নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডায়েরী হারিয়ে ফেলি।

ৎৎৎঘূৎৎ

হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা,অল্পবিদ্যা, কুশিক্ষা এবং ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দৃষ্টিকোণ না থাকলে প্রকৃত বাঙ্গালি হওয়া যায় না।

ৎৎৎঘূৎৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি হারাচ্ছি

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০২

-'তোমার জানালার পাশ দিয়ে
কে জ্বালায় দিয়াশলাই,
সারারাত ফুঁকে ফুঁকে
কে ধরায় সিগ্রেট!
এটাই তো লিখেছিলেন 'সাতারূ ও জলকন্যা' বইটার পিছনে?
-তোমার মনে আছে? আমার সৌভাগ্য।
- এই বইয়ে একটা লাইন ছিল শীর্ষেন্দুর
- কি?
- তারাই বেচে থাকে যাদের ভালবাসার মানুষ আছে।
- তুমি পড়েছ?
- কি যে বলেন? আমার বার্থডে তে পাওয়া সেরা গিফট। পড়ব না। অনেক ধাক্কা খেয়েছি বইটা পড়ে। ধন্যবাদ টা দিব না।
- দরকার নেই। তোমার রিকমান্ডেশনের গান টা শুনেছি। শুনছি কেবল। ওভাবে কেন ডাকো আমাকে......
- আমি হারাচ্ছি,বুঝলেন রুপা দি।
- হারাচ্ছ মানে? আবার খেয়েছ?
- হু।পিওর মারিজুয়ানা। কুষ্টিয়া থেকে আনা। গোল্ডেন কালারের। এটা নাকি সিল্কের বস্তায় বেধে রেখে টিনের চালের নিচে রাখা হয়। রোদ্রের তাপ সরাসরি পড়েনা। একমাস পর সোনালী কালার ধারন করে। ইন্টারেস্টিং না?
- ছেড়ে দাও।
- দেখছেন আঙুল ঠিকমত ফেলতে পারছিনা।বানান ভুল হচ্ছে।
-এইমাত্র খেয়েছ?
- হু।আমি যাই
- শোন শোন। এগুলো খেলে কি হয় বলে যাও অন্তত আজ। বানান ভুল সামলে নেব।
- গলা শুকিয়ে যায়।পানি খেতে ইচ্ছে করে।খাই না। সিগারেট খাই বেশী করে।শরীরের সবকয়টা জয়েন্ট ঢিলে হয়ে যায়। এক জায়গায় ঝিম মেরে পাথরের মত বসে থাকতে ইচ্ছে করে।চোখ ঘোলাটে হয়ে আসে।আমি আপনার সাথে পরে চ্যাট করি?
সম্পুর্ন অগ্রাহ্য করে রুপা দি বললেন,
-ভেতরের কি ফিলিংস হয়?

আমি মুচকি হাসলাম।অবজ্ঞার হাসি। ছোট্ট একটা নক করে ফেললেন তিনি।এতদিনে যখন ধরা দেইনি এখন কি আর ধরা দিব রুপা দি? আমার ব্রেন কাজ করা থামানোর আগেই কেটে পড়ব।আপনি ভাবছেন আজকে চাঁদ যাবে কোথায়? সব ফড়ফড় করে উগড়ে দেবে। হা হা হা। জাতে মাতাল তালে ঠিক
কথাটা বোধয় শুনেন নি। আমার দ্বিতীয় ভার্সন বের হতে দশ-বিশ মিনিট দেরী আছে।দায়সারা গোছের জবাব লেখা যায়।লিখলাম,

- আপনার দিকে ঝাড়া ত্রিশ মিনিট মনযোগ দিয়ে তাকিয়ে থাকতে পারব এখন?
- বল কি? তুমি তো ঠিকমত কথাই বলনা মুখের দিকে তাকিয়ে।
-এখন পারব।তা আপনার চোখ যত সুন্দরই হোক না কেন?
এই তো কথা উলটাপালটা বেরুচ্ছে। ব্রেন তার কাজ করা থামাচ্ছে।এখন হার্ট কাজ করা শুরু করবে।নাহ! আর থাকা যায় না।বেফাঁস কিছু বলে ফেললে বিপদ।
- গেলাম রুপা দি। ভাবনার জগতে ডুব দিতে। হুমায়ুন স্যার বলেছেন,মাতালের চিন্তা করতে ভালবাসে।

