নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুক রিভিউ \'সাদা প্রাইভেট\'

২৪ শে মে, ২০১৯ সকাল ৮:২৬



এক বসায় পড়ে ফেললাম 'ইশতিয়াক আহমেদ' এর সাদা প্রাইভেট বইটি।
লেখক খুব সহজ সরল ভাষায় একটি পরিবারের গল্প বলেছেন। বইটি আমার কাছে ভালো লেগেছে। লেখক কোনো ভনিতা করেন নি। উনি উনার বক্তব্য এবং অতি অল্প কথায় সেরেছেন। বইটি অযথা টেনে লম্বা করেন নি। যা অনেক লেখক'ই করে থাকেন। গত বারো বছর ধরে প্রত্যেক বইমেলাতে 'ইশতিয়াক আহমেদ' একটি করে বই বের করেন। এবং বইটি হিট হয়। বেস্ট সেলারের তালিকায় থাকে। একমাসে দ্বিতীয়, তৃতীয় মুদ্রণ বের হয়ে যায়। আমি নিজে দেখেছি- লোকজন পাগলের মতো তার বই কিনছে। বইটি প্রকাশিত হয়েছে অনিন্দ্য প্রকাশ থেকে। প্রকাশক আফজাল।

বইটির কাহিনী এই রকম- অফিসে বজলুর রহমানের প্রমোশন হয়েছে। সে এখন একটা গাড়ি পাবে। সাথে সার্বক্ষিক একজন পিওন। বজলু সাহেবের স্ত্রী হামিদা পারভীন এই গাড়ি নিয়ে বেশ চিন্তিত আছেন। কারন তিনি গাড়ি উঠলেই তার বমি পায়। মাথা ঘুরায়। বজলুর রহমানের এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে আসিফ অনার্স শেষ করে বসে আছে আর মেয়ে নীরা। নীরা বেশ ভালো রান্না করতে পারে। ছোট্র প্রানবন্ত একটি পরিবার। নীরা যার সাথে প্রেম করে তার নাম শফিক। শফিক সারাদিন রাত শুধু পড়াশোনা করে। সামনে তার বিসিএস পরীক্ষা। তরকারীর গন্ধ শফিকের ভালো লাগে না। শুধু বইয়ের গন্ধ তার ভালো লাগে।

বজলুর রহমানকে অফিস গাড়ি দেই- দিচ্ছি করেও দিচ্ছে না। এদিকে গাড়ির জন্য বজলু সাহেব অস্থির হয়ে আছেন। এমনকি সে একটা ড্রাইভারও রেখে ফেলেছেন। ড্রাইভারের নাম সেলিম। সেলিম অদ্ভুত একজন মানুষ। পৃথিবীতে তার কেউ নেই। সে ডাক্তারের কাছে যায় কিভাবে রাতে না ঘুমিয়ে থাকা যায় সেটা জানতে। প্রতিমাসে সে নিয়মিত বেতন পাচ্ছে। অথচ গাড়ি নেই। তাই সে বাজার করে। ছাদে বাগান করতে শুরু করেছে। মাঝে মাঝে সকালে বজলু সাহবের সাথে রিকশায় করে তার অফিসে যায়। আবার দু'জন একসাথে বাসায় ফিরে। অফিসে তিনি একজন কর্মঠ মানুষ। যাই হোক, একদিন জ্বর নিয়ে বজলু সাহেব অফিস থেকে বাসায় ফিরেন।

বইটির শেষ দিকে বজলু সাহেব মৃত্যু শয্যায় চলে যান। তার বড় সমস্যা হয়। তিনি তার অসুস্থতার কথা কখনও পরিবারকে বলতেন না। তাকে এম্বুলেন্সে করে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এম্বুলেন্সের ড্রাইভারকে অনুরোধ করেন- এম্বুলেন্সটা যেন কিছুক্ষন তার ড্রাইভার সেলিমকে চালাতে দেওয়া হয়। কারন তার খুব শখ ছিল অফিস তাকে গাড়ি দিলে, তিনি রবীন্দ্র সংগীত শুনতে শুনতে বাসায় ফিরবেন।
বজলু সাহেব মারা যান। এবং তাকে খাটে করে কবরস্থান নিয়ে যাওয়ার সময় তার বাসায় একটা সাদা প্রাইভেট কার প্রবেশ করে। অফিস তাকে গাড়ি দেয়। কিন্তু সেই গাড়িতে তিনি উঠতে পারেন না।
বইয়ের প্রতিটা চরিত্রের একটা গল্প আছে। গল্প গুলো সুন্দর।

