নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আমার হাতে খুব বেশি সময় নেই। আর কয়েক ঘন্টা পর পোকা গুলো আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। আমার সমস্ত রক্ত খেয়ে ফেলবে। আমার মৃত্যুর আগে বর্তমান পরিস্থিতিটা লিখে রেখে যেতে চাই। যদি আবার কখনও পৃথিবী মানুষ পরিচালনা করতে পারে। তখন আমাদের বর্তমান অবস্থা জানতে পারবে। যদিও অনেক আগেই বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছিল এই পোকা সম্পর্কে। মানুষ জানতে পেরেছে- মানুষের চোখে রয়েছে যখন একক লেন্স তখন পোকামাকড়ের চোখ অথ্যাৎ যৌগ চোখে রয়েছে অনেক ছোট চাক্ষুষ ইউনিট।
৫০১৫ সাল। সারা পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ৭'শ কোটি। এই ৭'শ কোটি মানুষ এখন ছারপোকাদের হাতে বন্দী। ৫০০ সালে পৃথিবী দখল করে নিয়েছে ছারপোকা। এইসব ক্ষুদ্র পোকাদের কাছে মানুষ খুব অসহায়। গত ৫'শ বছর ধরে আরাম করে ঘুমাতে পারছে না মানুষ। এই নিষ্ঠুর পোকাকে মানুষ কখনও গুরুত্ব দেয়নি। মানুষ জানতো, ছারপোকা আসলে সিমিসিডে গোত্রের একটি ছোট্ট পরজীবী পতঙ্গবিশেষ। ইংরেজিতে বলে: Bed bug । এটি রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে। কিন্তু এই পোকা যে পৃথিবী দখল করে নিবে মানুষ তা স্বপ্নেও ভাবেনি।
আজ থেকে ৩০৮৫ বছর আগে রাজীব নূর খান নামের একজন তার ডায়েরী লিখেছিলেন- ''গত ছয় মাস ধরে বিছানায় আরাম করে ঘুমাতে পারছি না। প্রতিদিন রাত্রে বিছানায় যাওয়ার পর কি যেন কুটকুট করে কামড়ায়। একদিন ঘুম থেকে উঠে বাতি জ্বালিয়ে দেখি ছোট-ছোট অনেক গুলো পোকা। একটা পোকা মেরে দেখি পেট ভরতি রক্ত। এমন পোকা আমি আগে কখনো দেখিনি। সকাল বেলা মাকে বললাম- মা বলল পোকা গুলোর নাম ছারপোকা। এরা রক্ত খায়। দিনেরবেলা আর পোকাদের কথা মনে থাকে না। রাতে বিছানায় যাওয়ার পোকার কামড় খেয়ে- ছারপোকার কথা মনে পড়ে। সামান্য ছোটছোট পোকা গুলোর জন্য ছয় মাস ধরে ঘুমাতে পারছি না। এই পোকা মারার জন্য সব রকমের ওষুধ দেওয়া হয়েছে- কোনো কাজ হয়নি।
একদিন বিরক্ত হয়ে বালিশ তোষক সব সরিয়ে দেখি- একশো দুইশো না, পাঁচ শো-সাত শো ছারপোকা। এই ভারি জাজিম তোষক ছয় তলার ছাদে নিয়ে গিয়ে রোদে দেওয়া সম্ভব নয়। এই ছোট পোকা গুলো আমার ঘুম হারাম করে দিয়েছে। আরে...রক্ত খাবি খা, কামড়ানোর কি দরকার। কামড়ানোর পর লাল হয়ে ফুলে থাকে। সারাদিন খুব চুলকায়। আমার খালাতো বোন বলেছিলেন- টাকা পয়সা বেশি হলে ঘরে ছারপোকার উপদ্রপ হয়। গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে শতশত ছারপোকা মেরে ওদের প্রতিহত করতে পারছি না। রাতে পোকা গুলো আমার শরীরের উপরে হাঁটা হাটি করে- আমি স্পষ্ট টের পাই। মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে হাসপাতাল থেকে এক ব্যাগ রক্ত কিনে এনে বাটিতে করে ওদের খেতে দেই।
একদিন খবরের কাগজে দেখি- "বাসের সিটে ছারপোকার উৎপাত ঠেকাতে আগুন দেওয়া হয়েছে।" সেদিন রাগে দুঃখে মধ্যেরাত্রে সুনীলের একটি কবিতা মনে পড়ল- আমি কীরকম ভাবে বেঁচে আছি তুই এসে দেখে যা নিখিলেশ/ এই কী মানুষজন্ম?/ আমি আক্রোশে হেসে উঠি না,/ আমি ছারপোকার পাশে ছারপোকা হয়ে হাঁটি,/ মশা হয়ে উড়ি একদল মশার সঙ্গে;/ খাঁটি অন্ধকারে স্ত্রীলোকের খুব মধ্যে ডুব দিয়ে দেখেছি দেশলাই জ্বেলে/ আজকাল আমার নিজের চোখ দুটোও মনে হয় একপলক সত্যি চোখ। /এরকম সত্য পৃথিবীতে খুব বেশী নেই আর।" আমি আর বেশী দিন বাচবো না। এই ছারপোকা আমাকে অতিষ্ট করে দিয়েছে। ঈশ্বরের কি দরকার ছিল- ছারপোকা বানানোর?
একদিন এক পাজি ছারপোকা কানের ভেতরে ঢুকে গেল। হঠাত দেখি মোবাইল চার্জ হয়, কারন অনুসন্ধান করে দেখি- মোবাইলের ভেতরে তিন টা ছার পোকা। ছারপোকা শুধু আমার বাসায় না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা হলে হাজার হাজার ছারপোকা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনের প্রতিটা ব্র্যাকে হাজার হাজার ছারপোকা। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হল রয়েছে ১৭টি। এমন কি অনেক সরকারী হাসপাতাল এবং অফিসেও হাজার হাজার ছারপোকা। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছি- এখন সব জাগায় ছারপোকা। দামী এসি বাসে আজকাল অনেক ছারপোকা পাওয়া যায়।''
৩০০০ সালে এক ভয়াবহ ভুমিকম্পে সারা পৃথিবীতে প্রায় ৩'শ কোটি লোক মারা যায়। তারপরে মানুষ হয়ে পড়ে খুব অসহায়। এই সুযোগে পোকা গুলো নিরবে ধীরে ধীরে দখল করে নিতে শুরু করে পৃথিবী। পৃথিবীর প্রায় ১০০টি দেশ মানুষ শূন্য হয়ে পড়ে। তখন পোকা গুলো সেই দেশ গুলো দখল করে নেয়। তারা হিংস্র হয়ে পরে। ঘরে বাইরে সব জায়গায় তাদের অবস্থান। এই পোকা গুলো আলো সহ্য করতে পারে না। রাতের বেলা শুরু হয় তাদের কর্মকান্ড।
এই পোকাদের হাত থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই। একজন ঘুমন্ত মানূষের উপর এক লাখ পোকা আক্রমণ করে। চার মিনিট সময় লাগে শরীরের সব রক্ত খেয়ে ফেলতে। তারপর সাথে সাথে মৃত্যু। পোকা গুলো যেভাবে মানুষ হত্যা করতে শুরু করেছে- কয়েক বছরের মধ্যেই পৃথিবীতে কোনো মানুষ থাকবে না। তখন তারা খাবে কি? এইসব পোকাদের প্রধান খাবারই তো রক্ত।
২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৩৭
প্রামানিক বলেছেন: দারুণ ছার পোকা কাহিনী।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:০০
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: হাহাহাহা