নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আজ একটি বিশেষ দিন।
সকাল দশটা। হিমি রিকশা থেকে নেমে দাঁড়িয়ে আছে অনেকক্ষন ধরে শাহবাগ যাদু ঘরের সামনে। গুল্লু আসার কথা ঠিক দশটায়। এখন সাড়ে দশটা বেজে গেছে। কিন্তু হিমির একটুও রাগ লাগছে না। সে ঠিক করেছে আজ একটুও রাগ করবে না গুল্লুর উপর। আজ একটি বিশেষ দিন। হিমি আজ খুব সুন্দর করে সেজেছে। নতুন একটা লাল শাড়ি পড়েছে। কপালে বড় একটা সবুজ টিপ দিয়েছে। দুই হাত ভরতি পরেছে লাল-নীল-সবুজ কাচের চুড়ি। আজ হিমি আর গুল্লু কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করবে। হিমি হঠাৎ কি মনে করে আকাশের দিকে তাকাতেই গুল্লু পেছন দিক থেকে হিমির কাছে এসে বলল, স্যরি দেরী করে ফেললাম। রাস্তায় এত জ্যাম! চলো চা খাই। হিমি বলল- আচ্ছা, চলো।
সকাল বারোটার মধ্যে হিমি আর গুল্লুর বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেল।
হিমি বুঝতেই পারেনি বিয়ে করা এত সহজ। দু'টা সই করলো- আর বিয়ে হয়ে গেল! দুইজন মানুষ চিরজীবনের জন্য কাছাকাছি এসে গেলো! এই বিয়েতে সাক্ষী ছিল গুল্লু আর হিমির চারজন কাছের বন্ধু। তারা সবাই মিলে স্টারে দুপুরে খেলো। এই বিয়ের খবর হিমি এবং গুল্লুর বাড়ির কেউ জানে না। সব বন্ধুরা বিদায় নিয়ে চলে যাবার পর হিমি আর গুল্লু ধানমন্ডি লেকে গিয়ে বসলো। হিমি বলল- আমার খুব মাথা ব্যাথা করছে। গুল্লু বলল, তুমি আমার কোলে মাথা রাখো, আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেই। হিমি গুল্লুর কোলে মাথা রাখতেই ঘুমিয়ে পড়ল। গুল্লু হিমির মুখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল- আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। কতখানি ভালোবাসি তা তুমি কোনো দিনও জানবে না। আর তখন এক ফোটা চোখের জল হিমির গালে গড়িয়ে পড়ল। হিমির ঘুম ভেঙ্গে গেল।
গুল্লু সন্ধ্যা ছয়টায় হিমিকে বাসায় নামিয়ে দিল।
হিমি তার ঘরে ঢুকে গরম পানি দিয়ে গোছল করে এক কাপ চা খেয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ল। এবং সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখল, গুল্লুকে বিচ্ছিরি চেহারার কিছু মানুষ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ঘুমের মধ্যেই হিমি খুব ভয় পেল। কেঁদে উঠল। এই সময় হিমির মা এসে দেখল হিমি কাঁদছে, ভয়ে তার মুখ শুকিয়ে গেছে। হিমি তার মাকে জড়িয়ে ধরল। হিমির মা হিমিকে জড়িয়ে ধরে মাথায় পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল, রেডী হয়ে নাও পাত্র পক্ষ তোমাকে দেখতে আসছে। রাতে তারা খেয়ে যাবে। হিমি লক্ষ্মী মেয়ের মতন সুন্দর একটা শাড়ি পরে নিল। হিমিকে দেখে ছেলে সহ ছেলের বাবা-মা সবাই খুব পছন্দ করলো। তারা আর দেরী করতে চায়, আজই আংটি পরিয়ে দিবে। আংটি তারা সাথে করেই নিয়ে আসছে। হিমি হঠাৎ খুব অবাক হয়ে গেল। অজানা এক ভয়ে তার মুখ শুকিয়ে গেল।
৪রাত আট টা।
মিরপুর রোড থেকে গুল্লু তার বাইকে করে বাসায় ফিরছে। সে সব গুছিয়ে রেখেছে বাসায় গিয়ে মাকে কিভাবে হিমির কথা টা বলবে। গুল্লু জানে তার মা সব হাসি মুখে মেনে নিবে। গুল্লু আজ খুব খুশি। তার জীবনের একটা স্বপ্ন আজ সত্যি হলো। গুল্লু মনে মনে ভেবে রেখেছে- সে হিমিকে কোনো দিনও কষ্ট দিবে। অনেক...অনেক ভালোবাসবে হিমিকে। বারবার গুল্লুর চোখে হিমি ভেসে আসছে। গুল্লু আসাদ গেট নেমে এক কাপ চা খেলো। একটা সিগারেট ধরালো। সিগারেট শেষ করে আবার তার বাইক স্টার্ট দিলো। গুল্লু সংসদ ভবনের রাস্তায় আসা মাত্র একটা মাইক্রো-বাস গুল্লুর গোন্ডাকে ধাক্কা দিলো। গুল্লু রাস্তার পাশে ছিটকে পড়লো। তার কপালের সামনের অংশ থেতলে গেল।
হিমিদের বাসায় একটা ফোন আসে।
ফোন ধরেন হিমির বাবা। অপর প্রান্ত থেকে বাবু নামের একজন ব্যাকুল হয়ে বলল- প্লীজ হিমিকে ফোনটা একটু দেন। খুব জরুরী। হিমির বাবা কঠিন গলায় বলল- আজ হিমিকে দেওয়া যাবে না। বাবু আবার বলল- তাহলে হিমিকে বলুন গুল্লু একসিডেন্ট করেছে। অবস্থা ভালো না। হিমির বাবা আচ্ছা বলে ফোন রেখে দিলো। কিন্তু সে শুভ দিনে তার মেয়েকে একটা দুর্ঘটনার কথা বলতে চহান না। রাত দশটায় পাত্রপক্ষ খেতে বসল। খাওয়ার পর তারা হিমিকে আংটি পরিয়ে বিদায় নিবে। হিমি কি করবে সব ঠিক করে নিয়েছে। তাদের খাওয়া শেষ হলে হিমি ছেলেটিকে সব খুলে বলব।