লিখেই নেট কানেকশন অফ করে দিলাম। সব আবছা।ঘোর।মনে হচ্ছে জোর করে বাস্তবতায় ঢুকতে চাচ্ছি পারছি না। স্যারের ভাষায় টাইম ডায়লেশন হচ্ছে।মনে হচ্ছে যা ঘটছে আমার একহাত সামনে ঘটছে। আমি হাতড়ে সামনে যাচ্ছি কিন্তু পারছিনা। বারবার নিজেকে ক্রমশ সামনে ঠেলছি। কিন্তু পেরে উঠছি না। কয়েকটা মাছির শব্দ কানে আসছে। আমি তো মৃত নই। মাছি উড়ছে কেন?ক্রমাগত পেছনে যাচ্ছি। মনে হচ্ছে মাথায় কেউ ট্রাক ভর্তি বালু ফেলছে। মাথা আরো খালি প্রান্তরে পরিনত হচ্ছে।ট্রাকের শব্দ।এক্সিলারেটরের শব্দ। কি অদ্ভুত ঘোর। একি প্রবল আপত্তি জাগ্রত জীবনে থাকার। আমার বাস্তবতা কল্পনা নিজেদের মত করে সংসার পেতেছে। এত মিল এদের মধ্যে। আলাদা করে কোনটায় ঢুকতে হচ্ছে না। যে যার যার মত মাথায় আসছে এবং চরকির মত ঘুরছে। আরামে চোখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আজ ভাবলাম খানিক ছেড়ে দিই অসংলগ্ন চিন্তাগুলো কে। তারা ভাবুক, যারা সত্যিকারের খারাপ মানুষ তারা বাহিরে যত ভালই সাজুক এই মুহুর্তে একজন নগ্নবক্ষা তার কাছে ভোগ্যাই থাকবে।আর যারা হার্টের কথা শুনে তারা সে নগ্নবক্ষা রমনীকে দেবীই ভাববে। ছিহ! কি মানুষ আর সমাজকে কি চেনাই আমরা।

- কিরে গান ছাড় একটা।লাইট নিভা,দেখবি কি পিনিক( আমার কাছে হচ্ছে পিনিইইইক)
গান বাজছে,,,,,,,,, সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোন শোন পিতা,,,,,,
- উফফ। গানটা চরম রে। শিরোনামহীন নাকিরে,,,,,,( জানার আগ্রহ নেই সত্যিকারে কার গান? শুধুই প্রশ্ন করার করেছে বলে মনে হল)
- দোস্ত, কাল থেকে আমরা এসব ছেড়ে দিব বুঝলি।
আমি বললাম,
-এসব ছেড়ে দিলে তুইইতো আর আসবি না আড্ডায়।
সবাই হো হো করে হেসে উঠল। কাউকেই আর সজাগ মনে হচ্ছে না।সবাই নিজের আলাদা জগতে ঢুকে পড়েছে।কি ভাবছে???

আমি হারাচ্ছি।আমার আমি থেকে ছিটকে যাচ্ছি। দূরে। আরো দূরে। আসলে আমার চোখ বন্ধ হচ্ছে বোধয়।আর আমার মনে হচ্ছে আমি দূরে সরে যাচ্ছি। চিন্তাগুলোর খামখেয়ালিপনা বেড়েই চলেছে। একই সাথে অনেক দৃশ্যের নায়ক আমি। সবই দেখছি কিন্তু কিছুই ছোবেনা এখন আমায়। কিছু জোড়াবিহীন দৃশ্য ভেসে আসছে। সি এন জি। আমার হাত ইনানী বিচের বালুতে রাখা। বালু গুলো দিয়ে সি এন জি টা কে ধরার চেস্টা করছি। কবে উঠেছিলাম এই সি এন জি টায়? স্পেশাল বোধয়? বিচই বা এল কোত্থেকে? মিলছে না। নাম্বার মনে আছে। কেন মনে আছে? ৬০৭৭. ড্রাইভারের চেহারা,,,,,,,ঢাকা মেট্রো 'থ' না 'খ'। বাম পাশে কে? ওহ শ্যামল। হা হা হা। মোবাইল ঠিক করবে বলে গিয়েছিল আমার সাথে। নইলে কেউ বন্ধুর সাথে ডেটে যায় কাবাব মে হাড্ডি হতে? ছিহ! ডান পাশের রমনীর চোখ টা দেখা হয়নি সেদিন। জীবনের প্রথম ডেট তো। লজ্জা ছিল আমারো। স্বীকার করতে দোষ নেই। সি এন জির মিররে যে দেখ যায় বুঝতে পারেনি। নইলে তাও দেখতে দিত না। দূর থেকে শব্দ ভেসে আসছে, আমার ওদেরকে আদর করবে না? আমার,,,,,,,আমার,,,,,,

