নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার একটি পাপের কাহিনী- ৩

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১১

আমি যখন পাপ করি, তখন আমার খুব অপরাধবোধ হয় । রাতে ঘুমাতে পারি না । তবুও পাপ করি, হা হা হা । সবচেয়ে মজার ম্যাপার হলো- একটা পাপ করার পর- সেটা যখন লিখে ফেলি দারুন একটা আত্মতৃপ্তি হয় । আজ একটা অন্যরকম পাপের কথা বলব। যদিও প্রতিদিন এই রকম অসংখ্য পাপের ঘটনা ঘটছে- গোপনে গোপনে । গোপন পাপটা আমিও করে ফেললাম- হায় আল্লাহ ! আজ সকালে ঘুম থেকে উঠার পরই একটা পুরোনো দিনের গান খুব মনে পড়ছে- "পথ ছাড়ো ওগো শ্যাম, কথা রাখো মোর/ এমন করে তুমি আঁচল ধোরো না/এখনি যে শেষ রাত হয়ে যাবে ভোর!" নেটে সার্চ দিয়ে গানটা কোথাও খুঁজে পেলাম না । তবে অন্য একটা গান খুঁজে পেলাম- "অভিমানী ভালবাসা চায় যে হারাতে ঐ দূর অজানাতে/ তুমি আমি ভেসে যাব মেঘলা বাতাসে এই হাত রেখে হাতে"।



মেয়েটার নাম লাবনী ( অবশ্যই সদ্যনাম ) । আসল নাম দিয়ে কি ঝামেলায় পড়বো নাকি? আমার বন্ধুর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে তার সাথে প্রথম দেখা এবং পরিচয় । পরের দিন বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা এবং তার দুইদিন পর বউ-ভাত অনুষ্ঠানে আবার দেখা । মজার ব্যাপার হলো পর-পর সাত দিন মেয়েটার সাথে আমার দেখা হয় । একদিন সন্ধ্যায় দেখা হয় কেএফসি'তে । পরের দিন তখন বইমে্লা চলছিল- বই মেলাতেও দেখা হয়। শ্রাবনী প্রকাশনীতে ।তার হাতে হুমায়ূন আহমেদের "তিথির নীল তোয়ালে বইটা ছিল।একটা কথা বলে রাখি- আমার সৃত্মি শক্তি অনেক ভালো । অনেক তুচ্ছ ঘটনাও আমি ভুলি না । সব মনে থাকে আমার । সপ্তম বার তার সাথে আমার দেখা হয় নিউ মার্কেটে ।সেদিন রাত ৮ পর্যন্ত লাবনী আমার সাথে ছিল । ইচ্ছা করলে চুমু দিতে পারতাম কিন্তু দেইনি । শুধু হাতে হাত রেখেছিলাম ।



এরপর লাবনী'র সাথে আমার নিয়মিত দেখা হয় । মেয়েটা আমার সাথে দেখা করার জন্য অস্থির হয়ে থাকত । দেখা হলে সারাক্ষণ আমার হাত ধরে থাকত । আর রিকশায় বসলে কঠিন ভাবে হাত ধরে থাকত । যেন কেউ আমাকে কেড়ে নিয়ে যেতে না পারে । মেয়েটা আমার জন্য নানান খাবার রান্না করে নিয়ে আসত । খাইয়ে দিত । মিথ্যা বলব না- হাতের রান্না দারুন । মেয়েটা ইডেন কলেজ থেকে রাষ্টবিজ্ঞানে অনার্স শেষ করেছে ।চাকরী করতে চেয়েছিল- আমি কঠিন গলায় মানা করে দিয়েছি । আমার নিষেধ সে অগ্রাহ্য করতে পারেনি। দেখতে দেখতে দুই বছর পার হয়ে গেল । এই দুই বছরে আমরা সারা ঢাকা শহর চষে বেড়ালাম । বেশ কয়েকবার ঢাকার বাইরেও বেড়াতে গেলাম । হাত ধরাধরা ছাড়া মাদের মধ্যে আর কিছুই হয়নি । তা-ও হাত ধরেছি বাধ্য হয়ে, লাবনী রাস্তা পার হতে পারে না । তখন আমি হাত ধরে পার করে দিলাম, নিশ্চয়ই এটা কোনো দোষের মধ্যে পরে না । তাছাড়া নোংরামী ব্যাপার টা আমার কখনই ভালো লাগে না । ইচ্ছা করলে, লাবনী'র সাথে আমি যা খুশি তাই-ই করতে পারতাম ।



এইবার আমি আমার পাপের কাহিনীটা বলব- হটাৎ একদিন আমি লাবনী'র খুব কাছাকাছি চলে আসি । সেদিন সারা বাড়িতে আমি আর লাবনী ছাড়া অন্য কেউ নেই । লাবনী আমাকে অনেক কিছু রান্না করে খাওয়ালো । আমিও খেলুম খুব মজা করে । বেশ কয়েকবার চা করে খাওয়ালো । তখন বিকেল আমার একট ঘুম ঘুম পেয়েছিল, আমি বিছানায় বসলাম । আমার পাশে লাবনী । লাবনী বলল- তুমি আরাম করে একটু ঘুমাও, আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেই । আমি বললাম আচ্ছা । হঠাৎ লাবনী আমার ঠোঁটে একটা চুমু দিল । কি অদ্ভুত লাগল আমার ! জীবনে প্রথম কোনো নারী আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখল ! আমি গভীর এক আকাশ আনন্দে অভিভুত হলাম । তারপর আমি পাগলের মতন লাবনী কে অনেক আদর করলাম, অনেকক্ষন আদর করলাম । এক আকাশ ভালো লাগায় মন এবং শরীর ভরে রইলো। লাবনী'র চোখে মুখে দেখতে পেলাম এক আকাশ আনন্দ । সেদিন আদরের পর আমরা অনেকক্ষন রিকশায় করে ঘুরে বেড়ালাম ।রাতে দুইজন বাইরে খেলাম। তারপর আমি বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসি । আমি জানতাম না এটাই আমাদের শেষ দেখা।



লাবনীর সাথে আমার বিয়ে হয়নি । আজ লাবনী কোথায় আছে আমি জানি না । মেয়েটাকে আমার অনেক মনে পড়ে । অফিসের কাজে পনের দিনের জন্য আমি ঢাকার বাইরে যাই, কিন্তু কাজ শেষ করতে সময় লাগল এক মাস। লাবনী আমাকে ফোন করে জানায়- তার পেটে বাচ্চা । তখন আমার আর্থিক অবস্থা খুব ভালো ছিল না । বাবা- মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে লাবনীকে বিয়ে করাও সম্ভব ছিল না । আমি পড়ে গেলাম মহা সমুদ্রে । একদিকে বাবা মা অন্য দিকে লাবনী । আমি একটুও বুঝতে পারিনি- যে একদিন আদর করলেই বাচ্চা হতে পারে । এসব ব্যাপারে আমার একেবারেই ধারনা কম । লাবনীকে আমি কোনো পজেটিভ উত্তর দিতে পারিনি । বলেছিলাম- ডাক্তার দেখাও, ঝামেলা মিটিয়ে ফেলো। সে অনেক কষ্ট পেয়েছে । আমি আছি অস্থিরতার মধ্যে । ঢাকা ফেরার পর দেখি মা আমার বিয়ের জন্য মেয়ে দেখে রেখেছে ।



এরপর আমি আর লাবনী'র কোনো খোজ পাইনি । তন্ন তন্ন করে সারা ঢাকা শহর খুঁজে বেড়িয়েছি। সম্ভবত লাবনী অস্টেলিয়া চলে যায় । অনেক চেষ্টা করেও কোনো যোগাযো করতে পারিনি । আমার বাচ্চাটিকে সে পৃথিবীতে এনেছিল কিনা তা-ও জানি না । লাবনী বিয়ে করেছে কিনা তা ও জানি না । আমারা বাচ্চাটিকে খুব দেখতে ইচ্ছা করে । এতদিনে বাচ্চাটির তিন বছর হওয়ার কথা । এই জন্য রাস্তায় ছোট ছোট বাচ্চা দেখলে বুকের মধ্যে যেন কেমন করে উঠে । বোকা মেয়েটা ভেবেছে- আমি মা'র পছন্দের মেয়েটাকে বিয়ে করে ফেলেছি । না, আমি বিয়ে করিনি । আজও আমি লাবনী'র অপেক্ষায় আছি । আসলে ইচ্ছা করেই লাবনী আমার কাছ থেকে হারিয়ে যায় ।লাবনী'র ধারনা ছিল, যদি আমি মাকে কষ্ট দিয়ে লাবনীকে বিয়ে করতাম তাহলে সংসার জীবনে কখনও সুখী হতাম না । লাবনী আমাকে সব সময় হাসি খুশি দেখতে চাইতো । মধ্যরাত্রে আমি আকাশের দিকে তাকাই- আর আমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ে । তখন নিজেকে বলি- না, না তোমার কোনো কষ্ট নেই । চোখে সমস্যা তাই পানিপড়ছে । ভালো ডাক্তার দেখাও ।



একদিন হঠাৎ হাওয়া, থামিয়ে আসা-যাওয়া,

প্রশ্নের জাল বোনে, শুরু হয় চাওয়া-পাওয়া।

আজ শুধু পথ চাওয়া, বিরহের গান গাওয়া,

ভাবনার নদী বুকে, উজানেতে তরী বাওয়া।

শুধু সেই গান ভোলে অভিমান

চোখে অকারণ ঘোর বর্ষা নামে।

এমন বিরহ জ্বালায় স্মৃতির মেলায় কাটে না আর দিন।



মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩২

শূন্য পথিক বলেছেন: সবচেয়ে মজার ম্যাপার হলো- একটা পাপ করার পর- সেটা যখন লিখে ফেলি দারুন একটা আত্মতৃপ্তি হয় ।

আত্মতৃপ্তির ভালো সূত্র! :)

১৮ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: হে হে---

২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৬

সমানুপাতিক বলেছেন: কাপুরুষদের জন্য কেন জানি আমার করুণাও হয় না :-< :-<

১৮ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষ মানুষকে ক্ষমা করবে, ভালোবাসবে এটাই নিয়ম।

৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৭

তারছেড়া লিমন বলেছেন: কথাটাকি সত্য............????

১৮ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: হে হে

৪| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৯

মিনহাজুল হক শাওন বলেছেন: @সমানুপাতিক, সহমত।

ডাক্তার দেখাও, ঝামেলা মিটিয়ে ফেলো

আপনাকে ফাসিতে ঝোলানো উচিত। কচি খোকা তাইনা? আদর করলে শুধু জ্বর হয় যে ডাক্তার দেখালেই সেরে যায়? আদর করলে কি হয় জানেন না কিন্তু কখন ডাক্তার দেখিয়ে ঝামেলা দূর করতে হয় তা ঠিকই জানেন। ওই মেয়েটার জীবন নষ্টের দায়ভার কে নেবে? যত্তসব জানোয়ারের দল।

১৮ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: ওরে বাবা এত রেগে গেলেন কেন?

৫| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:২৪

মাক্স বলেছেন: :| :| :| :|

১৮ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.