নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছেলেটি কিভাবে পাগল হয়ে গেল আমি জানি। তবে জানার চেষ্টা করছি। কোনো প্রশ্ন করলে উত্তর দেয় না। কি যেন ভাবে। কি যেন মনে করতে চেষ্টা করে। প্রায়ই আমার সাথে রাস্তায় দেখা হয়- আমি কথা বলি না। গত কয়েকমাস ধরে পাগলটির সাথে ঘনঘন দেখা হচ্ছে। গত মাসে আমি পাগলটিকে বললাম কিরে কি খবর? পাগলটি একটু হাসলো। আমি বললাম চা খাবি? পাগলটি বলল স্পষ্ট উচ্চারনে বলল, আমি চা খাবো রাজীব। তারপর একটা সিগারেট।
আমি প্রচন্ড অবাক হলাম। পাগলটি আমার নাম জানে! হঠাত আমার অতীত দিনের কথা একটু একটু করে সব মনে পড়তে লাগল। ছোটবেলায় আমি এই পাগলটির সাথে সানরাইজ স্পোটিং ক্লাব মাঠে ফুটবল খেলেছি। খুব ভালো ফুটবল খেলতো ছেলেটি। ডিফেন্সে সে একাই একশো। একবার তার পায়ে বল গেলে, সে আর কাউকে পরোয়া করতো না। গোল নিশ্চিন্ত। অনেক টুনামেন্টে আমরা চাম্পিয়ন হয়েছি। আমি ভালো গোলকিপার ছিলাম। আমরা একই এলাকায় থাকতাম। আমার চোখে এখনও ভাসে- ছেলেটি খুব ফর্সা ছিল। খুব বুধিমান ছিল।
একদিন বিকেলে আবার দেখা। কিন্তু নামটি আমি কিছুতেই মনে করতে পারছি না। ছেলেটি আমার নাম মনে রেখেছে। আমি কেন নামটি ভুলে গেলাম? চলো চা খেয়ে আসি বললাম আমি। দুইজন চা খাচ্ছি। আমি বললাম, তোমার কি মনে আছে- আমরা ছোটবেলায় ফুটবল খেলতাম? তুমি খুব ভালো খেলতে। ছেলেটি একটু হাসলো। আমি বললাম, তুমি কোথায় থাকো? তোমার বাবা মা ভাই বোন কোথায়? সে আমার কোনো প্রশ্নেরই জবাব দিল না। শুধু কি যেন ভাবে। আমি চায়ের দোকানে বলে দিয়েছি- এই ছেলে যতবার চা খাবে, বা যা খুশি খাবে, বিল আমি দিব। কিন্তু ছেলেটি কখনও কিছু খায়নি।
ঈদের দুই দিন পরে- হঠাত পেছন থেকে ডেকে বলল- রাজীব কেমন আছো? আমি বললাম বেশ ভালো আছি। ছেলেটিকে দুই শ' টাকা সাধলাম। সে টাকা নিল না। বলল, আমি টাকা দিয়ে কি করব? আমার টাকার দরকার নেই। এক কাপ চা খাওয়াতে পারো। ঠিক এমন সময় পরিচিত এক বখাটে এসে আমাকে বলল- চলো রাজীব বটতলায় যাই আড্ডা দেই। আমি বললাম না যাবো না। তবু বখাটেটা আমাকে জোর করছে। এই দেখে পাগলটি রেগে গিয়ে ক্ষিপ্ত মেজাজে বলল রাজীব ভাইয়ের হাত ছাড়। আর একবার জোর করবি তো- টান দিয়ে কলিজা বের করে ফেলব হারামজাদা। বখাটে ভয় পেয়ে দ্রুত চলে গেল। আমার জন্য তার তীব্র ভালোবাসা এবং আন্তরিকতা দেখে আমি মুগ্ধ! আগেও দেখেছি- চায়ের দোকানে সে দোকানদারকে বলে- রাজীব ভাইকে সুন্দর করে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে কাপ ধুয়ে চা দাও। খবরদার ময়লা কাপে চা দিবে না।
সন্ধ্যায় আজ আবার দেখা। আমাকে দেখেই হাসি মুখে এগিয়ে এলো। আমি বললাম, কিছু খাবি? বলল হুম খাবো। রুটি আর কাবাব। আমি চা খেলাম, সে রুটি আর কাবার খুব মন দিয়ে খেল। খেতে খেতে আমার সাথে গল্প করলো। রাজীব তোমার ব্যবসা কেমন চলছে? কত টাকার মালিক হয়েছো? জায়গা জমি কিছু কিনেছো? আমি বললাম, তুমি আর একটা রুটি নাও। সে বলল তোমার কোনো শত্রু আছে? থাকলে আমাকে বলবা শিক্ষা দিয়ে দিব। আমি বললাম, এই পৃথিবীতে আমার কোনো শত্রু নেই। সবাই আমার বন্ধু। যাই হোক, শোনো আমি কিছুতেই তোমার নাম মনে করতে পারছি না। বলতো তোমার নামটা কি? সে বলল আমার নাম পাগল। তারপর খাওয়া শেষ না করেই উঠে চলে গেল।
২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:২৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাংলাদেশে অকারণ হয়রাণী, দারিদ্রতা, সংসারের চাপ, সমাজের অস্হিরতা ভয়ংকর হারে মানসিক সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪২
মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: সত্যি ঘটনা নাকি আপনার কল্পণা ?
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: ১০০% সত্যি।
৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২৬
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: সে আপনার ফটোকপি।
আপনি নিজেকে পাগলের চরিত্রে হিসেবে দাড় করিয়েছেন। জগৎ সংসারে আপনার বিতৃষ্ণা এসেছে। আপনার রেষ্ট(বিশ্রাম) দরকার।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: যাবো সামনের মাসে বান্দারবন।
৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ২:০৮
উদাস মাঝি বলেছেন: ঘটনা সত্যি হলে বলার কিছু নাই
৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৩১
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: নামটা জেনে নিয়েন; পারলে খোঁজখবর নিয়েন।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: নাম টা জেনে নিবো না। আপনাকে আমি নিজেই মনে করতে চাই। সে পাগল হয়েও আমার নাম মনে রেখেছে!
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৩
মোঃ তানজিল আলম বলেছেন: আপনার লেখায় একটা টান থাকে। মাঝপথে ছেড়ে যাওয়া যায় না। সব পড়তেই হয়।