নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১

সালাউদ্দিন রাব্বী

রাবব১৯৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্ষমা চাইতে হবে।

২০ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৭:৪৭

পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতেই হবে।

মায়ের কাছে শোনা– গল্প নয়, সত্য– দুবছর বয়সী নাতির পেট বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে চিরে নাড়িভূড়ি বের করে দাদিকে দেখিয়ে ছেলের মুক্তিযুদ্ধে যাবার প্রতিশোধ নিয়েছিল পাকিস্তানি আর্মি অফিসার। মাকে ধর্ষণ করার পর কোলের তিন মাস বয়সী শিশুকে আছড়ে মেরে, বুট দিয়ে পিষে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি সেনা। এ রকম হাজার হাজার শিশুহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে।

এক কোটির মতো মানুষকে শরণার্থী করে– না খেতে পেয়ে, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুসম জীবনের অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্যও পাকিস্তানকে

হিন্দু নারীদের জোর করে সিঁদুর মুছিয়ে দেওয়া, কলেমা পড়িয়ে ধর্মান্তরিত করা, ধর্মনির্বিশেষে পুরুষদের রাস্তায় কাপড় খুলে ১মুসলমান’ কি না যাচাইয়ের মতো তীব্র অপমানজনক মানবতাবিরোধী আচরণের জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে।

চুয়াল্লিশ বছর পরও নিজ দেশের একের পর এক নতুন প্রজন্মের কাছে পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে ১৯৭১এর পূর্ববর্তী, ১৯৭১কালীন এবং পরবর্তীকালের বিকৃত, ভুল ও বাংলাদেশ সম্পর্কে অমর্যাদাকর মিথ্যা ইতিহাস শিখিয়ে বাংলাদেশকে অপমান করার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে।

নিজ নিজ দেশের দূতাবাসের কূটনীতিকদের নিয়ে যে নাটক আমরা দেখেছি সর্বশেষ, তখনও দাবি উঠেছিল পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানের সঙ্গে অ্যাকাডেমিক সম্পর্ক রাখবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। যদিও বাংলাদেশ সরকার পর্যবেক্ষণমূলকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চালিয়ে যাবার কথা বলেছে।

খোদ পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবীদের একাংশ ও সচেতন ব্যক্তিরা অনেক কাল ধরে একাত্তরে বাংলাদেশে পাকিস্তানের ভূমিকার বিষয়ে ক্ষমা চাওয়া নিয়ে সোচ্চার। বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে পাকিস্তানের মায়া এবং সে দেশের বুদ্ধিজীবী মহলের স্টেইটমেন্ট এটাই প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট যে, পাকিস্তান আসলেই নিকৃষ্টতম অন্যায় করেছে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের কাছে বাংলাদেশ ক্ষমা চাওয়ার দাবিদার।

পাকিস্তানের অপরাধ তো আসলে বহুমাত্রিক। নানা ভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে তারা বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রাটর বিরুদ্ধে। গণমাধ্যমে কিছু দিন পর পর বিদেশি মুদ্রা এবং জাল মুদ্রা পাচারের বড় বড় যে খবর পাওয়া যায় তার সবই পাকিস্তানি নাগরিকদের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন জাগে, বাংলাদেশে বসে দূতাবাসের উচ্চ পর্যাযের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন পাকিন্তানি কূটনীতিকের পক্ষে কীভাবে জঙ্গিবাদে সহায়তা দানের অভিযোগ আসে? তবে কি কোনো দুর্বল মুহূর্তের অপেক্ষায় আছি আমরা যার অবসরে পাকিন্তানের ইন্ধনে আরও বড় কোনো নাশকতা ঘটবে?

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলে বাংলাদেশের গায়ে যতটুক না আঁচ লাগবে, তার চেয়ে বড় ক্ষতি হবে ওদের। প্রতি বছর কত জন বাংলাদেশি ব্যবসা-বাণিজ্য বা অন্যান্য কারণে পাকিস্তানে যান আর তার বিপরীতে কত হাজার পাকিস্তানিকে শিক্ষা, বাণিজ্যসহ আরও অসংখ্য কাজে বাংলাদেশে আসতে হয়, সে হিসাব নিলেই বোঝা যাবে।

সব কিছুর পরেও, একজন নারী হিসেবে কেবল একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের চালানো নারী-নিপীড়নের ঘটনাগুলোর জন্যও দেশটিকে কখনও ক্ষমা করা যায় না। যতদূর জানি, ইতিহাসে আর কোনো যুদ্ধে বিপক্ষ শক্তির দ্বারা আর কোনো দেশের নারীদের এত নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়নি। ড. নীলিমা ইব্রাহিমের ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’ বইটির পাতা থেকে উঠে আসা নারীদের ভাষ্যে যে নৃশংস অত্যাচারের মর্মন্তুদ বিবরণ দেখা যায়, শুধুমাত্র এ অপরাধের কারণেও তো তাদের হাজার বার ফাঁসি দিতে চাওয়ার মতো তীব্র আক্রোশ জমে মস্তিষ্কে।

পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতেই হবে। সেটাই হোক আমাদের রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার

সংগৃহীত

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.