লেখক দশ নম্বর পাতায় ড্রাইভারকে দিয়ে বলিয়েছেন, জীবনে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পড়াশুনা করেছি অনেক। পরীক্ষা দিয়েছি চাকরি হয়নি। হয়েছি ড্রাইভার। কিন্তু জ্ঞান ভিতরে জমা হয়েছে কেবল, কাউকে দিতে পারিনি। জ্ঞান বিলিয়ে দেওয়ার বিষয়। ভেতরে রাখলে মানুষ পাগল হয়ে যায়। আবার লেখক ৩৭ নম্বর পাতায় বজলু সাহেব তার ছেলে আসিফকে বলছেন, মানুষের কাজই হচ্ছে ঠকানো। কীভাবে তুই না ঠকে টিকে থাকবি সেটা হছে তোর বীরত্ব। বইটা একটানা পড়ার মতোন বই। একটুও বিরক্ত লাগবে না। ছোট বই। মাত্র পচানব্বই পৃষ্ঠা।

লেখক ইশতিয়াক আহমেদ পেশায় একজন সাংবাদিক।
একসময় তিনি যুগান্তর পত্রিকায় কাজ করতেন। তখন আমিও যুগান্তর পত্রিকার 'ঢাকা আমার ঢাকা' পাতায় কাজ করি। মানে ছবি তুলি। তখন ইশতিয়াক ভাইকে নিয়মিত দেখতাম। আমার সাব এডিটরের সামনের টেবিলেই তিনি বসতেন। ব্যস্ত থাকতেন, আমিও ব্যস্ত। তাই কথা হতো না। এরপর আমি যুগান্তর ছেড়ে সমকালে চলে আসি।
একদিন চ্যানেল আই অফিসে ইশতিয়াক ভাইয়ের সাথে দেখা। সেদিনও তার সাথে গল্প করা হয়নি। তিনি ভীষন ব্যস্ত ছিলেন। যাই হোক, এই কিছু দিন আগে ইশতিয়াক ভাইকে দেখলাম মগবাজার এক রেস্টুরেন্টে। আমিও সেই রেস্টুরেন্টে খাচ্ছিলাম। ভাবলাম খেয়ে ভাইয়ের কাছে যাবো। কিন্তু খাওয়া শেষ করে দেখি ইশতিয়াক সাহেব উধাও। হা হা হা। যদিও ভাইয়ের সাথে ফেসবুকে আছি বহু বছর ধরে।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৯ সকাল ৯:১৬

বাকপ্রবাস বলেছেন: রিভিওটা ভাল লাগল।

২৪ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৪ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:১৬

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: রিভিউ পড়েই মূল বইয়ের স্বাদ একটা পেয়ে গেলাম। লেখক এর জন্য শুভকামনা রইল।

২৪ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৪:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২৪ শে মে, ২০১৯ সকাল ১১:১৯

আপেক্ষিক মানুষ বলেছেন: আমি এতদিন ৯০'র দশকের উপন্যাসে পরে ছিলাম, এখন মনে হচ্ছে এটা পড়া দরকার। ধন্যবাদ রাজিব ভাই।

২৪ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৪:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: নতুন পুরান সবই পড়তে হবে।

৪| ২৪ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:২০

জাহিদ অনিক বলেছেন:
বাহ ! রিভিউ ভালো লেগেছে। বইটির নাম শুনেছিলাম অনেক আগেই। আমি নাম শুনে আন্দাজ করেছিলাম এমন কিছু যে, একটা মধ্যবিত্ত পরিবার তাদের গাড়ি কেনা নিয়ে, নানা টান পোড়নের গল্প হবে হয়ত।

লেখক ও আপনার দুজনের জন্যই শুভেচ্ছা।

২৪ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৪:১০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ কবি।

৫| ২৪ শে মে, ২০১৯ দুপুর ২:৪৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


ইশতিয়াক সাহেব কি ব্লগার?

২৪ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৪:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: আমি ঠিক জানি না।

৬| ২৪ শে মে, ২০১৯ রাত ৮:৩২

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: আপনি একজন বুদ্ধিমান মানুষ। অনেক বই পড়েন।

২৪ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: বইপড়া ছাড়া আর কোনো কাজও পারি না যে।

৭| ২৫ শে মে, ২০১৯ রাত ১:১৯

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: বই রিভিউ ভাল লেগেছে।

২৫ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.