নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডায়েরী হারিয়ে ফেলি।

ৎৎৎঘূৎৎ

হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা,অল্পবিদ্যা, কুশিক্ষা এবং ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দৃষ্টিকোণ না থাকলে প্রকৃত বাঙ্গালি হওয়া যায় না।

ৎৎৎঘূৎৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ স্পেশাল দিন!!!

০৮ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:৫৩






---- ঘুরতে এসেছেন বুঝি?
---- আপনি কে? আপনাকে কেন বলবো কি করতে এসেছি?
---- না। দুঃখিত আমাকে বলতে হবে না। আজকে আমার মনে যা চায় তাই করব বলে ঠিক করেছি। তাই জিজ্ঞেস করে ফেললাম। মূলত আমি এমন নই।
---- কোথাও একটু,,,,,
---- চলে যাচ্ছি।
---- বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে।
---- তাতে কি। একজন তার মতো করে থাকতে পারবে না?
---- এই,,, এই,,থাক আপনি দাঁড়ান এখানে।
---- ধন্যবাদ। একা বসে আছেন যে?
---- পস্তাতে হবে বুঝছি।
---- আমি একটা গল্প বলি?
---- না না চুপ করে বসুন। বৃষ্টি কমলে সরে যাবেন।
---- শোনেন না কি হলো,, একাই তো বসে আছেন। ওরা তো দূরে। নতুন অভিজ্ঞতা হবে,,
---- না করলেও তো আপনি শোনাবেন তাইনা?
---- গতকাল বিকেলে ডাক্তার রিপোর্ট দিয়েছে বুঝলেন। কত কি যে লেখা যার বাংলা করলে দাঁড়ায়, আমি খুব ভীতু। আমি মানুষের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারিনা। কিছু কাজ খুব বেশি বেশি করি, পুনরায় করি আর কি, বারবার। খুব ভুল করি কিন্তু বারবার করি।
---- কী?
---- বুঝতে পারছেন না। বাংলাকে সবাই ভুলতে বসেছে। ইংরেজিতে বললে বুঝবেন। এডজাস্টমেন্ট ডিসর্ডার, এক্সক্লুসিভ ফিয়ার, অফসেসিভ কম্পালসিড ডিসঅর্ডার। তার উপর বড় বড় অক্ষরে লেখা আনএমপ্লয়েড। বেকারত্ব আমার কোন বড় সমস্যা নয়। তাও ডাক্তার বড় বড় করে লিখে দিল। আমার ঘুমের সমস্যা নেই। তাও ডাক্তার লিখে দিলেন পুওর স্লিপ । আরো লিখলেন সেনসিটিভিটি টু নয়েজ। এটা আবার সত্য । মাঝে মাঝে আমি রবীন্দ্রনাথ শুনতে পছন্দ করি না জানেন।
---- কি বলেন?
---- হ্যা,,,,,। ভাবলাম যথেষ্ট হয়েছে। অফিসিয়ালি আমি মানসিক সমস্যায় ভুগছি। এভাবে চলাফেরা করে মানসিক স্কেলে আমি উতরে যেতে পারিনি। একদিন শৈশবের মত বাঁচতে হবে। নিজেকে সুস্থ করে তুলতে হলেও। ভোরবেলা উঠলাম।সূর্য ওঠার আগেই। বেশি দেরি হয়ে গেলে আমার মস্তিষ্ক খুব বেশি চিন্তা করা শুরু করবে। মাথা কিছুটা ঘোলা থাকতেই বের হয়ে পড়তে হবে। তাই করলাম। হাটা শুরু। আচ্ছা বৃস্টি কমেছে। আপনার বন্ধুদের কাছে চলে যান, ওরা না? ঐ ছাউনিতে?
---- অর্ধেক রেখে যাবো গল্প? বাকীটা বলেন,,,,,,
---- গল্প?? হা হা হা । আচ্ছা। তো ঠিক করলাম পাশের অনেক দূরে অবস্থিত ওই নদীটার কাছে যাব। মানে এই নদীটা আর কি। ৩৯ কিলোমিটার কিন্তু। বিকেল হয়ে যেতে পারে। কিংবা পরের দিন। অতো ভাবলাম না। আজকের দিনটা না ভেবে সামনে এগোতে হবে। এখন কয়টা বাজে?
---- সাড়ে এগারোটা। এত তাড়াতাড়ি পৌঁছলেন কিভাবে?
---- মজার ব্যাপার হলো যখন সাহায্য খুব দরকার ছিল তখন চলে গিয়েছে বন্ধুরা, পুরাতন প্রেমিকারা। আর আজ না চাইতেই একজন তুলে নিলেন। কিছু জিজ্ঞাসা করেননি জানেন। হঠাৎ বললেন, উঠেন। আমিও উঠে পড়লাম। বললাম নদীতে যাব। আর কিছু জিজ্ঞেস করলেন না।
ব্যাপারটা আমাকে অনেক আবেগাপ্লুত করে ফেলেছে।মনে মনে ওই ব্যক্তির কাছে ভিক্ষা চেয়েছি। আমাকে রক্ষা করুন।
---- উনি কী করবেন?
---- ব্যাপারটা আপনার কাছে হাস্যকর মনে হতে পারে। বাদাম খাবেন?
---- ইউ আর সো র‍্যান্ডম।
---- আসলে অনেকদিন পর অনেক কথা বলছি। জাম্প করছি, না? যাই হোক বাদাম খান। অবশ্য আমার পকেটে ঘর্মাক্ত বাদাম খেতে যদি আপত্তি না হয়। ছোটবেলার মতো আগের রাতে ভাজা বাদাম পকেট ভর্তি করে নিয়ে বেরিয়েছি। খুব ভালো লাগলো। নিজেকে ধনী মনে হলো। এখন থেকে আমি এটাই করব। বাদামগুলো থাকলো এখানে বুঝছেন। ওই যে বাচ্চাগুলো দেখছেন, ওদের সাথে আমি কিছুক্ষণ ফুটবল খেলব।
---- বৃষ্টি পড়ছে তো।
---- এজন্যই যাব
---- বিজলি চমকাচ্ছে।
---- এজন্যই যাব।

