![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
**গল্পটি আদিবার বাবার**
.
লেখক: ব্লগার নাঈম
.
-কিরে জানিস আদিবা তো আবার বাংলাদেশ এ চলে
আসছে।
- কবে আসছে।
- পরশু দিন মনে হয়। শুনলাম আদিবা বাবা নাকি অসুস্থ
ধানমন্ডিতে ল্যাব আইড হাসপাতালে ভর্তি আছে।
- কাল আদিবার ফ্রেন্ড রা দেখতে যাবে তুই যাবি
নাকি?
- দেখি।
- কি ব্যাপার নাদিম তুই অনেক চেঞ্জ হয়ে গেছিস।
কিছুদিন আগে আদিবা বাংলাদেশ এসে তোকে
পাগলের মত খুজলো।তুই দেখা করলি না।
মেয়েটা যাবার সময় ও ওর সাথে দেখা করছি না। কি
হইছে তোর বলতো আমায়।
- কিছু না। আমার যেতে হবে কাজ আছে।
......
আমি উঠে চলে আসতে লাগলাম।আদিবার সাথে
আমি দেখা করছিলাম সেটা ও জানে না। মেয়েটার
ভালবাসাকে না করে দিছিলাম। অনেক কেঁদেছিল।
কি ভাবে ওর সামনে দাড়াবো।
কিন্ত আদিবার বাবাকে একবার দেখে আসতে
হবে। মানুষ টা আমায় অনেক পছন্দ করে।
...একবার আদিবার জন্মদিনে আমাদের সবাইকে
দাওয়াত দেয়। আমি প্রথম সেদিন আদিবাদের বাসায়
যাই। আদিবারা খুবী ধনী। অনেক অনিচ্ছা
সত্ত্বেও আমায় যেতে হয় বন্ধুদের
জোরাজোরিতে। সবাই আনন্দ করছিল। আমি এক
পাশে বসে ছিলাম। তখন আমার পাশে মধ্য বয়সী
এক লোক বসলো। আমি বুঝতে পারি নি তিনি
আদিবার বাবা। লোকটা দেখে এখনো ৪০
বছরের যুবকের মত মনে হয় কিন্তু বয়স ৬০+
হবে।
-কি ব্যাপার তুমি এখানে বসে আছো যে ওদের
সাথে আনন্দ কর।
-না। আনকেল আমার এগুলো ভাল লাগে না।
-কি নাম তোমার?
-জি আমি নাদিম।আদিবার সাথে পড়ি।
-জানো নাদিম! আমাদের সময় টায় আমরা খুব ইঞ্জয়
করতাম। বন্ধুদের সাথে আড্ডা, ফান, ঘুরে
বেড়াতাম। আমাদের পরিবার খুব ভাল ছিল তাই পরিবার
থেকে চাপ পরতো না।লাইফ নিয়ে চিন্তা ছিল না।
কিন্তু সবার তো আমার মত নয়। একটা সময় বন্ধুরা
নিজেদের মত লাইফ সাজিয়ে নিতে থাকে।আমিও
আমার বাবার ব্যবসা নেমে যাই। বন্ধুদের সাথে
দূরত্ব সৃষ্টি হতে থাকে। এরপর বিয়ে
ছেলেমেয়ে হয়। ওদের বড় করি। ওরা বাংলাদেশ
এর বাহিরে চলে যায় পড়াশুনা করতে। আমি আদিবার
আম্মু আর আদিবা ছিলাম। এখন আবার আদিবা ও চলে
যাবে নাকি। তখন আমি আর আদিবার মা একাকীত্ব
সময় পার করবো। বুকে ভেঙে আসে মাঝে
মাঝে। কোথায় গেল সেই সময় গুলো।
.....
আদিবার বাবার চোখে জল চলে এল। বৃদ্ধ
মানুষের চোখের জল বিরক্ত লাগে আমার। কি
বলবো আমি। অনেক কথা হল সেদিন মাঝে
মাঝে সে আমাকে ডাকতো আড্ডা দেয়ার জন্য
মাঝে মাঝে ঘুরতে বের হতাম আমরা। তিনি তার
পুরনো সৃতির জায়গা গুলো ঘুরে বেড়াতো।
আমারো ভালো লাগতো।
-জানো নাদিম তোমায় আমার ভাল লাগে কেন?
