নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
দুপুর একটা। মানে মধ্যদুপুর। সূর্য একদম মাথার উপরে। কাঁচের মতো স্বচ্ছ রোদ! শরীর যেন পুড়ে যায়। অফিসের কাজে বের হয়েছি, যাবো গুলশান-২। আমার হাতে তিনটি জরুরী ফাইল। মন মেজাজ প্রচন্ড বিক্ষিপ্ত। ইচ্ছা করছে কোনো চলন্ত বাসের নিচে নিজের জীবনটা দিয়ে দেই। কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি দাঁড়িয়েছি আছি বাসের জন্য, মগবাজার মোড়ে। চার রাস্তার মাঝখানে, যেখানে ট্র্যাফিক পুলিশ দাঁড়ায়। হঠাত ফোন এলো অফিস থেকে- জানতে পারলাম আমার চাকরিটি চলে গছে। এটা শোনার পরই আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।
বেশ ক'দিন ধরেই অফিসে সমস্যা চলছিল। চাকরি চলে যাবে সেটা বুঝতে পারিনি। চাকরি চলে যাবার মতো এমন কিছু আমি করিনি। তবে অফিসে বস এর এক আত্মীয় আমার পেছনে লেগেছিল। অতি দুষ্টলোক। অতি বদ লোক। সে বলেছিল রাজীব আপনাকে আমি দেখে নিব। আমি বলেছিলাম- আপনি কিচ্ছু করতে পারবেন না। আমি প্রচুর কাজ করি। তিন জনের কাজ একা করি। সময় মতো অফিসে আসি, বছরে তিন দিনও ছুটি কাটাই না। কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করি না। কাজেই আমার কোনো দোষ ত্রুটি আপনি খুঁজে বের করতে পারবেন না। কাজেই চাকরি যাবার প্রশ্নই আসে না।
চারিদিকে এত গাড়ি আর বাসের বিকট হর্ন। মাথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কানের পর্দা যেন ফেটে যাচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশের কষ্টটা বেশ বুঝতে পারছি। হাজার হাজার গাড়ি, বাস আসছে- যাচ্ছে। সবার যেন এক আকাশ ব্যস্ততা। এর মধ্যে এক রিকশা একটা নতুন মেরুন রঙের প্রাইভেট কারে ঘষা দিয়ে দাগ করে দিয়েছে। ড্রাইভার রাস্তার মাঝখানে গাড়ি থামিয়ে চিৎকার চেচামেচি করছে। পেছনে লেগে গেছে লম্বা জ্যাম। আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি। কোনো কিছুই আমাকে স্পর্শ করছে না। এমন সময় এক সুন্দরী মেয়ে এসে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। চারদিকে তাকিয়ে সে যেন কাকে খুঁজছে। দূরে দেখলাম তাকে ভিডিও করা হচ্ছে। কোনো নাটকের শূটিং। পাঁচ মিনিটের মধ্যে শূটিং এর ঝামেলা শেষ হলো।
ক্রমাগত বিকট হর্ন বেজেই চলেছে। এদিকে অপ্রত্যাশিত আঘাত 'চাকরি নেই'। এই চিন্তাটাই এখন আমার কাছে সবচেয়ে বড়। হুট করে আমি চাকরি পাবো না। আমার ক্ষমতাবান চাচা মামা নেই। পরিচিত কোনো বড় ভাই নেই। এই শহরে আমার এমন কেউ নেই- যে হাসি মুখে বলবে, মন খারাপ করো না। আমি তোমাকে এখনই চাকরির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। রাস্তার চারদিকেই ভয়াবহ অবস্থা। কেউ কাউকে মানছে না। এত গাড়ি-বাস সামলাতে ট্রাফিক পুলিশের খুব বেগ পেতে হচ্ছে। হঠাত রাস্তার পূর্ব পাশে দেখি এক ছেলে এক মেয়েকে হেনস্তা করছে। মেয়েটা চলে যেতে চাচ্ছে, ছেলেটি তাকে যেতে দিচ্ছে না। মেয়েটি খুব কাঁদছে। ব্যাপারটা দেখে খুব রাগ হলো। আমি দৌড়ে ছেলের কাছে গিয়ে শার্টের কলার ধরে একটা গুসি দিলাম। ছেলেটি ছিটকে পড়লো। মেয়েটি আমাকে দেখে যেন ভরসা পেল। ঠিক এই সময় ছেলেটি উঠে এক দৌড় দিল। মেয়েটিকে রিকশা করে দিলাম।
২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৪৯
সাইফুর রহমান খান বলেছেন: মাথার উপর দিয়ে যাওয়ার মত। তবে চাকরি যাওয়া এবং ট্রাফিক পুলিশের কষ্ট টা অনুভব করছি
৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৮
বিলিয়ার রহমান বলেছেন: হতাশ আধুনিক জীবনের বাস্তব প্রতিচ্ছবি এই লেখাটা!
লেখায় ভালোলাগা!
+
৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৩
সামিয়া বলেছেন: সত্যি সত্যি চাকরী চলে যায়নি তো ভাইয়া??
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: আরে এটা তো গল্প নয়। সত্যি কথা লিখেছি।
৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৯
আমি ইহতিব বলেছেন: সামিয়ার মত একই প্রশ্ন আমারো
৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৫
জাহিদ অনিক বলেছেন: মগবাজার মোড়ে এক ঘন্টায় ঘটে গেল অনেক কিছু।
মোড়ে এসেই ফোন পেলেন যে আপনার চাকরি চলে গেছে, তারপরেও অফিসের তিনটা ফাইল নিয়ে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন কেন? আপনার তো আর চাকরিই নেই !
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: মাথা কাজ করছিল না। এক ধরনের ঘোরের মধ্যে ছিলাম।
৭| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৮
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: আপাতত সামু থেকে গত দুই ঈদের সম্মানী বাবদ যে টাকা পাবেন তা দিয়ে পরিস্হিতি মোকাবেলা করেন।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: ঠিক করেছি আর কাম-কাজ করব না।
শুধু বিশ্বাস। বই পড়বো। আর লিখব।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:১৯
মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: সেট করা পরিবেশের সাথে লেখাটা খুব মানিয়েছে। পরিবেশ ও বিশৃংখল, লেখাটাও ফ্ল্যাশ ফ্লাডের মত।