নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আমার দাদা একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে চিৎকার চেচামেচি করতে লাগলেন। তখন তার ছোট ছোট এগারো জন ছেলে মেয়ে দৌড়ে এলেন। সবাই জানতে চাচ্ছে- বাবা আপনার কি হয়েছে? এরকম করছেন কেন? দাদা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, আমি চোখে দেখতে পাচ্ছি না রে! আমি কিচ্ছু দেখতে পারছি না! অনেক ডাক্তার দেখানো হলো। কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হলো। কিন্তু তিনি চোখের আলো আর ফিরে পেলেন না। বাকিটা জীবন তাকে অন্ধ হয়ে কাটাতে হয়েছে। সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকতেন। মাথার কাছে থাকতো একটা রেডিও। সারাদিন রেডিও শুনতেন। বিশালদেহি লোকটা মুহুর্তের মধ্যে কেমন অসহায় হয়ে গেলেন। সারা বাড়ি গমগম করতো তার কথা-বার্তায়।
দাদা ছিলেন বিশাল সম্পত্তির মালিক। কোলকাতাতে তার দু'টা বাড়ি ছিল। বিশাল দোতালা বাড়ি। অনেক গুলো ঘর। তার কাগজের ব্যবসা ছিল। বিক্রমপুরে তার বিষয়সম্পত্তির অভাব ছিল না। নিজের ঘোড়া, পালকি, সিন্দুক ছিল, সিন্দুক ভরা গহনা ছিল এবং বন্ধুকও ছিল। তিনি অন্ধ হবার পর ধীরে ধীরে তার সব সম্পত্তি গায়েব হয়ে গেল। তার ছেলে মেয়ে সব ছিল ছোট-ছোট, তাদেরও কিছু করার ছিল না। দাদী বলতেন, কত আর নিবে? নিয়ে শেষ করতে পারবে না। আমার দাদা দেখতে দারুন সুন্দর ছিলেন। প্রচন্ড স্মার্ট একজন মানুষ। গায়ের রঙ ধবধবে সাদা। দাদা খুব দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াতেন। সেই সময় তার পার্সপোটে লেখা ছিল 'ল্যান্ড লর্ড।
''The Colour Of Paradise'' মুভি নিয়ে আজ আলোচনা করবো। কিছু কিছু বই আছে আমি অনেকবার করে পড়ি। তেমনি কিছু কিছু মুভি আছে আমি অনেকবার করে দেখি। আজ আবারও দেখলাম ''দ্য কালার অফ প্যারাডাইজ'' মুভিটি। অসাধারন একটি মুভি। মারামারি নাই, যৌনতা তাই, গান নাই এমন কি নায়ক নায়িকাও নেই। মুভির কাহিনী এই রকমঃ মোহাম্মদ জন্ম অন্ধ একটি ছেলে। তার বয়স আট বছর। তার বাবার এই নিয়ে চিন্তার শেষ নেই, একমাত্র ছেলে তাও আবার অন্ধ। মা নেই মোহাম্মদের, আপন বলতে দুই বোন, বাবা আর দাদী। বাবার উপেক্ষা তাকে সবসময় কষ্ট দেয়। তার একটাই ইচ্ছা একবার যদি খোদার দেখা পায় তবে তাঁকে জিজ্ঞেস করবে কেন তাকে অন্ধ করে সৃস্টি করা হল। তার শিক্ষক বলেছে খোদা সবকিছুতে মিশে থাকেন। চোখ নেই তো কি হল হাত তো আছে তাই সে যাই কাছে পায় তাই ধরে ধরে দেখে, যদি একবার খোদার দেখা পেয়ে যায়! মোহাম্মাদ যখন বলে "আমি অন্ধ বলে কেউ আমাকে ভালবাসেনা" এই দৃশ্য দেখে নিজের অজান্তেই চোখে পানি চলে আসে। এদিকে আরেকটি বিয়ে করার পরিকল্পনা করেন মোহাম্মদের বাবা হাসেম। দীর্ঘদিনের দরিদ্র জীবনের চাপ আর সহ্য করতে না পেরে মোহাম্মদের বাবা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চান।
মুভি'র কাহিনি যা বললাম- তা কিছুই না। এছাড়াও আরও অনেক কিছু আছে। যা বলা যায় না। বুঝানো যাবে না। আপনারা যারা মুভিটা দেখেন নি- দেখুন, অনুভব করুন। তারপরও আমি এই মুভির তিনটা দৃশ্যর কথা বলল- এক, একটা পাখির ছানা গাছের উপর থেকে পড়ে যায়। পাখির মা খুব চেচাতে থাকে। এদিকে একটা বিড়াল দৌড়ে আসে পাখির ছানাটিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এই ঘটনা কিছুই দেখতে পায় না মুভির প্রধান চরিত্র মোহাম্মাদ। অথচ সে পুরো বিষয়টি অনুভব করতে পারে। এবং মাটিতে পড়ে যাওয়া পাখির ছানাটিকে উদ্বার করে গাছের উপর উঠে তার বাসায় পৌঁছে দেয়। দুই, মোহাম্মদের দাদী রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। রাস্তায় তিনি দেখতে পান একটা মাছ ডাঙ্গায় উঠে ছটফট করছে। বৃদ্ধা মাছটি ধরে পানিতে ছেড়ে দেন। এই বৃদ্ধা মারা যান হাসি মুখে। বৃদ্ধা মৃত্যুর সময় বুঝতে পারছেন তার সময় শেষ। তার মৃত্যু হচ্ছে অথচ বৃদ্ধা দারুন এক হাসি দ্যান। তিন, মোহাম্মদের বাপ হাসেম ঠিক করে বিয়ে করবে। সে মহা খুশিতে পুরো বাড়ি ঘর রঙ করে। ভাঙ্গা জানালা মেরামত করে। শেষমেষ অবশ্য হাসেম বিয়ে করতে পারে না।
এই মুভির পরিচালক মাজিদি। ইরানীরা যে এত ভালো মুভি বানাতে পারে না দেখলে আমি বিশ্বাসই করতে পারতাম না। এই পরিচালকের আরও কিছু মুভি আছে- ‘চিলড্রেন অব হেভেন’, ‘দ্য কালার অব প্যারাডাইস’, ‘দ্য সং অব স্প্যারোস’ বা ‘মুহাম্মদ: দ্য মেসেঞ্জার অব গড’। ইরান একটি মুসলিম দেশ। মুসলিম দেশে মুভি নির্মান বিরাট ধিকদারি। ইরানের কঠোর সেন্সরশিপ কোডের কারণে মাজিদির মতো পরিচালকদের প্রতিনিয়তই নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়।
ছবিতে মুভির পরিচালক।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
ভালো থাকুন।
২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: দুটো জায়গায় টাইপো চোখে পড়ল -
এক -দাদার বিশালদেহী
দুই-যৌনতা নাই।
রিভিউটি বেশ ভালো লাগলো।
শুভ কামনা প্রিয় ছোটভাইকে।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:১১