এমন সময় প্রতীক এসে জিজ্ঞেস করল, ইরা,,,, বলছিলি কি ওই লোকটার সাথে।
---- বাদাম খাবি?উনি দিয়ে গেছেন।
---- মতলব ভালো না। একা পেয়ে তোকে পটাতে চাচ্ছে বোধহয়। এগুলোর সাথে খেলে এই বয়সে কেউ?
---- উনি কিভাবে জানলো?
---- কি জানলো?
---- আমার এত সমস্যা কিভাবে জানলো?
---- তোর কি সমস্যা। চল ওখানে যাই। সবাই ওখানে।
----আমাদের গাড়িতে ওনাকে নেয়া যাবে?
---- মানে? তোর মাথা খারাপ? চিনিনা জানিনা কোথায় যাবে না যাবে?,,,হ্যা?
---- শহরে নামিয়ে দেব।
---- কি আবোল তাবোল বলছিস? চিনি না জানি না,,,
----তুই বললে হবে। ম্যানেজ কর একটু,,,
---- কিহ,,,! আচ্ছা দেখা যাবে এখন চল।

************************************************
---- এই যে শুনছেন?,,,, হ্যালোওওও,,,,,
---- বলুন।
---- বিকেল শেষ হয়ে আসছে। আর কতক্ষণ থাকবেন নৌকায়? আর নৌকা তো কেউ চালাচ্ছেনা। তীরে নৌকা ভ্রমণ?
----মাঝি কিছু বললো না। আজ সবাই রাজি হয়ে যাচ্ছে। আজ স্পেশাল দিন।
---- আমাদের সাথে যাবেন? চলুন, যাবার পথে নামিয়ে দিয়ে যাবো।
---- উহু। আপনারা যান।
---- আজ স্পেশাল দিন কেন?
---- এমনি। শুনুন,,,,
---- গেট ইন টু ট্রাভল ইয়াং লেডি। ফেস ইয়োর ফিয়ার ফার্স্ট। কম্ফোর্টজোন থেকে বের হতে চেস্টা করুন।

বাসায় আসার পরের দিন। ইরা সকালে কফি হাতে জানলার পাশে বসে আছে। নিউজফিড চেক করতেই খবরটি চোখে পড়লো। মেঘনার তীরে একজনের মৃতদেহ ভেসে এসেছে। আর্লি থার্টি। পরনের কাপড়, চোখে সুতোয় আটকানো চশমা,,,,,, নাহ! সব বিবরণ মিলে যায়। তার মাথায় বাজতে থাকে,,,,
,,,,,,,আজ স্পেশাল দিন,,,,,গেট ইনটু ট্রাভল ইয়াং লেডি,,,,,আজ সবাই রাজি হয়ে যাচ্ছে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।
ভালো লেগেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.