নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবীন্দ্রনাথের কোনো বিকল্প নাই- ৮৬

১৬ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:২৫

বঙ্কিমচন্দ্র, ঈশ্বরচন্দ্র, হেমচন্দ্র, নবীনচন্দ্র, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্যরা তাদের সাহিত্যে যে মুসলিম বিরোধী বিষ উদগিরণ করেছেন সেটি বাংলার সমাজ ও আলোবাতাস থেকে উদ্ভুত হলে তার নমুনা মধ্য যুগের বা আদি যুগের সাহিত্যেও পাওয়া যেত। কিন্তু তা নেই। তাদের মগজে ঘৃনাপূর্ণ মিথ্যার বিষটি ঢুকিয়েছিল বস্তুত ইংরেজগণ। তারাই প্রথম আবিস্কার করে, ভারতের মুসলিম শাসন শুধু ধ্বংস, বঞ্চনা, নিপীড়ন ও শোষণ ছাড়া আর কিছুই দেয়নি। বলেছে, মন্দির ভেঙ্গে তার উপর মসজিদ গড়েছে। তাদের লেখনিতে শিবাজীর চরিত্র অংকিত হয়েছে হিন্দু জাগরনের এক মহান ও আদর্শনীয় বীর রূপে, আর মোঘল বাদশা আওরঙ্গজীব চিত্রিত হয়েছেন কুৎসিত ভিলেন রূপে। বাংলায় হিন্দুদের বাস মুসলমানদের চেয়ে অধিক কাল ধরে। অথচ তাদের ব্যর্থতা হল, সমগ্র ইতিহাস ঘেঁটে একজন হিন্দুকেও বের করতে পারে যিনি স্বাধীনতার লড়াইয়ে বাংলার মানুষের সামনে আদর্শ হিসাবে চিত্রিত হতে পারেন। তেমন চরিত্রের তালাশে বঙ্কিম ও মাইকেল মধুসূদন যেমন ব্যর্থ হয়েছেন, রবীন্দ্রনাথও ব্যর্থ হয়েছেন। সে এক বিশাল শূন্যতা।



ঐতিহাসিক ডঃ রমেশ চন্দ্র মজুমদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রসঙ্গে লিখেছেনঃ “হিন্দু জাতীয়তা জ্ঞান বহু হিন্দু লেখকের চিত্তে বাসা বেঁধেছিল, যদিও স্বজ্ঞানে তাঁদের অনেকেই কখনই এর উপস্থিতি স্বীকার করবেন না। এর প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হচ্ছে, ভারতের শ্রেষ্ঠ কবি রবীন্দ্রনাথ যাঁর পৃথিবীখ্যাত আন্তর্জাতিক মানবিকতাকে সাম্প্রদায়িক দৃ্ষ্টভঙ্গীর সঙ্গে কিছুতেই সুসংগত করা যায় না। তবুও বাস্তব সত্য এই যে, তাঁর কবিতাসমূহ শুধুমাত্র শিখ, রাজপুত ও মারাঠাকুলের বীরবৃন্দের গৌরব ও মাহাত্মেই অনুপ্রাণিত হয়েছে, কোনও মুসলিম বীরের মহিমা কীর্তনে তিনি কখনও একচ্ছত্রও লেখেননি –যদিও তাদের অসংখ্যই ভারতে আবির্ভূত হয়েছে। এ থেকেএ প্রমাণিত হয় উনিশ শতকী বাংলার জাতীয়তা জ্ঞানের উৎসমূল কোথায় ছিল।”