- কেন আনকেল?
- তুমি খুব সহজেই মানুষের সাথে মিশতে পারো,
খুব সৎ এবং সরল।
-আনকেল গরীব ঘরের ছেলেরা এমনি হয়।
কারন তারা জানে কস্ট কাকে বলে।
.... প্রায় আড্ডা দিতাম আমরা। তারপর আস্তে
আস্তে আমার যাওয়া টা কমে যায়। আদিবা চলে যাবার
পর যাওয়াই হত না।
......
বিকাল ৫ টা আমি হাসপাতালে গেলাম। রুমন এর কাছ
থেকে সব তথ্য নিয়েছিলাম। ভি আই পি হাসপাতাল।
এই হাসপাতাল বড় লোকদের জন্য গরীবদের
জন্য নয়। দরজায় নক করলাম আদিবা দরজা খুলে
দিলে আনকেল বেডে শুয়ে আছে। সব কিছু
সাজানো যেন হাসপাতাল নয় নিজের বেডরুম এ
আছে। আন্টি বলল বস বাবা। আমি আনকেল এর
পাশে বসলাম মানুষ খুব শুকিয়ে গেছে। অসুস্থতা
জন্য চোখ গুলো কেন জানি এক মায়াবী রুপ
ধারন করছে। যে চোখের পানে তাকালে কস্ট
হয়।
...
-কেমন আছেন আনকেল?
-আগের থেকে ভাল তুমি?
- এই তো।
-আদিবাকে তোমার কথা বলছিলাম। তোমার সাথে
একবার দেখা করার খুব ইচ্ছে ছিল।তোমার কথা
প্রায় মনে পরতো। তুমি খুব ভাল ছেলে। নাদিম
একটা কথা মনে রাখবা কখনো হতাশ হবা না।আল্লাহ্
উপর ভরশা রাখবা। তুমি জিবনে উন্নতি করতে পারবা।
ধনী গরীব সবাই আল্লাহতালার সৃষ্টি।
..
অনেকক্ষন কথা হল।আদিবা একবার ও আমার দিকে
তাকালো না জানি খুব অভিমান করে আছে মেয়েটা
আমার উপর।আদিবা রুম থেকে বের গেল।আমি
কিছুক্ষন থেকে বিদায় নিয়ে বের হলাম।
আদিবার হাসপাতালে বসার স্থানে বসে আছে
আমায় দেখে উঠে দারালো। আমি ওর কাছে
গেলাম।
-কেমন আছো আদিবা।
- আল্লাহ্ যেমন রাখছে। রাগ করে আছো আমার
উপর?
- রাগ? কার উপর আর কেনইবা করবো..
হঠাৎ আদিবার ভাবি আদিবাকে ডাক দিল এই আদিবা কি
করসিস।
আদিবা- আব্বুর কাছে যাও আসছি আমি।
ওকে বাই বলে চলে এলাম। মেয়েটা আমার উপর
রাগ করাটা স্বাভাবিক। মেয়েটা আমাকে এখনো
অনেক ভালবাসে। কিন্তু আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
কারন আমি গরীব।...
....
৪ দিনের দিন রুমন ফোন দিল।
-নাদিম আদিবার বাবা তো মারা গেছে?
- কখন কাল রাতে?
-মন টা খারাপ হয়ে গেল। কিছু বললাম না আর ওকে।
ফোন টা কেটে দিলাম..
খুব ইচ্ছে করছে মানুষ টাকে একবার দেখতে
কিন্তু আমি যাবো না.....কেন জানি চোখের
কোনে জল জমে আসছে আমার.......
(এটা আদিবার গল্পের ৩য় গল্প। *বালিকাটির নীল রঙা
স্বপ্ন* এবং আদিবার গল্প টি পরলে গল্পটা মজাটা
পাবেন। আর হা গল্পটা কাল্পনিক )
©somewhere in net ltd.