হাসপাতালে গুল্লুর পরিচিতজনরা সবাই ভিড় করেছে। গুল্লুর মা খুব কাঁদছে। গুল্লুর বাবা ডাক্তারদের পেছন পেছন পাগলের মতন ঘুরছে। গুল্লুর সব বন্ধুরা এক জাগায় জড় হয়ে পাথরের মতন দাঁড়িয়ে আছে। ডাক্তার জানিয়ে দিয়েছে- গুল্লুর অবস্থা ভালো না। আত্মীয় স্বজনদের খবর দেন। মনে মনে আপনারা প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন। আমরা আমাদের স্বাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন সব আল্লাহর হাতে। আমাদের আর কিছু করণীয় নেই।
রাত সাড়ে দশটায় গুল্লুর বন্ধু হিমিকে ফোন করে গুল্লুর কথা জানায়।
হিমি কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে তার বাবার কাছে এসে বলল - বাবা আমাকে ওর কাছে নিয়ে চলো। হিমি হাসপাতালে যায়। গুল্লু আছে কমায়। গুল্লুর মাথায় ব্যান্ডেজ, গলা দিয়ে গর গর শব্দ বের হচ্ছে। হিমি ডা্ক্তারকে বলল- ডাক্তার আমি যদি কিছু বলি ও কি শুনতে পাবে? ডাক্তার বলল অবশ্যই শুনতে পাবে, তার মস্তিস্ক সচল আছে। হিমি বলল- আমি ওর সাথে এক মিনিট একা কিছু কথা বলতে চাই। সবাই ঘর থেকে বের হয়ে গেলো। হিমি গুল্লুর কাছে বসে এক হাত ধরে আর এক হাত গুল্লুর বুকের উপর রেখে কাঁদতে কাঁদতে বলল- তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবে না। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। অনেক ভালোবাসি।
রাত একটায় গুল্লু চোখ মেলে সবার দিকে তাকালো। ছোট একটু হাসি দিলো। আর কি আশ্চর্য মরে গেল।
( হুমায়ুন আহমেদ স্মরনে এবং তার "কৃষ্ণপক্ষ" উপন্যাস অবলম্বনে।)
২০ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপা।
২| ২০ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:১৫
সায়ন্তন রফিক বলেছেন: ভালো।
২০ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৭
নীল আকাশ বলেছেন: রাজীব ভাই, গুল্লুকে না মেরে ফেললে হতো না? শেষে এসে মন খারাপ হয়ে গেল!
লেখা ভাল হয়েছে।
২০ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৪| ২০ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: মারামারি খুন-খারাবি আমার একদম পছন্দ নয়।
২০ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: এখানে কোনো মারামারি হয়নি।
একজন সড়ক দূর্ঘনায় মারা গেছেন।
৫| ২০ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:২৫
রানার ব্লগ বলেছেন: ভালো !!! হিমি কে আমার দরকার , কোথায় পাওয়া যাবে ??
২০ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: বলব না।
৬| ২০ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:৫৯
ইসিয়াক বলেছেন: লেখা ভাল হয়েছে।
২০ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। খুব খুশি হলাম।
৭| ২০ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:১৫
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: করুণ গল্প ভাল লাগে না...
২০ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: জীবনে কি কখনও করুন পরিস্থিতে পড়েন নি?
৮| ২০ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:০০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটা ইচ্ছে করেই ঘটানো হয় । এটা এক ধরনের খুন।
২০ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: কি বলেন আপনি???!!!
সড়ক দূর্ঘটনা ইচ্ছা করে ঘটানো হয় !!!!!
নো নেভার।
৯| ২১ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:৩১
খায়রুল আহসান বলেছেন: এমন ভালবাসার কথা শুনেও গুল্লুটা মারা গেল! ভেবেছিলাম, বেঁচে উঠবে।
কি আর করা!
২১ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব বড় কঠিন ।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:০৯
রোকসানা লেইস বলেছেন: ভালো হয়েছে