্যবহার করছি তিন ভাই। আব্বা ক্লাসে চলে গেছেন। আমার চার মিনিট দেরি হয়েছে আজ। সবাই দেখে হাসতে লাগলো আর কানাকানি করতে লাগলো রাকিব স্যারের ছেলে বলে কিছু বলবে না। কিন্তু আব্বা এই অপরাধের কারণে পুরো ক্লাস কানে ধরে দাঁড়িয়ে রাখলেন এবং চার মিনিটের জন্য আট টি বেত্রাঘাত করলেন। এই জীবনে প্রথম আব্বা আমাকে মারলেন। আব্বা আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমার জন্যই তার বেঁচে থাকা। আমার জন্যই তার স্বপ্ন দেখা। কখনো আমার ক্ষতি হোক, আমি কষ্ট পাই। এটা তিনি সহ্য করতেন না।আমার চোখে পানি থাকুক। এটা তিনি কখনোই চাইতেন না। তারপরও আজকে আমাকে মারলেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.