নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডায়েরী হারিয়ে ফেলি।

ৎৎৎঘূৎৎ

হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা,অল্পবিদ্যা, কুশিক্ষা এবং ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দৃষ্টিকোণ না থাকলে প্রকৃত বাঙ্গালি হওয়া যায় না।

ৎৎৎঘূৎৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্যারানয়েড ট্র্যাভেলার

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৯:২৯

মাকে বলেছিলাম। যদি এদেশের ৯০ % মানুষ সৎ হতো তাহলে আমার এই রোগটা হতো না। আমার এ রোগ টা হয়েছে আমি লাইন ভেঙ্গে ধাক্কা দিয়ে কাউকে পেছনে ফেলে আমার কোন কাজ শেষ করতে পারিনা বিধায় । আমি আমার ফাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছি ঘন্টার পর ঘন্টা। অফিসের ঐ লোকটি দেখেছে যে আমি আগে এসেছি । তারপরেও যে ঐ ফোকরে হাত ঢুকিয়েছে তার কাজ করে দিয়েছে। এ ঘটনা যে কত হলো। কোন বিলের বেলায়, কোন ভাতার বেলায়। কর্মহীন নিরীহ মানুষ বলে মা বুঝেছো, জায়গা ছেড়ে দিয়েছি। কিংবা আমি কেউউ নই বলে জোর করতে পারিনি। মা ও তার ছেলের এই কাপুরুষতায় লজ্জিত হয়েছেন।

আমি বই পড়ুয়া মানুষ। বইতে লেখা এভাবে চলতে হয়, তাই চলতে চেষ্টা করি। কিন্তু তাতে তো পিছিয়ে পড়ছি। সততা , বিনয় আমার অবস্থান অন্যের কাছে হাস্যকর করে তুলছে। ওরা আমাকে দুর্বল ভাবছে। মানুষ যে কতটা ঘৃণ্য হতে পারে ঘর থেকে বেরুলেই দেখতে পাচ্ছি। কত মুখোশধারী মানুষ আছে । আমারো কি মুখোশের অভাব? আমি পর্ন দেখতে ভালবাসি, কিন্তু কোথাও কোন রেইপ কেস দেখতে পেলে রেপিস্টের প্রতি ঘৃণায় ভরে যায় মন। আমি নারীদের সম্মান করি। কোনদিন কাউকে অসম্মান করিনি। অথচ আমি পর্ন দেখি। ওরা কত সুন্দর , আত্মবিশ্বাসী। মুখোশ তো বটেই। একসময় খুব সিগারেট খেতাম। মনে হতো এই বুঝি কনফিডেন্সে ভাসব। দেখলাম খেলার মাঠে আগের চেয়ে কম পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে পড়ছি। সকালে খুব ক্লান্তি লাগছে। ছেড়ে দিলাম। এখন যারা খায় তাদের এড়িয়ে চলি। নিজে ভোর বেলায় হাটতে গিয়ে কেউ যদি ধূমপান করে তার দিকে দেখি , বিরক্তি ভরে তাকাই। এটা কি মুখোশ নয় আমার? কে আমি? সত্যিকারের আমি টা কে?

মানুষের মুখোশ গুলো আমার চেয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভিন্ন হয়। খুব মজা পাই এগুলো দেখে। এই যে ঐদিন , প্রাইমারিতে শিক্ষকতা করি বলে একজন কতো হেলায় কিছু কথা শুনিয়ে গেলো। দুদিন পরেই মঞ্চে উঠে শিক্ষকতা মহান পেশা শীর্ষক ভাষণ দিয়ে দিলেন। আরো বললেন , আদিকাল থেকে শিক্ষকদের কোন বেতন হয়না, তাদের শিষ্যরা খুশী হয়ে যা দেবে তাই তাদের বেতন। সুতরাং শিক্ষকদের বেতন যতো কমই হোক না কেন তা ধর্তব্যের বিষয় নয়। আরেকদিন একজন খুব বললেন, আপনাগো কুত্তা আমার ছেলেরে কামড় দিসে, কি পালেন আজাইরা। তিনিই আবার চায়ের দোকানে পানের পিক ফেলতে ফেলতে বলে ফেললেন, দেখসেন আমি খাওয়াই এইডারে। কোন গাঞ্জাখোর আমার গলি দিয়া আইতারেনা।

একটা সৎ মানুষ দেখলে তার পিছনে পড়ে যাই। কখন সে আপোষ করবে, কখন সে ভাঙবে তা দেখতে। যখন সৎ মানুষটি ভেঙে পড়েন। তা দেখে আমি ক্লান্ত হয়ে হাই তুলতে তুলতে ঘুমোতে যাই। এতো ভানের কি আদৌ কোন দরকার আছে? মানুষ যেহেতু সুযোগ তো নিতেই হবে। অন্তত এদেশে। একদিন বিকেলে এক দম্পতিকে পার্কে বসে চুমু খেতে দেখলাম। ছেলেটি আমার পরিচিত। সদ্য লাঞ্চ করে প্রেয়সীকে একটি ভেজা চুমু খাচ্ছে। অথচ দুদিন আগে অন্য এলাকা থেকে আসায় একটি ছেলের বাইক , মোবাইল, টাকা রেখে দিয়েছিলো। বলেছিল, অনৈতিক কাজ করেছে। আর মেয়েটিকে অপদস্থ করেছে। ফরনিকেশন তার এলাকায় চলবেনা। শালীনতা বজায় রাখতে হবে। তার ব্যাপার টা প্লেটোনিক কিন্তু অন্য ছেলেটির বেলায় তা ফষ্টিনষ্টি । এতো বঞ্চিত বাঞ্চো্‌্‌,এদেশে। এতো অভাব?. কি করবে? অন্যের প্রাপ্তি এ জাতি আগেও মেনে নিতে পারেনি।

মানুষ কবে নিজেরটা দেখবে কে জানে। সে কি পাপ করছে তা বুঝতে পারছেনা? পাপ করলে সে কেনই বা ঢাকছে? তা সঠিকভাবে কেনই বা করছে না। ব্যাংকের একজন ক্যাশিয়ারের মতো যিনি " আপনাদের কাজের জন্য কি নামাজও পড়বো না নাকি?" বলে নামাজ পড়তে গেলেন এবং পড়ে এসে আমার থেকে একাউন্ট খোলার জন্য ২০০ টাকা ঘুষ নিলেন । আমার অবাক হবার ক্ষমতাটা নস্ট না হলে অনেক অবাক হতাম। যেকোন একটা মুখোশে থাকলে কি হয়? আমার মানুষ চেনায় ব্যাপারটা কতো সোজা হয়ে যেতো। এখন আমি খুব ভয় পাই। কেউ আমার সাথে অনেকক্ষণ কথা বললে মনে হয় আমি কি কিছু বলে ফেলেছি যা দিয়ে আমাকে ধ্বংস করে দেয়া সম্ভব? কাউকে বিশ্বাস করাটা শক্ত হয়ে দাড়িয়েছে। কুকুরগুলোর সাথে কেটে যায় সময়। ওরা আমাকে ভয় পায়না। আমিও ভয় পাইনা। মানুষের মুখোশে ভীষণ ভয় পাই। নিজেকে পাই। কখন আবার আমি অপেক্ষকৃত দুর্বলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ি?



- স্যার ও এটা লিখে পাঠিয়েছে। তা থেকে যদি আপনি কিছুটা ধরতে পারেন? সে আপনার কাছে আসতেও ভয় পাচ্ছে। আপনি ওকে কিছুনা কিছুতে ঠকাবেন নাকি!!


সাইকোলজির অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ডানে বামে মাথা নাড়তে নাড়তে বললেন , ২০২০ এর পর মানুষ খুব ভয় পাবে। বিশ্বাস করতে ভুলে যাবে। মানসিক রোগীর সংখ্যা বেশি হবে। তুমি ওর কি হও?

-স্যার ফুফাতো ভাই। ওর মা বলল, একটা ভাল বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে তাই আপনার কাছেই আসছিলাম তাকে নিয়ে। হঠাত সাইকোটিক ব্রেকডাউনের মতো হয়েছে বোধয়। বলেছে আপনার কাছে আসতেও নাকি ভয় পাচ্ছে। এরপর বাস জ্যামে ছিলো , তা থেকে নেমে হেটে চলে গেলো আমাকে ফেলে। আমার এই ভাইটা একটু অদ্ভুত স্যার।

- একা চলে গেলো? ভয় পায়নি? হা হা হা।

-স্যার ,অদ্ভুত ব্যাপার কি জানেন স্যার? ও একা থাকলে ভয় পায় না।



মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: খুবই সুন্দর লিখেছেন। লেখা পড়ে আরাম পেয়েছি। একটুও বিরক্ত লাগে নি।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:০৩

ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনাকে সাধু প্রকৃতির মানুষ মনে হয়। কিছু বৈরাগ্য কি আছে?? ভাল থাকবেন।

২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:০৭

নূর আলম হিরণ বলেছেন: জীবন বাস্তবতা দিনদিন এমনই হয়ে যাচ্ছে।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:০৪

ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: আমার লেখার চরিত্রের মতো মানুষেরা অসহায় হয়ে যাচ্ছে। খারাপ লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩০

তোমার দখিনা হাওয়া বলেছেন: খুবই সুন্দর লিখেছেন ভাই

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৯:২৪

ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.