নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য ঘাটাঘাটি করছি।

সিয়াম রায়হান নাফিস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য ঘাটাঘাটি করছি

সিয়াম রায়হান নাফিস › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাবি ছাত্র হল বিষয়ক আলাপ

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১৯

জাবির শিক্ষার্থী হিসেবে আমি আপনি সবাই জানি জাবিতে ছাত্র হলগুলো মোটামুটি ক্ষমতাসীন দলের হাতে। হাতে বলা ভুল, দখলে। যেখানে প্রতি সেশন শুরু হলে নতুন শিক্ষার্থীদের "গণরুম" নামক এক জায়গায় পরবর্তী ৭-৮ মাস নানা রকম মিলিটারি ট্রেইনিং দেওয়া হয় বলে জানা যায়। যারা সারভাইভ করে তারাই হলে "রুম" নামক ফ্যান্টাসি অবশেষে হাতে পায় অথচ প্রতিটা ছাত্রের অধিকার আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তার সিট পাওয়ার।
মোটামুটি ক্যাম্পাসের প্রতিটা ছাত্র,শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ব্যাপারগুলা জানে। কিন্তু আমি ক্যাম্পাসে পা রাখার প্রথম দিন থেকেই দেখছি সবাই চোখ বন্ধ করে "ব্যাপারগুলা" মেনে নিচ্ছে বা এড়িয়ে যাচ্ছে। আর আপনি যদি ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে ক্লাস করেন এবং এসব নিয়ে প্রশ্ন করেন তাহলে আপনাকে বলা হবে আপনি এই ক্যাম্পাসের অংশ ই না, আপনি তো "ব্যাপারগুলা" বুঝেন ই না, তাহলে কেন এসব নিয়ে কথা বলে পাপ করছেন। এটা জাবি। এখানকার রীতিনীতি তুমি বুঝবা না। এবং প্রতিটা মানুষ এই গত কয়েক বছরে এই লেয়াজু বৃত্তিক স্ট্রাকচারে বন্দি হয়ে গিয়েছে। এবং সব কিছুকেই স্বাভাবিক মেনে নিতে শিখে গেছে।
ভাই! আমি দাবি করতে পারব যে আপনার চেয়ে আমার বেশি আপনজন এই জাবি তে হলে থেকেই পড়াশোনা করে পাস করেছে। তার উপর আমার নানী বাড়ি এই এলাকায়। এবং সব কিছু মিলেই আমি দাবি করতে পারি আপনার চেয়ে আমি এই ক্যাম্পাস এবং তার "ব্যাপারগুলা" এর সাথে বেশি পরিচিত এবং সেই ছোট বেলা থেকে পরিচিত।
এই ক্যাম্পাসে কোনদিনই এই "ব্যাপারগুলা" ছিল না। এই গণরুম নামক মিলিটারি ক্যাম্প ছিল না যেখানে তাকে শেখানো হয় তার "হল" দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ হল আর কোন হল এই দুনিয়ায় কেন আখিরাতেও নাই।
এই উগ্র Hallism বা নিজের অস্তিত্বের সংকট ঢাকতে এসব fanaticism বা মুখ চোখ বুঁজে সব কিছু কে জাবির "ব্যাপারগুলা" বলে চালিয়ে দেওয়া কখনোই জাবির ব্যাপার ছিল না।
এই ক্যাম্পাস সব সময় লড়াই আন্দোলনের চারণভূমি ছিল। আগেও ক্ষমতাসীন রাজনীতি ছিল,মারামারি, হল দখল ছিল। কিন্তু রাজনীতির "ব্যাপারগুলা" অন্য কিছু কে হ্যাম্পার করত না।
এবং যেকোন যৌক্তিক দাবিতে পলিটিকাল বা নন পলিটিকাল সবাই এক জায়গায় এসে আন্দোলন করত।
হলিজম বলে কিছু ছিল না। ক্যাম্পাসের প্রতিটি মানুষ সবাই একে অপরকে চিনত।
ক্যাম্পাস সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত ছিল। মুক্তমঞ্চের অনুষ্ঠান কিংবা দর্শক এখনো কলুষিত হয় নি বলে বলব। কিন্তু বিভিন্ন হল শোডাউন নিয়ে মিছিল করে এসে অনুষ্ঠান চলাকালীন মঞ্চে বিশৃঙ্খলা করা এসব "ব্যাপারগুলা" জাবির অংশ ছিল না।
এখনকার "ব্যাপারগুলার" মতো না যে শুধু তোমার হল কিংবা তোমার বিভাগ কিংবা তোমার ইমিডিয়েট সিনিয়র ব্যাচকেই গুনবা বাকি সবাই তো বাল ছাল, তাই না?
আর যারা ক্যাম্পাসের বাইরে থাকে, ঢাকা থেকে ক্লাস করে তারা তো এই মহান "আবাসিক" বিশ্ববিদ্যালয় এর অংশই না।
কিন্তু ক্যাম্পাসের বাইরের যারা পড়ে ভাবছেন জাবি তো এমনই, উগ্র র‍্যাগিং, নারী নিপীড়ন, ঘাপাঘাপি, ঝাঁপাঝাঁপি, মাংস সিদ্ধ বা কষানোর মত প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর চিন্তা বাদ দেন। যত ঝামেলাই থাকুক এই ক্যাম্পাসে কোন নারী নিপীড়ক পার পেয়ে গেছে এমন ঘটনা ইতিহাসে নেই। আপনার লালা ঝরানো প্রোপাগান্ডা মেশিন চালু কইরেন না।
যেখান থেকে এত কথা শুরু। বেশ কয়েক মাস আগে শুনেছিলাম ছাত্রী হলগুলোতে নাকি হল সংসদ করার পরিকল্পনা চলছে। শুনে খুশি হয়েছিলাম যে ছাত্রীহল গুলো তাহলে মুক্ত থাকবে। সেটা কিছু হলো না। তার উপর শুনলাম যে দুইটা ছাত্রীহলে ক্ষমতাসীন দল তাদের কমিটি দিয়েছে। এখন দেখা যাক "ব্যাপারগুলা" কি ছাত্রীহল গুলোও গ্রাস করবে? মিলিটারি ক্যাম্প হবে গণরুম গুলো? যা এতদিন অনেকটা প্রশাসনেরই তত্বাবধানে ছিল নাকি এই নব নেতৃত্ব বিভিন্ন হলের বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করবে এবং তাতে পরিবর্তন আনবে তা ই এখন ভাবনার বিষয়।


মূল পোস্টটি আমার ফেসবুকে দেওয়া হয়েছিল-December 7 at 11:58am

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.