শরৎচন্দ্রের কাছে লেখা রবীন্দ্রনাথের এ চিঠিতে যে পোষমানা চেতনার প্রকাশ ঘটেছে সেটি শুধু রবীন্দ্রনাথের একার ছিল না। এমন একটি উপলব্ধি ছিল সে আমলের অধিকাংশ শিক্ষিত হিন্দুদের। আর এখানেই ব্রিটিশ প্রণীত শিক্ষাব্যবস্থার বড় সাফল্য। শিক্ষার লক্ষ্য শুধু অক্ষরজ্ঞান, হিসাবজ্ঞান বা কারিগরিজ্ঞান নয়, বরং শিক্ষার মধ্য দিয়েই ধর্ম, চিন্তা-চেতনা, দর্শন, রাজনীতি¸ সমাজনীতি, সংস্কৃতি ও রুচীবোধে আসে বিপ্লবী পরিবর্তন। মন পায় সঠিক দিকনির্দেশনা। তবে শিক্ষা শুধু সুশিক্ষা নয়, কুশিক্ষাও হতে পারে। ফিরাউন, নমরুদ, হিটলার, মুসোলিনির মত অতি দুর্বৃত্তদেরও একটি শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল। আজকের সাম্রাজ্যবাদী দুর্বৃত্তদেরও আছে। ভারতে তেমনি ব্রিটিশ শাসকদেরও ছিল। শিক্ষার মধ্য দিয়ে মিশনারিরা যেমন ছাত্রদের নিজ ধর্মের দিকে টানে, সাম্রাজ্যবাদীরা তেমনি গড়ে নিজেদের পক্ষে লাঠিধরার লোক। ভারতে তারা এতটা বিপুল সংখ্যায় গড়ে উঠেছিল যে তাদের ১৯০ বছর ঔপনিবেশিক শাসনে তাদের নিজেদের লাঠি ধরার প্রয়োজন খুব একটা দেখা দেয়নি। আর বাঙালী হিন্দুগণ লাঠিধরার কাজে ভারতের অন্য যে কোন ভাষাভাষীদের চেয়ে অধিক সংখ্যায় ছিল তা নিয়ে কি সন্দেহ আছে?



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাশি বছর বেঁচে ছিলেন।তার লেখা পড়ে অনেকেই তার সংগে দেখা করেছেন, আবার চিঠি লিখে মন্দলাগা-ভালোলাগাটুকু জনিয়েছেন। চিঠির মাধ্যমে কবির সংগে সম্পর্ক বজায় রেখেছেন অনেকে। পৃথিবীর কোন কবিতার অনুরাগী বা পাঠকদের কাছে এতো চিঠি লেখেননি। পাঠকদের সংগে ছিলো কবির সুসম্পর্ক। অসীম ধৈর্য ও পরিশ্রমের বিনিময়ে এ সম্পর্ক তিনি আজীবন বজায় রেখেছেন। বিদেশি বন্ধুদের পাঠানো চিঠির উত্তর লিখেছেন যথাসময়ে।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কি শুধু বড়দের চিঠির উত্তর দিয়েছেন? না, তিনি ছোটদের চিঠি পেলেই সাথে উত্তর লিখে পাঠিয়েছেন পত্রপ্রেরকের কাছে।



প্রবোধচন্দ্র ঘোষ রবীন্দ্রনাথের বাল্যবন্ধু। প্রবোধচন্দ্র ঘোষ নিজে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে না পারলেও তিনি বন্ধুর ভবিষ্যৎ প্রতিষ্ঠার সূচনা করে দিয়েছিলেন তার প্রথম গ্রন্থ ‘কবি কাহিনী’ প্রকাশ করে। রবীন্দ্রনাথের বয়স তখন মাত্র সতেরো, তখন তিনি বিদেশে। প্রবোধচন্দ্র এই বইটি ছাপিয়ে রবীন্দ্রনাথকে পাঠিয়ে বিস্মিত করেছেন। তাঁর সঙ্গে বালক বয়সে রবীন্দ্রনাথের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক তা জানা যায় প্রবোধচন্দ্রের লেখা চিঠি থেকে। প্রিয়নাথ সেন রবীন্দ্রনাথের তরুণ বয়সের সাহিত্যকর্মের প্রধানতম অনুরাগী পাঠক ও পরামর্শক। উৎসাহদাতা, পৃষ্ঠপোষক ছাড়া মহৎ জ্ঞানও অঙ্কুরে বিনষ্ট হবার সমূহ আশঙ্কা থাকে। রবীন্দ্রনাথের তরুণ বয়সের বহু লেখার প্রথম পাঠক ছিলেন প্রিয়নাথ সেন।

প্রিয়নাথ সেনকে রবীন্দ্রনাথের লেখা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পত্রে এ বিষয়ের স্বীকৃতি মেলে। প্রিয়নাথ সেন শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকর্মের উৎসাহদাতাই ছিলেন না। রবীন্দ্রনাথের সাংসারিক ও বৈষয়িক বিষয়েরও অন্তরঙ্গ পরামর্শদাতা ছিলেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.