- ঐ শালা! কই আছিস তুই? কি বিড়বিড় করছিস
- মামাতো পুরাই গেছে রে! আমার আমার করতেছিস ক্যান? কি আমার?
আমি হকচকিয়ে গেলাম। তাড়াতাড়ি বললাম,
- কয়টা বাজে? পরোটা গ্রিল এনেছিলি যে,বের কর? পরে তো রাবার রাবার লাগবে খেতে।
পুরোদমে খাওয়া শুরু হল। মনে এক একটার পেটে ড্রাগন লেভেল ফাইভ ঢুকে গেছে। খেতে খেতে বললাম,
- আর আছেরে সাকিব?
-এত নিতে পারবি তুই? পরে না কিছু হয়?
- ফাকিং এমেচার। নিতে যখন পারিস না খাস ক্যান? ধরা একটা।
- নারে দশটা পঞ্চাশ বাজে। পরে গেট টপকে যেতে হবে। আর এই অবস্থায় গেট আমার দ্বারা হবে না।
কথা শুনে সবাই বলল যে তারা চলে যাবে। আমিও রুমটা খালি চাচ্ছিলাম। বললাম,
- দিয়ে যা তাহলে।
সাকিব দিতে গিয়েও পজ করল।
- দেখিস কিন্তু।

উত্তর দিলাম না। সবাইকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিলাম। তারপর কিছু নিষিদ্ব ধোয়া,,,,,,এক,,,,,, দুই,,,,,, তিন,,,,,,,, ইযযযযযযয,,,,,

- লাগাতে পারছিনা তো
- সমস্যা নেই বাসায় গিয়ে লাগাবো। তুমি নুডুলস এনেছ? আর তোমাকে না বলেছি শাড়ি পড়ে আসবে না। বর্ষার সময় গায়ের সাথে লেপ্টে থাকবে। বাহিরে কি বৃষ্টি। স্টুপিড উইমেন।
- একদিনই তো। চলে যাচ্ছি লন্ডন। তখন কি আর শাড়ি পড়ব? ভাল হয়েছে?
- হু। আন্টি রান্না করে দিয়েছে না?
- ধ্যাত! মা জাস্ট মাংস কেটে দিয়েছে। দেখতো ব্র‍্যাস্লেট টা লেগেছে কিনা?
-বাসায় গিয়ে ট্রাই করব।এদিকে ফেরো। নাকি শেষবারের মতও দেখতে দেবেনা?
- আনইজি লাগলে আমি কি করব?

ওরা কারা? কথাগুলো পরিচিত মনে হচ্ছে।শুনতে ভাল লাগছে। আরো কিছুক্ষন শুনতে হবে। কিন্তু অস্পস্ট হয়ে যাচ্ছে। ধরতে পারছি না। কি নিয়ে কথা বলছিল? আরে সবই দেখি ভুলে বসে আছি? স্বপ্ন দেখছি কি? এটার এই একটা সমস্যা। আর কিছুতেই মনে পড়বে না। এখন কি হবে? আর একটাবার মনের সাথে সমঝোতায় আসলাম,,,,এই শেষ আর না। অহ গড,,,,
একটা স্ক্রীনশট,,,,

'সত্যিটা তাহলে বলেই দেই প্রীতম। মা বলেছে তোমার সাথে যোগাযোগ রাখতে কিন্তু ক্লোজ না হতে। আর শোন আমি বোধয় আর বাংলাদেশে ফিরব না। প্লিজ আমার সাথে থাকোনা বন্ধু হয়ে? আমি এখানে খাপ খাওয়াতে পারছি না'

'কাল তোমার পরীক্ষা। তুমি কি আমার মত পরীক্ষার হলে এসব নিয়ে চিন্তা করতে চাও? গাধা! কোথাকার। আমি সহজ করে দিচ্ছি। আমাকে আরেকবার ক্ষমা করে দিও। তোমার গায়ে আমার স্পর্শ করা উচিত হয়নি।আমার নিজের প্রতি ঘেন্না হচ্ছে। I am sorry.'

'তুমি এটা বলতে পারলে? তুমি আমাকে ভালবেসেছিলে তখন।আমার সর্বস্ব তোমার ছিল। অধিকার ছিল তোমার।'

'খবর নিও না। ভাল থাকবে। খবর নিলে ভুগবে। বাই ভেনাস'

একটা আওয়াজ।ঢিব ঢিব ঢিব। মনে হচ্ছে বুকের পাজর ভেঙে হার্ট টা বের হতে চাচ্ছে। আর নিতে পারছি না। শরীর ঘামে ভিজে গেছে। আমাকে ঘুমাতে হবে। এই যন্ত্রনার থেকে মুক্তির এটাই একমাত্র উপায়। কাল থেকে আর এসব খাবই না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:০৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অসাধারন!
একেবারে অনুভবের গভীরে গিয়ে দেখা লেখা যেন!!!

অফ দা রেকর্ড -লেখার জন্য লেখকরা নাকি প্রাক্টিক্যালে বিশ্বাসী ;) সত্যি নাকি :P =p~ =p~ =p~

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৫৬

ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: বিপদে ফেললেন বুঝলেন। লেখার জন্য অভিজ্ঞতাটা নিতে হয়নি তা বলতে পারি।পরে লেখা হয়েছে। আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.