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা ভুল দেখিয়ে দেবার জন্য।
৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৯
সাইন বোর্ড বলেছেন: খুব ভাল, সুন্দর বার্তা আছে ।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখুন। ভালো লাগবে।
৪| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৫৪
ল বলেছেন: ধন্যবাদ জানানোর জন্য।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখে ফেলুন।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখে ফেলুন।
৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:১১
টুনটুনি০৪ বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট।
আমাদের ষড় ঋতু
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
৬| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৩
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: বেশ.....
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: হুম।
৭| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৪
অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:
দারুন এক মুভির খবর দিলেন । বই পড়তে পড়তে একটু বিরতি দরকার ছিল ।
ওমর মুভিটার লিংক দিতে পারবেন ?
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: আমার ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে।
যাই এখন। শুভ রাত্রি।
৮| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:২৭
হাবিব বলেছেন:
আমি দেখেছি মুভিটা।
আমার কাছে ভালো লেগেছে.........
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস।
৯| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০৪
পদ্মপুকুর বলেছেন: এই মুভিতে ক্যামেরার কাজও অসাধারণ।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেট পরিচালক।
১০| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১৭
অগ্নি সারথি বলেছেন: মুভিটা দেখেছি! অসাধারন একটা মুভি।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: এই মুভি দস বার দেখলেও বিরক্ত লাগে না।
১১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৪
প্রবালরক বলেছেন: কয়েকবার দেখা ‘কালার অফ প্যারাডাইস’ ছবিটা দেখতে অনেক কষ্ট লাগে। কষ্টের পাশাপাশি এতে এক রংগীন মায়াবী জগৎ দেখা যায়। আবার অদৃশ্য আরেক রংগীন জগৎ অনুভব করা যায়। দেখা শেষ হলে প্রতিবার সমগ্র সত্ত্বায় বোধ অসাড় করা তীব্র এক আবেদন অনুভব করি।
ধন্যবাদ লেখককে।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।
১২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৭
মাহের ইসলাম বলেছেন: এত সুন্দর ভাবে সবকিছু তুলে ধরেন !!
যতক্ষন পর্যন্ত মুভিটা নে দেখবো, ততক্ষন একটা মানসিক অশান্তিতে থাকতে হবে।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: পদ্মার ঢেউ রে
মোর শুণ্য হৃদয় পদ্ম নিয়ে যা যারে...।
১৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪২
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আমি দেখে প্রতিক্রিয়া জানাবো।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি একটা রিভিউ লিখবেন।
১৪| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০১
গরল বলেছেন: একজন জন্মান্ধ ছেলের পক্ষে পাখির বাচ্চা গাছের উপড় উঠে বাসায় পৌছে দেওয়াটা একরকম আজগুবিই মনে হয়েছে আমার কাছে।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০০
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটি দেখেন নি হয়তো।
দেখলে ব্যাপারটা আপনার বুঝতে সহজ হতো।
১৫| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪১
জাহিদ অনিক বলেছেন:
চোখ খুবই গুরুরত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ দেহের।
আপনার লেখায় এই কথা প্রায়ই ফিরে আসে, আপনার দাদার কাহিনী দিয়ে।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০০
রাজীব নুর বলেছেন: চোখ যে কি জিনিস। যার নাই সে-ই বুঝে।
১৬| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:০১
পদ্মপুকুর বলেছেন: গড়ল বলেছেন: একজন জন্মান্ধ ছেলের পক্ষে পাখির বাচ্চা গাছের উপড় উঠে বাসায় পৌছে দেওয়াটা একরকম আজগুবিই মনে হয়েছে আমার কাছে।
আমাদের মুহসীন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা থাকতেন। একদিন বসুনিয়ার সামনে বসে আছি, হঠাৎ দেখি, হলের একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাত্র নীলক্ষেত থেকে রিকশায় করে আসছে এবং বসুনিয়ার সামনে এসে রিকশাওয়ালাকে বলছে "মামা, বামে যাও".....
সম্ভবত, আল্লাহতায়ালা ওনাদের সিক্সথ সেন্স খুব স্ট্রং করে দেন।
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর বলেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩১
সাত সাগরের মাঝি ২ বলেছেন: আমি মুভি টা দেখেছি .। অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক